ছবি: সংগৃহীত
‘তাঁর আমলে চিড়িয়াখানায় ওয়াজিদ আলি শাহ থেকে বিবেকানন্দ’ (রবিবাসরীয়, ২৬-১) শীর্ষক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি।
ভারতে প্রথম চিড়িয়াখানা কলকাতায় তৈরির প্রস্তাব ১৮৪২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ক্যালকাটা জার্নাল অব ন্যাশনাল হিস্ট্রি-তে। প্রস্তাবটি পেশ করেন বেঙ্গল এশিয়াটিক সোসাইটির মিউজ়িয়ামের তৎকালীন কিউরেটর ড. জন ম্যাকলেল্যান্ড। প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি। দীর্ঘ ২৫ বছর পরে, ১৮৬৭ সালে, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল-এর তৎকালীন সভাপতি ড. জোসেফ বার্টফেয়ার আবার একটি প্রস্তাব পেশ করেন। কিন্তু এ প্রস্তাবটিকেও কার্যকর করার জন্যে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
এর পর ১৮৭৩ সালে কার্ল লুইস শুইন্ডলার, গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়ার পোস্টমাস্টার জেনারেল, আবার একটি বিস্তৃত কর্ম-পরিকল্পনা জমা দেন। কিন্তু পছন্দমত জায়গার অভাবে যে প্রস্তাবও ফলপ্রসূ হল না। শেষ পর্যন্ত ১৮৭৫ সালে লেফটেন্যান্ট গভর্নর অব বেঙ্গল, স্যর রিচার্ড টেম্পলের চেষ্টায় আলিপুর অঞ্চলের জিরাট ব্রিজের কাছ থেকে টালিনালার পাড় ধরে বেলভেডিয়ার ভবনের উত্তর-পশ্চিম দিকে পছন্দের প্রয়োজনীয় জমি মেলায় স্থাপিত হয় চিড়িয়াখানা। যদিও তত দিনে ভারতের প্রথম চিড়িয়াখানা তৈরির কৃতিত্বের সম্মান পেয়ে গিয়েছে মাদ্রাজ। গভর্নমেন্ট সেন্ট্রাল মিউজ়িয়ামের তৎকালীন ডিরেক্টর এডওয়ার্ড গ্রিন বালবউর-এর একক চেষ্টায় ১৮৫৫ সালে স্থাপিত হয় মাদ্রাজ চিড়িয়াখানা।
শুধুমাত্র ওয়াজিদ আলি শাহ নন, অনেকের দানেই আমাদের গর্বের আলিপুর চিড়িয়াখানা গড়ে ওঠে। এদের মধ্যে চোরবাগানের মার্বেল প্যালেস-এর রাজেন্দ্র মল্লিকের নাম অবশ্যই উল্লেখ্য। মূল্যবান পশুপাখি এবং টাকা উদার হস্তে দান করেছিলেন বলে চিড়িয়াখানার একটি ভবনের নাম রাখা হয় ‘মল্লিক’স হাউস’।
শুরুতে ৩৩ একর জমি নিয়ে চিড়িয়াখানা গড়ে উঠলেও বর্তমানে এর আয়তন ৭৫ একর।
সুবীর ভট্টাচার্য
কলকাতা-৬৭
রামব্রহ্ম
‘তাঁর আমলে চিড়িয়াখানায়...’ (২৬-১) শীর্ষক প্রতিবেদনে গায়ত্রী সেন জীববিজ্ঞানী রামব্রহ্ম সান্যাল সম্পর্কে যে তথ্য পরিবেশন করেছেন, তার সঙ্গে কিছু সংযোজন।
রামব্রহ্মকে বলা হয় আধুনিক ভারতের সর্বপ্রথম তথা পথিকৃৎ জীববিজ্ঞানী। আলিপুর চিড়িয়াখানার ‘প্রথম ভারতীয় অধিকর্তা’ নন, তিনি ছিলেন ভারতীয়-অভারতীয় নির্বিশেষে চিড়িয়াখানার সর্বপ্রথম অধিকর্তা এবং শুরু থেকে ওই চিড়িয়াখানার পূর্ণাঙ্গ দায়িত্বে
থাকা প্রতিষ্ঠাতা। তৎকালীন
ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে সসম্মানে এই স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
২৪-২৫ বছরের তরুণ রামব্রহ্ম বাস্তবে তখনও পর্যন্ত কোনও চিড়িয়াখানা না দেখে, বা চিড়িয়াখানা বিষয়ে কোনও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও, এ কাজে অসামান্য সাফল্য লাভে যে সক্ষম হয়েছিলেন, তাতে তাঁর অতুলনীয় নিষ্ঠা, দূরদর্শিতা ও কঠোর পরিশ্রমের পরিচয় পাওয়া যায়। গভীর ভাবে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণই ছিল তাঁর সর্ব ক্ষণের নেশা। এ ভাবেই তিনি কার্যত স্ব-শিক্ষিত জীববিজ্ঞানী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলেন।
চিড়িয়াখানার পরিচালন কমিটির সভায় (প্রেসিডেন্ট ছিলেন লর্ড ব্রাউন ও সেক্রেটারি ছিলেন সিই বাকল্যান্ড) ইউরোপিয়ান সুপারিনটেনডেন্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও, শেেষ ১৮৭৭ সালে রামব্রহ্মকেই
ওই পদে যোগ্য মনে করে, তাঁকে সর্বপ্রথম সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিযুক্ত করা হয়।
১৯০৮ সালের ১৩ অক্টোবর মাত্র ৫৮ বছর বয়সে নিজের অফিসে কর্মরত অবস্থায় এই অক্লান্ত কর্মী জীবনবিজ্ঞানীর জীবনাবসান হয়।
নারায়ণ সরকার
বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
কেন মৃত্যু
আর কয়েকটা দিন পরই আমার প্রতিবেশী তথা ভ্রাতৃপ্রতিম বীর বাবলু সাঁতরার অকালমৃত্যুর এক বছর হবে।
২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে খুব ঠান্ডা পড়ায়, পুলওয়ামায় প্রচুর সৈন্য ক্যাম্পে ছিলেন। তাই নিরাপত্তার কারণে অত্যন্ত দ্রুত তাঁদের স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। পরে আবার ১০ ফেব্রুয়ারি সতর্ক করা হয়। যার ফলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এ ব্যাপারে বিমান চায়। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তা নাকচ করে দেয়। বাধ্য হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি বুলেটপ্রুফ গাড়ি সেনাবাহিনীকে নিয়ে রওনা হয়।
সাধারণত এই সব ক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য একমুখী রাস্তা খোলা রাখা হয়, দ্বিমুখী নয়। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত ও রহস্যজনক কারণে এ ক্ষেত্রে দু’মুখী রাস্তাই খোলা ছিল। তদুপরি কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পর সেনাদের বুলেটপ্রুফ গাড়ি থেকে নামিয়ে সাধারণ গাড়িতে তোলা হয়। তার পরেই দ্বিমুখী রাস্তার উল্টো পথে আসে বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি এবং তাতে বিস্ফোরণ ঘটায়, ফলে অকালমৃত্যু ঘটে তরতাজা ৪৩টি দেশপ্রেমিক সাহসী বীরের।
কিন্তু কিছু প্রশ্ন মনে জাগে।
১) কেন সৈন্যদের মাঝরাস্তায় গাড়ি বদল হল?
২) কেন একমুখী না করে উভয় দিক খোলা ছিল?
একমুখী হলে বিধ্বংসী গাড়িটা ঢুকতেই পারত না।
গোলকনাথ ঘোষ
উলুবেড়িয়া, হাওড়া
পানীয় জল
আমি শান্তিপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাসকারী ৭৪ বছর বয়সের এক রোগগ্রস্ত মহিলা। আমার স্বর্গীয় সহোদর দাদা ১-৬-২০১০ তারিখে পুরপানীয় জল সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জমা করেন, কিন্তু তাঁর জীবদ্দশাতে (মৃত্যু: ১-৩-২০১৭) পুর কর্তৃপক্ষ সংযোগ দেননি। তাঁর মৃত্যুর পর আমি তাঁর একমাত্র আইনি উত্তরাধিকারী হিসেবে ২০-৬-২০১৭ তারিখে আমি পুনরায় অনুরোধ করি ও ব্যর্থ হই।
ইতিমধ্যে ১-৬-২০১৯ তারিখে প্রধান সচিব, পুর নগরোন্নয়ন দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ বিষয়ে অভিযোগ করি। প্রত্যুত্তরে উক্ত দফতরের উপসচিব মহাশয়, শান্তিপুর পুর কর্তৃপক্ষকে পানীয় জল সংযোগের জন্য যথাযথ নির্দেশ দেন। কিন্তু শান্তিপুর পুর কর্তৃপক্ষ কোনও এক অজ্ঞাত কারণে আজও পানীয় জল সংযোগ করল না!
আমরা টাকা জমা করেও ১০ বছরেও কেন পুরপানীয় জল পাব না? জানানো প্রয়োজন, এ বিষয়ে কোনও আদালতের কোনও প্রকার নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ পূর্বে কোনও দিন ছিল না বা এখনও নেই।
পুষ্পা অধিকারী
শান্তিপুর, নদিয়া
তারিফ করিনি
দেবশ্রী সেনগুপ্তের ‘রাবীন্দ্রিক’? (১৩-২) শীর্ষক চিঠির উত্তরে জানাই ‘সজাগ থাকাই রাবীন্দ্রিক’ (১৯-১) লেখাটিতে আমি ‘বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতনের বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের সমর্থন’ ‘তারিফ’ ইত্যাদি কিছুই করিনি। লেখাটির সঙ্গে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতির যোগ-বিয়োগ দেখানো আমার উদ্দেশ্য ছিল না বলেই লেখার বয়ানে কোথাও বিশ্বভারতীর উল্লেখমাত্র নেই। লেখার সঙ্গে ব্যবহৃত ছবিটি সংবাদপত্র প্রদত্ত। সমগ্র দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সূত্রে আমি লেখাটিতে দেখাতে চেয়েছিলাম ফ্যাসিবাদী শক্তির দমননীতির কৌশল রবীন্দ্রনাথ কী ভাবে চিহ্নিত করেছিলেন ও কী ভাবেই বা সকলকে তার বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে বলেছিলেন। কথার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রবীন্দ্রনাথ ছাত্রদেরও সচেতন থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে-কথাও আমার লেখায় আছে। প্রসঙ্গত জানাই কথার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের দিন সকালে ক্লাস নিতেও দ্বিধা করিনি।
বিশ্বজিৎ রায়
শান্তিনিকেতন
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy