প্রতীকী ছবি।
‘রামমোহন চর্চা সব সরকারি গ্রন্থাগারে’ (২৩-৫) সংবাদ থেকে জানতে পারলাম যে, দেশের সমস্ত সরকারি গ্রন্থাগারে বিভিন্ন মনীষীদের চর্চার ক্ষেত্র গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। প্রশংসনীয় উদ্যোগ। অতিমারির থমকে যাওয়ার দিনে এ দেশের গ্রন্থাগার পরিষেবা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন জাতীয় গ্রন্থাগার তথা রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন-এর মহানির্দেশক অজয়প্রতাপ সিংহ মহাশয়। এই ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানেই গোটা দেশে সরকারি গ্রন্থাগারের কর্মকাণ্ডের দেখভাল করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অধীনস্থ গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগারকর্মী নিয়োগ হয়নি। তা হলে গ্রন্থাগার পরিষেবা আন্দোলন কাদের নিয়ে সংগঠিত হবে? রাজ্যের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা-সহ সমস্ত জেলা গ্রন্থাগার ও সাধারণ গ্রন্থাগারে কয়েক হাজার গ্রন্থাগারিকের পদ শূন্য। আর উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্য দরকার অর্থের সংস্থান।
ভারতের কেবল পাঁচটি রাজ্যে (তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, কর্নাটক, হরিয়ানা) গ্রন্থাগার কর প্রচলিত আছে। ফলে বেশির ভাগ রাজ্যকেই সরকারি অনুদানের উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু বরাদ্দ অপ্রতুল। গ্রামে গ্রামে আধুনিক পরিষেবা দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই, কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ ও গ্রন্থাগারিক না থাকার কারণে গ্রামীণ সাধারণ পাঠাগারের দৈন্যদশা দেখা যাচ্ছে। অনেক গ্রন্থাগার বন্ধ এবং অনেক গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিকের পদ শূন্য থাকায় অন্য গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিককে অস্থায়ী ভাবে কার্য সম্পাদন করতে হচ্ছে। যার ফলে পাঠকেরা সম্পূর্ণ পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান এবং গ্রন্থাগারিক নিয়োগের মাধ্যমে গ্রন্থাগার পরিষেবা আন্দোলনকে বাস্তবে রূপায়িত করা হোক।
সৌরভ মালিক
বিষ্ণুপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
মাটির বাঁধ
‘দুয়ারে ত্রাণ, তদন্ত হবে বাঁধ ভাঙার’ (২৮-৫) সংবাদ প্রসঙ্গে কিছু কথা তুলে ধরতে চাই। বার বার বাঁধ ভাঙা, কংক্রিটের সেতু জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া, পথঘাটের বিধ্বস্ত অবস্থার পাশাপাশি প্রশাসকের ভূমিকা, অর্থের অপচয়, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাজের ত্রুটির বিস্তৃত তদন্ত প্রয়োজন। কারণ, প্রায় দেড়শো বাঁধ, অসংখ্য কংক্রিটের সেতু ইত্যাদি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর গুণগত মান কী ছিল? বিভাগীয় মন্ত্রী-সহ প্রধানরা কী ভূমিকা নিয়েছিলেন?
আয়লার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, মাটির বাঁধের পরিবর্তে বিস্তীর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কংক্রিটের বাঁধ হবে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ-সহ অন্যান্য দফতরের নিষ্ক্রিয়তায় এই প্রকল্পে অর্থ দফতর হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া সত্ত্বেও খুবই সামান্য কাজ হয়। সেচ দফতরের বাস্তুকাররা জানেন, বাঁধের উপর দিয়ে জল গেলে বাঁধ ভাঙবেই। আয়লা, আমপানের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও কেন মাটির বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো হয়নি, এবং শক্তপোক্ত ভাবে তৈরির উদ্যোগ করা হয়নি, তা দেখতে হবে। সুন্দরবনে বাঁধ রক্ষার প্রাথমিক শর্ত হল ম্যানগ্রোভ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বলা সত্ত্বেও এগুলি যথাসময়ে, যথেষ্ট পরিমাণে রোপণ করা হয়নি।
মনোজ চক্রবর্তী
প্রাক্তন আধিকারিক, সেচ ও জলপথ অধিকার দফতর
সাংবাদিক নিগ্রহ
‘স্বাধীনতাহীনতায়’ সম্পাদকীয় (২৮-৫) প্রসঙ্গে বলতে চাই, এ ভাবে কেন বার বার সাংবাদিকদের টুঁটি চেপে ধরা হচ্ছে? কোভিড টিকাকরণ-সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দুর্নীতির খবর জনসমক্ষে আনছিলেন বাংলাদেশের সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে প্রথমে আটক, তার পর গ্রেফতার করা হল তাঁকে। পরে জামিনে মুক্তি পান। রোজিনাকে সমর্থন করে এগিয়ে এসেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মানবাধিকার সংস্থা, রাষ্ট্রপুঞ্জ, সাংবাদিক মহল, নাগরিক সমাজ। ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স’-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫২তম, পাকিস্তান ১৪৫তম এবং ভারত ১৪২তম। রাষ্ট্রশক্তির এই অমানবিক চাপে অধিকাংশ সাংবাদিক স্বাধীনতাহীনতায় ভুগছেন। রাষ্ট্রশক্তি সাংবাদিকদের পরাধীন করে রাখলে তার ফল সুদূরপ্রসারী হয়, বলছে রিপোর্ট। তবে ওই সংস্থার অন্য একটি রিপোর্ট বলছে, ৫৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সাংবাদিকরা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যা খবর পরিবেশন করেন। ভারতে, এবং এ রাজ্যেও এমন ঘটনা বার বার ঘটেছে। সাংবাদিকরাও যে বর্তমানে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে কাজ করেন, এটা স্পষ্ট।
দেবাশীষ দত্ত
কলকাতা-৬৩
মুসলিমের ছবি
বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছি, বাঙালি চিত্রপরিচালকরা (বিশেষত বাংলা সিরিয়ালের) কোনও মুসলিম চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার সময়ে ফেজ টুপি, দাড়ি অথবা মাদুলির মতো বস্তুকে ব্যবহার করেন। বাস্তবে গ্রামীণ বা শহুরে, যে কোনও সমাজেই কেবলমাত্র বাহ্যিক রূপের ভিত্তিতে এক জন মুসলিম বা হিন্দুকে পৃথক করা প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া মাদুলি বা ওই জাতীয় কিছু পর্দায় দেখালে তা কেবলমাত্র কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দেয়, এবং বাঙালি মুসলিম সমাজকে অপমানিত করে। তাই বাঙালি চিত্রপরিচালকদের কাছে আবেদন, তাঁরা যেন বাস্তববাদী হয়ে দায়িত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের মানুষকে পর্দায় তুলে ধরেন। এবং কুসংস্কারকে প্রশ্রয় না দেন।
ওয়াকার নাসিম সরকার
পান্ডুয়া, হুগলি
স্কুলে সেফ হোম?
জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘পড়ুয়াদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে স্কুলে সেফ হোম কেন?’ (২৩-৫) একটি সুচিন্তিত নিবন্ধ। সরকারি স্কুলের ছাত্র হওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন কাজে ‘স্কুলদখল’-এর পরে কী হয়, তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার আছে। সেই কারণেই স্কুলে সেফ হোম তৈরির পরবর্তী অবস্থার কথা ভেবে শিউরে উঠছি। নির্বাচনের পরে স্কুলবাড়িগুলি যখন ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ফেরত পাওয়া যায় না, তখন কোভিড-পরবর্তী কালে তার অন্যথা হবে, এ কথা মনে হয় না। আর করোনার জীবাণুনাশ না করে স্কুল খুললে কতগুলি শিশু সংক্রমিত হতে পারে এবং তার ফল যে কী ভয়াবহ হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
নিবন্ধকার পরিবর্ত ব্যবস্থা হিসেবে হাই কোর্ট, বিধানসভা বা রাজভবনের খালি পড়ে থাকা ঘরগুলির উল্লেখ করেছেন। এ-ও তো সরকারি সম্পত্তি, আপৎকালে নাগরিকের কাজে আসবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। জেলা শহরগুলিতে সার্কিট হাউস ছাড়াও অনেক প্রশাসনিক ভবনের বড় অংশ ব্যবহৃত হয় না। এ সময়ে সাফসুতরো করে সেগুলিও কাজে লাগানো যায়। এ ছাড়াও আছে সরকারি প্রেক্ষাগৃহ, যেখানে খালি পড়ে থাকে অগুনতি ঘর। এই সব সরকারি সম্পত্তি কি বিপদের দিনে কাজে আসতে পারে না?
অভিজিৎ সরকার
কলকাতা-৭৫
বিলের ধাক্কা
সম্প্রতি কোভিড আক্রান্ত হয়ে একটি সাধারণ নার্সিংহোমে ভর্তি হন আমার দুই আত্মীয় ৪০ হাজার টাকা প্যাকেজে। এক জন সাত দিন, অন্য জন ছ’দিন থাকার পর প্রয়াত হন। বিল ৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। এই রকম ঘটনা বার বার রাজ্যে ঘটছে। অনেকেই এই বিশাল বিলের ধাক্কায় আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন। এই প্যাকেজের দায় স্বাস্থ্য বিমা সংস্থারা নিচ্ছে না, বা অত্যন্ত কম টাকা দিচ্ছে। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, এই নার্সিংহোমগুলির কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হোক।
জয়দীপ চক্রবর্তী
কলকাতা-৫০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy