Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Editorial

জমা-খরচের খাতাটা কী অবস্থায় এখন, দেখাতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী?

গন্তব্যের ঠিক কতটা কাছে পৌঁছেছি আমরা? অথবা গন্তব্য থেকে আর কতটা দূরে রয়েছি? যে আচম্বিত পদক্ষেপকে কালো টাকা আর জাল টাকার বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, রাত পোহালেই তার এক মাস। প্রধানমন্ত্রী পঞ্চাশ দিন সময় চেয়েছেন ঠিকই।

মুক্তি কবে? এটিএমের সামনে দীর্ঘ লাইন।

মুক্তি কবে? এটিএমের সামনে দীর্ঘ লাইন।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:৩১
Share: Save:

গন্তব্যের ঠিক কতটা কাছে পৌঁছেছি আমরা? অথবা গন্তব্য থেকে আর কতটা দূরে রয়েছি? যে আচম্বিত পদক্ষেপকে কালো টাকা আর জাল টাকার বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, রাত পোহালেই তার এক মাস। প্রধানমন্ত্রী পঞ্চাশ দিন সময় চেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু চেয়ে নেওয়া সেই সময়কালের একটা বড় অংশ তো কেটেও গিয়েছে, প্রবহমান প্রক্রিয়াটা অতিক্রান্ত সময়ের নিরিখে একটা বড় মাইলফলকে পৌঁছে গিয়েছে। এ বার অনেকেই জানতে চাইছেন, এ ক’দিনে কতটা এগোতে পারলাম আমরা? কতটা লাভবান হল জাতীয় অর্থনীতি?

অনেকগুলো ছেঁড়া ছেঁড়া সংখ্যা ভেসে উঠছে দৃশ্যপটে। কত লক্ষ কোটির মুদ্রা বাজার থেকে অপসৃত হল? এর মধ্যে কত হাজার কোটি সম্ভবত জাল ছিল? ব্যাঙ্কে ব্যাঙ্কে মোট কত জমা হল? গোপন কালো ধনের হিসাব ক’জন প্রকাশ করলেন? ইতিউতি উঁকি দিচ্ছে এমনই নানা বিক্ষিপ্ত তথ্য। কিন্তু সামগ্রিক কোনও চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে না। বিক্ষিপ্ত হিসাবগুলোও ততটা বিশদে মিলছে না, যতটা বিশদে মিললে তাদের জুড়ে জুড়েই গোটা একটা চেহারায় পৌঁছনো সম্ভব হয়। অতএব, দিনের শেষে সংখ্যাগুলোকে বিচ্ছিন্ন সংখ্যাই থেকে যাচ্ছে, কোনও অঙ্ক হয়ে উঠতে পারছে না।

অঙ্কটা কিন্তু শুধুমাত্র লাভেরও নয়। ক্ষতির পরিসরও রয়েছে। মুদ্রারহিতকরণের পর থেকে গোটা দেশে ব্যবসা মার খাচ্ছে, কেনাকাটা কমেছে, শেয়ার বাজারে হু হু ধস, ভারতীয় মুদ্রার মান নেমে গিয়েছে, কৃষিকাজ ধাক্কা খেয়েছে। নতুন নোট ছাপানো এবং তার বণ্টনের জন্যও কেন্দ্রকে বিপুল ব্যয় করতে হচ্ছে। এই সব কিছুর জেরে অর্থনীতি কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হল? রাজকোষ কতখানি খালি হল? এ সব প্রশ্নের কোনও উত্তর এখনও নেই।

প্রায় গোটা একটা মাস প্রতিকূলতার সঙ্গে যুঝে নেওয়ার পর নাগরিকরা কিন্তু লাভ-ক্ষতির অঙ্কটা কিছুটা হলেও বুঝে নিতে চাইছেন। যুঝতে আপত্তি নেই হয়তো অনেকেরই। প্রধানমন্ত্রীকে পঞ্চাশ দিন সময় দিতেও আপত্তি নেই। কিন্তু যে পথে অগ্রসর হয়েছে দেশ, সে কি অগ্রগতিরই পথ, নাকি কি‌‌‌‌‌‌‌ছুটা পিছিয়েই পড়তে হচ্ছে? বুঝে নিতে চাইছেন দেশবাসী, সংশয়ের নিরসন চাইছেন।

সংশয়ের নিরসনটা কিন্তু সত্যিই জরুরি। দেশবাসীকে বিশ্বাস রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী, ভরসা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ভরসা দেশ এ পর্যন্ত রেখেছে। কিন্তু এ বার প্রতিদানটাও জরুরি। ভাল হচ্ছে, নাকি মন্দ? অন্ধকারে হাতড়াচ্ছেন সাধারণ নাগরিক। প্রধানমন্ত্রীর আশু কর্তব্য এ ক্ষণে তাই আলোকপাত করা, জমা-খরচের হিসেবটা যে চেহারায় রয়েছে, সৎ সাহস নিয়ে সেই চেহারাটাই তুলে ধরা। পারবেন কি নরেন্দ্র মোদী? উত্তরের অপেক্ষা রইল।

অন্য বিষয়গুলি:

Anjan Bandyopadhyay Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy