Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Politics

সম্পাদক সমীপেষু: নতুন কৌশল

সবার আগে মানুষের মনের মধ্যে বিভেদ দূর করা প্রয়োজন, অকারণে বিভেদের রাজনীতি আমাদেরকে আরও পিছিয়ে দিচ্ছে।

ভারতীয় রাজনীতিতে ভোট বড় বালাই।

ভারতীয় রাজনীতিতে ভোট বড় বালাই। ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৪:৫৭
Share: Save:

শুভজিৎ বাগচীর ‘আমাদেরই লোক?’ (২৭-১২) শীর্ষক প্রবন্ধ প্রসঙ্গে এই চিঠি। ভারতীয় রাজনীতিতে ভোট বড় বালাই। সর্বদাই একটা অঙ্ক কাজ করে, কী ভাবে ভোটে জয়ী হওয়া সম্ভব। অনেকে মনে করেন, সামগ্রিক উন্নয়ন হলে তবেই দেশের অগ্রগতি সম্ভব। দেশের পরিকাঠামোর উন্নয়ন হলে দেশ সচল থাকবে। আবার অনেকে মনে করেন, দুঃস্থ নাগরিকদের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সমস্যা হল, এত প্রকল্প চালু করার পরেও জনগণের মন পাওয়া যাচ্ছে না। ধর্মীয় আবেগের আশ্রয় নিলে সহজে মানুষের কাছাকাছি আসা যায়, এমন ভাবনা অনেক দেশেই রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেখা গিয়েছে। আমরা দেখতে পেলাম, কেবলমাত্র সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করল। ফলত, ভারতীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে অধিকাংশ ভোটার তাঁদের অবস্থান স্থির করে নিলেন। অঙ্কের হিসাবে ভারতে একশোর অধিক লোকসভা আসনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, যদি তাঁরা একজোট হন। স্বাভাবিক ভাবেই ‘পসমন্দা’ নিয়ে নতুন চিত্রনাট্য মুক্তি পেয়েছে।

সবার আগে মানুষের মনের মধ্যে বিভেদ দূর করা প্রয়োজন, অকারণে বিভেদের রাজনীতি আমাদেরকে আরও পিছিয়ে দিচ্ছে। যদি সত্যিই মুসলিমদের জন্য কিছু করার প্রয়োজন বোধ করেন শাসক দলের নেতারা, তা হলে প্রথমে নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুন। সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়ার কারণ নির্ণয় করে উত্তরণের উপায় বার করুন। যেখানে পিছিয়ে, সেখানে আরও নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সমতা ফিরিয়ে আনুন। তা না হলে পসমন্দা, অর্থাৎ পশ্চাৎপদ মুসলিমদের ভোট টানার জন্য তাদের প্রতি বিজেপির মনোযোগ যে একটা রাজনৈতিক অঙ্ক, তা বুঝতে রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার দরকার নেই। গ্রামে একটা প্রবাদ আছে, ভিক্ষার দরকার নেই, কুকুর সামলান। বিজেপির পসমন্দা পর্বের অনেকটাই মিল খুঁজে পাওয়া যাবে সেই প্রবাদের সঙ্গে।

সৈয়দ সাদিক ইকবাল, সিমলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

অভিষেক

‘দুর্নীতিতে ঘাড়ধাক্কার দাওয়াই’ (২-১) শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে কিছু কথা। তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, তৃণমূলে কেউ দুর্নীতি করেছেন বলে প্রমাণিত হলে তাঁকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে দেবেন। অর্থাৎ, কিছু দিন আগে জলপাইগুড়ির সভায় তাঁর ‘নতুন তৃণমূল’-এর আত্মপ্রকাশের বার্তাকে মান্যতা দিতে চান। শুরু থেকেই দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে বদ্ধপরিকর তিনি। পরোক্ষ ভাবে দলে দুর্নীতির বিষয়টি তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন। তবুও মন্দের ভাল, শুরু থেকেই রাশ আলগা হতে দিতে তিনি রাজি নন। সাংগঠনিক কাঠামোকে মজবুত করতে নীতির প্রশ্নে আপস করা মানে দলের ভিতকে দুর্বল করে দেওয়া। তিনি যুবক, সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক নেতাও বটে, তাই তাঁর হাত ধরেই যদি তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ হয়ে যায়, তা হলে দল এবং সর্বভারতীয় রাজনীতি তাঁকে ঘিরে আবর্তিত হলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবে না।

কিন্তু প্রশ্ন হল, কত জন দুর্নীতিবাজকে চিহ্নিত করা যাবে? বহু দক্ষ পুলিশকর্মীর জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলে, এটা আমরা সকলেই জানি। তবুও পুলিশকর্মীদের প্রতি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি মোটের উপর বদলায় না। কারণ, তাঁরা পুলিশকর্মী বলতে ঘুষখোর বোঝেন। এটা জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির ত্রুটির কারণে হয় না, হয় কতিপয় অসৎ পুলিশকর্মীর জন্য।

ঠিক তেমনই, সব তৃণমূল নেতা-নেত্রী অসৎ নন, কিন্তু বেশির ভাগ নেতা-নেত্রীই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তাই একদম নিচু স্তরে তৃণমূল আর অসততা প্রায় সমার্থক। ‘দল করতে গেলে আমি কী পাব’— এই বাসনায় যাঁরা দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, মূলত তাঁরাই দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত। লড়াকু এবং দলের প্রতি প্রকৃত অনুগত কর্মীরা পিছনের সারিতে থেকে গিয়েছেন। যখন এই বিষফোড়াগুলি দগদগে ঘা হয়ে পচন ধরাতে শুরু করেছে, দল তখন উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথা চিন্তা করতে বসেছে।

যে সব প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির বা জেলা পরিষদের পদাধিকারী আছেন, তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির উপযুক্ত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দলের সাধারণ সম্পাদক মহাশয়ের কাছে আশা করছি। টিকিট বিলির সময়েও এই একই রকম স্বচ্ছতা কাম্য। পঞ্চায়েতের একটি টিকিট পেয়েই পাঁচ বছরের জন্য সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তৈরি হয়ে যায় না, এটা বুঝিয়ে দিতে হবে টিকিট প্রত্যাশীদের। টিকিট যেন তাঁকেই দেওয়া হয়, যাঁর বিরুদ্ধে কখনও কোনও দুর্নীতির অভিযোগ করা যায় না। তবেই জনগণ আস্থা ফিরে পাবে। সর্বোপরি, পঞ্চায়েত নির্বাচন যদি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়, তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন সফল রাজনৈতিক নেতা হওয়ার দাবি করতে পারবেন, যা পরবর্তী কালে দলের নীতি ও আদর্শের প্রতি সাধারণ মানুষকেও আকৃষ্ট করতে পারে। আর তা যদি না হয়, তা হলে সবটাই ফাঁকা আওয়াজ বলে প্রমাণিত হবে, যা বিরোধীদের অভিযোগগুলিকে মান্যতা দেবে।

রাজা বাগচী, গুপ্তিপাড়া, হুগলি

বিজ্ঞানে অনীহা

‘পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে ভর্তি কম’ (২৫-১২) সংবাদটি পড়ে সায়েন্সে কলেজে ছাত্র ভর্তির দৈন্যদশার কথা জানলাম। অজানাকে জানার উৎসাহ, কিংবা নিজের অন্তরের মানবিক গুণগুলির পরিপূর্ণ বিকাশের উদ্দেশ্য নিয়ে শিক্ষালাভে আগ্রহ আজকের জীবনে অদৃশ্য। কারিগরি কিংবা প্রযুক্তিগত বিষয় ভাল উপার্জনের আশ্বাস দেয়। স্বাভাবিক ভাবেই সেই অভিমুখে পড়ুয়াদের স্রোত বেড়ে চলেছে। তার জন্য রাজ্য, এমনকি দেশ ছাড়তেও পিছপা নয় তারা। যদিও শিল্পে তেমন বৃদ্ধি না হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভাটার টান। আবার বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলি, বিশেষত রসায়ন ও পদার্থবিদ্যার প্রয়োগ রয়েছে শিল্পক্ষেত্রেও, থাকার কথা কর্মসংস্থানের সুযোগও। কিন্তু শিল্পে অগ্রগতি না থাকায় সে রাস্তাও উৎসাহব্যঞ্জক নয়। কলা, বাণিজ্য কিংবা বিজ্ঞানের সাধারণ বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশোনার প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষকতার চাকরি। অথচ, পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির বেড়াজালে সে ক্ষেত্রেও গভীর অনিশ্চয়তা। অনেকে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের মতো বিষয় নির্বাচন করলেও, পড়তে যাচ্ছে অন্য রাজ্যে। ক্যাম্পাসিং-এর মাধ্যমে সেই রাজ্যে যদি কোনও চাকরির ব্যবস্থা হয়। চাকরির প্রত্যাশায় অনেকে ছুটছে এমবিএ, বিবিএ অথবা সিএ-র মতো পেশাগত কোর্সেও। এই অনীহা চলতে থাকলে পরিণাম হবে ভয়াবহ। কোনও জাতি বা দেশের শিক্ষার মান অনেকাংশে নির্ভর করে মৌলিক বিষয়, বিশেষত বিজ্ঞানে উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণার অগ্রগতির উপর। যথেষ্ট পড়ুয়া না এলে সেখানে তৈরি হবে তীব্র শূন্যতা।

মৃণালকান্তি সামন্ত, হালিশহর, উত্তর ২৪ পরগনা

স্কুল নেই

উত্তর ২৪ পরগনার বামনগাছি এলাকায় মেয়েদের জন্যে কোনও পৃথক সরকারি বা সরকার পোষিত উচ্চ মাধ্যমিক (প্রাক্ প্রাথমিক, মাধ্যমিক-সহ) স্কুল নেই। ফলে, তাদের পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরবর্তী বারাসত কিংবা দত্তপুকুর এলাকার বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। এ দিকে ‘বিদ্যালয় থেকে এক কিলোমিটারের বেশি কোনও এলাকার ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া যাবে না’— এই নিয়ম দেখিয়ে দত্তপুকুরের বিদ্যালয়গুলি বামনগাছির ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নিতে চাইছে না। ‘শিক্ষার অধিকার’ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পড়ুয়ারা।

বিক্রম দে, বামনগাছি, উত্তর ২৪ পরগনা

অন্য বিষয়গুলি:

Politics India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy