বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন জানিয়েছে, এ বার থেকে ৪৫টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের ভর্তিপ্রক্রিয়ার মাপকাঠি হবে একটিমাত্র অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা। এই সিদ্ধান্ত স্পষ্টত সমস্যাকর। প্রথমত, বিভিন্ন বোর্ডের নম্বরের ভিতর অসমতা দূর করার যে প্রতিশ্রুতি এই অভিন্নতায় আছে, আপাতদৃষ্টিতে তাতে অভিনবত্ব আছে বটে, কিন্তু নতুন সমস্যাও তাতে বিস্তর। প্রথমত, কী ভাবে ছাত্র বাছাই করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিজস্ব অধিকার হওয়া উচিত। কেউ চাইলে নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে ছাত্রদের যোগ্যতা যাচাই করতে পারে, কোনও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন বোর্ডের নম্বরকে তুলনীয় করার জন্য গাণিতিক পদ্ধতির সাহায্য নিতে পারে। বোর্ডের নম্বরের অসাম্যের ফল ছাত্রদের উপর পড়া অন্যায়— কিন্তু, সেই অসাম্য দূর করার জন্য এত বড় দেশে এক পরীক্ষার বিধি চাপিয়ে দেওয়ার অন্যায়টি বৃহত্তর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বশাসনের অধিকার অনস্বীকার্য, এবং শিক্ষার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ। তাতে হস্তক্ষেপ করলে শিক্ষাব্যবস্থারই ক্ষতি।
অভিন্ন পরীক্ষার সমস্যা ছাড়াও আছে ইউজিসি-র একতরফা ক্ষমতা আরোপের বিপদ। শিক্ষা বিষয়টি সংবিধানে যৌথ তালিকাভুক্ত, সেখানে রাজ্যগুলির পাশ কাটিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনৈতিক। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী যথার্থ ভাবেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, ইউজিসি-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে কোনও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি লিখতে পারে কি? কেন্দ্রীয় শাসক যে ভাবে তাদের রাজনীতির স্বার্থে সমগ্র দেশের বৈচিত্রকে অস্বীকার করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে বিপন্ন করে তুলছে, এই পরীক্ষার প্রস্তাবও যে তার থেকে আলাদা নয়। নরেন্দ্র মোদী সরকার মনে করে, এক দেশ কথাটির অর্থই হল, এক ভাষা, এক বাজার, এক রীতিনীতি, এক খাদ্যাভ্যাস— এবং এ বার, এক ও অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা। এই ঘোরতর আপত্তিজনক প্রস্তাব অকারণ কেন্দ্রীকরণের প্রয়াস। সংবিধান রাজ্যগুলিকে যে অধিকার দিয়েছে, ঘুরপথে তা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা।
সঙ্কট পদ্ধতিতেও। সংবাদে প্রকাশ, অবিলম্বে অভিন্ন প্রবেশিকার আবেদন গ্রহণ শুরু হবে, পরীক্ষাও সম্পন্ন হবে মাস তিনেকের ভিতরেই। এত বড় মাপের দেশব্যাপী পরীক্ষার জন্য মাত্র তিন মাস সময় প্রস্তুতির পক্ষে অপ্রতুল, বিশেষত পরীক্ষার্থীদের সামনে যখন ইতিমধ্যেই বোর্ড পরীক্ষা এসে গিয়েছে। না কি বোর্ড পরীক্ষাগুলি এই নতুন ব্যবস্থায় সর্বৈব অপ্রয়োজনীয়? যদি তা-ই হয়, সে ক্ষেত্রে বোর্ড পরীক্ষাগুলি হচ্ছে কেন? রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বোর্ডগুলি এত ঘটা করে স্কুল পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে বোর্ড পরীক্ষার আয়োজন করে— কোনও একটি উদ্দেশ্য
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy