ছবি: সংগৃহীত
কলকাতার দুর্গাপুজোর কার্নিভালকে আমরা বিশ্বের কাছে নিয়ে গিয়েছি। ইউনেস্কো আগামী বছর পুজোকে নিচ্ছে। আরও ভাল, আরও অনেক পুজো আমাদেরকে করতে হবে। যে হেতু লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয় শারদোৎসবের এই পুজো উপলক্ষে। একটুখানি ভেবে দেখুন, আমরা কি পারি না কালী পুজোকে এর অন্তর্ভুক্ত করে নিয়ে শারদোৎসবের একই শামিয়ানা তলে নিয়ে এসে আমাদের বাঙালিয়ানা বজায় রাখতে?
শারদোৎসবের সময়সীমা বৃদ্ধি করে ভাইফোঁটা অবধি করা হোক। অর্থাৎ দুর্গা পুজার উদ্বোধন থেকে শুরু করে ভাইফোঁটা শেষে দুর্গা ও কালীর কার্নিভাল দিয়ে শেষ হোক বাংলা ও বাঙালির প্রাণের উৎসব। গড়ে উঠুক নতুন বঙ্গ সংস্কৃতি। আমরা গড়ে তুলব এক নতুন কর্মসংস্কৃতি, বাড়বে কর্মসংস্থান, ঘুচবে অভাব।
আলোক রায়
কলকাতা-১১০
বিধবা বিবাহ
শেখর ভৌমিকের ‘বেঁচে থাক বিদ্যাসাগর’ (রবিবাসরীয়, ২২-৯) নিবন্ধের প্রেক্ষিতে বলি, কেন এই আন্দোলন সফল হল না, তা নিয়ে সে-কালেও প্রশ্ন উঠেছিল। সমকালীন এক লেখক যোগেন্দ্রনাথ শর্মার মতে, অর্থনীতির প্রবক্তা ম্যালথাসের মত-অনুসারী যুবকরা মনে করতেন, বিধবা বিবাহ প্রচলিত হলে জনসংখ্যার মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটবে। যুবকদের এই ধারণা বিদ্যাসাগরকে পীড়িত করে, তাঁর সমর্থকরাও পিছিয়ে যান। তৎকালীন সোমপ্রকাশ পত্রিকাও শিক্ষিত যুবকদের এই অবস্থান বিষয়ে উদ্বেগ জানায়।
অন্য দিকে শ্রীশচন্দ্র মজুমদার মন্তব্য করেন, বিদ্যাসাগর সংস্কারক, বিপ্লবী নন! সংস্কার করে এ সমাজের হিতসাধন সম্ভব নয়। বিদ্যাসাগর বিধবাদের বিবাহ দিতে অকাতরে অর্থ ব্যয় করেছেন। এর জন্য তিনি ঋণগ্রস্ত হন। অর্থের লোভ দেখিয়ে বিবাহেচ্ছু পাত্র ধার করা আখেরে কোনও কাজে লাগেনি। এ কারণে বিদ্যাসাগরকে শেষ দিকে পাত্রদের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা বা মুচলেকা-পত্র করিয়ে নিতে হয়েছিল। এক দল মানুষ মনে করতেন, ‘‘একের দুইবার বিবাহ দিলে’’ অন্যের এক বারও বিবাহ দেওয়ার পাত্র মেলে না!
বিধবা বিবাহের সঙ্গে সম্পত্তি সংরক্ষণের প্রশ্নটি গভীর ভাবে জড়িয়ে ছিল। বিধবাদের পুনর্বিবাহ আইনের অস্পষ্টতার কারণে, বিধবারা তাঁদের মৃত স্বামীর সম্পত্তি পুনরায় বিবাহের পর অধিকারে রাখতে পারবেন কি না এবং স্ত্রীধন তাঁরই থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। জীবন বজায় রাখার আর্থিক সঙ্গতি না নতুন বিবাহের রোমাঞ্চ— এ দোলাচল ছিলই।
সমাজের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করার মতো সঙ্গতি ক’জন অসহায় নারীর থাকে? আর তখন বিধবা বিবাহ আইন মধ্যশ্রেণির সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রচলিত ব্যবস্থায় কোনও আঘাত করতে পারেনি। বাঙালি মধ্যশ্রেণির জীবন প্রভাবিত ছিল ব্রাহ্মণ্য অনুশাসনে। ব্রাহ্মণরা বুঝিয়েছিল, বিধবা বিবাহ নীচ ও পতিত জাতির কাজ। এ এক ধরনের সামাজিক অধোগতি। আর এ কথা তো ঠিক, বিদ্যাসাগরের বিধবাদের বিবাহদান উদ্যোগ ছিল মূলত বর্ণহিন্দু বিধবাদের জন্যই।
প্রলয় চক্রবর্তী
কলকাতা-১২৪
আমরা পারি না?
ইথিয়োপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের পাওয়া নোবেল শান্তি পুরস্কার আমাদের দৃষ্টিকে পূর্ব আফ্রিকার দিকে ঘুরিয়ে দিল। ভাবলে অবিশ্বাস্য লাগে, মাত্র বছর দেড়েক তিনি এই আসনে। এরই মধ্যে তিনি মিটিয়ে নিয়েছেন লাগোয়া দেশ এরিট্রিয়ার সঙ্গে চলা দুই দশকের শত্রুতা। এর ফলে যুদ্ধের জন্য রাখা জাতীয় বাজেটের ৪% (ইথিয়োপিয়া) আর ৩১% (এরিট্রিয়া) টাকা অনেক ভাল কাজে লাগানো যাবে; রক্ষা পাবে অনেক প্রাণ, রোধ হবে ক্ষয়ক্ষতি।
ছোটবেলা থেকে স্লোগান শুনে আসছি ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’। সীমান্তের ও-পারেও, নিশ্চিত, এই জাতীয় হুঙ্কার ওঠে। ইথিয়োপিয়া পারে, আমরা কেন পারি না? প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ মিটলে, প্রতিরক্ষা খাতে রাখা ভারত ও পাকিস্তানের বাজেটের অনেকটাই খরচ করা যেত স্বাস্থ্য, শিক্ষার উন্নতিকল্পে এবং দারিদ্র দূরীকরণে।
আবি আহমেদও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত রাষ্ট্রনায়ক। ভোটে জেতার, জনগণের আবেগে সুড়সুড়ি দেওয়ার দায় তাঁর বা তাঁর দলেরও নিশ্চয় ছিল। তবুও, আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে, তিনি এই কঠিন কাজটায় সফল হলেন। আর তা করে, শুধু তাঁর দেশবাসীর নয়, আদায় করলেন বিশ্ববাসীর কুর্নিশ। ভারতীয় ও পাক নেতারা একটু ভেবে দেখবেন?
দেবাশিস মিত্র
কলকাতা-৭০
মন্ত্রীর ব্যঙ্গ
নোবেল পুরস্কারজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জনৈক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ব্যঙ্গ করে যা বলেছেন, শুনলে মনে হবে যেন ‘ভাল দিন’-এর ‘গৌরব’-এ উদ্ভাসিত ‘জাতীয়তাবাদী নতুন ভারতবর্ষ’-এ বামপন্থী চিন্তাভাবনা করাটা এক ‘অমার্জনীয় অপরাধ’! মন্ত্রী মহাশয়ের সৌজন্যে আমরা আলোকপ্রাপ্ত হলাম যে, অভিজিৎবাবুর চিন্তাভাবনাকে গ্রহণ করার কোনও প্রয়োজনীয়তা দেশের নেই, কারণ জনগণ তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘ন্যায়’-কে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে— দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্প রূপে কংগ্রেস যা গত লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে তুলে ধরেছিল!
তা হলে অবশেষে আমরা জানতে পারলাম, গত লোকসভা নির্বাচনটা প্রকৃতপক্ষে ‘ন্যায়’-কে কেন্দ্র করে এক গণভোট ছিল মাত্র (‘ব্রেক্সিট’-এর ন্যায়)! আর যে হেতু কংগ্রেস নির্বাচনে পর্যুদস্ত হয়েছিল, তাই আমরা অতি সহজেই এই চূড়ান্ত উপসংহারে উপনীত হতে পারি, অভিজিৎবাবুর অর্থনৈতিক চিন্তাভাবনা একেবারে অন্তঃসারশূন্য! আর তারই সঙ্গে উপলব্ধি করতে পারি, নোবেল কমিটি আদতে কতটাই ‘হতমূর্খ’ যে এই সর্বোচ্চ পুরস্কারটা কিনা তারা এই ‘বস্তাপচা’ বামপন্থী দর্শনের ‘অপদার্থ’ অর্থনীতিবিদটাকে অর্পণ করল!
অন্তিমে মাননীয় মন্ত্রী মহাশয়কে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে, তা হলে ঠিক কোন পথ অবলম্বন করলে ভারতবর্ষ অবশেষে দারিদ্রের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে! পকোড়া বিক্রি করে!
কাজল চট্টোপাধ্যায়
পিয়ারলেস নগর, সোদপুর
নিজের দায়িত্ব
‘শিশুদের ভোট নাই’ (১৮-১০) শীর্ষক সম্পাদকীয়র প্রেক্ষিতে এই পত্র। ভারতে দারিদ্র দূরীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেতারা চেয়ারে বসেন। তার পর সব ভুলে যান। ধনী আরও ধনী হয়, গরিব আরও গরিব। গরিব ঘরের শিশুরা অপুষ্টি অশিক্ষার মধ্য দিয়ে বড় হতে থাকে। বর্তমানে মিড-ডে মিল চালু হওয়ার ফলে বেশ কিছু দরিদ্র শিশু খাবার পায় বটে, কিন্তু সেটা প্রয়োজনের থেকে কম। আমাদের দেশ বয়সের ভারে নত। তাই কাজে শৃঙ্খলা নেই। মানুষের তাই নিজের দায়িত্ব নিজে নেওয়ার সময় এসে গিয়েছে।
রীতা পাল
কলকাতা-২৪
সরকারি ছুটি
জগদ্ধাত্রী পুজোয় সরকারি ছুটি দেওয়া হোক রাজ্যে। নইলে কৃষ্ণনগর এবং চন্দননগরের মানুষদের খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এটাই তাদের কাছে বড় উৎসব। অথচ কোনও ছুটি নেই।
ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy