আমির খানের থেকে শেখার: বউয়ের ফোবিয়ায় পলেস্তারা বোলাবেন না। বউ বলল বাথরুমে ভূত, অমনি আপনি বারান্দায় প্রাতঃকৃত্য সারতে লাগলেন, সুবিধের অভ্যেস নয়। অবিশ্যি আসলি শিক্ষা অন্য: হিংসের ইনার্শিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীর দুর্ভাগ্যকে অবধি ঈর্ষা করুন। অন্য দুই খান নিয়ে দামাল কন্ট্রোভার্সি, এ গাড়িচাপা দিচ্ছে ও দেশদ্রোহী বনছে, মম হেডলাইন কই! খবর পাকড়ানোর আরও তরিকা শিখতে জপুন রাহুল গাঁধী: অফিসে লাগাতার ঢুলে চ্যাপটা ছারপোকার ন্যায় খোলাকুচি? অকস্মাৎ পঞ্চাশ দিনের টানা ছুটির দরখাস্ত দিন! অথবা পার্থ দে: ফোনে পিৎজার অর্ডার দিয়ে বলুন, কঙ্কালের জন্যে একটা ফাউ হবে? কেট মিড্লটনের মতো বিয়ে বাগাতে পারলে অবশ্য, খুদে ক্যান্ডিডেট বিয়োলেই ক্যামেরা ক্লিক। তবে সেরা পথ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের: কর্ম করিতে নারি, রাখিব চাপদাড়ি। সর্বহারা টু আরিত্তারা: অ দাদা, কী হল, উগ্রপন্থী না ব্রণ?
অর্জুন ইচ্ছেমত ঘুম কন্ট্রোল করতে পারতেন, যখন খুশি অন, অফ। ইচ্ছামৃত্যুর বরও পেয়েছেন কিছু মহাকাব্যিক মেগাস্টার। কিন্তু ইচ্ছা-সুগার? ইচ্ছা-কোলেস্টেরল? মদন মিত্র শেখালেন, উইল-পাওয়ার লড়িয়ে অসুখাবলিকে বাঁদর-নাচানো যায়। এই প্রেশারকে বললেন, মগডালে চড়, এই অর্ডার— মেট্রোর নীচে যা। যে শরীর আট মাস আহা-উহু মুহুর্মুহু, তাকে চল্লিশ মিনিটে ফটফটে ফিট করে গোঁফ কামিয়ে বাড়ির পথে রওনা। ভাইরাসেরা মদনকে ভাই ডাকে, ব্যাকটিরিয়া ব্যাক চুলকে দেয়।
আর হ্যাঁ, রিয়েলিটি শো-র জাজ হতে গেলে, পেছনে ফোঁড়া থাকা ভাল। নইলে চেয়ারের সফ্ট গদি ছাড়তে ইচ্ছে করবে না। অথচ এখন জাজের পরম ডিউটি: দেড় মিনিট অন্তর তড়াক তড়াক দাঁড়িয়ে রেডিমেড খঞ্জনির ন্যায় হাততালি, প্লাস গদগদিয়ে কমেন্ট: ইয়ে প্রোগ্রাম যব তক সুরয চাঁদ রহেগা। হেথা সাম্যের প্যাঁপোঁ-ও রণিত। প্রতিটি মানুষই যে স্ট্যান্ডিং ওভেশন-যোগ্য জিনিয়াস, ভুষোচাষা সব্বাই লতা-আশা, ঠিকঠাক পয়সা পেলে পুচ্ছ নেড়ে পাইকারি রেটে ‘তুঁহু মম ঘ্যাম সমান’ মুগ্ধ স্যালুট ঠোকা যায়: প্রায়-মার্ক্সীয় লেস্ন ললকাচ্ছে।
দাদরি কালবুর্গি শার্লি এবদো আর সিনেমা হল-এ জাতীয় সংগীতের সময় না-উঠে-দাঁড়ানো ফ্যামিলিকে বাকি দর্শকরা মিলে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করা শেখাল: স্বাধীন বাক্য চিন্তা শিল্প ডায়েট— ফালতু ফ্যান্টাসি-পেঁয়াজি, রিয়েল জলে মার্ডার এড়াতে কুমিরের চারটি পায়েই তন্নিষ্ঠ তেলমালিশ আবশ্যক, রোববার ল্যাজেও। আর সে-ই তো সঙ্গত, সবার রঙে রং মেলানোই কি নয় মানুষের শ্রেয় সাধনা? তৃণমূল-পাড়ায় থেকে সিপিএম না-করার স্বস্তিই কি মানুষকে ধারণ করে নেই? চাপাতি চাপাটির মতোই জরুরি, মনে রাখতে হবে, দেশপ্রেম ধর্মপ্রেম কমিউনিটিপ্রেম যে পাঁড়-পপুলার, কারণ এদের আসল মানে অন্যদেশঘৃণা অন্যধর্মঘৃণা অন্যগোষ্ঠীঘৃণা। আর হ্যাঁ, সাচ্চা দেশপ্রেম মানে, ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড কাপে হেরে গেলে, অনুষ্কা শর্মাকে হুড়িয়ে খিস্তি, কারণ তিনি গ্যালারিতে ছিলেন বলেই নির্ঘাত কোহলি আনমনা।
ডেরেক ও’ব্রায়েন পার্লামেন্টে বললেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গে এ কাণ্ড হলে রেপিস্টকে গুলি! অপর্ণা সেন ইন্টারভিউয়ে বললেন, রেপিস্টদের পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়া উচিত। অ্যাঁ! যাহারে করিছ দণ্ডদান, টর্চারে হতে হবে তাহার সমান শয়তান! এ তো পিলপিলে পাবলিকের ‘তুমি অধম হইলে আমি অধম হইব না কেন বরঞ্চ ধমধমাধম কষাইব’ গামবাট প্রতিশোধ-দাপানি খাবলে বিচারের নাকে স্প্রে! তাইলে শেখার: সে রাষ্ট্রগুলিই আদতে ন্যায়ছলছল, যারা চুরি করলে হাত কেটে নেয়, অ্যাসিড অ্যাটাকে মেয়ের চোখ-কান নষ্ট হলে তুরন্ত অপরাধীর চোখ-কান ওপড়ায়। আশা: ‘খুন করলে ফাঁসি চাই’-এর স্টেপ মেনে, দ্রুত দাবি জগমগাবে: রেপিস্টকে নিত্যি জেলখানায় রেপ করা হোক।
মাতৃভূমি লোকাল শেখাল, ছেলে ভার্সাস মেয়ে শুধু বসন্তবিলাপের তামাশা নয়, পরস্পরকে আন্তরিক খারের আরকে চুবিয়ে বয়ামে রেখে, এই প্রাণীরা সেরেফ জৈবিক দায়ে ওষ্ঠমৃগয়ায় রত হয়। তখনও চাবকে লাল অঙ্গ দর্শনের আকাঙ্ক্ষা পিড়িং পিড়িং লাফায় কি? রমণ ও দমন কি যমজ বোন? নিশ্চিত নয়, তবে শিয়োর, ট্রামেবাসে মেয়েদের দেখলেই পুরুষ দাঁত কশকশায়, রান্নাঘর ছেড়ে কেব্লিগুলো আমাদের জিনা হারাম করার জন্যে হেলেদুলে প্রিভিলেজ বাগাচ্ছে, চটাস চড়িয়ে নারীমুক্তি তাড়াও! আর মেয়েরা হাতের মুঠো চেপ্পে বন্ধ করে: পোটেনশিয়াল ধর্ষকগুলোকে ঝাড়েবংশে আধলা ইট দিয়ে ছাঁচতে পারলে কী জমত হে জগজ্জননী! সমকামিতা কম্পালসরি করলে প্রশমন হবে কি? ধুর, ‘প্রথমত আমি পেটাতে চাই’— মানুষের আরামতম রিলিজ। তাইলে ভূমিকম্পে দোতলার বোম্বাস্টিক বউদিকে বাঁচাতে ছুটল কেন? আহা, অবসরে মোবাইলে প্রণয় দেখে যে। আইফোনধারার ছাপ চেতনাকে গড়ে। মানে, অফিসটাইম বাদ দিয়ে!
দেশপ্রিয় পার্ক যা শেখাল, পুঁজিবাদের ম্যানুুয়াল ডিগবাজি খেয়ে আঁক্স: মার্কেটিং-এ সাংঘা-সাকসেস মাঝেমধ্যে ব্যর্থতার দেড়া খারাপ! তাই ঘাগু অ্যাডকে স্বল্প ব্যাডও হতে হয়, হোলসেল প্রত্যাশা এক দানে মগডালে উঁহু। প্রোমোতে মন ঢালিয়া দেওয়ার বিপদ মোদীও বুঝছেন, ক্যাম্পেনের হিস্টিরিয়ার চোটে, ব্ল্যাক মানি উদ্ধারান্তে জনতার প্রতি পকেটে দেড় লাখ গুঁজে দেওয়ার গুজিয়া বিতরণের কী দরকার ছিল? এ কি তোমার স্টেশনে চা দেওয়া? ‘জাদা আদা দিইচি’ বলে আমআদা চালিয়ে দেবে? এখন টেনশনের চোটে অ্যায়সা তনছট, ন্যাশনাল অ্যানথেমেও থেমে থাকতে পারছেন না!
আর কী? বচ্চনের কাছে শিখুন, অবিরাম সাইকেল চালালে আর্ট ফিল্মের গলতায় ঢুকে পড়া যায়। শিনা বরা-র কাছে শিখুন, যাকে-তাকে দিদি ডাকতে নেই, পশ্চিমবঙ্গে না থাকলেও। লালুপ্রসাদ ও ব্যোমকেশের কাছে শিখুন, কামব্যাক একশো বছর বাদেও সম্ভব। অবশ্য ম্যাগি হলে পাঁচ মাসে। নওয়াজ শরিফের কােছ শিখুন, সব সময় এক্সট্রা ভাত নিয়ে রাখতে হয়, কে জানে কবে চরম শত্তুরও লাঞ্চ নাগাদ মুন্ডু বাড়াবে: খাওয়াবি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy