নিকাশিব্যবস্থা খতিয়ে না দেখে অতীতে নিচু এলাকায় বড় বড় আবাসনের ছাড়পত্র দেওয়া যে জল জমার অন্যতম কারণ, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই (‘নিতে হবে ছাড়পত্র’, ২-১০)। পূর্বতন কর্তৃপক্ষের উপর দায় চাপালে নাগরিকদের ভোগান্তি কি কমবে? অতীত ভুলের উপর দাঁড়িয়ে যে সমস্ত আবাসন গড়ে উঠেছে, পুরসভা কি সেখানকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে কর আদায় করে না? অসাধু ব্যক্তিদের কারসাজিতে পূর্ব কলকাতার একাংশে জলাজমি, কৃষিজমির চরিত্র বদল হচ্ছে। সেখানে বাড়ি তৈরির অনুমোদনের ক্ষেত্রে পুরসভা কি দায় এড়াতে পারে?
বাইপাস সম্প্রসারণের ফলে কোথাও কোথাও দু’ধারের খাল বা গভীর নয়ানজুলির অস্তিত্ব লোপ পেয়েছে। বাইপাস বেশ উঁচু হওয়ায় ওই সমস্ত এলাকা আরও নিচু। ঝাঁ চকচকে বড় আবাসনের সঙ্গে জলা বা নিচু জমি ভরাট করে ক্রমাগত বাড়ি তৈরি হওয়ায় জল জমার সমস্যা তীব্র হচ্ছে, যা থেকে একাধিক হাসপাতালও মুক্ত নয়। সল্টলেকের কয়েক দশক পর পূর্ব কলকাতা উপনগরী তৈরি হলেও তা পরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠেনি। নিকাশি-অব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বসতি এলাকায় যত্রতত্র হোটেল, গেস্টহাউস এবং পানশালার ছাড়পত্র। এমনকি কেএমডিএ-বরাদ্দকৃত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নির্দিষ্ট জমি বাণিজ্যিক কাজে ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। লকডাউন উপেক্ষা করে কসবা কানেক্টরের সন্নিকটে একটি পানশালায় রাতভর চলা পার্টিকে কেন্দ্র করে হুজ্জতির ঘটনায় বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা পুরসভার অজানা নয়। স্থানের বাছবিচার না করে পুরসভার লাইসেন্স প্রদান অদূর ভবিষ্যতে জল-যন্ত্রণার থেকেও দুর্বিষহ হবে না, তা কি কেউ বলতে পারে?
ধীরেন্দ্র মোহন সাহা
কলকাতা-১০৭
ব্রিজে যানজট
আবাসন শিল্পের স্বর্ণখনি মুকুন্দপুর, নয়াবাদ, মাদুরদহ। কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন-এর অধীন, বর্তমানে সবচেয়ে আকর্ষক জায়গা এটি। রাজারহাট পুরসভার অধীন নিউ টাউন-এর মতোই আবাসন শিল্প দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে এখানে। জনসংখ্যাও বৃদ্ধি হচ্ছে প্রতি দিন। স্বাভাবিক ভাবে পানীয় জল, নিকাশিব্যবস্থা, রাস্তাঘাট— এই সকল পরিষেবার চাহিদা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিকাশিব্যবস্থার উন্নয়ন যথেষ্ট হয়েছে ও এখনও হচ্ছে। তবুও এই অঞ্চলগুলি নিচু বলে ও দক্ষিণ কলকাতার বেশির ভাগ নিকাশি প্রবাহগুলো এই অঞ্চলের উপর দিয়ে গিয়ে বিদ্যাধরী নদীতে পড়েছে বলে কিছু কিছু অঞ্চলে নিকাশি সমস্যা রয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া প্রতি দিন দাসপাড়া ব্রিজের উপর অসম্ভব যানজট হয়। দাসপাড়া ব্রিজ নয়াবাদ থেকে বেরোনোর মূল পথ। এটা একটা চার মাথার মোড়। তিরিশ-চল্লিশ ফুট চওড়া রাস্তা দিয়ে গাড়ি এসে মাত্র দশ-বারো ফুট চওড়া এই ব্রিজের কাছে আটকে যায়। কোনও ট্র্যাফিকব্যবস্থা নেই। সাইকেল, রিকশা, মোটর সাইকেল— এরা শুধু কে কার আগে যাবে, তার লড়াই করে। ব্রিজটি একটা বোতলের মুখের মতো হওয়ায় এই যানজট।
সরকার এত আলো, এত রঙিন ফুটপাত করছে, অথচ দাসপাড়া ব্রিজটিকে নিয়ে কিছু ভাবছে না কেন? অবিলম্বে ব্রিজটির সম্প্রসারণ করা হোক। নিত্যদিনের যন্ত্রণা থেকে নয়াবাদবাসী বাঁচুক।
পার্থময় চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৮৪
হাঁটুজল
হুগলি জেলার কোন্নগরের নিকাশিব্যবস্থার কথা যত কম বলা যায়, ততই মঙ্গল। বর্ষাকাল ছাড়াও যখনই দু’-এক পশলা বৃষ্টি হয়, রাস্তায় জল জমে যায়, যা নামতে কম করে এক বেলা। আর বর্ষায় বা অন্য সময়ে একটানা বৃষ্টি হলে ভয়ঙ্কর অবস্থা দাঁড়ায়। রাস্তায় হাঁটুজল জমে যায়। রাস্তার পানীয় জলের কলগুলি ডুবে যায়। ফলে জল পাওয়া যায় না, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়, দুর্ভাগ্যজনক এবং অনভিপ্রেত। এই জল নামতে সময় নেয় কম করে দু’দিন, মানুষ বাজার-দোকান করতেও বাইরে বেরোতে পারেন না, অফিস যেতে পারেন না।
বুস্টার পাম্প স্টেশন থাকা সত্ত্বেও এই অবস্থা। হয় সেটিকে বৃষ্টির সময় বা পরে চালানো হয় না, বা যত ক্ষণ চালানোর প্রয়োজন, তত ক্ষণ চালানো হয় না। ফলে জল নেমে যাওয়ার পর ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তা ছাড়া পাম্পিং স্টেশন কে চালাবে বা রক্ষণাবেক্ষণ করবে, বা তার তেলের খরচ, ইলেকট্রিক বিল কে মেটাবে— এই নিয়ে পুরসভা ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিবাদ লেগেই আছে আর ভুগছেন এলাকাবাসীরা।
বছর ছয়েক আগে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান-এর টাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করে নতুন নিকাশিব্যবস্থা তৈরি করার পরও তা কোনও কাজে আসেনি। সেই কাজ দেখতে কোনও দিন কোনও ইঞ্জিনিয়ারকে কর্মস্থলে আসতে দেখা যায়নি, যা দুর্ভাগ্যজনক। বর্তমানে রাস্তার দু’ধারের নর্দমাগুলি কিছুটা চওড়া করা সত্ত্বেও উপরটা কংক্রিট দিয়ে ঢেকে দেওয়ার ফলে বৃষ্টির জল ঠিকমতো নেমে যায় না। তা ছাড়া ড্রেনের ময়লা বছরে যত বার পরিষ্কার করার দরকার, তা করা হয় না। ফলে ড্রেনের জলধারণের ক্ষমতা কমে।
এই পরিস্থিতিতে জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক ভাবে তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে এবং পাম্পিং স্টেশনকে প্রয়োজনমতো চালাতে ও বছরে তিন-চার বার রাস্তার ধারের নর্দমা ও প্রধান নিকাশি ড্রেনগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। নতুবা জলনিকাশি ব্যবস্থার কোনও উন্নতি হবে না এবং এলাকাবাসীর দুর্ভোগ ও যন্ত্রণা কমবে না। আরও একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি করার দরকার ও তা নিয়মিত চালু রাখা দরকার। নিজেদের মধ্যে বিবাদ ছেড়ে প্রকৃত সমন্বয় রাখা দরকার।
পঙ্কজ সেনগুপ্ত
কোন্নগর, হুগলি
ফিতের ফাঁস
এক সময় প্রাচীন ভারতবর্ষের প্রধান বন্দর ছিল তাম্রলিপ্ত। কিন্তু আজও এই শহরের তেমন কোনও উন্নতি নেই। তমলুকবাসী আমরা চাই যে, তমলুক একটি আদর্শ শহর তৈরি হোক। এই শহরের পরিধি আরও বাড়ানো হোক। সামনে পুরসভা ভোট, তাই অবিলম্বে কাগজে-কলমে যা প্রস্তুত হয়ে আছে তা সরকারপক্ষ বাস্তবায়িত করুক। নতুন ভাবে শহর জেগে উঠুক। নতুন শহর গঠন হলে কাজের ক্ষেত্র বাড়বে। এই পুরসভাতে পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করা যেতে পারে। নতুন বর্ধিত পুরসভা সরকারি লাল ফিতের ফাঁসে দীর্ঘ দিন আটকে আছে। তমলুক পুরসভা এই ফাঁস থেকে
মুক্ত হোক।
সঞ্জয় বিশ্বাস
পায়রাচালি, তমলুক
বর্জ্য-স্থান
বর্জ্য, আবর্জনা বর্তমান সময়ে একটা সমস্যা বটে, যা নষ্ট করে দেওয়া সব সময় সম্ভবপর হয় না। প্রতি দিন বাড়ছে জঞ্জাল। কোনওটা ছড়াচ্ছে হাওয়ায় উড়ে, কোনওটা পশুপাখির মাধ্যমে। এখন গ্ৰাম নেই সেই আগের মতো, শহর ক্রমশ গিলে খাচ্ছে নির্জন ছায়াঘন গ্ৰামকে। সেখানেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বহুতল, মানুষের প্রয়োজনে কমছে ফাঁকা জায়গা। ফলত অল্প জায়গায় গড়ে উঠছে পরিকল্পনামাফিক ঘরবাড়ি। কিন্তু সেখানে জল নিকাশি-সহ বাগান, বৈঠকখানা বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকলেও থাকে না বাড়ির প্রতি দিনকার আবর্জনা নিকাশের পরিকল্পনা। ফলত সমস্যা বাড়ে নিত্য দিনের জঞ্জাল নিয়ে। গ্ৰামগঞ্জের দিকে যদিও এর একটা উপায় বার হয়ে যায়। পরিত্যক্ত কোনও জায়গা বাড়ির আবর্জনা ফেলার জন্য বেছে নেওয়া হয়। আর জঞ্জাল ফেলতে ফেলতে জায়গাটা যেন বর্জ্য-স্থান হয়ে ওঠে। শহরে পুরসভার আবর্জনার গাড়ি আসে, তা ফেলা হয় নির্দিষ্ট জায়গায়। তেমনই গ্ৰামেও প্রয়োজন নির্দিষ্ট জায়গার। এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে জনগণকে। তবেই আবর্জনামুক্ত হবে বাড়ির আশপাশ।
সনৎ ঘোষ
খালোড়, হাওড়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy