বন্ডেল বাজারের ঠিক উল্টো দিকে অবস্থিত এক বিস্তীর্ণ খালি জায়গা জুড়ে জনৈক ব্যবসাদার বালি এবং স্টোন চিপসের গোডাউন বানিয়ে নিয়েছেন। ফাইল চিত্র।
আমি কলকাতা পুরসভার ৬৭ নম্বর ওয়র্ডের অন্তর্গত পিকনিক গার্ডেনের নাটোর পার্কের পুরনো বাসিন্দা। অতি জনবহুল, ঘিঞ্জি এলাকাটি বরাবরই অপরিচ্ছন্ন। বিশেষত কাছেই বন্ডেল বাজার এবং ট্রেন লাইনের অবস্থান হওয়ায় জায়গাটি খুবই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। তার উপর বন্ডেল বাজারের ঠিক উল্টো দিকে অবস্থিত এক বিস্তীর্ণ খালি জায়গা জুড়ে জনৈক ব্যবসাদার বালি এবং স্টোন চিপসের গোডাউন বানিয়ে নিয়েছেন। সারা রাত ধরে বিশাল ট্রাকে করে সেখানে বালি ও স্টোন চিপস ভরা এবং খালি করার কাজ হয়। কাজ শুরু হয় মোটামুটি রাত বারোটার পর। ভোররাত পর্যন্ত শ্রমিকরা তাঁদের কাজ সারেন। সশব্দে বালি বা পাথর ঢালেন, অথবা ট্রাকে ভরার কাজ চলে। শ্রমিকদের চিৎকার বা ট্রাকের আনাগোনা, ডিকি খোলার শব্দে কান পাতা দায় হয়। এই ভাবে চলছে বছরের পর বছর। স্থানীয় পরিশ্রমী, মজুররা এ বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও লাভ হয়নি। কারণ, ওই ব্যবসায়ীর পুলিশ ও রাজনীতির উঁচু মহলের সঙ্গে জানাশোনা রয়েছে। সারা দিন পরিশ্রম করে ক্লান্ত মানুষগুলো এক ব্যবসায়ীর জন্য রাতে ঘুমোতে পর্যন্ত পারেন না। এঁরা অসুস্থ হলে তার দায় কে নেবে? আমার আশি-ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা অসুস্থ মায়েরও রাতে ঘুমোতে অসুবিধা হয়। এই প্রচণ্ড গরমে শব্দের অত্যাচারের জন্য জানলা বন্ধ করে শুতে হয়। কসবা থানার পুলিশ সব জেনেও চুপ, স্থানীয় পুরসভার কাউন্সিলর সব জেনেও নিষ্ক্রিয়।
শুধু তা-ই নয়, এই বহিরাগত শ্রমিকরা অস্থায়ী শিবির বানিয়ে বাস করার সময় নানা ভাবে জায়গাটিকে অপরিচ্ছন্ন করছে। যেখানে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পরিচ্ছন্ন বালিগঞ্জ প্লেস রয়েছে, সেখানে একটি জনবসতিপূর্ণ জায়গা কী ভাবে বসবাসের অযোগ্য হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না!
মৌ দাস, কলকাতা-৩৯
অযথা অর্থদণ্ড
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের রিষড়া শাখায় আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার একটা যৌথ সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। এটা করা হয়েছিল পূর্ববর্তী ইউনাইটেড ব্যাঙ্কে, পরবর্তী সময়ে যা পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক নামে পরিচিত হয়। কয়েক দিন আগে আমার ফোনে এসএমএস আসে যে, আমার যদি নমিনি না করা থাকে, তবে আমাকে সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করতে হবে। ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে যোগাযোগ করলে আমার সেভিংস বই দেখে বলা হয়, আমার বইয়ে ‘নমিনি রেজিস্টার্ড’ লেখা আছে। সুতরাং, আমার আর এই বিষয়ে কিছু করার প্রয়োজন নেই। সেই সময়েই আমার ব্যাঙ্কের পাসবই শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাকে নতুন বই দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে আমার অ্যাকাউন্ট বিবরণী যেটা ছেপে বেরোয়, সেখানে দেখা যায় লেখা রয়েছে, ‘নমিনি নট রেজিস্টার্ড’। তখন আবার ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আমাকে নতুন নমিনি নথিভুক্ত করার কথা বলেন।
আমি সেই অনুযায়ী আমার পুত্রকে নমিনি হিসাবে বিবেচনা করার জন্য তার প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাঙ্কে জমা করি। তার পর দেখা যায়, আশ্চর্যজনক ভাবে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ১১৮ টাকা নমিনি করার জন্য পরিষেবা খরচ হিসাবে কেটে নেওয়া হয়েছে। রিষড়া শাখায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আমাকে জানানো হয়, এই বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই, যে-হেতু এটা ব্যাঙ্কের কেন্দ্রীয় ব্যাপার। তবে তাঁরা এটাও স্বীকার করেন যে, এই টাকা কাটা অনুচিত হয়েছে এবং একমাত্র নমিনি পরিবর্তনের ক্ষেত্রেই এই পরিষেবা খরচ ধার্য হওয়া উচিত। এখন আমার প্রশ্ন, রিষড়া শাখায় এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক সব জানা সত্ত্বেও কেন আমার নথি পেশ করার আগে সতর্ক হলেন না এবং আমার কোনও ভুল না থাকা সত্ত্বেও কেন এই টাকাটা আমি ফেরত পাব না। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
অশোক দাশ, রিষড়া, হুগলি
অধঃপতন
কলকাতা মেট্রো রেলের কামরায়, বয়স্ক নাগরিক এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের বসার জন্য আসন সংরক্ষিত আছে। বেশ কিছু দিন ধরে লক্ষ করছি, বয়সে নবীন কয়েক জন মহিলা এবং পুরুষ যাত্রী ট্রেনে উঠে সুযোগ পেলেই সংরক্ষিত ওই আসন দখল করে নেন। এবং নিমেষে, মোবাইল মগ্নতায় কিংবা তন্দ্রাচ্ছন্নতায় ডুবে যান। সে ক্ষেত্রে বয়স্ক মানুষেরা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকলেও, আসন দখলকারীরা উঠে দাঁড়ানোর সৌজন্য দেখানোর কোনও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। এ সব ক্ষেত্রে নিজেদের সামান্য অধিকারটুকু বুঝে নিতে দ্বিধাগ্রস্ত বয়স্ক মানুষরা তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট আসনে বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
দিন কয়েক আগে, দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষগামী ট্রেনের কামরায় এমনই একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করে যারপরনাই বিস্মিত, লজ্জিত ও ব্যথিত হয়েছিলাম। দমদম থেকে উঠে দেখা গেল, সংরক্ষিত ওই আসনে এক জন তরুণ এবং দু’জন অল্পবয়সি মহিলা যাত্রী বসে আছেন। দমদম থেকে ওঠা এক বয়স্ক যাত্রী ট্রেনে উঠেই, সংরক্ষিত আসনে বসে থাকা তরুণকে আসন ছাড়তে বললেন। তরুণটির নির্লিপ্ত ভঙ্গি দেখে, কিছুটা রাগত ভঙ্গিমাতেই পুনরায় তাকে উঠে যেতে বলা হল। তরুণটি তখন তার ফুলপ্যান্টের নীচের দিকের কিছুটা অংশ তুলে দেখানোয় বোঝা গেল, তার একটি পা বিশেষ ভাবে তৈরি জুতোয় ধাতব দণ্ডের সাহায্যে আটকানো। অর্থাৎ, তার জন্য নির্ধারিত আসনেই সে বসেছে। এ ঘটনার পরেও, আসন দখলকারী অন্য দু’জন যাত্রী আসন না ছাড়ায় বয়স্ক মানুষটি দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হলেন। দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে কলকাতা মেট্রো রেলের যাত্রী হওয়ার সুবাদে, মেট্রোর প্রযুক্তিগত ও পরিকাঠামোগত বহু পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছি। কিন্তু যাত্রীদের মানসিকতার এই অধঃপতন, মানবিকতার এই অবনমন দেখে মনে মনে আহত হই। প্রশ্ন জাগে, আমরা সভ্য হব কবে?
অরিন্দম দাস, হরিপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
ট্রাম চালু
কলকাতার কালীঘাটে কালী মন্দির যেমন রয়েছে, সেই সঙ্গে রয়েছে গ্রিক অর্থোডক্স গির্জা, খুবই কাছে রয়েছে গুরুভায়ুর মন্দির এবং সাহেব বাগান মসজিদ। সারা বছর এই সব তীর্থস্থানে তীর্থযাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকে। এই অঞ্চলের কাছেই রয়েছে বেশ কিছু নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল, যে সব জায়গায় প্রতি দিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন।
লকডাউনের আগে কালীঘাট ট্রাম ডিপো থেকে নিয়মিত অসংখ্য ট্রাম চলত। কিন্তু লকডাউনের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরেও কালীঘাট ডিপোটি অজানা কারণবশত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কোনও ট্রাম আর ছাড়ে না। কালীঘাট ট্রাম-ডিপো থেকে বালিগঞ্জ ও টালিগঞ্জগামী ট্রাম সহজেই চালানো যেতে পারে। এর কোনও অন্তরায় নেই। ট্রাম-ডিপোর ভিতর থেকে বাইরে পর্যন্ত ট্রামলাইন, বৈদ্যুতিক তার সবই রয়েছে। এই দু’টি রুটে ট্রাম পুনরায় চালু হলে খুব সহজেই বালিগঞ্জ ও টালিগঞ্জ স্টেশনে নেমে নিত্যযাত্রী ও তীর্থযাত্রীরা কালীঘাটে যেতে পারবেন খুবই কম খরচে। নয়তো এই দূরত্ব অতিক্রম করতে অনেক বেশি টাকা লাগে অটো বা বাসে। একটি ট্রাম এক সঙ্গে একশো থেকে একশো কুড়ি জন মানুষকে এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় পৌঁছে দিতে সক্ষম। এতে রাস্তায় কম গাড়ি চলবে, তাতে যানজট কম হবে, পরিবেশ দূষণ হ্রাস করা সম্ভব হবে। পরিবহণ দফতরকে অনুরোধ, অবিলম্বে কালীঘাট ডিপোটিকে সচল করে ট্রাম পরিষেবা যাত্রীদের সুবিধার্থে পুনরায় চালু করুন। এই জনপ্রিয় রুটগুলিতে ট্রাম চালু করলে পরিবহণ দফতর আর্থিক ভাবেও লাভবান হবে।
ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-১০৭
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy