ডক্টর হু-র পর্বে বিশ্বযুদ্ধ এবং নুর ইনায়ত খান
নতুন বছরে ব্রিটেন কাঁপছে ‘ডক্টর হু’ জ্বরে। প্রায় ষাট লাখ দর্শক রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের ১২ নম্বর সিরিজ়টি দেখছেন। সিরিজ়ে ভিন্গ্রহী শত্রুদের থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করেন ডক্টর হু। কল্পবিজ্ঞানের সঙ্গে মেশে ইতিহাস। গত বছর একটি পর্বে ভারত ভাগের সময়টা দেখানো হয়েছিল। আর নতুন বছরে দেখানো হল নুর ইনায়ত খানকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত নুর হলেন টিপু সুলতানের বংশধর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীরাঙ্গনা। তিনি প্রথম মহিলা রেডিয়োকর্মী, যিনি গুপ্তচর হয়ে নাৎসি জার্মানিতে ঢুকে পড়েছিলেন। ১৯৪৪-এ কুখ্যাত ডাখাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নাৎসিরা তাঁকে হত্যা করে। সাহসিকতার জন্য মরণোত্তর জর্জ ক্রস পান নুর।
স্পাইফল টু পর্বে, টাইম ট্র্যাভেলে পারদর্শী ডক্টর হু (জোডি হুইটেকার) ১৯৪৩ সালে নাৎসি নিয়ন্ত্রিত ফ্রান্সে পৌঁছেছেন। সঙ্গে আছেন এডা লাভলেস (লর্ড বায়রনের বিজ্ঞানী কন্যে, বলা হয় তাঁর আবিষ্কৃত গাণিতিক পরিভাষা থেকেই প্রথম কম্পিউটার তৈরি হয়)। এখানেই সিক্রেট এজেন্ট নুরের (অভিনয়ে বেলজিয়ামের অরোরা ম্যারিয়ন) সঙ্গে তাঁদের দেখা। নাৎসিরা ডক্টরকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। নুর আগন্তুকদের মেঝের পাটাতনের নীচে লুকিয়ে বাঁচান। লন্ডনে জরুরি বার্তা পৌঁছে দিয়ে ডক্টরকে সাহায্য করেন। ডক্টর সময়যাত্রী শুনে, এক দৃশ্যে নুর তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, শেষমেশ কি ফ্যাসিজ়ম হারবে? ডক্টর উত্তর দেন, ‘হারবে। তোমার মতো মানুষদের কাছেই হারবে।’ ব্রিটেনের সোশ্যাল মিডিয়া এখন নুরকে নিয়ে মেতেছে।
উন্মাদনা: ‘ডক্টর হু’-র একটি দৃশ্য। চরিত্রগুলি হল নুর ইনায়ত খান ও এডা লাভলেস
রবীন্দ্রনাথের চ্যালেঞ্জ
১৯৬৮ সালে ১৪ বছরের যতীন্দ্র বর্মা ব্রিটেনে আসেন। ১৯৭৬-এ সাউথহলের বর্ণবিদ্বেষ ও হত্যাকাণ্ডে তিনি ব্যথিত হন। এশীয়রা ব্রিটিশ সমাজের অঙ্গ, বোঝাতে মাধ্যম করেন থিয়েটারকে। প্রতিষ্ঠা করেন ‘তারা আর্টস’, ব্রিটেনের প্রথম এশীয় নাট্যসংস্থা। প্রথম নাটক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘স্যাক্রিফাইস’ (‘বিসর্জন’)। তাঁদের সব নাটক ইংরেজিতে হয়, যাতে নাটকের বার্তা কোনও বিশেষ জনজাতির মধ্যে সীমিত না থাকে। এ বার যতীন্দ্র সংস্থার নির্দেশক পদটি ছেড়ে দিচ্ছেন। বলছেন, মঞ্চে বর্ণসাম্য আসতে ঢের দেরি আছে। তাঁর কথায়, ‘ব্রিটেনের স্কুলে ব্রিটিশ সাহিত্যই পড়ানো হয়। ভারতীয়, আফ্রিকান নাট্যকাররা ব্রাত্য। সাদা মানুষের মননে শুধুই শেক্সপিয়র। রবীন্দ্রনাথের জায়গা নেই। আমাদের কাহিনি কবে শ্বেতাঙ্গের মস্তিষ্কে পৌঁছবে? নতুন দশকের চ্যালেঞ্জ এটাই।’
সোয়া চার কোটির ছবি
ভারতীয় এক ছবি সংগ্রহের জন্য প্রায় সোয়া চার কোটি টাকার তহবিল জমাল ব্রিটিশ জাদুঘর। ছবির নাম ‘ট্রাম্পেটিয়ারস’। উত্তর ভারতের পাহাড়ি ঘরানার ছবি, গুলের-এর বরিষ্ঠ চিত্রকর নয়নসুখ আনুমানিক ১৭৩৫-৪০’এর মধ্যে এঁকেছেন, কোনও রাজপুত্রের সম্মানে। ছবিতে সাত বাজনদার গাল ফুলিয়ে ‘তুরহি’ নামের শিঙা ফুঁকছেন। এক চিত্রশিল্পী ১০০ বছর আগে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে ছবিটি কেনেন। এত দিন তা ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল। শিল্পকর্মটির দেশের বাইরে যাওয়া রুখতে, ছবির লাইসেন্সও বাজেয়াপ্ত হয়। শেষে তিনটি শিল্প তহবিলের সহায়তায়, চিন ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রদর্শনী করে টাকা উঠেছে।
দেব ডেভিড কপারফিল্ড
এ সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে আর্মান্দো ইয়ানুচ্চির ‘দ্য পার্সোনাল হিস্ট্রি অব ডেভিড কপারফিল্ড’। নামচরিত্রে দেব পটেল। সিনেমাটি নানা ফিল্মোৎসবে প্রশংসিত। ইয়ানুচ্চি ব্যঙ্গাত্মক ছবির জন্য খ্যাত। ডেভিড কপারফিল্ড-এও তিনি হাসিঠাট্টা গুঁজে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, দেবের মধ্যে ডেভিডের সারল্য, অস্বস্তি অথচ ঋজু ব্যক্তিত্বের ঝলক মেলে। মঞ্চে, পর্দায় বর্ণসাম্য ইদানীং সাড়া ফেলেছে। আজ পর্যন্ত শুধু শ্বেতাঙ্গেরা চার্লস ডিকেন্সের উপন্যাসের নায়ক হয়েছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত দেব প্রথম ব্যতিক্রম। ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়ার’ ছাড়াও বহু ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। গণিতবিদ রামানুজন, শিখ ওয়েটার, চা-বিক্রেতা চরিত্র সাবলীল ফুটিয়েছেন। এখন দেখার, ডিকেন্স-এর নভেলে ইংরেজ ভদ্রলোকের ভূমিকায় কেমন অভিনয় করেন।
নায়ক: নতুন ছবিতে দেব পটেল
নীল পাসপোর্ট
সামনের মাসে এই সময়ে ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। ৪০ বছরের সহযাত্রীদের এ বার বিদায়ের পালা। নতুন ব্রিটিশ পাসপোর্ট হবে নীল রঙা। তাতে ইইউ-এর বারোখানা তারা আর থাকবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy