নিজের জীবনকে মেলে ধরেছেন সবার সামনে
তরুণ বাঙালি লেখক-অভিনেতা ঋক সমাদ্দার ব্রিটেনে ‘গার্ডিয়ান’ কাগজের কলামনিস্ট, রিভিউ লেখেন রান্নাঘরে ব্যবহৃত নানান গ্যাজেটের— পিৎজ়া ওভেন, রোটিসেরি থেকে কোকোনাট-কাটার। বছর আটত্রিশের ঋক এ বার প্রকাশ করেছেন তাঁর স্মৃতিকথা ‘আই নেভার সেড আই লাভ ইউ’, ব্যক্তিগত সুখদুঃখের ঝাঁপি উপুড় করে দিয়েছেন তাতে। বইয়ে আছে মানসিক অবসাদ, আত্ম-ক্ষতির প্রবণতা, আত্মহত্যার চিন্তার সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ের কথা, এমনকি যৌন হেনস্থার অভিজ্ঞতাও। বইটা এক অর্থে তাঁর মায়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্যও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বর্মায় ট্রেঞ্চে জন্ম হয়েছিল তাঁর মায়ের। সাবমেরিনে কলকাতায় পালিয়ে এসেছিলেন, পরে ব্রিটেনে চলে আসেন। ঋক যখন ২৭, তাঁর বাবা মারা যান। দারিদ্রের মুখেও হাল ছাড়েননি মা, একটু একটু করে পয়সা জমাতেন ছেলের জন্য। দর্শনের ছাত্র ঋক পরে লন্ডনে পড়াশোনা করেন নাটক নিয়ে, রয়্যাল শেক্সপিয়র কোম্পানির ‘দি ইন্ডিয়ান বয়’ নাটকে অভিনয় করে সুনাম কুড়োন। কিন্তু ভিতরে অবসাদের ঘূর্ণিটা ছিলই। ইংল্যান্ডের এক সমুদ্রতটে বেড়াতে গিয়ে ঋক মাকে খুলে বলেন, তাঁর ছ’বছর বয়সে মায়ের প্রিয় বন্ধুর ছেলে যৌন হেনস্থা করেছিল তাঁকে। বইয়ে সে নিদারুণ অভিজ্ঞতা খোলাখুলি লিখেছেন তিনি। তবে ঋকের সহজাত হাস্যরসও আছে বইয়ে। ঋকের বইয়ের বিমুগ্ধ আলোচনা এখন ব্রিটেনের পত্রপত্রিকা জুড়ে।
মগ্ন: ঋক সমাদ্দার। কাজ করছেন কাবাব তৈরির যন্ত্র নিয়ে
৩৬ হাজার পাউন্ড
বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেল। এ সপ্তাহে তিনি ঘোষণা করলেন, অভিবাসী শ্রমিকরা ভবিষ্যতে বছরে অন্তত ৩৬ হাজার পাউন্ড আয় না করলে তাঁদের ব্রিটেনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না। এতে নাকি ব্রেক্সিট-উত্তর পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা হবে। সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গেল মন্তব্যে: নার্স, জুনিয়র ডাক্তার, শিক্ষক ও অন্য সম্মানজনক পেশার কর্মীরা কেরিয়ারের শুরুতে বার্ষিক মাত্র ২৪-২৬ হাজার পাউন্ড রোজগার করেন, মানে এই পেশাগুলোতে ভারত, চিন, অস্ট্রেলিয়া ও
অন্য দেশের কর্মী নিয়োগ বন্ধ হবে। লেবার পার্টির কৃষ্ণাঙ্গ সাংসদ ডেভিড ল্যামি মনে করিয়ে দিলেন, প্রীতিও সত্তরের দশকে উগান্ডা থেকে আসা অভিবাসী মা-বাবার সন্তান। সেই সময় তাঁদের, বা ওয়েস্ট ইন্ডিজ় থেকে আসা তাঁর নিজের বাবা-মায়ের আয়ও বছরে ৩৬ হাজার পাউন্ড ছিল না! তবু তাঁরা সবাই ব্রিটেনকে ভালবেসেছেন, কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের মতো করে ব্রিটিশ সমাজকে সমৃদ্ধ করেছেন।
কুকি ও কোনি
খুশি: নিজের বই হাতে কোনি হক
ছোটদের জন্য তৈরি বিবিসির ‘ব্লু পিটার’ অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক তিনি, ১৯৯৭-২০০৮ টানা উপস্থাপনা করেছেন। মূলধারার অনুষ্ঠানে উপস্থাপক হিসেবে প্রথম এশীয় মুখও তিনি— ব্রিটিশ বাংলাদেশি কোনি হক। এতই জনপ্রিয় ছিলেন যে বিবিসি এক তথ্যচিত্রের কাজে তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের পাবনায়, তাঁর বাবার গ্রামে। দুই সন্তানের জন্মের পর কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন কোনি। এখন ছোটদের বই ‘কুকি অ্যান্ড দ্য মোস্ট অ্যানয়িং বয় ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ লিখে ফের খবরে তিনি। কুকি হক নামের এক বাংলাদেশি মেয়ের গল্প, যে ব্রিটেনে থাকে, শুধু কুইজ় শো দেখে, স্কুলের বিজ্ঞান প্রোজেক্টে সেরা নম্বর পায়। কোনিরই ছায়া যেন। কেমব্রিজে অর্থনীতির ছাত্র ছিলেন তিনি, ভাল লাগত অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা আর রসায়নও। পরের বইয়ের বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন, কুকি সেখানে বাঁচাবে এই গ্রহটাকেই।
সবাই ভারতীয়
বিক্রম শেঠের বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ সুটেবল বয়’ থেকে ছয় পর্বের সিরিজ় করছে বিবিসি। তারই অভিনেতা-তালিকা ঘোষিত হল। প্রযোজকরা নতুন মুখ খুঁজছিলেন লতা মেহরা চরিত্রে— সেই ছটফটে বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া মেয়েটি, যার জন্য সুপাত্র খুঁজতে মা একেবারে মরিয়া। লতার চরিত্রে অভিনয় করবেন তানিয়া মানিকতালা। রাজনীতিবিদ-পুত্র মান-এর চরিত্রে ঈশান খট্টর, সাইদা বাইয়ের চরিত্রে তব্বু। ১৯৫০-এর দশকের ভারতে এই আখ্যানের শেকড়। বিবিসির এই প্রথম প্রযোজনা, যেখানে সব অভিনেতাই ভারতীয়। উত্তর ভারতের নানা জায়গায় হবে শুটিং। পরিচালনায় ‘দ্য নেমসেক’-খ্যাত মীরা নায়ার, রূপান্তর করেছেন অ্যান্ড্রু ডেভিস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy