‘বিচ্ছিন্ন উপত্যকা কী ভাবছে’ (১১-৯) শীর্ষক নিবন্ধটির সঙ্গে ছাপা হয়েছে প্ল্যাকার্ড হাতে একটি শিশুর ছবি। সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে ‘উই ওয়ান্ট ফ্রিডম’। ওই কথাটা কি ওই শিশুটির মনের কথা? ছবিটি একটু খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, শিশুটির হাতে ওই প্ল্যাকার্ড জুগিয়ে দিয়েছেন বয়স্ক কোনও মানুষ, যাঁর দুটো হাতের কিছুটা ক্যামেরায় ধরা পড়ে গিয়েছে।
নিজেদের দাবির আবেদন বাড়িয়ে তুলতে শিশুর শৈশবের এই ব্যবহার আপত্তিকর এবং লজ্জাজনক। আজকাল টিভি সিরিয়াল বা রিয়্যালিটি শো-তে শিশুর শৈশব বেচে মুনাফা লোটেন বিনোদনের ব্যবসায়ী এবং সেই শিশুর অভিভাবকেরা। কোলের শিশুকে দেখিয়ে জনতার মন দ্রব করে ভিক্ষে চান ভিখারিনি মা। শুনেছি ভিখারিনির কোলের শিশুটি অনেক ক্ষেত্রেই নিজের নয়, কারণ এই কাজের জন্য এখন শিশু ভাড়াও পাওয়া যায়। বিচ্ছিন্ন উপত্যকার ‘ফ্রিডম’ চাওয়ার আন্দোলনেও কি শৈশবকে ব্যবহার করার সেই ট্রেন্ড এসে গেল?
ভাস্কর রায়
কলকাতা-৭৭
যৌথ উদ্যোগ
‘বাঙালি হওয়া কাকে বলে, বোঝালেন অমর্ত্য’ (২৮-৮) শীর্ষক সংবাদে প্রকাশিত ‘বাঙালি’ পরিচয় দিতে গিয়ে অমর্ত্য সেন একটি সভায় হিন্দু ও মুসলমানের জীবনে যৌথ উদ্যোগের কথা স্মরণ করিয়েছেন। বাংলা ক্যালেন্ডার প্রস্তুতিতে ইসলামি ও হিন্দু গণনার যুক্ত হিসাব, মুসলিম শাসন কালে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়া, ঢাকার মসলিন তৈরির মতো নানা কাজে হিন্দু ও মুসলমান একসঙ্গে হাত লাগানোর কথা বলেছেন। বলেছেন, বাংলার সংস্কৃতিতে হাজার বছরের বৌদ্ধ শাসনের প্রভাব। ঘৃণার রাজনীতি পরিহার করতে তিনি উপরে লেখা যা যা বলেছেন তা অনেকের জানা থাকলেও সংবাদপত্রের মাধ্যমে
বৃহৎ সংখ্যক পাঠকের কাছে তা পৌঁছনো গুরুত্বপূর্ণ।
সভায় তিনি ছেচল্লিশের দাঙ্গার পাপের কথা উল্লেখ করেছেন। তার পরেও দুই বাংলায় নানা সময়ে দাঙ্গা হয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন একসঙ্গে থাকা সত্ত্বেও বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিরোধ কমছে না। এই বিরোধ দূর করতে আমাদের পক্ষপাতহীন বিশ্লেষণ করতে হবে। অমর্ত্য সেন আগেও বলেছেন এবং সে দিনের সভায়ও পুনরায় বললেন বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের চলে আসাকে তিনি ভূমি সংস্কার হিসেবে দেখেন। দুর্ভাগ্যবশত তাতে কিন্তু বিরাট সংখ্যক মানুষের হত্যা ও নির্যাতনের বেদনার উপলব্ধি ফুটে ওঠেনি। ভারতে কি ভূমি সংস্কার এ ভাবেই বিতাড়ন ও নির্যাতন করে হয়েছে?
আনন্দবাজার পত্রিকার ‘রবিবাসরীয়’ (২৫-৮)-তে গত জুলাই মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অমর্ত্য সেনের দেওয়া বক্তৃতার যে দ্বিতীয় কিস্তি প্রকাশিত হয়েছে সেখানে অধ্যাপক সেন বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যদি তার অ-সাম্প্রদায়িক বাঙালি পরিচিতি (রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের পরিচিতি) ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে থাকে, তবে কেন এবং কী ভাবে এমনটা হল তা নিয়ে গভীর ও নির্মোহ বিশ্লেষণ দরকার।’’ হিন্দু ও মুসলমানের ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিবাদ বাংলাদেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বেশি প্রকারান্তরে বলাটা শুধু অগভীর পর্যবেক্ষণই নয়, একদেশদর্শিতায় দুষ্ট।
হিন্দু ও মুসলমানকে সদ্ভাব নিয়ে বাঁচতে হলে মানবিক ও মরমি মন নিয়ে পরস্পরের ক্ষোভের কারণগুলো সকলকে বিচার-বিবেচনা করতে হবে। এবং তা করতে গেলে মৌলবাদী ও রাজনৈতিক দলের খপ্পর থেকে বেরিয়ে আন্তরিক ভাবে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে। কারণ মৌলবাদী ও রাজনৈতিক দল তাদের নিজেদের স্বার্থে বিষয়টি দেখবে। এই সামাজিক আন্দোলন সফল হলে যথার্থ রাজনীতি এগিয়ে আসবে।
সুভাষ দাস
কলকাতা-৯২
‘আফিং খেকো’?
2 ‘বেত্রাহত বাঙালি’ (রবিবাসরীয়, ৮-৯) প্রসঙ্গে এই চিঠি। শিবনাথ শাস্ত্রীর হাত দিয়ে তাঁর মাকে লেখা চিঠির পরিণতি তাঁর নিজের বর্ণনায় কেমন ছিল? শিবনাথ লিখেছেন ‘‘...তারপর গুরুমহাশয় সন্ধান লইলেন যে মা একাকিনী বাড়িতে থাকেন, বাবা বিদেশে। একদিন গুরুমহাশয় আমার লিখিবার তালপাতে কি লিখিয়া আমাকে দিলেন, বলিলেন ‘তোর মাকে দিস আর কেউ যেন দেখে না’। আমি ভাবিলাম সকল বালকের মধ্যে আমি ভাগ্যবান, গুরুমহাশয় আমার মাকে পত্র লিখিয়াছেন। আমি বাড়িতে আসিয়া একগাল হাসিয়া মাকে বলিলাম ‘ওরে মা গুরুমহাশয় তোকে কি লিখেচে দেখ’ মা তালপাতাটি আমার হাত হইতে লইয়া একটু পড়িয়াই গম্ভীর মূর্তি ধারণ করিলেন, পাতাটি ছিঁড়িয়া টুকরা টুকরা করিয়া ফেলিয়া দিলেন, আমি তাহা আনিয়াছিলাম বলিয়া আমাকে মারিলেন, এবং তৎপরদিন হইতে আমার পাঠশালে যাওয়া বন্ধ করিলেন।’’
দ্বিতীয় যে শিক্ষকের কথা লেখক লিখেছেন তিনি কে? সত্যি কি শিবনাথ তাঁকে ‘আফিং খেকো বামুন’ বলে ডাকতেন? তাঁর ‘আত্মচরিত’-এ কোথাও এই শিক্ষকের কথা উল্লেখ নেই। তবে বাড়িতে তাঁর পেট টিপে দেওয়া এক শিক্ষকের কথা শিবনাথ লিখেছেন। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। শিবনাথের কথায়, “তিনি (বিদ্যাসাগর) আমার মাতুলের সহাধ্যায়ী বন্ধু ছিলেন; তিনি সপ্তাহের মধ্যে তিন চার দিন আমাদের বাসাতে আসিতেন; এবং আমাকে নিকটে পাইলেই দুইটা আঙ্গুল চিমটার মত করিয়া পেট টিপিতেন; সুতরাং বিদ্যাসাগর আসিয়াছেন শুনিলেই আমি সেখান হইতে পলাইতাম।’’ মাতুল ঘনিষ্ঠ ও পিতৃবন্ধু বিদ্যাসাগরকে শিবনাথ বিশেষ শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। তাঁর নিজের কথায়, ‘‘আমি পেট টিপুনির ভয়ে পলাইয়া বেড়াতাম বটে কিন্তু তাঁহাকে অকপট শ্রদ্ধা ভক্তি করিতাম। তিনি তখন আমাদের আদর্শ পুরুষ...।”
বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়
কুলটি
অপ্রত্যাশিত
বিশ্বখ্যাত এক সংস্থার একটি বিশেষ সিরিজ়ের মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে অদ্ভুত সমস্যার মুখোমুখি হতে হল, যা এক জন সাধারণ বাঙালি গ্রাহক হিসেবে প্রায় অপ্রত্যাশিত। বাংলায় ‘টাইপ’ করতে গিয়ে দেখি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ‘বর্ণ’ নেই গোটা ‘কি-বোর্ড’-এ, পরে কাস্টমার কেয়ার, সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করলাম, দেখলাম বিস্ময়ের আরও কিছু বাকি ছিল। তাঁরা নির্লিপ্ত ভাবে জানালেন, গোটা ব্যাপারটাই তাঁদের কাছে অজানা! যেন আমার মুখেই প্রথম জানলেন! এক জন উল্টে জানতে চাইলেন এতে কী এমন অসুবিধা হবে?
সুমন বিশ্বাস
মণিগ্রাম, মুর্শিদাবাদ
বিজ্ঞপ্তি সাঁটুন
‘দায় কার’ (২-৯) চিঠিতে পড়লাম সরকারি বাসের ড্রাইভারের কাছে বাসের কোনও কাগজ এবং তাঁর নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার কারণে ট্রাফিক ইনস্পেক্টর ৪০/৪৫ জন বাসযাত্রীকে বাস থেকে নেমে অন্য গাড়িতে চলে যেতে বলেন। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর এই অভিনব সরকারি প্রকল্পে তবে কি বাসের বৈধ কাগজপত্র রাখার দায় শুধু ড্রাইভারের নয়, টিকিটধারী বাসযাত্রীরও? অযথা হয়রানি রুখতে ডিপো থেকে বেরোবার সময়ে বাসের গায়ে ‘কাগজপত্র ও লাইসেন্স পরীক্ষিত’— এই জাতীয় বিজ্ঞপ্তি সেঁটে দেওয়ার ব্যবস্থা হোক, যা দেখে যাত্রীরা বাসে চড়বেন।
দেবব্রত সেনগুপ্ত
কোন্নগর, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy