কীর্তি: মারিনা হুইলার ও তাঁর সদ্যপ্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ (ডান দিকে)
শিকড়ের সূত্রে নিজেকে ভারতীয় ভাবেন মারিনা
বরিস জনসনের স্ত্রী বলেই মারিনা হুইলারকে চিনত লোকে। ভারতীয় জনগোষ্ঠীর ভোটের প্রয়োজন হলেই প্রধানমন্ত্রী মারিনার ভারতীয় শিকড়ের সূত্রে নিজেকেও ভারতীয় পরিবারেরই বলতেন। ২০১৭-য় তাঁদের ২৫ বছরের বিয়ে ভাঙে, মারিনার ক্যানসার ধরা পড়ে। হার মানেননি চার্লস হুইলার ও দীপ (কুলদীপ) সিংহের মানবাধিকার-আইনজীবী মেয়েটি। মায়ের জীবন নিয়ে বই লেখা চালিয়ে গিয়েছেন। প্রয়াত পিতার ভারত বিষয়ক বইগুলি পড়েছেন (চার্লস বিবিসি-র সংবাদদাতা হিসেবে দিল্লিতে ছিলেন), মায়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, বৃহত্তর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন, আত্মীয় খুশবন্ত সিংহের লেখা পড়েছেন, ভারত-পাকিস্তান ঘুরেছেন, আর লিখেছেন দ্য লস্ট হোমস্টেড— মাই মাদার, পার্টিশন অ্যান্ড দ্য পঞ্জাব। এ বছরই তাঁর মা প্রয়াত হয়েছেন।
দীপ সিংহ লাহৌরের কাছে সরগোধায় অবস্থাপন্ন, ব্রিটিশ-ঘনিষ্ঠ পরিবারে জন্মেছিলেন। ১৯৪৭-এ পরিবারটি ভারতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। দীপ তখন ১৫। ’৬২-তে চার্লসকে বিয়ে করে লন্ডনে আসেন। স্বামীর কর্মসূত্রে বার্লিন অবরোধ, মার্টিন লুথার কিংয়ের আন্দোলন প্রভৃতি আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহের সাক্ষী। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এ গবেষক ছিলেন। বইটিতে দীপের অভিযাত্রার সমান্তরালে ধরা পড়েছে ভারতের রাজনৈতিক পরিবর্তন, ধর্মীয় উগ্রতা, জাতীয়তাবাদী অস্তিত্বের বিবিধ জটিলতা।
নজরবন্দি তারিক
সম্প্রতি প্রকাশিত গোয়েন্দা-রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বামভাবাপন্ন সাংবাদিক, লেখক ও সক্রিয় কর্মী তারিক আলিকে বহু দশক গোপন নজরদারিতে রেখেছিল ব্রিটিশ পুলিশ। তাঁর রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ লক্ষ রাখা হচ্ছিল। ভিয়েতনাম যুদ্ধ, জাতিবিদ্বেষ, ফ্যাসিজ়মের বিরুদ্ধে প্রচার করেছেন আলি। এক সময় জনাচোদ্দো গোপন পুলিশ তাঁকে নজরে রাখত। ২০০৩-এ যখন তিনি ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা করছিলেন, ‘স্টপ দ্য ওয়ার কোয়ালিশন’-এর কমিটিতে ছিলেন— তখনও নজরদারি চলেছে! ১৯৬৫-তে আলি অক্সফোর্ড ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হন। তখনই নজরদারি শুরু। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা করে, আমেরিকান দূতাবাসের বাইরে প্রতিবাদ করে পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন। ’৬৮-তে ইন্টারন্যাশনাল মার্ক্সিস্ট গ্রুপে যোগ দেন। তখন থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ৮০টি গোপন পুলিশ ফাইলে তাঁর রাজনৈতিক কাজের বিবরণ রয়েছে। রুশ বিপ্লবী লিয়ন ট্রটস্কি-র বিষয়ে বইয়ের উপরে আলি কার্টুনশিল্পী ফিল ইভান্সের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। গোপন নথিতে ফিলের বান্ধবীর নাম, ঠিকানা, পেশা, বন্ধুবৃত্তের খবরও রয়েছে। এমন অনুপুঙ্খ নজরদারিতে হতভম্ব ৭৬ বছরের আলি। প্রশ্ন তুলেছেন, “ফিলের বান্ধবীর বিষয়ে লেখা হয়েছে কেন? এমন বিকৃত কৌতূহল দিয়ে হবেটা কী?”
উজ্জ্বল: চিলা কুমারীর আলোর সাজ
আলোর নাচন
লন্ডনে লকডাউনে নিঃশব্দ দীপাবলিতে, বিরাট আলোকসজ্জা লাগিয়ে সকলের মেজাজ চাঙ্গা রাখল টেট গ্যালারি। নিয়োক্লাসিকাল ধাঁচের বাড়িটির বাইরের আলোর সাজে পুরাণ, পপ সংস্কৃতি, নারীবাদের কোলাজ। সামনের দু’টি থামে উজ্জ্বল নিয়ন আলোর লক্ষ্মী-গণেশ। বাকিটা জুড়ে আলোর খেলায় বলিউড। আলোকশিল্পী ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিলা কুমারী সিংহ বর্মন। লিভারপুলের পঞ্জাবি পরিবারের মেয়েটি শিল্পকে মজাদার ভাবে পেশ করেন, সেই সঙ্গে তার মাধ্যমে গল্পও বলেন। তাঁর কাজে রঙের বিস্ফোরণে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। এই আলোর সাজ জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত থাকবে। বিষণ্ণ বিবর্ণ শীতের লন্ডনেও কিছুটা উল্লাস জোগাবে বইকি।
ঋষির দীপাবলি
লন্ডনের বিখ্যাত রাস্তা ডাউনিং স্ট্রিটের এক বাসিন্দা চুপিসারে দীপাবলি পালন করলেন। ১১ ডাউনিং স্ট্রিটের বাড়ি থেকে ছোট ট্রে হাতে বেরিয়ে এলেন মন্ত্রী ঋষি সুনক। তৎপর ক্যামেরাম্যানরা লেন্স জ়ুম করে দেখলেন ট্রে-তে চারটি দিয়া, রঙ্গোলির কাগজ। সন্ধের ফিকে আলোয় দেখা গেল, ঝুঁকে পড়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে মাঝবরাবর রঙ্গোলি বসাচ্ছেন মন্ত্রী। গাঢ় রঙের স্যুটে একা দেখাচ্ছিল তাঁকে। তবে, মুহূর্তটি ইতিহাসে লেখা থাকবে। এই প্রথম কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রী ডাউনিং স্ট্রিটের বাড়ির বাইরে প্রদীপ জ্বালালেন। পরের বছর হয়তো গোটা পরিবারই তাঁর সঙ্গে থাকবে, খাঁটি ভারতীয় পোশাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy