সোমনাথ ঘোষের ‘দালাল চক্র’ (সম্পাদক সমীপেষু, ৯-৫) চিঠিটির সমর্থনে কয়েকটি কথা জানাতে চাই। তিনি গোবরডাঙা বিদ্যুৎ অফিসে দালাল চক্রের অভিযোগ করে তা বন্ধ করার আবেদন করেছেন। এই চক্র শুধু গোবরডাঙা বিদ্যুৎ অফিস নয়, সারা রাজ্যে ছড়িয়ে আছে। প্রসঙ্গত আমার একটি অভিজ্ঞতার কথা বলি। আমাদের পাড়ায় ধারাবাহিক লো ভোল্টেজ থাকায় পাম্প, ফ্রিজ ইত্যাদি চালানো যাচ্ছিল না। গত মাসের গোড়ার দিকে অনলাইনে সরাসরি ১৯১২১ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাই। অভিযোগ নথিভুক্ত করে নম্বর দিয়ে জানানো হয় কিছু ক্ষণের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের লোক গিয়ে ঠিক করে দিয়ে আসবে। আসার আগে ফোন করবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু তিন দিন কেটে গেলেও কোনও ফোন আসেনি এবং সারানোও হয়নি। পুনরায় ওই নম্বরে অভিযোগ জানাতে গিয়ে ব্যর্থ হই। বাধ্য হয়ে অভিজ্ঞ এক বিদ্যুৎকর্মী, যিনি বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকাদারের কাছে কাজ করেন, তাঁকে ডেকে নগদ অর্থ দিয়ে কাজটি করিয়ে নিতে হয়। মজার ব্যাপার, সেই দিনই রাত্রে আমার বিদ্যুতের লাইন ঠিক হয়েছে কি না জানতে চেয়ে ফোন আসে। আমার সন্দেহ, এর মধ্যেও বোঝাপড়া আছে। তা ছাড়া, নতুন মিটার নেওয়া থেকে মিটারের লোড বাড়ানো-সহ যে কোনও কাজে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে পাত্তা পাওয়া কঠিন। ফলে উপভোক্তা দালাল ধরতে বাধ্য হন।
এক সময় ভূমি দফতরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। এখন ভূমি, খাদ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ দফতর থেকে সরকারি হাসপাতাল— সব গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ব্লক, মহকুমা, জেলা অফিসগুলোতে দালাল চক্রের রমরমা। এই চক্রের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ উগরে দিলেও, তাঁদের হাত-পা বাঁধা। বিভিন্ন অজুহাতে বারে বারে ঘুরতে ঘুরতে হয়রান হয়ে এক সময় মানুষ দালালেরই শরণাপন্ন হতে বাধ্য হন। বেকার সমস্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কাজ খুঁজে নেওয়ার জন্য দালাল চক্র ক্রমশ সর্বত্র জাঁকিয়ে বসছে। এর হাত থেকে কি রাজ্যবাসীর মুক্তির পথ নেই?
প্রদ্যোত পালুই, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
ছুটিতেই বিয়ে
‘তরমুজ ফেরি ষষ্ঠ শ্রেণির খুদের, টোটোর সারথি দশমের পড়ুয়া’ (৯-৫) সংবাদটি পড়লাম। এর সঙ্গে কিছু সংযোজন করতে চাই। করোনার কারণে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় নাবালিকা বিয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এ বার দেড় মাসের গ্ৰীষ্মাবকাশে আবার সেই নাবালিকা বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। ছুটির দশ দিন যেতে না যেতে আমার স্কুলের দু’জন নবম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেল। এদের এক জনের মা মিড-ডে মিলের রান্না করতে আসতেন। আমরা তাঁকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বিয়েটা আটকে রেখেছিলাম। কিন্তু যে-ই ছুটি পড়ে গেল, তিনি তাড়াহুড়ো করে অতি গোপনে বিয়েটা দিয়ে দিলেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরে বিয়ের দিন সকালে চাইল্ড লাইনে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি! তাই দীর্ঘ ছুটি শুধু পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটায় না, কিশোরী মেয়েদের জীবনে বিপর্যয়ও ডেকে আনে! আর অনেক পাত্রই
এই রকম ছুটির সুবর্ণ সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।
শুভ্রা সামন্ত, বালিচক, পশ্চিম মেদিনীপুর
রক্ষক কে
অনেক বছর আগে কর্মজীবনের শুরুতে গড়ফা থানা অন্তর্গত পূর্বাচল হাসপাতাল রোডে এক খণ্ড জমি কিনি। ইচ্ছা ছিল, কর্মজীবনে সৎ পথে অর্জিত সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটা বাড়ি করে জীবনের বাকি ক’টা দিন সেখানে অতিবাহিত করব। কর্মসূত্রে বাইরে থাকা সত্ত্বেও যথারীতি মাঝে মাঝে গিয়ে নিয়মিত জমিটার দেখভাল করতাম। এ ছাড়াও প্রতিবেশী শুভানুধ্যায়ীদের মাধ্যমে খবর নিতাম। তবে গত দু’বছর করোনা কালে লকডাউনের জন্য জমিটি দেখতে যেতে পারিনি। এর মধ্যে আমারও করোনা হয় এবং করোনা পরবর্তী অসুস্থতা লেগেই থাকে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি খবর পাই, আমার জমিতে কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রবেশ করে জমিটা নিজেদের বলে দাবি করছিল। স্ত্রীকে সঙ্গে করে অসুস্থ শরীর নিয়ে তখনই সেখানে গিয়ে দেখি, তারা জনমজুর দিয়ে জমিতে পাঁচিল দিচ্ছে। আমি ও আমার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে গালিগালাজ করে, ভয় দেখায়, স্ত্রীর সঙ্গে অভদ্র আচরণ করে। আমরা তখনই গড়ফা থানায় আমার দলিলের কাগজ দেখিয়ে অভিযোগ করি এবং একটা ডায়েরি করি। পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিদের থানায় ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু এর পরে অভিযুক্তদের কী হয় জানি না। পরে উকিলের পরামর্শে ১৪৪ ধারা-র জন্য আলিপুর পুলিশ কোর্টে আবেদন করি এবং তার কোর্ট অর্ডার থানায় জমা দিই। আমার ১৪৪-এর হিয়ারিং-এর দিন ১৫ মার্চ ছিল। কিন্তু অসুস্থতার জন্য সে দিন উপস্থিত হতে পারিনি। এর পরে গত ৬ এপ্রিল পুনরায় আমার জমির মধ্যে দুরভিসন্ধিমূলক গতিবিধির খবর আসে। সেই দিন থানায় যোগাযোগ করলে থানা থেকে আমায় জানানো হয়, এই সব দেখা পুলিশের কাজ নয়। ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই দেখা পুলিশের কাজ। পুলিশের কর্তব্যের নতুন সংজ্ঞা জেনে আবার আলিপুর পুলিশ কোর্টে ১৪৪-এর আবেদন করি এবং সেই অর্ডার থানায় জমা দিই। তা সত্ত্বেও আমার উপর নানা ভাবে উপদ্রব হচ্ছে। আমাকে জমি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। জমিতে গেলে কিছু অপরিচিত মুখের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি। এতে আমি ভীত-সন্ত্রস্ত। প্রাণের আশঙ্কা করছি।
বুঝতে পারছি না, দেশে একটা নির্বাচিত সরকার থাকা সত্ত্বেও এই জুলুমবাজি কী করে চলে? আমাদের ধন-সম্পত্তি কে রক্ষা করবে? এই সব ক্ষেত্রে দায় কার? পুলিশ থাকা সত্ত্বেও জনগণ যদি তাদের থেকে ন্যূনতম সুরক্ষার আশ্বাস না পায়, তবে পুলিশের প্রয়োজন কী? এরা শুধুই রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের সুরক্ষার জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য নয়?
সুব্রত কুমার দে, কলকাতা-১২
বিকল টেলিফোন
ডাক দফতরের বারাসত বিভাগের অন্তর্গত মছলন্দপুর উপ-ডাকঘরের টেলিফোনটি দীর্ঘ দিন যাবৎ অচল হয়ে আছে। শুনেছি টেলিফোন বিল জমা না দেওয়ার জন্য বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ ওই ল্যান্ডলাইনটি বিকল করে দিয়েছে। এর ফলে ডাকঘরের কর্মীরা তাঁদের নিজেদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কাজ মেটাতে পারলেও, আমরা, সাধারণ গ্রাহকরা তাঁদের ব্যক্তিগত নম্বর চাইতে পারি না সঙ্গত কারণেই। তাই, আমাদের মতো অধিকাংশ গ্রাহকই সমস্যায় পড়েছে। যে প্রয়োজনটি ফোনের সাহায্যে সহজেই সমাধান করা যায়, তার জন্য আমাদের সশরীরে ডাকঘরে এসে সমাধানের চেষ্টা করতে হচ্ছে। বিশেষত যাঁরা দূরে থাকেন কিংবা যাঁরা বয়স্ক, অসুস্থ, তাঁদের পক্ষে অনেক সময়েই এটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। তাই, অচল ফোনটি যাতে অবিলম্বে সচল হয়, সে জন্য যাবতীয় উদ্যোগ করার আবেদন জানাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
দীপক ঘোষ, সাদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
কাজে অনীহা
হাওড়া স্টেশনের অনুসন্ধান অফিসে কর্তব্যরত কর্মীদের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। প্রথম থেকেই দেখে আসছি সংশ্লিষ্ট কাজে তাঁদের তীব্র অনীহা। বেশির ভাগই উত্তর দিতে চান না। না শোনার ভান করেন। বিরক্তির সঙ্গে স্কেল বা কঞ্চি দিয়ে বোর্ডে লেখা নোটিস দেখিয়ে দেন। এও বলতে শুনেছি, একই প্রশ্নের উত্তর বার বার দিতে তাঁদের নাকি ভাল লাগে না! আশ্চর্য! এটাই তো ওঁদের কাজ।
নোটিস বোর্ডের লেখা ইংরেজিতে হয়। তা দেখতে গিয়ে ইংরেজি না জানা ও বহু গরিব সাধারণ যাত্রীকে এখানে হেনস্থা হতে দেখি। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে এই সমস্যার সুরাহা ও জবাব চাইছি।
অরিত্র মুখোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy