সুনসান দুবাই। ছবি: রয়টার্স।
দুবাইয়ে আছি বছর পাঁচেক হয়ে গেল| এখানকার একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থায় কর্মরত। এখানকার লোকজনের নম্র, ভদ্র আচার-ব্যবহার এবং এক অদ্ভুত মিশ্র সংস্কৃতির মেলবন্ধন দেখে আপ্লুত হতাম| এমন ভাবেই দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি হঠাৎই শোনা গেল চিনের উহান প্রদেশে করোনাভাইরাসের যে মৃত্যুলীলা চলছিল তা এখন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে বিশ্বের অনেক দেশে| আমরা ভাবলাম সময় মতো এ দেশের সরকারও নিশ্চয়ই কড়া পদক্ষেপ করবে সংক্রমণ রুখতে| সবাই দিনযাপনের নিয়মিত ছন্দে চলতে থাকলাম| অবশ্য প্রতি দিনের খবর এবং ইন্টারনেটের দৌলতে যে একটু আধটু চিন্তিত হয়ে পড়ছিলাম তা বলাই বাহুল্য| এই শহর তখন অক্টোবর মাসে শুরু হতে চলা এক্সপো ২০২০-র প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। বিশ্বের অন্যতম এই ওয়ার্ল্ড এক্সপো-তে গত বছরের উদ্যেক্তা চিনকে ছাপিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল দুবাই।
মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ আসতেই সারা বিশ্বের পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেল। সমস্ত ইউরোপিয়ান দেশের এমন মর্মান্তিক পরিণতি দেখে নিজেদের ঘরে আটকে রাখতে শুরু করলাম আমরা। কিন্তু বিশ্বে এত কিছু ঘটে চলা সত্ত্বেও এখানকার সরকারের তরফে বিশেষ কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ল না| এর পর একদিন হঠাৎ করে সরকার দু’জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর ঘোষণা করল। সেই থেকে শুরু। ধীরে ধীরে দিনে ১০ জন, এর পর সংখ্যাটা ২০, ৫০, ১০০, ১৫০, ২০০ হতে হতে এখন দিনে প্রায় ৩০০ লোকের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে।
সরকার প্রথমেই এখানকার সমস্ত পাবলিক প্লেসগুলো বন্ধ করে দিল এবং বিভিন্ন জায়গাতে জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করল। লকডাউনের নাম এখানকার সরকার মুখেও আনে না। পাছে তাদের ‘ড্রিম টুরিস্ট ডেস্টিনেশন’-এর খেতাব হাতছাড়া হয়। সরকারি অফিস সবই বন্ধ হল এবং রিমোট ওয়ার্ক শুরু হল। কিন্তু আমজনতার কাজে যাওয়া বন্ধ হল না| এখনও এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে। হাস্যকর ব্যাপার এই যে, জন সমাগম বন্ধ করতে সমস্ত পাবলিক প্লেস অনেক আগে বন্ধ করে দিলেও এখানকার কনস্ট্রাকশন সাইট গুলো এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে (বলা ভালো যেতে হচ্ছে)। যেখানে হাজার হাজার লেবার ক্যাম্প রয়েছে। বহু লোকের সমাগম হচ্ছে প্রত্যেক দিন। এবং একটি টিকিং টাইম বম্ব এর আকার নিয়েছে| এখানকার মানুষ সেল্ফ কোয়রান্টিনের চেষ্টা করলেও সংস্থাগুলো তাঁদের কাজে আস্তে বাধ্য করছে।
সত্যি বলতে পরিস্থিতি একদমই ভাল নয় | এত উন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও লকডাউনের প্রতি তাদের বিরূপ মনোভাব সত্যিই ভাবাচ্ছে প্রতিদিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy