অতিমারির কারণে গত দেড় বছরে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বাকিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা বাধ্য হয়েছি। যেমন— স্যানিটাইজ়েশন পদ্ধতি। সরকারি, বেসরকারি বাড়ি, দোকানপাট, শপিং কমপ্লেক্স— সব কিছু নিয়মিত স্যানিটাইজ় করা চলছে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে। এই ধরনের সারফেস স্যানিটাইজ়েশন-এ মূলত সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট (১ শতাংশ), অ্যালকোহল (৭০ শতাংশ), হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল, এই রাসায়নিকগুলির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কিছু আছে কি? এগুলি কতটা নিরাপদ মানব শরীরের জন্য?
সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট-এর কারণে পেটে যন্ত্রণা, ডায়রিয়া, বমি ভাব, চামড়া লাল হওয়া, চোখ লাল হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়াও এটি কারসিনোজেনিক (এর কারণে জেনেটিক মিউটেশন ঘটে ক্যানসার হতে পারে) এবং করোসিভ (যার ফলে বিভিন্ন ধাতু ক্ষয় হয়)। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড চোখ এবং চামড়ার ক্ষতি করে। শুধু তা-ই নয়, অতিরিক্ত হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড অন্ত্র, লিভার, থাইমাস, কিডনিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। দীর্ঘ দিন এই রাসায়নিক ব্যবহার করলে ক্যানসারের মতো মারণরোগ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। ৭০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত জীবাণুনাশক মানুষের ত্বকের প্রভূত ক্ষতিসাধন করতে পারে।
সমস্ত রাসায়নিক জীবাণুনাশকই পরিবেশে দীর্ঘ দিন থেকে যায়। এর কারণে মাটি ও জলের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অপরিকল্পিত ও মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক জীবাণুনাশকের ব্যবহার ভবিষ্যতে আমাদের আরও কিছু ভয়াবহতার সামনে খাড়া করে দিতে পারে। আমরা জীবাণুর অতিমারিকে রুখতে গিয়ে জীবাণুনাশকের অতিমারিকে ডেকে আনছি না তো?
সৌগত মাইতি
তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর
তথ্যে অসঙ্গতি
সম্প্রতি এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজ়েশন (ইপিএফও) কর্তৃপক্ষ আধার ও ‘ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নাম্বার’-এর (ইউএএন) বাধ্যতামূলক সংযুক্তির নির্দেশ জারি করেছে। এই নিয়ম ১ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। এই সংযুক্তি না হলে চলতি মাস থেকেই কর্মীদের অ্যাকাউন্টে নিজস্ব বা নিয়োগকর্তার টাকা ঢুকবে না। এর ফলে বিপাকে পড়তে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৪,৬৬,০৭৬ জন কর্মী, যা রাজ্যের ইপিএফও-র মোট সদস্যের ১৬ শতাংশ। তার মধ্যে বিড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ২৮ শতাংশ, চা শিল্পে ১৯ শতাংশ, ম্যানপাওয়ার ম্যানেজমেন্ট-এর ১৫ শতাংশ ও ৮ শতাংশ পাটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষত, চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এই নতুন নিয়মের কারণে গোটা দেশে ইপিএফও-র সদস্যসংখ্যার ৭-৮ শতাংশ বা আনুমানিক ৩০-৩৫ লক্ষ কর্মী সমস্যায় পড়বেন। এই বছরের প্রথম দিকে ইপিএফ-এর সুদের টাকা দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়। কিন্তু কেওয়াইসি তথ্যের অসঙ্গতির ফলে এখনও দেশের ৪০ লক্ষ (রাজ্যের প্রায় ৬ লক্ষ) কর্মী সুদের টাকা পাননি। নানা কারণে এঁরা সমস্যার মুখে পড়ছেন। যেমন—
১) ইপিএফ-এর খাতায় শ্রমিকদের নাম, বয়স ইত্যাদি তথ্যের বহু গরমিল আছে। যখন শ্রমিকদের নাম ইপিএফ-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যে ভাবে নাম ও বয়স পাঠানো হয় (নামের বানান-সহ), সে ভাবেই তাঁদের নাম ও বয়স নথিভুক্ত হয়। নথিভুক্ত করার আগে তা যথাযথ হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে শ্রমিকের সম্মতি নেওয়া হয় না। নাম ও বয়স-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ইপিএফ দফতরে পাঠানোর দায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের।
২) আধার কার্ড তৈরির সময় শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য, অর্থাৎ নাম, বাবার নাম, বয়স, ঠিকানা ইত্যাদি ভোটার কার্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়নি। বিশেষ করে বিড়ি, চট ও চা-এর মতো শ্রমনিবিড় শিল্পের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অত্যন্ত জটিল হয়েছে। চা শিল্পে মুখ্যত আদিবাসী শ্রমিক কর্মরত হওয়ার ফলে সেখানে তথ্য সংরক্ষণের অভাব প্রকট। সম্প্রতি ডুয়ার্সের এক বাগানে দু’জন জীবিত শ্রমিককে মৃত দেখিয়ে, তাঁদের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিড়ি ও পাটশিল্পে একই সমস্যা। নাম ভুল, নামের বানান ভুল, বয়স বেশি, অথবা কম। সারা দেশে ইপিএফ-এ নথিভুক্ত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগকর্তা বা কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে ন্যায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ও পেনশন পেতে জেরবার হয়ে যাচ্ছেন। আধার সংশোধন করতে হলে প্রামাণ্য নথি প্রয়োজন। দরিদ্র শ্রমিকদের অনেকেরই জন্ম সার্টিফিকেট, স্কুল সার্টিফিকেট নেই। কোন তথ্য অনুসারে ইপিএফও-র রেকর্ড সংশোধন হবে?
৩) ইপিএফও-র নির্দেশ অনুসারে, আধার সংশোধন ও ‘ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নাম্বার’-এর সঙ্গে সংযুক্তির দায়িত্ব মালিকদের। কিন্তু সেই কাজ তাঁরা করছেন না। বরং, শ্রমিকদের ঘাড়েই দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
৪) আধার সংশোধন কেন্দ্র প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সাধারণ শ্রমিকরা একাধিক বার আধার সংশোধন কেন্দ্রে গিয়ে ঘুরে আসেন, কাজ হয় না।
আধার ও ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নাম্বার সংযুক্তির প্রয়োজন আছে। জালিয়াতি বন্ধ করতে হলে এই সংযুক্তি জরুরি। কিন্তু আধার সংশোধনের জন্য সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে আধার সংশোধন কেন্দ্রের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে হবে, বিড়ি, চটকল ও চা বাগান এলাকার মধ্যে আধার সংশোধন কেন্দ্র খুলতে হবে।
অশোক ঘোষ
সাধারণ সম্পাদক, ইউটিইউসি কেন্দ্রীয় কমিটি
অ্যাপের ভুল
আমরা উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা। গত ৫ এপ্রিল আমি এবং আমার স্ত্রী ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতাল থেকে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় নিয়েছিলাম। যথাসময়ে তার শংসাপত্রও পাই। নিয়মমতো ১২ সপ্তাহ পরে, আগামী ২৮ জুন আমাদের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার কথা। কিন্তু তার জন্য কো-উইন অ্যাপে স্লট বুক করতে গেলে বার্তা দিচ্ছে, আমার নাকি প্রথম ডোজ়ই নেওয়া হয়নি! এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষেধক প্রদান কেন্দ্রে একাধিক বার ফোন করলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। ফলত, দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য স্লটও বুক করা যাচ্ছে না। অবিলম্বে কো-উইন অ্যাপে এই ভুল যাতে সংশোধন করা হয়, তার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
দীপঙ্কর নাগ
কলকাতা-১১০
জলকষ্ট
ভাটপাড়া পুরসভার ১নং ওয়ার্ডের ন্যায়ালঙ্কার ঠাকুরপাড়া অঞ্চলে পুরসভার কল থেকে জল প্রায় পড়েই না। পুরসভাকে জানােনার পরে এক-দুই দিন জল ভাল আসে, তার পর আবার একই অবস্থা। গত কয়েক মাস ধরে পরিস্থিতির এতটুকুও উন্নতি হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি।
গৌতম রায়
ভাটপাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
লাভ কী?
ভারতীয় ডাক বিভাগ পরিচালিত রাজারহাট সাব পোস্ট অফিসের অন্তর্গত পোলেরহাট শাখা পোস্ট অফিসের পরিষেবা বিভ্রাটের কথা বলতে চাই। পোস্ট অফিসটি কোনও দিন সাড়ে এগারোটার আগে খোলে না। আর, কোনও পরিষেবা নিতে গেলে কর্মীরা বলেন, ‘রাজারহাট এস ও কিছু পাঠায় না’। প্রশাসনের কাছে তাই আমার প্রশ্ন, নাগরিকদের যদি কোনও কাজেই না লাগে, তা হলে এই পোস্ট অফিসটি চালু রেখে লাভ কী?
অমিত কুমার মুখোপাধ্যায়
পোলেরহাট, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy