বিরোধী ঐক্য গণতন্ত্রের সঠিক পথে উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম— বলা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু বাস্তবে কঠিন। প্রতীকী ছবি।
‘চিঠি লেখার সংহতি’ (১৫-৩) শীর্ষক সম্পাদকীয় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এই মুহূর্তে ভারতীয় গণতন্ত্রের স্বৈরাচারী পট পরিবর্তনে সমগ্র বিরোধী কণ্ঠস্বর ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই এবং ইডি যেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ত্রাসের অন্য নাম। এর অর্থ অবশ্য এই নয় যে, বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের দুর্নীতির-ও সীমা-পরিসীমা নেই। তবুও এ কথা অনস্বীকার্য যে, আধুনিক ভোগবাদী দুনিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ হয়ে থাকা দিবাস্বপ্নের নামান্তরই বটে।
এ-ক্ষণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, তবে কি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলটি এবং তার সমস্ত নেতানেত্রী সর্বাংশে সৎ এবং কর্তব্যনিষ্ঠ? বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই প্রশ্ন করাও মানা। ঠিক যেমন বিরোধী দলগুলি আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য, তেমন ভাবেই কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব না-করা এক দল চিন্তাশীল মানুষও এই প্রক্রিয়ার দাস। কে আর রাজ-রোষের শিকার হতে চায়? এ পর্যন্ত যে সমস্ত বিরোধী দলের নেতা শাসক দলে নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা প্রায় সমস্ত অভিযোগই ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এটাও সম্ভবত একটি স্পষ্ট বার্তা যে, হয় এক ছাতার তলায় আশ্রয় নাও, নয়তো তোমার সমস্ত ক্রিয়াকলাপকে ক্ষমতাবলে স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র রক্ষার দায় নাকি শাসক-বিরোধী’সহ দেশের সমস্ত নাগরিকের। কিন্তু গণতন্ত্র যখন একমুখী হয়ে পড়ে, কিংবা, তা যখন স্বৈরাচারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিক হাঁসফাঁস করে ওঠেন। যদিও এখনও পর্যন্ত দেশের সমস্ত বিরোধী দল একটি ছাতার নীচে আসতে পারেনি ও সহমতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে তদন্তের নামে হেনস্থার অভিযোগে শাসক দলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে পারেনি, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের তুমুল আত্মবিশ্বাসে এতটুকুও চিড় ধরেনি।
যথার্থ বিরোধী ঐক্য গণতন্ত্রের সঠিক পথে উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম— বলা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু বাস্তবে কঠিন। এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ঘটে যাওয়া স্বৈরতন্ত্রের অবসানে যে শাসনকাঠামো প্রতিভাত হয়েছে, তা পরোক্ষ ভাবে স্বৈরতন্ত্রকেই তার শাখা-প্রশাখা বিস্তারে সহায়তা প্রদান করেছে। তা সে ফরাসি রাজতন্ত্রের পতন অথবা হিটলারের অবসান, যার কথাই বলা হোক না কেন। তবে আশঙ্কা এবং দুঃখের বিষয় হল, যে সংস্থাগুলি নিয়ে বার বার অভিযোগ উঠছে, সেই সংস্থাগুলিতে যথেষ্ট বিচক্ষণ এবং দক্ষ আধিকারিক রয়েছেন। তাঁরা বা তাঁদের যদি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সমঝে দেওয়ার কাজেই বার বার ব্যবহার করা হয়, তা হলে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান আদতে ভোঁতা হয়ে যায়। যা কখনওই আমাদের কাম্য নয়।
রাজা বাগচী, গুপ্তিপাড়া, হুগলি
খাবার কোথায়
শেষ ব্যাঘ্রশুমারির রিপোর্ট অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিয়ানব্বই। কিন্তু যে ভাবে বার বার সুন্দরবনে বাঘের দেখা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বাঘের সংখ্যা বর্তমানে আরও বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি শাবকদের নিয়ে নদীর তীরে বাঘিনিকে ঘুরতে দেখেছেন বনকর্মীরা। তাতে বোঝাই যাচ্ছে, সুন্দরবন এখন সেই আগের চেহারাতেই ফিরে আসছে। কিন্তু বাঘ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়েনি বাঘের খাবার। তাই জঙ্গল লাগোয়া নদী, খাঁড়িতে মাছ আর কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি আনন্দের খবর। কিন্তু তাদের খাবারে টান পড়লে তা বেশ চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে। গত বছর সারা দেশের সঙ্গে সুন্দরবনেও বাঘ গণনার কাজ হয়েছিল। সেই গণনার ফল বেশ সন্তোষজনক। কিন্তু বাঘের খাবার কোথায়? উত্তর ২৪ পরগনার পারমাদন বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য থেকে একশোটি হরিণ সুন্দরবনে নিয়ে আসা হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। হরিণগুলিকে বর্তমানে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের দোবাঁকি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। ওখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাদের কিছুটা সময় লাগবে। তার পর তাদের গভীর অরণ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ ভাবে বাঘের খাদ্যসঙ্কট মিটবে বলেই মনে করছেন বনাধিকারিকেরা।
এখানে প্রশ্ন হল— সুন্দরবনে বাঘের খাদ্যের জোগান বাড়েনি কেন? এখানকার হরিণ, শূকর-সহ অন্য প্রাণীগুলি কোথায় গেল? বাইরে থেকে বাঘের খাবারের জোগান দেওয়া যেতেই পারে, কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয় না। বিষয়টি নিয়ে বন দফতরের ভেবে দেখা উচিত।
প্রদ্যুৎ সিংহ, অশোকনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
অপ্রয়োজনীয়
‘ভালবাসার বিপদ’ (২৫-৩) শীর্ষক সম্পাদকীয়টি বর্তমানে ভারতব্যাপী এক চাপা কিন্তু জ্বলন্ত সমস্যার দলিল। এর বিস্তৃতি এতটাই যে শহর, মফস্সলের গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন বিভিন্ন গ্রামেও বহু নিরপরাধ, অসহায় মানুষের অসহনীয় জীবনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পথকুকুর-প্রেমীদের সৌজন্যে। এই পথকুকুর-প্রেমীদের অধিকাংশই আদৌ বন ও বন্যপ্রাণী প্রেমিক নন; মুরগি, খাসি, গরু, শুয়োর প্রভৃতি খেয়ে থাকেন অত্যন্ত তৃপ্তির সঙ্গে। কিন্তু কুকুর ও বিড়ালকে তাঁরা গোবলয়ের গোমাতার মতোই স্থান দিয়ে থাকেন। এর পিছনে বিবিধ তরল কুযুক্তির অবতারণা করাতেও তাঁদের জুড়ি মেলা ভার। সুপ্রিম কোর্ট এর আগে এই বিষয়ে নিজের উদ্বেগ ব্যক্ত করে জানিয়েছে যে, এ ভাবে প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষকে এদের দ্বারা আক্রান্ত হতে দেওয়া যায় না কোনও সভ্য দেশে। পুরসভাগুলোকে এদের নির্বীজকরণের দায়িত্ব নিতে হবে। অবশ্যই কেউ নিজের ঘরের মধ্যে যে কোনও গৃহপালিত পশু যদি রাখেন অন্যদের অসুবিধা বা বিপদ না ঘটিয়ে, তা হলে তা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা যে কুযুক্তি দেন যে গবাদি পশুরাও প্রকৃতির সন্তান, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে— তা হাস্যকর। উন্নত বিশ্বে এটা কেউ ভাবতেও পারে না। এ দিকে, এ দেশে কমনওয়েলথ গেমস-এর মতো মহাযজ্ঞের আসর বসলে বা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের আগমন হলে তড়িঘড়ি কয়েক লক্ষ সারমেয় নিধন হয়। কিন্তু যথাসময়ে তাদের নির্বীজকরণের গুরুদায়িত্বটি পালিত হলে তাদেরও এত অত্যাচার, শীতে-ঝড়ে, দুর্ঘটনায় কষ্ট পেতে হয় না, মানুষও ভাল থাকে। আক্রান্ত হওয়ার বাইরেও বহু মানুষের রাতের অতি প্রয়োজনীয় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোতেও এই অবাঞ্ছিত সারমেয়কুল ও তাদের অবুঝ, অসংবেদনশীল সারমেয়প্রেমীদের অবদান আছে।
আশার কথা, দেশের নীতি-নির্ধারকরা এখনও এতটা বাস্তববুদ্ধিহীন হননি যে, এঁদের অপ্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেবেন। ওই জোটবদ্ধ মানুষরা বাকি সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষদের প্রভাবিত করতে বেছে বেছে কিছু নিষ্পাপ চাহনির সারমেয়দের ছবি দেখান, দন্ত-বিকশিত, হিংস্রদের নয়। প্রতি বছর কয়েক হাজার লোক পথ-দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন গবাদি পশু রাস্তায় মুক্ত ভাবে বিচরণ করার ফলে। এ ব্যাপারে পথ-সারমেয়কুলেরও বিশেষ সুনাম আছে। সারমেয়রা মানুষের উপর নির্ভরশীল বেঁচে থাকার প্রয়োজনে। কিন্তু তাদের অযথা প্রশ্রয় দিয়ে অন্যদের সমস্যার সৃষ্টি করা উচিত নয়— অন্তত এই চৈতন্যটুকু পথকুকুর-প্রেমীদের হোক।
অবকাশ দাশঘোষ, হরিপাল, হুগলি
চড়া মূল্য
মেমারিতে দশ কুড়ি ও পঞ্চাশ টাকার স্ট্যাম্প পেপার চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। হাত পুড়ছে সাধারণ মানুষের। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শাহাদাত হোসেন মোল্লা, মেমারি, পূর্ব বর্ধমান
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy