—ফাইল চিত্র।
‘পালাবার পথ নেই’ (১-৯) শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধটিতে পাতাল রেলের সার্বিক অব্যবস্থার পাশাপাশি মহিলা নিত্যযাত্রীদের মনের কথা সঠিক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বাস্তবিকই কলকাতার গর্বের মেট্রোর হাল হকিকত ‘বিরাট সংসার ভারাক্রান্ত রুগ্ণ বৃদ্ধের মতো। ধুঁকতে ধুঁকতে এই রাবণের গুষ্টি সে আর টানতে পারছে না। মহানায়ক ছাড়িয়ে নেতাজি, ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন, গীতাঞ্জলি, কবি সুভাষ পর্যন্ত যাত্রাপথ যত প্রসারিত হয়েছে, পাল্লা দিয়ে কমেছে যাত্রিপরিষেবার মান। পরিকাঠামো দিন দিন লজ্ঝড়ে হয়ে পড়ছে। স্মার্ট গেট আন-স্মার্ট হয়ে পড়া, রক্ষণাবেক্ষণের নামে চলমান সিঁড়ি বিকল হয়ে থাকা, রেকের রুগ্ণতা, দরজা খোলা বন্ধের খামখেয়াল, দুর্বোধ্য পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম ও নিয়মানুবর্তিতার কৌলীন্য হারিয়ে পাতাল রেল মর্তের শহরতলির রেকের সঙ্গে একাসনে বসেছে। এই অধোগমনে সবচাইতে বেশি অসুবিধার সন্মুখীন হচ্ছেন মহিলা ও প্রবীণ যাত্রীরা।
ভিড় ঠাসা কামরায় সহ-পুরুষ যাত্রীদের একাংশের অভব্যতার শিকার হয়ে চলেছেন সব বয়সি মেয়েরা। মহিলা সংরক্ষিত আসনের সামনে, দরজার প্রান্তে এয়ার ইন্ডিয়ার ‘মহারাজ’ লোগোর পোজ়ে কানে ছিপি গুঁজে তাঁরা দাঁড়িয়ে পড়ছেন। অনুনয়, অনুরোধে তাঁরা বধির থাকছেন, কড়া কথায় সমবেত প্রত্যাঘাত আসছে সংখ্যা গরিষ্ঠতার পক্ষ থেকে। নিঃসন্দেহে ট্রেন বাতিলের জেরে ভিড় বাড়ায় ওই শ্রেণির যাত্রীদের প্রশংসা পাচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
গুড টাচ-ব্যাড টাচ ফলিত শিক্ষা লাভের জন্য সব বয়সি মহিলা যাত্রীদের জন্য পাতাল পরীক্ষা প্রার্থনীয়!
সীমা দাস
চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
মেধাবী কারা
‘নিচু পদই সই, প্রার্থী মেধাবীরা’ (১২-৯) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে কিছু কথা বলার তাগিদ অনুভব করছি। প্রথমত ‘মেধাবী’ যদি ইংরেজির ‘ট্যালেন্ট’ শব্দটির পরিভাষা হয়, তা হলে শতকরা ৯৮ শতাংশ নম্বর পাওয়া ছেলেমেয়েদেরও মেধাবীর স্বীকৃতি দেওয়া যায় কি? কারণ মেধা ছাত্রছাত্রীদের গুণগত এমন এক উৎকর্ষ, যা কিনা অনেকটা জন্মগত। পৃথিবীর কোনও প্রকাশনার বই পড়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এর মাপকাঠি তৈরি হয় না। ইতিহাস, বাংলা, অঙ্কতে ১০০-তে ১০০ পেলেও নয়। তাই বোর্ড বা ইউনিভার্সিটির পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর কম থাকলেও এক জন ছাত্রের মেধা কিন্তু নির্ধারিত হয় অন্য যুক্তিতে। কিছু দিন আগেও আমাদের রাজ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৫০ শতাংশ নম্বর না থাকলেও জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসার অনুমোদন ছিল। সেটি অবশ্য রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলির ব্যবসা বৃদ্ধির জন্যে। সম্ভবত ২০১১ সালে নিয়মটি বদলেছে। এ রাজ্যে এক বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার প্রবণতা এবং অনেকটা সেই কারণে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের র্যাঙ্ক (!) ৯৯০০০ হলেও তারা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্য ছিল, আজও আছে। তবুও ‘র্যাঙ্ক’ কথাটির অবলুপ্তি ঘটেনি। তাই ‘মেধাবী’ শব্দটি এদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আমার জানা বহু গবেষক এবং শিক্ষাবিদ রয়েছেন যাঁদের উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৭০ শতাংশ বা তারও কম। তাঁরা যে মেধাবী, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। তাঁদেরকে কখনও তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর নিয়ে আফসোস করতে শুনিনি। আমার বেশ মনে পড়ে, আমাদেরই ক্লাসের সহপাঠী আমাদের কয়েক জনকে বিশেষ কয়েকটি বিষয় অবলীলাক্রমে পড়িয়ে দিত। পরীক্ষায় আমরা বেশি নম্বর পেলেও আমরা কিন্তু তাকেই মেধাবী বলতাম।
দ্বিতীয়ত, চাকরির বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্যে পদটি উপযুক্ত। ‘ফেসিলিটি ম্যানেজার’ পদটি কখনওই বি টেক, এম এসসি বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে সাযুজ্য নয়। আর পদটি কোনও ভাবেই ‘নিচু পদ’ নয়। যে রাজ্যে এখনও ২০ টাকায় পেটভরে খাওয়া যায়, সেখানে ২৫০০০ টাকা মাসিক বেতন নিতান্ত কম বলা যায় না। আর ‘ফেসিলিটি ম্যানেজার’ যদি এ রাজ্যের নিচু পদ হয়, তা হলে উঁচু পদ কোনগুলি?
পিনাকী রুদ্র
অধিকর্তা, অনুমোদিত কেন্দ্র, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, কলকাতা-১২৪
নাগরিকত্বের নথি
দ্রুত পাসপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্যে এ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাসপোর্ট মেলার আয়োজন করেছে বিদেশ মন্ত্রক, খবরে প্রকাশ। ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড প্রভৃতি নাগরিকত্বের প্রমাণস্বরূপ যত রকমের কার্ড আছে, পাসপোর্ট
সম্পূর্ণ এক ভিন্ন ধরনের কোনও নাগরিকের নাগরিকত্বের প্রমাণের এক অনন্য কার্ড। অন্যান্য কার্ড যত সহজে মেলে পাসপোর্ট কিন্তু তা কখনওই নয়। পাসপোর্ট হাতে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায় যদি জন্মের জায়গা, জন্মের তারিখ, পারিবারিক বিবরণ ও আবেদনকারীর পেশা ও পাকাপাকি ভাবে বসবাসগত বিবরণী নির্ভুল ও ঠিক ভাবে না দেওয়া হয়, কারণ তার ফলে পুলিশ ভেরিফিকেশন অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। যদি ধরে নেওয়া হয়, অনুপ্রবেশকারীরা মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে অর্থের বিনিময়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি করতে পারে, তা হলে তো নাগরিকত্বের প্রমাণের কোনও তথ্যই আসল বলে ধরা যাবে না, যখন সমস্ত তথ্যই জাল করা যায়। অসমে এনআরসি-র ফাইনাল তালিকায় এমনও দেখা গিয়েছে বসবাসের জমির দলিল, স্কুল-কলেজের সার্টিফিকেট, ভোটাধিকারের প্রমাণ— কোনও নথিই নাগরিকত্ব প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য করা হয়নি। তা হলে এত কাঠখড় পুড়িয়ে যখন পাসপোর্ট মেলে, তখন পাসপোর্টকে নাগরিকত্বের প্রমাণস্বরূপ অনবদ্য এক নথি হিসেবে মেনে নিতে নিশ্চয়ই কারও কোনও আপত্তি ও অসুবিধা থাকবার কথা নয়? এর জন্য এ দেশে বসবাসকারীর মেয়াদকে অন্যায্য ভাবে কেন ১৯৭১-এর ১৪ মার্চের আগে থেকে ধরা হবে? এই সময়ের আগে এলে ভারতীয় নাগরিক, আর পরে এলে এ দেশে অনুপ্রবেশকারী— অনুপ্রবেশকারীর তকমা কি এ ভাবে দেওয়া যায়?
তাপস সাহা
শেওড়াফুলি, হুগলি
ভূগর্ভে সতর্ক
সোদপুরের ভূগর্ভ পথ নিঃসেন্দহে রেলদুর্ঘটনার সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে এনেছে। সুবিধা হয়েছে যাতায়াতের। কিন্তু সামনে পুজো, কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে ভিড়ের চাপে ওই সঙ্কীর্ণ পথে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে।
শতদল দেব
কলকাতা-১১২
ডিন বাছাই
‘কলা বিভাগের ডিন বাছাই ঘিরে ঘোর বিতর্ক কলকাতায়’ (১৪-৯) সংবাদ প্রতিবেদনটিতে আমার নাম জড়িত। আমার সম্পর্কে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, সেখানে আমাকে একটি বিশেষ রাজনৈতিক রং দেওয়া হয়েছে, অথচ সাংবাদিক আমার সঙ্গে একটিও কথা বলেননি, এটা সাংবাদিকতার প্রাথমিক নিয়ম লঙ্ঘন করে।
আমি নিজেকে সম্পূর্ণ ‘অ-রাজনৈতিক’ মানুষ বলে মনে করি। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে কোনও দল বা মতের সভায় উপস্থিত থাকার বা যে কোনও মতের অনুসারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের (শিক্ষাজগতের বা রাজনৈতিক জগতের) কথা শোনার সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে।
কোনও বিশেষ গোষ্ঠীর বক্তব্য অনুসরণ করে আমার সম্পর্কে এমন একটি সম্মানহানিকর প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
লিপি ঘোষ
ডিন (কার্যনির্বাহী) কলা বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিবেদকের উত্তর: যে বিষয় নিয়ে খবরটি লেখা হয়েছিল, সেটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন বাছাইয়ে বেনিয়ম। বেআইনি ভাবে এই বাছাই হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যকে ফোন এবং মেসেজ করেও কথা বলা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy