উত্তর ২৪ পরগনার পারমাদন এলাকার বাসিন্দা শিবানী মুহুরির মৃত্যুর পর তাঁকে দাহ করতে যাওয়ার পথে শনিবার গভীর রাতে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এক শিশু-সহ সতেরো জনের মৃত্যু হয়। এমনিতেই পরিবারের সদস্যের বিয়োগে সকলেই ছিলেন মর্মাহত ও শোকাচ্ছন্ন, তার উপর ঘটে গেল এই অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা। আবারও সেই অতীতের ভয়াল স্মৃতিকে স্মরণ করাল গাড়িচালকের কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ। আরোহীদের বারণ করা সত্ত্বেও কুয়াশার রাতে জোর গতিতে গাড়ি চালিয়ে উল্টো দিক থেকে ধেয়ে আসা পাথরবোঝাই লরিকে ধাক্কা দিয়েই এই মহা বিপত্তি ঘটল। খবরে প্রকাশ যে, ওই গাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। রাতে সতর্ক হয়ে গাড়ি চালানো, ‘স্পিড লিমিট’ মেনে চলা, কুয়াশার রাতে গাড়ি চালানোর সময় কম গতিতে যাওয়া আবশ্যক। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে যে কোনও সময়ে ঘুম আসতে পারে, দুর্ঘটনা ঘটতে পারে— এ সব বিষয়ে তো চালকেরা অবহিত। কিন্তু সব জেনেও একটি শববাহী গাড়ির চালক নিয়মের তোয়াক্কা না করে, বেপরোয়া ভাবে এই বিষম কাণ্ড ঘটালেন। অপূরণীয় এই ক্ষতির মাসুল কে দেবে? অদূরদর্শিতার খেসারত কি সাধারণ মানুষকে এ ভাবেই দিতে হবে?
সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, শহর জুড়ে রাতে যে সমস্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে তার অন্যতম কারণ চালকদের মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিষয়টি। সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের কি কিছুই করার নেই? চালকদের নিয়ম মেনে না চলার এই প্রবণতা কি আগামী দিনেও চলতেই থাকবে?
উৎপল মুখোপাধ্যায়
হুগলি
অবহেলা
পুজো হয়ে গেলে কার্তিক ঠাকুরকে জলে বিসর্জন দিতে নেই। তাই বাজি, বাজনা ও আলোকসজ্জায় সাজিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে কার্তিক ঠাকুরকে মামার বাড়ি ঘোরানোর একটা রেওয়াজ রয়েছে। সেই রেওয়াজ পালিত হওয়ার পর বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে কোনও পথের ধারে অথবা গাছতলায় বসিয়ে দিয়ে আসা হয় মূর্তিটিকে। পূজিত হওয়ার পর তাকে এই গাছতলায় বসিয়ে দেওয়ার রীতি বড়ই কষ্টকর, অমানবিক ও দৃষ্টিকটু বলে মনে হয়। শুধু তা-ই নয়, ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে গিয়ে ওই সব মূর্তির শোচনীয় অবস্থা এক প্রকার দৃশ্যদূষণও ঘটায়। যাঁরা কার্তিক পুজো করেন, তাঁদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ নিয়ে পঞ্চায়েত ও পুরসভা উদ্যোগ করে দমকলের সাহায্যে মূর্তিটিকে জল দিয়ে গলিয়ে ফেলার চেষ্টা করুক। এতে অন্তত এই দৃশ্যদূষণ থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি পাবেন।
শ্রীমন্ত পাঁজা
গঙ্গাধরপুর, হাওড়া
আশা-নিরাশা
যাঁরা অত্যাবশ্যক পরিষেবা দান করছেন, তাঁদের কেন যথাযথ সাম্মানিকের জন্য বার বার রাস্তায় নামতে হচ্ছে, আবেদন-নিবেদন করতে হচ্ছে (‘দাবি পূরণে এ বার পথে নামল নার্সদের সংগঠন’, ২৩-১১)? এই প্রশ্নটা আশাকর্মীদেরও। তাঁদের ‘বীরাঙ্গনা’, ‘গৌরব’ প্রভৃতি নানা সম্মানে ভূষিত করা হলেও, বিগত ৮ মাসের উৎসাহ ভাতা বা ইনসেন্টিভ আশাকর্মীরা পাননি, বকেয়া রয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মিশন হঠাৎ কোনও অর্ডার ছাড়াই আশাকর্মীদের উৎসাহ ভাতাকে আট ভাগে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঠাতে শুরু করেছে। এর ফলে বিভিন্ন জেলায় আশাকর্মীদের অ্যাকাউন্টে নানা অঙ্কের টাকা (২০০, ৫০০, ১০০০ বা আর একটু বেশি) ঢুকছে, যা তাঁদের প্রাপ্যের অতি সামান্য অংশ।
এক-এক জন আশাকর্মীর ১৮-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাকি। কেন ওই টাকা আটকে রাখা হচ্ছে, কবে তা পাওয়া যাবে, এ বিষয়ে ব্লক আধিকারিকদের জিজ্ঞাসা করে কোনও সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতেই উৎসাহ ভাতা কখন ঢোকে, কত কাটে, এ সম্পর্কে ব্যাঙ্ক থেকে পাসবই আপডেট করা যায় না বা মোবাইলে মেসেজ ঠিক ভাবে আসে না। তার উপর যদি উৎসাহ ভাতা এত ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়, তা হলে তো হিসাব রাখা অসম্ভব। কোনও ভাবেই বোঝা যাবে না যে, কোন মাসের টাকা দেওয়া হল বা কত টাকা পাওনা আছে।
নামে ‘স্বেচ্ছাসেবী’, কিন্তু ২৪ ঘণ্টার বাধ্যতামূলক শ্রমে আশাকর্মীরা আজ বিধ্বস্ত। অপরিমিত কাজের উত্তরোত্তর চাপ আর নিরন্তর জবাবদিহি। গ্রামবাংলার জনস্বাস্থ্যের তৃণমূল স্তরের সমস্ত ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবার ভার আশাকর্মীদের উপর। দিনে-রাতে যে কোনও সময় গর্ভবতী মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, মা-শিশুর পরিষেবা, পালস পোলিয়ো, শুগার, প্রেশার, হার্টের রোগ, চোখের রোগ, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, কুষ্ঠ, যক্ষ্মা— এক কথায় সব ধরনের রোগীদের পরিষেবা দেওয়া বা সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানমুখী করা হল আশাকর্মীর কাজ। করোনা অতিমারি থেকে শুরু হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা করা, কোয়রান্টিন সেন্টারে ডিউটি দেওয়া, কোভিড টিকাপ্রাপ্তদের তালিকা করা, সমীক্ষা করার কাজও। যে কাজ পনেরো-কুড়ি দিনের, তা দু’-এক দিনের মধ্যে করে দেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে।
সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আশাকর্মীদের বিমার ব্যবস্থা করা হবে। আক্রান্ত হলে দেওয়া হবে ১ লক্ষ টাকা করে। তা-ও জুটছে না। দেশ জুড়ে হেলিকপ্টার থেকে এই সমস্ত ‘ফ্রন্টলাইন’ যোদ্ধার মাথায় কোটি কোটি টাকার ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে, থালা বাজিয়ে কত প্রেরণা জোগানো হল। তা হলে তাঁদের পরিবারকে এমন আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলা হচ্ছে কেন?
একটা অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটছে আশাকর্মীদের। সপ্তাহের শেষে সমস্ত কর্মীর ছুটি থাকে, কাজের মাঝে বিশ্রাম থাকে, কিন্তু আশাকর্মীর ডিউটির পর কোনও বিশ্রাম নেই। সাপ্তাহিক ছুটির প্রয়োজনকেও ঊর্ধ্বতনরা স্বীকার করেন না। কর্মক্ষেত্রে তাঁদের সম্মান ও সাম্মানিক কোনওটাই সুনিশ্চিত করছে না কোনও সরকার।
ইসমত আরা খাতুন
রাজ্য সম্পাদিকা, পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়ন
প্রতিষেধক চাই
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় অনেকগুলো রিহ্যাব সেন্টার বা নেশামুক্তি কেন্দ্র আছে। এখানে কারও সন্তান, ভাই বা স্বামী নিজেদের সংশোধন করার আশায় ভর্তি আছেন। যত দূর জানি, এঁদের এখনও করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হয়নি। ওঁরাও যাতে তাড়াতাড়ি প্রতিষেধক পান, তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
দেবল ভট্টাচার্য
হুগলি
বেহাল পরিষেবা
মছলন্দপুর ডাকঘরে সেভিংস, পেনশন ইত্যাদি মিলে দশ হাজারেরও বেশি আমানতকারী রয়েছেন। এখানকার আমানতকারীদের সীমাহীন দুর্দশার কয়েকটি উল্লেখ করছি। এক জন মাত্র কর্মচারী টাকা লেনদেন থেকে শুরু করে, বই আপডেট, নুতন বই ও কেওয়াইসির আবেদন গ্ৰহণ ইত্যাদি কাজ করেন। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কাউন্টারের সামনে সঙ্কীর্ণ জায়গার জন্য গ্ৰাহকদের ঝড়-জলের মধ্যেও কাউন্টারের বাইরে খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অত্যধিক ভিড়ে সব সময় করোনা বিধি মানাও সম্ভব হয় না। বসার জন্য মাত্র দুটো বেঞ্চ আছে, এজেন্টদের বসারও কোনও জায়গা না থাকায় তাঁরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই আমানতকারীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা দিয়ে থাকেন। নুতন সেভিংস বই পেতে এক মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়। ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে এই দুর্গতি থেকে মুক্তি দিন।
রাসমোহন দত্ত
মছলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy