বিজ্ঞানীরা রোগের আবিষ্কার যেমন করতে পারেন, নিরাময়ও তাঁরাই করার ক্ষমতা রাখেন। প্রতীকী ছবি।
স্থবির দাশগুপ্তের প্রবন্ধ ‘শুধু আতঙ্ক জিইয়ে রাখা’ (১৪-১) আমাকে যুগপৎ বিস্মিত ও আহত করেছে। উক্ত প্রবন্ধের বিষয় কোভিড-১৯, আর লেখকের মুখ্য অভিযোগ যে, বিজ্ঞানীরা ব্যস্ত ব্যাধি আবিষ্কারে, যেখানে গুরুত্ব বেশি দেওয়া উচিত ব্যাধি নিবারণে। কোভিড প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা নাকি একটা আতঙ্ক জিইয়ে রাখছেন। প্রথম কথা হল, এই ধারণাটি, যে— বিজ্ঞানীদের বেশি প্রয়োজন রোগের নিবারণে মনোযোগ দেওয়া, রোগের আবিষ্কারে নয়, এটি একেবারেই ভুল কথা। আমাদের দেশ যখন স্বাধীন হয়, সেই ১৯৪৭ সালে আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল মোটামুটি ৩২ বছর। আজ সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সত্তরে। এই যে মানুষ বেশি দিন বেঁচে থাকছেন, বেশি দিন সুস্থ থাকছেন, সেটার কারণ শুধুমাত্র উন্নত মানের ওষুধ আবিষ্কার নয়। কারণ, আমাদের বিজ্ঞানীরা এখন বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে অনেক বেশি জানেন। এই জানা থেকেই আসে অনেক বেশি ওষুধের আবিষ্কার, শুধুমাত্র ধনী দেশের ধনী মানুষদের জন্য নয়, ছাপোষা মানুষদের জন্যও। রোগ আবিষ্কার আর রোগের নিরাময়, দুটো ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত। রোগটা না বুঝে, তাকে নিরাময় করতে গেলে গড়িয়াহাটের ভিড়ে চোখ বেঁধে হাঁটা হয়ে যাবে। আর এই দীর্ঘতর আয়ু, মোটামুটি ভাল ভাবে বেঁচে থাকার পিছনে অনেক বিজ্ঞানীর হাড়ভাঙা পরিশ্রম আছে। ‘আবিষ্কার’ ব্যাপারটি করেন বিজ্ঞানীরাই, তা সে জীবনদায়ী ওষুধই হোক কি হাইড্রোজেন বোমা। কিন্তু কোন আবিষ্কার কোন কাজে লাগছে, সেটা ঠিক করেন প্রশাসকেরা। আমাদের সমাজ যত তাড়াতাড়ি এটা বুঝতে পারবে, ততই মঙ্গল। আলোচ্য লেখাটি যেন সেই উদ্দেশ্যের উল্টোপথে যাওয়া।
এ বার বিশেষ ভাবে কোভিড-১৯’এর প্রসঙ্গে আসা যাক। ২০১৯ সালে আমরা যখন এই নামটা শুনলাম, তখন এটার ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। দেশ-বিদেশের তাবড় বিজ্ঞানী এবং ভাইরাস বিশেষজ্ঞরাও খুব বেশি কিছু বলতে পারছিলেন না। এ রোগ কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ে, শরীরের কোন কোন প্রোটিন কী ভাবে এ রোগ ছড়াতে কার্যকর ভূমিকা নেয়, কোন প্রোটিনকে ঠিক করে পাকড়াও করলে একটা ওষুধ বা একটা ভ্যাকসিন বেরোতে পারে, অজানা ছিল সব কিছুই। তার দেড় বছরের মাথায় যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত ভ্যাকসিন আবিষ্কার। এবং তার কৃতিত্ব বিজ্ঞানীদেরই। এমনকি উপরের অজানা প্রশ্নগুলির প্রায় সব ক’টারই উত্তর অনেকাংশে বিজ্ঞানীরাই বার করেছেন। শুধু তা-ই নয়, একাধিক ভ্যাকসিনও তৈরি করা গিয়েছে। তাই আজ যখন কোভিড অতিমারি থেকে দীর্ঘমেয়াদি রোগ হয়ে উঠছে, তখন এই ‘আতঙ্কতত্ত্ব’ নতুন করে সাধারণ পাঠকের সামনে তুলে আনা নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক এবং অনৈতিক। এটা হয়তো তর্কসাপেক্ষ যে, সকলকে সংক্রমিত করে টিকাকরণ কতটা গ্রহণযোগ্য, কতটাই বা সম্ভব। কিন্তু এ সব তর্কের মীমাংসা বিজ্ঞানীরাই করতে পারবেন।
মোদ্দা কথা হল, বিজ্ঞানীরা রোগের আবিষ্কার যেমন করতে পারেন, নিরাময়ও তাঁরাই করার ক্ষমতা রাখেন। বিজ্ঞানীর কাজ ভয় দেখানো নয়, ভয়কে খুঁজে বার করে তাকে দূর করা। বিজ্ঞানীর কাজ যতটা সম্ভব সত্যি কথাটা বলা, তা সে সত্যি যতই কটু হোক। কখনও কখনও শুনেছি যে, অনেক চিকিৎসকও নাকি রোগের ভয় দেখান। সে সব ভয় দেখানো তাঁদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য, জনগণকে মূর্খ রেখে নিজেদের কর্তৃত্ব ও পাণ্ডিত্য জাহির করার জন্য। তাঁদের কাজের দায় বিজ্ঞানীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া ঘোরতর অন্যায়।
অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-১০৭
ভ্রান্ত লক্ষ্য
‘শুধু আতঙ্ক জিইয়ে রাখা’ শীর্ষক প্রবন্ধে স্থবির দাশগুপ্ত মনে করিয়েছেন, জনস্বাস্থ্য শুধুই বিজ্ঞান নয়, শুধুই তথ্য নয়, তা হল এক মানব-হিতকর কাণ্ডজ্ঞান। এখন জনস্বাস্থ্যের নামেই মানুষকে অবরুদ্ধ করা হচ্ছে। তাই জনস্বাস্থ্যই প্রতিবাদেরও হাতিয়ার হওয়া দরকার। জনস্বাস্থ্য শুধুই রাষ্ট্র, বা তার সরকার, অথবা বিশেষজ্ঞদের বিষয় হতে পারে না। জনগণ ও তাঁদের যাপন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ইত্যাদিও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
স্বাস্থ্যের নামে জনসাধারণকে নজরবন্দি করার প্রয়াস যে অশান্তি তৈরি করে, তা আর যা-ই হোক, জনস্বাস্থ্য নয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আমাদের জানিয়েছিল, আমার শরীরের উপর আমার নিজেরই অধিকার, কোনও অজুহাতেই সেই অধিকার লঙ্ঘন করা যায় না। কিন্তু এখন এক বিপরীত বয়ান তৈরি হচ্ছে। যেখানে বলা হচ্ছে যে, বৃহত্তর সমাজের স্বার্থের কাছে ব্যক্তিস্বার্থ ‘ক্ষুদ্র’ বলে তুলনীয় নয়। খেয়াল করা উচিত, ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’-র নতুন নাম হল ‘ব্যক্তিস্বার্থ’।
কিন্তু প্রশ্ন হল, কোনও বিশেষ নীতির ফলে যখন সমগ্র লোকসমাজই বিপর্যস্ত হয়, তখন ব্যক্তি আগে, না কি সমাজ— এ প্রশ্ন অবান্তর হয়ে যায়। শুধু লোকসমাজই না, তাকে ঘিরে প্রাণিজগৎ, উদ্ভিদজগৎ, আবহাওয়া এবং সমগ্র প্রতিবেশই এখন বিপন্ন। এই বিপন্নতায় লোকস্বার্থ সমৃদ্ধ হয় না, ক্ষুণ্ণ হয়। মানুষের সমাজে বিবিধ ব্যাধির ঝুঁকি বহুল পরিমাণে হয়তো কমানো সম্ভব ঠিকই, কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট ব্যাধিকে ‘নির্মূল’ করার ইচ্ছা জীববিজ্ঞানের বনিয়াদি সূত্রকে অগ্রাহ্য করে। জোর করে ব্যাধিকে নির্মূল করতে গিয়ে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বাড়ে।
উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-৭৪
তিন তারকা
‘লিভারপুলের ড্র, আর্সেনাল পরীক্ষা টেন হ্যাগের’ (২২-১) শীর্ষক প্রতিবেদনে একটি ভুল খবর পরিবেশন করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, “তারই সঙ্গে ম্লান ছিলেন দলের তিন অভিজ্ঞ তারকা রবার্তো ফির্মিনহো, লুইস দিয়াজ় এবং দিয়েগো জোটা।” এই প্রসঙ্গে জানাই যে, এই তিন তারকা চোটের কারণে বহু দিন ধরে লিভারপুলের হয়ে খেলতে পারছেন না। সে জন্য দলের এ বছর খুবই খারাপ অবস্থা।
শামসুল হক চৌধুরী, কলকাতা-৮৪
প্রশ্নে ভুল
প্রশ্নপত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’ নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে, যা অত্যন্ত স্বাভাবিক। এই সংক্রান্ত একটি খবরে “স্কুলে টেস্টের প্রশ্নে কেন ‘আজাদ কাশ্মীর’, বিতর্ক” (১৮-১) দেখলাম, সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, “বইয়ের প্রতিটি লাইন দেখা কি সম্ভব?” বইয়ের অনুমোদন দায়িত্বশীলতার সঙ্গেই করা প্রয়োজন, বিশেষ করে তা যখন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তোলে। এই প্রসঙ্গে জানতে ইচ্ছা করে, স্কুলগুলিতে পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র কি মডারেশন-এর মাধ্যমে চূড়ান্ত হয় না? সেখানে কেন এই মারাত্মক ভুলটি কারও নজরে পড়ে সংশোধিত হল না? এর জবাবদিহির দায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেন না।
সুমিতা চক্রবর্তী, কলকাতা-৬৭
কার ফোন
যিনি ফোন করছেন, তাঁর নাম মোবাইলের পর্দায় ভেসে উঠবে— গ্রাহকদের এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য টেলিকম শিল্পমহলকে প্রস্তাব দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক ট্রাই। ট্রাই-এর এই উদ্যোগ জরুরি। বর্তমানে আমরা একটি অ্যাপ-এর মাধ্যমে কে ফোন করেছে তার নাম (নাম সেভ করা না থাকলেও) জানতে পারি। রিংটোন বাজার পরে অপরিচিত কোনও নাম পর্দায় ভেসে উঠলে সাধারণত ফোন ধরি না। কোনও ক্ষেত্রে ‘স্প্যাম’ শব্দটি ভেসে উঠলে বোঝা যায় সেটি অপ্রয়োজনীয় ফোন। ফোনের মাধ্যমে বহু মানুষ ব্যাঙ্কিং তথ্য দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। সুতরাং, টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সিওএআই-এর কাছে অনুরোধ, ট্রাইয়ের প্রস্তাবটিকে ভেবে দেখা হোক।
সমীর ভট্টাচার্য, কালীনারায়ণপুর, নদিয়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy