গত ১৫ ফেব্রুয়ারি খড়্গপুর আইআইটি-র জার্নাল অব হ্যাজ়ার্ডস মেটিরিয়ালস্ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তা পড়লে অনেকেই চমকাবেন। প্রথমেই বলি, পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী মানুষ বছরে মাথাপিছু চা খান গড়ে ৭০৫ গ্রাম, সারা দেশে ৭৮০ গ্রাম। এই পরিসংখ্যান কিন্তু ঘরের বাইরের চা খাওয়ার। যাঁরা মোটামুটি ভাবে স্বাস্থ্য সচেতন, তাঁরা প্লাস্টিক কাপের চা এড়িয়ে চলেন। পরিবর্তে পরিবেশ-বান্ধব ভেবে কাগজের কাপে চা খেয়ে স্বস্তি পান। কিন্তু এ পোড়ার দেশে কোনও কিছুতেই বোধ হয় রেহাই নেই। কাগজের কাপকে গরম চা ঢালার মতো টেকসই ও উপযোগী করে তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে আপাত-অদৃশ্য ‘হাইড্রোফোবিক ফিল্ম’ তথা প্লাস্টিকের আস্তরণ। এই আস্তরণ গরম চা-কফির ছোঁয়া পেলেই দুই মাইক্রোমিটার থেকে পাঁচ মিলিমিটার আকারের উপাদান বা মাইক্রোপ্লাস্টিক কণায় ভেঙে যায়, যা রক্তের সঙ্গে মেশে।
অন্য এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, আমরা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে প্রতি বছর গড়ে অন্তত ৬৮,০০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা উদরে ঢোকাই। এটা শরীরের পক্ষে অতটা উদ্বেগের কারণ নয়। কারণ, এটা মল-মূত্রের সঙ্গে কিছুটা বেরিয়ে যায়। কিন্তু বিপদ অন্যত্র। বহু মানুষ আছেন, যাঁরা বাড়ির বাইরেও, যেখানে-সেখানে চা না-খেলে ছটফট করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি দিন গড়ে তিন কাপ চা খেলে ৭৫,০০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা চায়ের সঙ্গে গলাধঃকরণ করা হয়। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক আয়ন প্যালাডিয়াম, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতুর বাহক হিসেবে কাজ করে, এবং মুখ ও গলার ক্যানসারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এই উপাদানগুলি কমিয়ে দেয় রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও। উল্লেখ্য, একটি কাগজের কাপে ১০০ মিলিলিটার গরম পানীয় থেকে অল্প সময়েই ক্লোরাইড, সালফেট ও নাইট্রেট আয়ন-সহ প্রায় ২৫,০০০ মাইক্রন মাইক্রোপ্লাস্টিক নির্গত হয়। ফলে একে আর চা বা কফি বলা যাবে না, বলতে হবে রূপান্তরিত বিষ। তাই মাটির ভাঁড়েই ফিরতে হবে।
শক্তিশঙ্কর সামন্ত
ধাড়সা, হাওড়া
ভাল-মন্দ
কিছু দিন আগে অযোধ্যা পাহাড় গিয়েছিলাম। তখন ওখানকার জঙ্গলের একাংশে আগুন জ্বলছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে বনকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ-সহ স্থানীয় মানুষের তৎপরতা ও অবিরাম প্রয়াস সত্যিই আন্তরিক প্রশংসার দাবি রাখে।
এই বিষয়টি যেমন ভাল লাগল, তেমনই রাস্তাঘাট দেখলাম আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। এ ছাড়া, পানীয় জলের জোগান এবং বিদ্যুৎ ও আলোর ব্যবস্থাও অনেক ভাল হয়েছে, যেটা অযোধ্যা পাহাড়কে একটি আদর্শ পর্যটনকেন্দ্র করে তুলেছে। তবে কিছু ব্যাপারে মন বড়ই বিষণ্ণ হল। দর্শনীয় স্থানগুলোর প্রায় প্রতিটিতেই প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে, আর তার পাশাপাশি আছে প্রচুর পরিমাণ মদ ও বিয়ারের ভাঙা বোতল, যা প্রকৃত অর্থেই দৃশ্যদূষণ ঘটায়। এ ছাড়া, ক্যাম্পফায়ারের নামে যথেচ্ছ আগুন জ্বালানো ও বায়ুদূষণের চিহ্নও প্রায় সর্বত্র বিদ্যমান। অনেক পল্লিতেই দেখলাম টাইম কলের মুখ দিয়ে অনবরত জল পড়েই চলেছে। কোথাও বা কলের মুখ ভাঙা। পুরুলিয়ার মতো শুখা জায়গায় জলের এই অপচয় একদমই কাম্য নয়। প্রশাসনিক নজরদারি যেমন দরকার, তেমনই পর্যটক ও জনগণের সচেতনতাও প্রয়োজন।
অরিন্দম ঘোষাল
আরামবাগ, হুগলি
উধাও পাখি
২০ মার্চ ছিল ‘বিশ্ব চড়াই দিবস’। ২০১০ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই দিবস উদ্যাপন। আমাদের অতি পরিচিত চড়াই এখন কমতে শুরু করেছে। হয়তো কিছু দিন পর এদের ছবিতে দেখব। এরা মানুষের বাড়ির আশেপাশে থাকতে পছন্দ করে বলেই এদের ‘হাউস স্প্যারো’ বা গৃহস্থালির চড়াই বলা হয়। প্রায় সব দেশেই এর দেখা মেলে। সাধারণত এরা খড়কুটো, কাঠি, শুকনো ঘাস দিয়ে বাসা বানায়। বাড়ির কড়িকাঠে বা কার্নিশেও বাসা বাঁধে।
এখন আর সে ভাবে সকালে চড়াইয়ের কিচিরমিচির শুনতে পাওয়া যায় না। প্রতিকূল যান্ত্রিক পরিবেশে তাদের বেঁচে থাকাটাই সমস্যা। কৃষিক্ষেত্রে জমিতে বিষ ঢুকে যাচ্ছে। এ ছাড়া দূষণ, হারাতে বসা সবুজ, গগনচুম্বী অট্টালিকা ও প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে চড়াইদের বংশবৃদ্ধি ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা। বসতি এলাকার মোবাইল টাওয়ারের ক্ষতিকারক রেডিয়ো তরঙ্গ চড়াইদের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করছে। এই পাখিগুলিকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো দরকার।
বিপদতারণ ধীবর
বেলিয়াতোড়, বাঁকুড়া
শীর্ষে আস্থা
‘রাখি বাঁধার নির্দেশ খারিজ শীর্ষ কোর্টে’ (১৯-৩) প্রতিবেদনটি সাধারণ মানুষের মনে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করবে। ধর্ষিতাকে দিয়ে ধর্ষকের হাতে রাখি বাঁধানোর যে নির্দেশ দিয়েছিল মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট, তা ছিল মেয়েদের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর। এ-ও জানা গেল যে, মহামান্য উচ্চ আদালত অভিযুক্তকে নির্দেশ দিয়েছিল ধর্ষিতা ও তার ছেলের হাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুলে দিতে, রাখিবন্ধনের রীতি অনুযায়ী। এ কী প্রহসন!
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে, কিছু দিন আগে মহামান্য শীর্ষ আদালত অন্য এক ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তের উকিলের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল ধর্ষিতাকে বিবাহ করতে ইচ্ছুক কি না। ইচ্ছুক থাকলে তাঁর শাস্তি মকুব হবে। এ নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই নির্দেশ অসহায় মানুষকে মনে করায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে “বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে”।
সঞ্জিত ঘটক
কলকাতা-১০৩
ভাঁওতা নয়
প্রদ্যোৎ পালুই মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন সম্পর্কে ভুল ও অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে পাঠকদের বিভ্রান্ত করেছেন (‘টুকেও ফেল’, সম্পাদক সমীপেষু, ১৯-৩)। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছি। গত চার বছরে (তিন বছর স্নাতক স্তরে) যতগুলি কেন্দ্রে আমি পরীক্ষা দিয়েছি, কোথাও এমন কোনও ঘটনা দেখিনি বা শুনিনি যা প্রদ্যোৎবাবুর অভিযোগকে প্রমাণ করে। গত অগস্ট-সেপ্টেম্বরে যখন মূলস্রোতের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বই খুলে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তখন আমরা, ইন্দিরা গাঁধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা, অতিমারিকে তোয়াক্কা না করে ১৫-২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে, অফলাইন পরীক্ষা দিয়ে, স্নাতক স্তরের পাঠ সম্পূর্ণ করেছি। আজ শুনতে হল, মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নাকি কেনা ডিগ্রি। এ কথা সত্য যে, অনেক অনুমোদনহীন মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকঠকানো কাজ চলে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সমস্ত মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই ভাঁওতা দিয়ে কাজ হাসিল সম্ভব।
শুভ্রনীল ঘোষ
কোন্নগর, হুগলি
পরীক্ষার গেরো
আর্যভট্ট খানের প্রতিবেদন (‘বোর্ড পরীক্ষার আগে করোনার ভ্রুকুটি, চিন্তায় শিক্ষামহল’, ১৯-৩) চিন্তায় ফেলেছে। আমার ছেলে মুর্শিদাবাদের একটি ফার্মেসি কলেজে পড়াশোনা করে। বেশ ভালই চলছিল অনলাইনে ক্লাস। ছেলেও নিশ্চিন্ত ছিল যে, অনলাইনে পরীক্ষাও হবে। কিন্তু পরীক্ষা অফলাইনেই হয়। বুঝতে পারছি না, নেট প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের পরেও ছাত্রছাত্রীদের সাঙ্ঘাতিক ভিড় ট্রেনে যাতায়াত করতে বাধ্য করা হবে কেন?
নরেন্দ্র দত্তগুপ্ত
পূর্ব বর্ধমান
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy