‘কোমার চিকিৎসা মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র’ (৯-৯) শীর্ষক সংবাদ পড়ে জানতে পারলাম যে সম্প্রতি দিল্লির এক সংস্কৃত বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের ডাক পড়েছে দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে, উদ্দেশ্য কোমায় আক্রান্ত এক রোগীর কানে সাত দিনে সওয়া লক্ষ বার মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র শোনাতে হবে! তাতেই নাকি রোগী সুস্থ হয়ে যাবে— এমনই গবেষণা চলছে রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে অশোক কুমারের তত্ত্বাবধানে! সংবাদটি পড়ে একাধারে বিস্মিত ও চমৎকৃত না হয়ে পারলাম না! ভাবতে অবাক লাগে, একবিংশ শতাব্দীতে মস্তিষ্কের জটিল চিকিৎসা মন্ত্র শ্রবণে! এমনিতেই এ দেশের অধিকাংশ মানুষ আজও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন, জড়িবুটি তাবিজে বিশ্বাসী, সেখানে এ জাতীয় গবেষণার সংবাদ জনমানসে কী বার্তা দেবে? এই গবেষণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তিই বা কী, তা অবশ্য বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা ভাল বলতে পারবেন।
এক জন সাধারণ মানুষ হিসেবে জানতে ইচ্ছা করে এই জাতীয় গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা কি উন্নতির পথে এগোচ্ছি? ২০১৯ সালে আমরা কি নতুন করে ঝাড়ফুঁকে বিশ্বাসী হব? সাপে কাটা, জলে ডোবা রোগীর চিকিৎসার জন্য গুনিন বা ওঝার শরণাপন্ন হব? ভয় হয়, এ ভারতবর্ষ কোন দিকে হাঁটছে?
কুমার শেখর সেনগুপ্ত
কোন্নগর, হুগলি
আপত্তি কেন
2 ‘এই ব্যবস্থার দায় শুধু ওঁদের?’ (৩-৯) শীর্ষক সেমন্তী ঘোষের নিবন্ধ প্রসঙ্গে এই চিঠি। অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নবীকরণ হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে। অসমের বিদেশি সংক্রান্ত মামলার ব্যাপারে অসমিয়াভাষী বিচারক রঞ্জন গগৈয়ের (অধুনা প্রধান বিচারপতি) উপস্থিতির যাঁরা বিরোধিতা করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার হর্ষ মান্দর, যিনি ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি হিসেবে অসমের তথাকথিত সন্দেহভাজন বিদেশিদের রাখার জন্য নির্ধারিত ডিটেনশন ক্যাম্পগুলি প্রত্যক্ষ করেছেন। নিবন্ধে এনআরসি-র নবীকরণ যে শীর্ষ কোর্টের নির্দেশে এবং তদারকিতে হচ্ছে, তার কোনও উল্লেখ নেই।
সিটিজ়েনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিলটি (ক্যাব) আটকে রয়েছে শুধুমাত্র অসমিয়াদের তীব্র বাঙালিবিদ্বেষের দরুন। অসমের বিজেপি নেতৃত্বের চাপে পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিলটি বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছেন। বিলটি সংসদে পাশ করালে অসমিয়া ভাষীরা বিজেপি থেকে দূরে সরে যাবেন নিশ্চিত।
ক্যাব প্রসঙ্গে লেখিকার আপত্তি হল যে এতে শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে তফাত করা হয়েছে। ক্যাব-এ যাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তাঁদের আপত্তি করার মতো বিস্তর অনুষঙ্গ আছে। যেমন প্রস্তাবিত বিলটিতে আছে আবেদনকারীকে প্রথমেই এটা মেনে নিতে হবে যে তিনি এক জন বিদেশি। অসম প্রসঙ্গে বলা যায় যে যাঁদের বিদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে তাঁদের সিংহ ভাগই ভারতীয়। হয়তো কারও কাছে নাগরিকত্বের উপযুক্ত প্রমাণ নেই। অন্যদের প্রমাণ সুকৌশলে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাক হবে না কেন? পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ইসলামি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম। রাষ্ট্রগুলির স্বনির্বাচিত সংজ্ঞা অনুসারেই অমুসলমানরা দেশগুলিতে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। পাকিস্তান থেকে কবে পর্যন্ত আসা অমুসলমানরা তা হলে শরণার্থীর তকমা পাওয়ার যোগ্য? না কি সাতচল্লিশ সালের পরে ভারতে আসা সবাই অনুপ্রবেশকারী?
শুভদীপ চৌধুরী
কলকাতা–৭৫
প্রতিযোগিতা
2 মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার ফলে উপভোক্তারা বেশ সুবিধা পেয়ে আসছেন। কয়েক মাস আগের একটি তথ্যে দেখা যাচ্ছে, যেখানে ভারতে ১ জিবি মোবাইল ডেটার জন্য খরচ পড়ে ০.২৬ ডলার, সেখানে ব্রিটেনে ৬.৬৬ ডলার আর আমেরিকায় ১২.৩৭ ডলার। প্রতি দিনই এই হিসেব পাল্টাচ্ছে, কারণ ওই একই প্রতিযোগিতা, উপভোক্তার সংখ্যা বাড়াতে হবে। মানুষ মোবাইলে দেদার কথা বলছেন। মোবাইল এখন সব সময়ের সাথি। বছর চারেক আগে আরও একটি সংস্থা এই পরিষেবায় এগিয়ে এল, এসেই ম্যাজিকের মতো বছর দুয়েকের মধ্যেই বাজার দখল করে নিল। ফলে পুরনো সংস্থাগুলো বাজার হারাল, আর্থিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকল। পুরনো সংস্থাগুলো উপভোক্তাদের উপর আর্থিক চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল। ন্যূনতম একটা প্যাকেজ, ২৮ দিন অন্তর রিচার্জ করতে হবে, না হলে ২৩ টাকা কেটে নেওয়া হবে। পরে নিয়ম হল রিচার্জ করা ডেটা খরচ না করলে ব্যালান্সে জমা থাকবে না, অর্থাৎ ২৮ দিনের মধ্যেই রিচার্জ করতে হবে। উদ্দেশ্য একটাই উপভোক্তার কাছ থেকে বেশি করে টাকা আদায় করা, তবুও সংস্থাগুলি ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের কবলে পড়ছে। ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণ বেড়েই চলেছে, ব্যাঙ্কে জমা টাকার উপর সুদও কমেই চলেছে আর তার ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গ্রাহকরা। ব্যাঙ্কে সঞ্চিত অর্থের সুদের উপর যাঁরা নির্ভর করেন তাঁদের অবস্থা শোচনীয়। এর পর শুনছি, ৩জি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে, মানে আবার ৪জি একটি মোবাইল সেট কিনতে হবে। ও দিকে ৫জি কড়া নাড়ছে। এই রকেট উন্নতির সঙ্গে সাধারণ মানুষ এঁটে উঠতে পারবেন? অথচ মোবাইল না থাকলে খুবই অসুবিধা, সব জায়গায় মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। এত কিছুর পরও পুরনো সংস্থাগুলোর আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হলে বা এক এক করে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গেলে, ইতিমধ্যে কয়েকটি সংস্থার ঝাঁপ বন্ধও হয়ে গিয়েছে, নতুন সংস্থার সামনে কোনও প্রতিযোগীই থাকবে না, তখন বাজার অর্থনীতির ভূমিকা কী হবে?
অসিত কুমার রায়
ভদ্রেশ্বর, হুগলি
পালাগান
2 ‘রামায়ণ গান’ (১-৯) ও ‘আগেই ছিল’ (১৮-৭) চিঠি দুটো ছোটবেলার কিছু স্মৃতি মনে করিয়ে দিল। শুধু রাঢ় বাংলায় নয়— রামায়ণ গান হত গঙ্গা-ব্রহ্মাপুত্রের বদ্বীপাঞ্চলের ভাটির দিকে। ২৪ পরগনা (তখনও দু’ভাগ হয়নি), নদিয়া, ফরিদপুর, খুলনার বিস্তীর্ণাঞ্চলে। এ ছাড়াও দেখেছি হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও দিনাজপুরে। ‘রামায়ণ গান’ অনেকে মানত করে দিত, অনেকে এমনিই দিত। তবে হ্যাঁ, কারও (মাঝ বয়সের বেশি) মৃত্যু হলে ‘নিয়ম ভঙ্গ’ (বা ‘খরোজ’)-এর দিন উঠোনে ‘বাদাম’ (‘তাঁবু’ বা ‘শামিয়ানা’ ঠিক নয়) খাটিয়ে দুপুরের দিকে চলত এ পালাগান। মূল গায়কের মাথায় থাকত একটু লম্বা ফোলা ফোলা চুল, আর হাতে থাকত কালো রঙের ‘হনুমানের ল্যাজ’ (‘চামর’)। প্রায় সব ‘পালা’তেই ‘ফিত্তি’ নেওয়া হত। ‘ফিত্তি’ হল সাদা বাংলায় ‘টাকা তোলা’। যে পালাই হোক না কেন গায়করা তার মধ্যে ‘যেন তেন প্রকারেণ’ দর্শকশ্রোতাদের থেকে ‘খরোজ’-এর খরচা বাবদ কিছু ‘খরচ’ তোলার ব্যবস্থা করে নিতেন। পালার ফাঁকে মূল গায়ক হাতে থালা নিয়ে ঘুরতেন। ‘পয়সা’ই বেশি পড়ত। কেউ ‘নোট’ দিলে তাঁর থেকে নাম-ধাম জেনে নিয়ে জোরে জোরে বলা হত।
কল্লোল সরকার
বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগনা
দুর্ভোগ
2 প্রায় এক মাস হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনে বহু ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাত্রিসাধারণকে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক বারই সময় বাড়াচ্ছেন। এই ভাবে কত দিন যাতায়াত করতে হবে কারও জানা নেই। টিকিট কেটে তিন চার ঘণ্টার পর ট্রেন পাওয়া যাচ্ছে। ট্রেন যখন আসছে, বয়স্ক যাত্রীরা উঠতেই পারছেন না।
শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-১১৪ কলকাতা
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy