সম্পাদকীয় ‘পথ-প্রদর্শক’ (৫-৯) পড়ে জানতে পারলাম, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং পুনর্ব্যবহারের অভিনব পদক্ষেপ করেছেন হাওড়া স্টেশন কর্তৃপক্ষ। স্টেশনের ২৩টি প্ল্যাটফর্ম এবং তার মূল ভবনের বিরাট ছাদ বৃষ্টির জল ধরে রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর একাংশ আবার সংলগ্ন জলাধারের সাহায্যে ভূগর্ভে ফেরত পাঠানো হচ্ছে জলস্তর রক্ষার লক্ষ্যে। বাকি জল শোধন করে তা সারা বছর ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন সাফাইয়ের কাজে। হাওড়া স্টেশন কর্তৃপক্ষের এই কাজ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
এই দৃষ্টান্ত সামনে রেখে যদি আমাদের রাজ্যের পুরসভাগুলিও একই পথ অনুসরণ করত, তা হলে তা পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারত। সংবাদে প্রকাশ, ‘ন্যাশনাল কমপাইলেশন অন ডাইনামিক গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্সেস ইন্ডিয়া ২০২৩’-র রিপোর্ট বলছে, রাজ্যের ভূগর্ভের জল ভান্ডারের সঙ্কটের বড় কারণ হল, রাজ্যের বহু ছোটখাটো নদীর হারিয়ে যাওয়া ও পুকুর-জলাশয় বুজিয়ে ফেলা। রাজ্যের বহু জেলায় যে সব নদনদী ছিল, তাদের অনেকগুলিই এখন হারিয়ে গিয়েছে। লোকালয়ের পুকুর-জলাশয়ের অবস্থাও একই রকম। ছোট ছোট শহরে বড় বড় আবাসন-ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে, কিন্তু সেখানে বৃষ্টির জল ধরে রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। গঙ্গার আশেপাশের পুরসভাগুলিতে গঙ্গা থেকে জল তুলে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর ফলে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে তা উলুবেড়িয়া পুরসভার উদাহরণ দিলেই বোঝা যায়। এ বছর সেখানে গ্রীষ্মকালে সরবরাহ করা জলে নোনতা ভাব পাওয়া গেছে। ভূপৃষ্ঠ থেকে সুমিষ্ট জল পাওয়ার অন্যতম উপায় হল বৃষ্টির জল সংরক্ষণ। কিন্তু পিচ ও কংক্রিট দ্বারা শহর ও শহরতলির অধিকাংশ রাস্তা ঢেকে যাওয়ায় বৃষ্টির জল সরাসরি মাটিতে প্রবেশে বাধা পাচ্ছে। এ বছর মার্চ মাসে বেঙ্গালুরু শহরে যে অভূতপূর্ব জল সঙ্কট দেখা দিয়েছিল, তা-ও ছোট ছোট জলাশয় বুজিয়ে ফেলা এবং শহরের ভৃপৃষ্ঠের ৮৫% জায়গা কংক্রিট বা পিচ দিয়ে মুড়ে দেওয়ার কারণে হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। অবশ্য এ রাজ্যে যেখানে উন্নয়ন বলতে অসংখ্য বৃক্ষ নিধন করে ঝাঁ-চকচকে বড় রাস্তা, উড়ালপুল, বড় বড় শপিং মল নির্মাণকেই বোঝা হয়, সেখানে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজকে আমরা যে অবহেলা করব, সেটাই তো স্বাভাবিক। চার পাশের জলসঙ্কটের দৃষ্টান্ত দেখেও আমাদের বোধোদয় না হলে বিপদ আমাদেরই।
প্রশান্ত দাস, অনন্তপুর, হুগলি
ভুলে না যাই
সিদ্ধিদাতা গণেশকে দিয়ে উৎসব শুরু হল। অবাঙালির কুলুঙ্গি ছেড়ে তিনি পাড়ার প্যান্ডেলে অতিসমারোহে নেমে এসেছেন মাত্র ক’বছর হল। এর পর বিশ্বকর্মা পুজো। এক সময় তো ‘বাবু কালচার’-এ রীতিমতো জাঁকিয়ে ঘুড়ির লড়াই চলত। টাকা উড়ত। ক্ষমতার দম্ভ আস্ফালন করত। এ বারেও ঢাক-মাইক বাজবে। আমাদের গলার স্বর ক্ষীণ হতে থাকবে। তার পর দুর্গাপুজো এলে ঢাক, কাঁসর, ডিজে বক্স আরও উদ্দাম হবে। আর আমরা তখনও চিৎকার করে যাব, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। ভয় করছে, এই জন্যই অপেক্ষা চলছে না তো? যাতে আমাদের গলার স্বর ক্রমশ ক্ষীণ হতে হতে এক সময় আর না শোনা যায়। কিছু মানুষের মুখে শোনা যাবে, “পুজো তো বচ্ছরকার। ছেলেপুলে নিয়ে সংসার। ওদের কি বাধা দেওয়া যায়?” যায় না। কারণ যেখানে রাষ্ট্র অন্যায়কে জেনে, বুঝে দেখেও এড়িয়ে যায়, সেখানে কে কাকে বাধা দেবে? নতুন শাড়ির খসখস, নতুন জামার গন্ধ, নবমীর মেনু ভুলিয়ে দেবে না তো সেই অভাগী মেয়েটার কথা? যার দু’চোখ জুড়ে বড় ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সে-ও তো এ বছর অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে পারত। কিন্তু সে পারেনি।
তবে সে জীবিত থাকতে রাষ্ট্র তাকে যত না ভয় পেয়েছে, তার থেকে বেশি ভয় পাচ্ছে মৃত অবস্থায়। তাই তাকে তড়িঘড়ি দাহ করা। কপাল গুণে আমি-আপনি, সেই মেয়ের বাবা-মা নই। কিন্তু আগামী দিন যদি থাকে আমাদের পালা? তখন কী হবে? তখনও কি এমন ভাবেই উৎসবের বাদ্যিতে চাপা পড়ে যাবে আমাদের স্বর? আশা রাখি, সন্ধিপুজোর একশো আটটা প্রদীপের আলো মশাল হয়ে জ্বলে উঠবে। প্রতি মণ্ডপে প্রতিমার মুখের দিকে তাকালে ভেসে উঠবে সেই মেয়ের মুখ। পিছনে চাঁদমালার বদলে লেখা থাকবে, ‘আমরা বিচার চাই’। আর সব কিছুকে ছাপিয়ে শোনা যাবে মেয়েদের চিৎকার, এ রাত আমাদের। কাল রাত আমাদের। সব রাত আমাদের। সমুদ্র গর্জনের মতো বার বার দেশ-বিদেশে সর্বত্র আছড়ে পড়বে, ‘বিচার চাই, বিচার চাই।’
তন্বী হালদার, বারাসত, উত্তর ২৪ পরগনা
ধামাচাপা?
প্রায় তিন মাস আগে যত্রতত্র হকার-রাজের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হঠাৎ সরব হয়ে ওঠেন। সেই সময় প্রায় সপ্তাহখানেক সময় ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হকার উচ্ছেদ অভিযান চলেছিল। এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ ও উষ্মা উভয়ই প্রশমিত হয়। তখন তিনি হকার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে হকার সমীক্ষা অভিযান শুরু করেন। কথা ছিল, ওই কমিটি মূলত কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থানে হকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে ও তার অভিজ্ঞতার কথা এক মাস পরে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবে। অথচ, আজও আমরা জানতে পারলাম না যে মুখ্যমন্ত্রী কমিটির রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত হয়েছেন কি না। যদি হয়ে থাকেন, তা হলে তাঁর পরবর্তী চিন্তাভাবনা কী? আর যদি না হয়ে থাকেন, তবে কবে রিপোর্ট সম্পর্কে অবহিত হবেন?
দু’-একটি জায়গা ছাড়া কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যের হকার যন্ত্রণা একই রকম রয়ে গিয়েছে। এই তিন মাসে রাজ্য, দেশ ও বিশ্ব জুড়ে অন্য এমন অনেক ঘটনা ঘটে গিয়েছে, যেগুলির সুবাদে এই দৈনন্দিন পথযন্ত্রণা থেকে আমাদের নজর ঘুরে গিয়েছে অন্য দিকে। আর ঠিক এই সুযোগটাই নিচ্ছে প্রশাসন। প্রশাসনের কাছে তাই প্রশ্ন, জনগণের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে হকার সমস্যা কি তবে কিছু বছরের জন্য ধামাচাপা পড়ে গেল?
ইন্দ্রনীল ঘোষ, লিলুয়া, হাওড়া
ট্রেন চাই
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটের ডাউন বারুইপুর লোকাল ছেড়ে যাওয়ার পরে এখান থেকে পরবর্তী ডাউন বারুইপুর লোকাল ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে। মাঝে আর কোনও ডাউন ট্রেন নেই। উক্ত সময়ের আগে ও পরে শিয়ালদহ বারুইপুর শাখায় ডাউন নামখানা লোকাল ও ডাউন ডায়মন্ড হারবার লোকাল আছে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে এই দুই ট্রেনে কোনও রকমে ওঠা গেলেও, প্রচণ্ড ভিড় হওয়ার কারণে পরবর্তী স্টেশনগুলি থেকে ট্রেনে ওঠা কার্যত অসম্ভব। সুতরাং, রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, উপরোক্ত ডাউন বারুইপুর লোকাল দু’টির মাঝে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে অবিলম্বে আর একটি ডাউন বারুইপুর লোকাল চালু করা হোক।
শান্ত দে, সুভাষগ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
উপদেশ শুধু?
সংবাদে পড়েছিলাম, ব্যাঙ্কের নাম করে কেওয়াইসি আপডেটের নামে ফ্রড কল এলে, ১৯৩০-এ ফোন করে নম্বরটা জানিয়ে দিলে সাইবার সেল সেই নম্বরটা আটকে দেবে। এ ভাবেই নাকি দুষ্কর্ম খানিকটা রোধ করা গিয়েছে। সম্প্রতি এমন একটা ফোন পাওয়ার পর ১৯৩০-এ রিং করে উপদেশ পেলাম— নম্বরটা ব্লক করে দিন। আর লোকাল সাইবার থানায় অভিযোগ করুন। সেই ফ্রড কলের নম্বরটাও নেওয়া হল না। সাইবার সেল টোল ফ্রি নম্বরটার কাজ কি কেবল এইটুকু গাইড করা?
অজয় চৌধুরী, রাজারহাট-১৩৫
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy