ছবি: সংগৃহীত
দেবদূত ঘোষঠাকুরের লেখা ‘বাঘও যাদের ভয় পায়’ (রবিবাসরীয়, ১৯-১) পড়লাম। এ ব্যাপারে জানাই যে, আজ ‘ঢোল’ নামক এই জংলি কুকুরটির এ রাজ্যে বিলুপ্তি ঘটলেও, ৫০-৬০ বছর আগে এরা এ রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গলে বাস করত। আমাদের গ্রামটা পাহাড়ি জঙ্গল এলাকা সংলগ্ন নদীর প্রান্তে। ছোটবেলায় প্রায় শুনতাম, গ্রামে বা এ দিকের অঞ্চলে সন্ধের সময় কেউ মারা গেলে তাঁকে তখন নদীর প্রান্তবর্তী শ্মশানে দাহ করা হত না, পর দিন সকালে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হত।
কারণ সন্ধে বা রাতে দাহ করতে গেলে দেখা যেত, চিতার আগুন দেখে, মানুষ পোড়ানোর গন্ধ শুঁকে বন থেকে এক ধরনের জন্তু বেরিয়ে আসত। শরীরের রং বাঘের গায়ের রঙের মতো, নাদুসনুদুস, লম্বা কুকুরের মতো সুস্বাস্থ্যবিশিষ্ট। এসে নিঃশব্দে প্রথমে নদীর জলে ভাল করে ডুব দিয়ে গা ভিজিয়ে নদীর চরের বালিতে শুয়ে নিয়ে এ পাশ-ও পাশ করে সারা শরীরে বালি মেখে নিত। তার পর ওত পেতে থেকে, সুযোগ বুঝে, খুব ক্ষিপ্রতার সঙ্গে জ্বলন্ত চিতা থেকে অর্ধদগ্ধ লাশটিকে মুখে নিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ত। এত দ্রুততার সঙ্গে কাজটি করত, শ্মশানযাত্রীরা লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে চিতা ঘিরে থাকলেও কিছু করতে পারত না। পরের দিন বনে কাঠুরেরা বা পথচলতি মানুষ দেখতে পেত, মরা মানুষের মাথার খুলি, হাত, পা প্রভৃতি ছড়িয়ে আছে।
এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চল এলাকা থেকে প্রায় দিনই সন্ধে হলে হাঁস, মুরগি, ছাগল এমনকি গরুর পাল থেকে গরু-বাছুর এরা নিমেষে নিঃশব্দে উধাও করে দিত।
এলাকার মানুষ এই ‘ঢোল’কে বলত ‘আধবাঘা’। এরা নাকি বাঘেরই সংকর জাতির প্রজাতি। এদের ক্ষিপ্রতা, শক্তি ও ঘ্রাণশক্তি অন্যান্য পশুর চেয়ে অনেক গুণ বেশি। সংকর জাতীয় পশু বলেই এদের বংশবৃদ্ধির হার খুব কম। বন্য পশু ও বন সংরক্ষণের অভাবে এবং চোরাশিকারিদের কল্যাণে এখানে বহু দিন পূর্বেই এই ‘আধবাঘা’ প্রাণীটির বিলুপ্তি ঘটেছে।
তপন কুমার বিদ
বেগুনকোদর, পুরুলিয়া
রামদুলাল
কলকাতা বন্দরের নামকরণ প্রসঙ্গে যে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে, তাতে আমার বক্তব্য, কলকাতা বন্দরের নামকরণে সবচেয়ে বেশি দাবিদার তৎকালীন খ্যাতনামা জাহাজ ব্যবসায়ী রামদুলাল দে সরকার (১৭৫২-১৮২৫)। মদনমোহন দত্তের কাছ থেকে প্রাপ্ত এক লক্ষ টাকা মূলধন নিয়ে রামদুলাল আমেরিকা, চিন এবং ইউরোপের সঙ্গে বিস্তৃত নৌভিত্তিক বাণিজ্য সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।
এ ছাড়াও সমাজকল্যাণের ক্ষেত্রেও তাঁর প্রভূত দানধ্যানের কথা জানা যায়। হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা, মাদ্রাজের দুর্ভিক্ষে সহায়তা, কলকাতার টাউন হল নির্মাণ প্রভৃতি বিভিন্ন জনহিতকর কাজেও তিনি অকাতরে দান করেছিলেন।
রামদুলাল ছাড়াও দ্বারকানাথ ঠাকুর (১৭৯৪-১৮৪৬) পরবর্তী এক জন উদ্যোগপতি অসামান্য বাঙালি ‘কার টেগোর কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠা করে জাহাজের ব্যবসার পত্তন করেন। যাত্রিবাহী জাহাজের প্রবর্তনও তাঁর অন্যতম কীর্তি। তাঁর অন্যান্য অবিস্মরণীয় কার্যকলাপের কথা নিশ্চয়ই বাঙালির অবিদিত নয়।
রাজা রামমোহন রায়ের মতো মনীষীপ্রতিম ব্যক্তিত্বকে মাথায় রেখেও বলতেই হয়, রামমোহনের তো জাহাজ ও বন্দর সম্পর্কিত কার্যকলাপের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক ছিল না, আর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম তো বিবেচিত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
রাজা মিত্র
কলকাতা-১৯
কচ্ছপ বিক্রি
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানার অন্তর্গত বিথারী গ্রামের বাজারে প্রায়ই কচ্ছপ বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। আমি এক দিন বাজারে ৯০০ টাকা কেজি দরে ১ কিলো ১০০ গ্রাম ওজনের দু’টি কচ্ছপ বিক্রি হতে দেখলাম। কিন্তু দেখেও কিছু করতে পারলাম না, সামাজিক প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কায়। বাজার কমিটির সদস্যের সঙ্গে কথা বলেও কচ্ছপ বিক্রি বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ হলাম। এই এলাকার অন্য বাজারগুলিতেও কচ্ছপ বিক্রির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সৌমিক নাথ
বিথারী, উত্তর ২৪ পরগনা
ব্যাঙ্ক নেই
বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের পুনিশোল বিশাল জনবহুল গ্রাম। প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষের বাস এখানে। কিন্তু এখানে একটিও ব্যাঙ্ক নেই।
স্বপন দেব
ওন্দা, বাঁকুড়া
খাজনা
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির নামে বিলি করা একটি লিফলেট পড়ে জানতে পারলাম, ১২ জানুয়ারি একটি স্কুলে বিএলআরও অফিসের আধিকারিকবৃন্দের উপস্থিতিতে খাজনা বিষয়ক জানবার ও জমা দেওয়ার জন্য ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত নাগরিক/ আবাসিকদের জানানো হল, যাঁদের ফ্ল্যাটের আয়তন ৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত, তাঁদের মোট খাজনার পরিমাণ ৪১০০ টাকার মতো ও ৬০০ বর্গফুটের বেশি ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ৫৪৩৫ টাকার মতো খাজনা ধার্য করা হয়েছে। এই বিষয়ে অনাদায়ী খাজনার তারতম্যকে গ্রাহ্য করা হয়নি। এই বিষয়ে সরকারি কোনও বিজ্ঞপ্তি আছে কি না, জানানো হয়নি। নাগরিক বা আবাসিকদের তরফ থেকে এত পরিমাণ খাজনার ও অনাদায়ী খাজনার পরিমাণের তারতম্যকে কেন গ্রাহ্য করা হবে না, কয়েক জন তা জানতে চাইলে, তাঁদের ক্যাম্পের স্থান ত্যাগ করার পরামর্শ দেওয়া হল। তা ছাড়া ক্যাম্পের অধিকারীদের কাছে খাজনা অনাদায়ীর কোনও রেকর্ড-পত্রও ছিল না।
মনোরঞ্জন সরকার
কলকাতা-৭৪
পুণ্য সঞ্চয়
দিন পাঁচেকের জন্য বারাণসী গিয়েছিলাম। নৌকায় করে গঙ্গায় ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম বিভিন্ন শ্মশান। প্রথমেই দশাশ্বমেধ ঘাট। চোখে পড়ল কয়েকটি মৃতদেহ ডাঙায় শোয়ানো। কিন্তু পা দু’টি জলে। বিভিন্ন লোক আঁজলা ভরে জল নিয়ে মৃতদেহের মুখে দিচ্ছেন। মাঝিকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘এত লোক মৃতদেহের মুখে জল দিচ্ছেন কেন?’’ মাঝি দুঃখের হাসি হেসে বললেন, ‘‘যখন লোকটা মরার সময় ‘জল, জল’ করছিলেন, তখন এক ফোঁটা জল পেয়েছিল কি না সন্দেহ আছে। এখন সবাই ওঁর মুখে জল দিয়ে পুণ্য সঞ্চয় করছেন।’’
কৃষ্ণা ভট্টাচার্য
কলকাতা-১০১
প্রাসঙ্গিক
‘মৃত ভাষা আবার?’ (২৫-১) চিঠিটির প্রসঙ্গে জানাই, দেবনাগরী একটি হরফ, এটি কোনও ভাষা নয়। ভারতের অনেক ভাষাই দেবনাগরী হরফে লেখা হয়। সুতরাং দেবনাগরীতে লেখা মানেই সংস্কৃত ভাষায় লেখা নয়। আর, যা মৃত তা-ই কিন্তু বর্জনীয় নয়। তা হলে তো পত্রলেখক যে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন তাঁকেও মৃত বলে বর্জন করতে হয়। প্রশ্ন হল, বর্তমানে সংস্কৃত ভাষার প্রাসঙ্গিকতা আছে কি না। সংস্কৃতের ব্যবহার ক্রমশ কমে এলেও এই ভাষার বিপুল ঐশ্বর্য ও সম্পদ আজও বিন্দুমাত্র প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। ঐতিহ্যের উপরেই আধুনিকতার ইমারত গড়ে ওঠে। উত্তরাখণ্ডের প্ল্যাটফর্মগুলিতে যদি সংস্কৃত ভাষা ব্যবহৃত হয়, তা হলে তা সাধুবাদ পাওয়ারই যোগ্য। তবে যেটা আপত্তিকর, উর্দুকে বাদ দিয়ে কখনওই সংস্কৃতকে স্থান দেওয়া কাম্য নয়। বিবিধের মাঝে মিলনের কথাও তো রবীন্দ্রনাথই বলেছিলেন।
অচিন্ত্য বিশ্বাস
কলকাতা-৬৭
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy