Advertisement
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
London Diary

লন্ডন ডায়েরি: লন্ডনের গলিতে ঘুরছেন জাহাঙ্গির, রবার্ট ক্লাইভ

এই নাটুকে পথ চলার শুরু ব্রাবান্ট কোর্টের ছোট্ট চত্বরে। এখানে এখনও কোম্পানির এক বণিকের বাড়ি আছে। পথ চলতে বর্ণনা করা হচ্ছে, কী ভাবে ১৫৯৯-এ বণিকদল ঠিক করলেন, পূর্ব থেকে আনবেন গোলমরিচ, মশলা।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:১৬
Share: Save:

লন্ডনের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রে পাথুরে রাস্তায়, গলিতে ঘুরছেন এক অভিনেতা, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বণিকের সাজে! বলছেন গল্প, কী ভাবে কোম্পানি ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত তৈরি করেছিল। অন্যরা সেজেছেন রানি প্রথম এলিজ়াবেথ, মোগল সম্রাট জাহাঙ্গির, শেক্সপিয়র, ক্লাইভ, বাংলার চাষি। চলমান এই পথনাটিকাটি উত্তরোত্তর জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেকেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নৃশংস ইতিহাস, দাসত্ব ও ঔপনিবেশিকতার সঙ্গে সংযোগের বিষয়ে আরও জানতে চান। এই নাটুকে পথ চলার শুরু ব্রাবান্ট কোর্টের ছোট্ট চত্বরে। এখানে এখনও কোম্পানির এক বণিকের বাড়ি আছে। পথ চলতে বর্ণনা করা হচ্ছে, কী ভাবে ১৫৯৯-এ বণিকদল ঠিক করলেন, পূর্ব থেকে আনবেন গোলমরিচ, মশলা। ১৬০০-র বর্ষবরণের রাতে রানি প্রথম এলিজ়াবেথ তাঁদের রাজসনদ দেন। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গিরের দরবারে স্যর টমাস রো-কে দূত হিসাবে পাঠানো হয়। তিনি কোম্পানির তরফে বাদশার থেকে ভারতে বাণিজ্যের অনুমতি পান। চলার পথে পড়ছে কোম্পানির অফিসগুলো, ডেভনশায়ার স্কোয়্যারের গুদামও। এখানে বিভিন্ন তলায় মজুত থাকত তুলো, মশলা, আফিম। সে দিনের বাড়িগুলি আজ শৌখিন রেস্তরাঁ, সুরাঠেক। নাটকের গল্প শেষ হচ্ছে পলাশির যু্দ্ধে। যখন বাংলায় রাজস্ব সংগ্রহের অধিকার মিলল, বণিকের মানদণ্ড শাসকের রাজদণ্ডে পরিণত হল। সমীক্ষা জানাচ্ছে, ব্রিটেনের ইতিহাসে গর্বিত দেশবাসীর অনুপাত ২২ সূচক নেমেছে। ব্রিটেনকে অন্যান্য দেশের চেয়ে ভাল ভাবা, দেশ ভুল করলেও সমর্থন জোগাতে আগ্রহীদের অনুপাতও কমছে।

ঐতিহাসিক: লন্ডনের রাস্তায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিয়ে চলমান পথনাটিকা।

ঐতিহাসিক: লন্ডনের রাস্তায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিয়ে চলমান পথনাটিকা।

কাঁটার পোশাক

প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার পোশাকের খরচ কে দেবে? তার জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হবে কি? ভিক্টোরিয়া লেবার দলের দাতার থেকে ৫০০০ পাউন্ডের পোশাক নিয়েছেন, তা নথিভুক্তও হয়নি। জানাজানি হতেই বিতর্কে কিয়ের স্টার্মার। দাতা ওয়াহিদ আলি প্রযোজনা সংস্থার মালিক। বিভিন্ন শীর্ষস্তরীয় অনুষ্ঠানে ভিক্টোরিয়ার ডিজ়াইনার পোশাকের খরচ জুগিয়েছেন। যেমন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রথম প্রবেশের সময় ভিক্টোরিয়ার পরনের ২৭৫ পাউন্ডের লাল পোশাক, আরও একটি ৭২৫ পাউন্ডের সিক্যুইনড সাদা লেসের গাউন ইত্যাদি। ভিক্টোরিয়ার অভিজাত রুচি, ডিজ়াইনারের নির্বাচন প্রশংসিত হয়েছে। লেবার নেতা থাকাকালীন স্টার্মারকে ১৮,৬৮৫ পাউন্ড দিয়ে পোশাক, চশমা কিনে দেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আলি। সমাজমাধ্যম ফুঁসছে, পোশাক কেনার অর্থবল স্টার্মারদের যথেষ্টই আছে। বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বস-কে বাঁচাতে বলেছেন, ব্রিটেনের তো আমেরিকার মতো পোশাক-বাজেট নেই, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীকে তো ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্ব করতেই হবে। আমেরিকানদের পাল্টা যুক্তি, শুধু প্রেসিডেন্টের পোশাক-খাতে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ আছে, ফার্স্ট লেডি পোশাকের দাম নিজেই মেটান। ক্রয়মূল্যের ১০% দিয়ে ডিজ়াইনার পোশাক ভাড়া করেন। ব্রিটেনের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক ও তাঁর স্ত্রী কোটিপতি। পোশাক নিজেরাই কিনতেন, তবে রুচি নিয়ে হাসাহাসি হত। আর বরিস জনসন তো ডিজ়াইনার পোশাককেও বিকট দেখানোর ক্ষমতা রাখতেন!

ঐতিহাসিক: লন্ডনের রাস্তায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিয়ে চলমান পথনাটিকা।

ঐতিহাসিক: লন্ডনের রাস্তায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিয়ে চলমান পথনাটিকা।

মার্জারমন্ত্রী ল্যারি

১০ ডাউনিং স্ট্রিটের সবচেয়ে বিখ্যাত বাসিন্দা আসলে ল্যারি নামের বিড়াল। এই মেজাজি মার্জার টুইটারে আছে, টিভিতেও দেখা যায়। তবে, তার আসনটি কাড়তে পারে স্টার্মারের ছেলেমেয়েদের আনা সফেদ সায়ামিজ় বিল্লি। মন্ত্রী পরিষদের চিফ মাউসার (ইঁদুর পাকড়াওকারী) ল্যারি ২০১১ সালে ডাউনিং স্ট্রিটে আসে। এই ঠিকানা বরাবরই বিড়ালরা আলো করে রেখেছে। ১৯২৪-এ আসে প্রথম মার্জারমন্ত্রী, রুফাস অব ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তথা চার্চিলের সময়ে দায়িত্বে ছিল দু’টি বিড়াল। ল্যারির পূর্বসূরি হামফ্রে বিড়াল স্বাগত জানিয়েছিল ব্লেয়ারদের। ল্যারি এখন ১৭। তার মৃত্যুপরবর্তী কার্যসূচিও প্রস্তুত।

কর্মনিষ্ঠ: ডাউনিং স্ট্রিটে ল্যারি।

কর্মনিষ্ঠ: ডাউনিং স্ট্রিটে ল্যারি।

হ্যারি ও রাজবাড়ি

তীব্র কানাঘুষো, হ্যারির সঙ্গে মিটমাট চায় রাজপরিবার। হ্যারির ৪০তম জন্মদিনে সমাজমাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা জানালেন রাজা, যুবরাজ উইলিয়াম। রাজপরিবারের অ্যাকাউন্ট থেকে ‘ডিউক অব সাসেক্স’-কে শুভেচ্ছার ছোট্ট পোস্টটির ছবি থেকে মেগানকে ক্রপ করে বাদ দেওয়া হয়েছে। একই ছবি ও বার্তা পোস্ট হল উইলিয়াম ও কেটের অ্যাকাউন্ট থেকে। ব্যক্তিগত বার্তায় সাধারণত যুবরাজ ও যুবরানির সই থাকে। এ ক্ষেত্রে তা নেই। বেশ কিছু দিন হল দুই ভাই কথা বলেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE