গত বছর বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের পর ব্যাট হাতে বাইশ গজে ধোনিকে আর দেখা যায়নি। আইপিএল-কে জাতীয় দলে ফেরার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবেন বলে, জোরকদমে প্র্যাকটিস শুরু করেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের দাপটে আইপিএল আয়োজনের সম্ভাবনা বিশ বাঁও জলে। ফলে দীর্ঘ দিন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের বাইরে থাকা ধোনিকে ভারতীয় দলে ফেরানো জাতীয় নির্বাচকদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। আইপিএল যদি না হয়, আগামী অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হলে ধোনির হাতে
ম্যাচ প্র্যাকটিসের জন্য কোনও টুর্নামেন্ট নেই। আবার বিশ্বকাপ যদি এক বছর পিছিয়েও যায়, ধোনির বয়স আরও বেড়ে যাবে। কামব্যাক করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
সুদীপ সোম
নতুনগ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা
চেষ্টাকৃত কাব্য
অংশুমান করের ‘এখন কি কবিতা লেখা উচিত’ (২৩-৫) প্রসঙ্গে এই পত্র। কবিতা লেখা উচিত কি উচিত নয়, এর থেকেও বড় কথা, কবিতা লেখা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসছে কি আসছে না। এলে, অবশ্যই লেখা উচিত। ক্ষুধা নিয়ে, মৃত্যুর ছোবল নিয়ে অনেক কালজয়ী কবিতা লেখা হয়েছে। গুয়ের্নিকার মতো ছবি আঁকা হয়েছে। কিন্তু অসুবিধাটা অন্য জায়গায়। অনেকেই এই ক্রান্তিকালে ‘সময়’ নথিভুক্তিকরণের কারণে জোর করে কবিতা লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সেই কবিতায় চিৎকার আছে, স্বতঃস্ফূর্তি নেই। বিশেষ করে ফেসবুকে এই ধরনের কবিতার বাহুল্য বেশি। নিজের উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্য যেনতেনপ্রকারেণ চেষ্টাকৃত কবিতা না লেখাই ভাল ।
সুমিতাভ ঘোষাল
কলকাতা-৫০
কবি নিরুপায়
‘এখন কি কবিতা লেখা উচিত’ নিবন্ধের প্রেক্ষিতে বলি, কবিও তো এক নিরুপায় মানুষ, বিপুল ধ্বংসের মুখে যিনি অসহায় হাতে আঁকড়ে ধরেন নিজের কলমটিকেই। মনে পড়ে, ’৬৮ সালে উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যায় শঙ্খ ঘোষের অভিজ্ঞতা, “ভেঙে গেছে করলা-র ব্রিজ। এখানে-ওখানে দেখতে পাই মৃত শরীর, পশুর, মানুষের কখনো-বা, এক হয়ে আছে সব। কার দোষ? কার? শুনতে পাই চরের বসতি থেকে এক লহমায় মিলিয়ে গেছে হাজার হাজার লোক” (কবিতার মুহূর্ত)। এরই দুঃসহ বেদনায় লেখা হল ‘আরুণি উদ্দালক’-এর মতো কালজয়ী কবিতা।
অউশভিৎজ়ের নরক স্তব্ধ করে দেবে গীতিকবিতার জন্মকে, সৃষ্টিশীল মানুষ থাকবেন বেদনাহত মূক— এমন একটা কথা হয়তো মেনে নেওয়া যেত, যদি সময়কে লিপিবদ্ধ করার শুকনো সামাজিক দায়টুকুই শুধু কবির থাকত। কিন্তু কবি নন সমাজ সংস্কারক নীতিশীল শিক্ষক, নন তিনি প্রাজ্ঞ, বিচক্ষণ, সময়-সচেতন ক্রনিকলার। তিনি এক জন যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা নিতান্ত সাধারণ মানুষ, যিনি আর কোনও কিছু পারেন না বলেই বলেন, “তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলে রক্ত উঠে আসে/ তোমার মুখে পুরোনো সব হাড়গোড়ের ঘ্রাণ/ মাটিতে নয়, তোমার দেহে কবর দিয়ে গেছে/ ওরা আমার ঘরণী, ঘর, আমার সন্তান” (ন হন্যতে, জয় গোস্বামী)।
কবি সবুজ বরণ বসুর সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয়ের সূত্রে জানতে পারি, যে দিন মালবাহী রেলগাড়ি পিষে দিয়ে চলে যায় ঘুমন্ত শ্রমিকদের, সমস্ত রাত্রি ঘুমোতে পারেননি তিনি, ভোরের দিকে কয়েকটি লাইন আসে তাঁর কাছে, “লেখা তো রেলের পাটি।/ প্রতি লাইন সমান্তরাল।/ আমি কাঁদতে পারি বলো?/ আমি শুধু ওদের উদ্দেশ্যে বলি, কখনো সম্ভব হলে এ লেখায় মাথা পেতে শোও...”
রাজু মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-৭৯
ম্যাজিক না, অঙ্ক
ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলো নেই, জল নেই। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ঠিকই বলেছেন, তাঁরা ম্যাজিক জানেন না। যদিও কোনও প্রশাসকেরই ম্যাজিক জানার কথা নয়, বা কাজও নয়। তবে ভোটে জিততে ম্যাজিক ফিগার কী, তা কিন্তু তাঁরা খুব ভাল জানেন। একটা বিপর্যয় যখন পূর্বাভাস দিয়ে আসছে, তখন প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য কতটা প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, তার জন্য অঙ্ক কষা দরকার, ম্যাজিক নয়। আমপান আসার আগে আমরা টিভির পর্দায় কলকাতার প্রশাসককে দেখেছি ঘোষণা করতে, বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য পুরো প্রস্তুতি আছে। বিপর্যয়ের পরবর্তী সময়ে কাজ কতটা হয়েছে, ভুক্তভোগীরাই জানেন। বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে যে বিশদ পরিকল্পনা করা উচিত, তা আদৌ হয়েছিল কি? পুরসভা ও বিদ্যুৎ সংস্থা মিলে যে আগে থেকে কোনও যৌথ পরিকল্পনা তৈরি হয়নি, তা তো স্পষ্ট।
নরেন্দ্রনাথ কুলে
কলকাতা-৩৪
সংবাদের দায়িত্ব
সংবাদ প্রতিবেদনে যদি কার কত অসুবিধা হচ্ছে, সেই নেতিবাচক দিকগুলোকেই জোর দিয়ে প্রচার করা হয়, সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে যান, ফলে তাঁদের প্রতিক্রিয়াও জঙ্গি হয়ে ওঠে। তার চেয়ে যদি প্রতিবেদনে বেশি করে বলা হয়, কত জায়গায় পরিষেবা কতটা ঠিক করে তোলা গিয়েছে, তা হলে মানুষ ভরসা পান, আর একটু ধৈর্য ধরার রসদ পান। তাতে হয়তো অনেক অপ্রিয় পরিস্থিতি এড়ানো যায়, সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ, দু’দিন আগে ফুল-মিষ্টি দিয়ে করোনা সৈনিক বলে যাঁদের বুকে টেনে নিয়েছিলেন, তাঁদের বাঁশপেটা করতে ছোটেন না।
উজ্জ্বল গোস্বামী
কলকাতা-৬০
নাটক চাই না
‘যদি চান আমার মুণ্ডচ্ছেদ করুন’— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ হেন প্রতিক্রিয়া মানুষের ক্রোধ প্রশমিত করার ভাবপ্রবণ কৌশল ছাড়া কিছু নয়। আমপান উদ্ভূত পরিস্থিতি অমার্জনীয় ও লজ্জাজনক। সরকারি বা প্রশাসনিক প্রস্তুতির মধ্যে পেশাদারি দক্ষতার অভাব স্পষ্ট। দুর্যোগের তিন দিন পরে মমতা সিইএসসি-র কর্ণধারের সঙ্গে কথা বলেন। এ সব পর্যালোচনা বিপর্যয়ের আগে করে, যথাযথ ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি, তা জানার অধিকার ভুক্তভোগী মানুষের আছে। সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রেও বিলম্ব কেন? ব্যর্থতার ছবি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে, নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ আত্মপক্ষ সমর্থনের চিরাচরিত খেলা দেখে।
সুমন মিত্র
কেষ্টপুর, কলকাতা
সদিচ্ছা আছে
কলকাতায় যে গতিতে বিপর্যস্ত অঞ্চলগুলিতে স্বাভাবিক পরিষেবা ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তাতে সরকারের সদিচ্ছা ও তৎপরতাই প্রমাণিত হয়। ‘ফণী’র সময়ে আমি ভুবনেশ্বরেই ছিলাম, ঝড়ের সাত-আট দিন পরেও শহরের অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দ্রুত ঠিক করার তৎপরতা চোখে পড়েনি। আমরা কি কখনওই নিজেদের বৃহত্তর সমাজের অংশ ভাবতে পারব না! অনেকের মাথায় তো ছাদটুকুও নেই, অনেকের সারা বছরের পরিশ্রমের ফসলের সলিলসমাধি হয়েছে, অনেকে দোকান, বাড়ি বা কর্মসংস্থানের সামান্য উপায়টুকুও খুইয়েছেন। সে তুলনায় আমাদের কষ্ট তো অনেক কম। লকডাউনের কারণে বহু দক্ষ কর্মী কাজে আসতে পারছেন না, লোকবলের অভাব ঘটেছে। তাই সব দায় সরকারের, এই মনোভাব থেকে একটু বেরিয়ে এসে, বাস্তব পরিস্থিতির সাপেক্ষে সব কিছু বিচার করাটাই ভাল। আর সরকারেরও উচিত, ‘আমিই সর্বশ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে দক্ষ, সব সমস্যা সাত দিনেই ঠিক করে দেব’ এই ধরনের দেখনদারি থেকে বেরিয়ে এসে নিজের সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরা। তাতে বিভ্রান্তি দূর হবে।
সর্বাশীষ বর
কলকাতা-৩১
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy