‘প্রবীণ’ সম্পাদকীয়তে (২০-৮) সিপিএম দলটির বিরুদ্ধে ‘চর্বিতচর্বণ বাণীমালা’-র অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু একই ভাবে ‘চর্বিতচর্বণ সমালোচনা’ করার অভিযোগ উঠতে পারে এই লেখাটির বিরুদ্ধেও। যদিও স্বাধীনতা-উত্তর পর্বে শূন্য আসন শুধুমাত্র সিপিএম-ই পেয়েছে এমন নয়, তবু যত নষ্টের গোড়া যেন ওই ‘সিপিএম’ নামক নন্দ ঘোষ। এবং বিষয়টির আলোচনা কেবল সিপিএম দলটিকে ঘিরেই আবর্তিত হয়ে চলেছে। যদিও সিপিএম ছাড়া এই রাজ্যে দশটিরও অধিক বামদল আছে এবং শূন্য আসন প্রাপক তারাও। বরং শূন্য পাওয়ার ধারাবাহিকতায় অনেকেই অনেক দিন ধরে সিপিএমের চেয়ে এগিয়ে। পঞ্চাশের দশক থেকেই নানা পথের বামদল আত্মপ্রকাশ করেছে— সিপিআই-এর বিরোধিতা করে, স্তালিনকে নাকচ করে, কৃষি বিপ্লবকে সমাধান ধরে, জনগণতান্ত্রিক না গণতান্ত্রিক প্রশ্নে ভিন্নমত হয়ে, জঙ্গলে ঘাঁটি গড়ে, কংগ্রেসকে সমর্থন করা নিয়ে বিভেদ দেখা গিয়েছে। তার পর কেটে গিয়েছে বহু দশক। ক্ষমতা-পূর্ব ও পরবর্তী সিপিএমের ভুলগুলো না করেও তারা কেন উন্নততর, অধিক গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠল না, এই প্রশ্ন এড়িয়ে বামপন্থার করুণ পরিণতি বোঝা একপেশে চর্চা হয়ে যায়।
একই সঙ্গে বাজার অর্থনীতির একচেটিয়া বিস্তার, বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ, মূল্যবোধের পরিবর্তনে জনমানসের চাহিদা দ্রুত বদলাচ্ছে। সনাতন বামপন্থা সেখানে মানুষের আশা, আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, যার দায় শুধুমাত্র সিপিএমকে দিয়ে এই যাত্রায় পার পাওয়া যাবে না। যেমন, নতুন মুখ সামনে এনে বা কমিটিতে থাকার বয়স কমিয়ে-বাড়িয়ে প্রসাধনী টোটকায় স্বাস্থ্য উদ্ধার হবে না। সাবেক বামপন্থার পথ থেকে জনগণের চাহিদার পথ গিয়েছে বেঁকে। গভীর আত্মানুসন্ধানে প্রয়াসী হতে হবে সব ধরনের বামপন্থীকে। সমালোচনার তিরবিদ্ধ হতে হবে সব রকমের বাম দলকে।
মানস দেব, কলকাতা-৩৬
সদর্থক
রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-কে এগিয়ে নিয়ে যেতে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে এসে মহিলাদের ফর্ম পূরণে সাহায্য করছে করোনাকালে গঠিত বাম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ভলান্টিয়ার্স, যা প্রশংসনীয়, সদর্থক ও প্রত্যাশিত। নদিয়া জেলার বিভিন্ন দুয়ারে সরকার শিবিরে এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, যা দেখেশুনে বিজেপির কটাক্ষ ও তির্যক মন্তব্যও শোনা যাচ্ছে। সিপিআইএম-এর সব শেষ— এমন মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক, নীচ মানসিকতার পরিচয়। তৃণমূলও ব্যাপারটাকে ভাল চোখে দেখছে না। তাদের বক্তব্য রেড ভলান্টিয়ার্স নিজেদের প্রচারের জন্য এ ভাবে ফর্ম পূরণে সাহায্য করছে। তৃণমূল সমর্থকদের এহেন মন্তব্য বা আচরণও লজ্জার এবং অনভিপ্রেত।
হয়তো তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকরা ঠিকই বলছেন। কিন্তু তা হলেও বলতে হচ্ছে, এতে আপত্তি করার কী আছে? কারণ, রেড ভলান্টিয়ার্স যা করছেন, তাতে তো শিবিরে মহিলা প্রার্থীদের ভালই হচ্ছে। যাঁরা ফর্ম পূরণ করতে পারবেন না, তাঁদের তো কাউকে না কাউকে দিয়ে সেটি পূরণ করতেই হত সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য। হয়তো বা টাকা দিয়েও করাতে হত। বিনা পয়সায় তাঁদের ফর্ম পূরণ করে দিয়ে উচিত কাজই করেছেন রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা।
পঙ্কজ সেনগুপ্ত, কোন্নগর, হুগলি
সুযোগ কই?
জয়া মিত্রের ‘পায়ের শিকল, গলার পাথর’ (২৫-৮) বড্ড একপেশে মনে হল। বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমান লোকসংখ্যা ১৩৫ কোটি। স্বাধীনতার পরে লোকসংখ্যা অনেক কম ছিল, তবু দেশকে আমেরিকা থেকে চাল, গম নিয়ে আসতে হত। বাঁধ নির্মাণের ফলে গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত চাষের জল পাওয়া যায়। কৃষকরা এই জলেই উচ্চফলনশীল ধান বা গম চাষ করেন। দেখতে দেখতে দেশে খাদ্য উপচে পড়ছে।
আরও একটি কথা। লেখক লিখেছেন, তিন দিন জোর বৃষ্টি হলে ডিভিসি-র লকগেট খুলে এক রাতে সোয়া লক্ষ কিউসেক জলের প্রলয় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিম্ন দামোদরের উপর। গত এক দশকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দৃঢ় হস্তক্ষেপে সেই ভয়ঙ্করতা কিছু কমেছে, জানিয়েছেন তিনি। যেটুকু পড়েছি তাতে জেনেছি, জল ছাড়ার আগে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ মিটিং ডাকে। মিটিং-এ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিও থাকেন। সবাই মত দিলে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জল ছাড়া হয়। এখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দৃঢ় হওয়ার কী সুযোগ থাকতে পারে?
সঞ্জয় চৌধুরী, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
নদীর গুরুত্ব
জয়া মিত্র খুব সুন্দর ভাবে সাধারণ মানুষের বন্যার ধারণাকে তুলে ধরেছেন। একমত হয়ে বলি, আমাদের হাওড়ার সরস্বতী আর কৌশিকী নদীর তৃণভূমি আর পাশের জঙ্গল হারিয়ে গিয়েছে, এবং নদীর ভিতরে খেত, বাড়ি, রাস্তা হয়ে গিয়েছে। হাজার চেষ্টা করেও পুনরুদ্ধার করা যাচ্ছে না। নদীর গুরুত্বের বোধ আমরা হারিয়ে ফেলছি। এর পাশাপাশি সেচখালের অভাব তো আছেই।
পল্টু ভট্টাচার্য, রামরাজাতলা, হাওড়া
ব্যর্থ
বেচারাম সরকার— কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণ দেখে এই শিরোনামটাই মনে আসছে। আগেকার দিনের জমিদারদের কিছু অকর্মণ্য বংশধরেরা বাপ-ঠাকুরদার সৃষ্ট সম্পদ বেচে সংসার চালাচ্ছেন। আমাদের দেশের সরকারও যেন ঠিক একই পথের পথিক। যে সম্পদ পূর্বতন সরকারের সৃষ্টি, সেই সম্পদ বেচে দিয়ে বাজেট ঘাটতি মেটানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা। তাতে যোগ্যতার কোনও প্রয়োজন হয় না। এই ভাবে সব রাষ্ট্রীয় সম্পদ এক দিন ওঁরা বিক্রি করে দেবেন। এটা একটা অশুভ পরিকল্পনা। বর্তমান সরকার নতুন সম্পদ সৃষ্টি ও রাষ্ট্রের আয় বাড়ানোর ব্যাপারে পুরোপুরি ব্যর্থ। সরকার যাঁরা চালনা করছেন, তাঁদের অযোগ্যতার কারণে গোটা দেশের মানুষ শাস্তি পাবেন কেন?
সুরজিত সাহা, কলকাতা-৩৩
গ্যাসের বিকল্প
‘হেঁশেল খরচ ছাঁটতে বিদ্যুতে রান্নার ঝোঁক’ (২২-৮) শীর্ষক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রস্তাবনা। বতর্মানে বেশির ভাগ রান্নাঘরে রান্নার গ্যাসে রান্না করা হয়। অপর দিকে, গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আকাশছোঁয়া। গ্যাসের দাম গৃহস্থের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আবার বিকল্প ব্যবস্থা করতে গিয়ে ইলেকট্রিক ইন্ডাকশন কুকারের কথা মানুষ ভাবছেন।
খাবার গরম করার ক্ষেত্রে ইন্ডাকশন কুকারকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে সোলার কুকারের কথা ভাবাও যায়। বছরের নয় মাস সোলার কুকারের মাধ্যমে রান্না করা যাবে। সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে সোলার কুকারের মাধ্যমে রান্না করার ব্যবস্থা হলে সেটা সবার হেঁশেলে স্থান পাবে। যে হেতু রান্নার গ্যাসের উপরে বেশির ভাগ মানুষ নির্ভরশীল, সে ক্ষেত্রে প্রথমে মানুষের অসুবিধা হবে। কিন্তু পরবর্তী কালে মানুষ এর সুবিধা ভোগ করবেন। সুতরাং, গ্যাস খরচ অনেকটাই কম হবে। ফলে অর্থের সাশ্রয় হবে।
উন্নত প্রযুক্তির সোলার কুকার এখন বাজারে পাওয়া যায়। প্রচলিত শক্তির ভান্ডার আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এই ধরনের অপ্রচলিত শক্তির ভান্ডার অফুরন্ত। কাজেই এই অপ্রচলিত শক্তিকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এবং কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রককেও এই ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। একমাত্র তা হলেই সাধারণ মানুষ অনেকটা স্বস্তি পাবেন।
শুভশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, বহড়ু, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy