Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
WB Tithi Bhojan

মিড-ডে মিলে স্বাদ ফেরাতে বিশেষ দিনে স্কুলে তিথি ভোজনের নির্দেশ রাজ্যকে

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তিথি ভোজনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলে স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।

সংগৃহীত চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ১৮:০৯
Share: Save:

গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশের পর এ বার বাংলাতেও মিড-ডে মিলে তিথি ভোজন-এর নির্দেশ কেন্দ্রীয় সরকারের। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তিথি ভোজনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলে, স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। ২৩ জুলাই ঘোষিত হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেট। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের ঘোষণায় মিড-ডে মিল বাবদ বরাদ্দ ১২,৪৬৭.৩৯ কোটি টাকা করা হয়েছে। ২০২২ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ১২,৬৮০.৯৭ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ এর প্রথমে ১১,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।

একদিকে মিড-ডে মিলে বরাদ্দ কমানো হচ্ছে, অপরদিকে বিশেষ দিন বা পুণ্যতিথি উপলক্ষে অথবা স্থান ভিত্তিক অনুষ্ঠান অনুযায়ী শিশুদের মুখে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে তিথি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখানেই প্রশ্ন তুলছে শিক্ষকমহলের একাংশ। বিশেষ দিনের তিথি ভোজন আয়োজনের আর্থিক দায়িত্ব নিতে কেউ যদি এগিয়ে না আসে, সে ক্ষেত্রে কী ভাবে পালিত হবে এই কর্মসূচি? এ প্রসঙ্গে, কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “ছাত্র পিছু যে আর্থিক বরাদ্দ থাকে তাতে সাপ্তাহিক তালিকা মেনে খাবার বন্দোবস্ত করতেই বিদ্যালয়গুলির নাভিশ্বাস ওঠে, সেখানে ভাল খাবারের বন্দোবস্ত করতে হলে যেসব ছাত্র খায় না তাদের বরাদ্দ টাকাও খরচ করা ছাড়া স্কুলগুলির অন্য কোন উপায় থাকে না। বিশেষ তিথিতে কেউ যদি দায়িত্ব নিতে রাজি না হয় সেক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষকেই বাড়তি ব্যয়ের ভার বহন করতে হবে? ”

কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের দেওয়া নির্দেশে পিএম পোষন তিথি ভোজনের ১০০ দিনের জন্য বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টির দিকে লক্ষ্য রেখে এই ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন ২০১৩ অনুযায়ী স্কুল পড়ুয়াদের বিদ্যালয়েই স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মরসুমি ফল, বিশুদ্ধ জলও আছে সেই তালিকায়।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রের সরকার মিড ডে মিল দেওয়ার ক্ষেত্রে আগামী ১০০ দিন তিথি ভোজন করানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলোকে। খাদ্যতালিকাও বলে দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মিড-ডে মিলের জন্য যে পরিমান টাকা বরাদ্দ করা হয়, তা দিয়ে এই খাবার দেওয়া অসম্ভব।”

শিক্ষা দফতরের মিড-ডে মিল কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের ব্যখ্যা, এই কর্মসূচি বাধ্যতামূলক নয়। স্থানীয় স্তরে কমিউনিটিকে যুক্ত করে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের বন্দোবস্ত করার একটি উদ্যোগ।

মিড-ডে মিলের প্রজেক্ট ডিরেক্টর পারমিতা রায় বলেন, “কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, বেশ কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই তিথি ভোজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যেখানে কখনও শিক্ষকরা, কখনও এলাকাভিত্তিক কোনও ব্যক্তি শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবারের দায়িত্ব নিচ্ছে।” যদিও শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য মিড-ডে মিলের যে খাবারের টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তাতে পুষ্টিকর মুখরোচক খাবার দেওয়া যথেষ্ট কঠিন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে স্কুলছুট এবং মিড-ডে মিলের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে এই কর্মসূচি কেন্দ্রের। যাদবপুর বিদ্যাপীঠেের প্রধানশিক্ষক পার্থপ্রতীম বৈদ্য বলেন, “এক ঘেঁয়েমি খাবার খেয়ে যাতে স্কুলের প্রতি পড়ুয়ারা আগ্রহ না হারায় তাই ভিন্ন স্বাদের পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে এই উদ্যোগ। পাশাপাশি স্কুলছুটের ঘটনা যাতে সেই দিকটিও সুনিশ্চিত করতে চাইছে এই উদ্যোগের মাধ্যমে। ”

অন্য বিষয়গুলি:

wb Tithi Bhojan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE