বিগ-বাজেট পুজোর উদ্যোক্তারা সংশয়ে পড়েছেন (‘পুজোর পথে করোনা কাঁটা...’, ১২-৭)। কেউ বাজেট কমানোর কথা ভাবছেন, কেউ স্পনসর পাওয়া নিয়ে চিন্তিত। অনেকে এ বার থিম বিসর্জন দিয়ে সাবেক পুজোর পক্ষে। পুজো এক বার না করলে ক্ষতি কী! করোনার জেরে দুনিয়াজুড়ে আতঙ্ক, মৃত্যুমিছিল। এখন দুর্গাপুজোর কথা মাথায় আসছেও না। একটাই আকুতি, কবে পার হব এই আঁধার-পারাবার।
এ বছরের মতো বন্ধ হোক মা দুর্গার আবাহন। ক্লাব-সঙ্ঘগুলো তাদের সঞ্চিত বা পুজোর জন্য সংগৃহীত অর্থ ব্যয় করুক মৃৎশিল্পী, প্যান্ডেল কারিগর, আলোকশিল্পী, এবং আরও অগুনতি কর্মীদের জন্য, যাঁরা না থাকলে পুজো অসম্পূর্ণ থাকে। আবাসনগুলোতে চার দিনের কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াটা নাহয় এ বার বাদই রইল। পুজো হোক না ঘটে-পটে! এর মধ্যেই যাঁরা পুজোর ‘জৌলুস’ নিয়ে ভাবিত, অবাক হতে হয় তাঁদের দেখে।
কেউ তো জানি না, আরও কত ভয়ানক দিন সামনে আসছে! কর্মহীনতার যে খাদে আমরা ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছি, তার হাত থেকে কবে পরিত্রাণ মিলবে, কেউ জানে না। এই অবস্থায় পুজোর চিন্তা বাতুলতা। বরং নমো-নমো করে পুজো সেরে আমপান বা করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় অঙ্গীকারবদ্ধ হোক সবাই। পুজো না-হওয়ার মন খারাপ মিটিয়ে দেবে আগামী বছর ঢাকের বাদ্যি।
ধ্রুবজ্যোতি বাগচী
কলকাতা-১২৫
শুধু অনুরোধ!
রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলোতে ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন চালু আছে। গত ২৪ জুন সর্বদলীয় বৈঠকের শেষে এটাই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। সেই লকডাউন চলাকালীন অবস্থায় কিছু অঞ্চলকে ফের বেছে নিয়ে সাত দিনের জন্য লকডাউন চালু হল ৯ জুলাই থেকে। এতে কি এটাই প্রমাণিত হয় না যে, লকডাউন এখন প্রহসনে পরিণত হয়েছে?
বাম জমানার শেষ দু’বছরের মতো দিশাহীন দেখাচ্ছে তৃণমূল সরকারকে। নীতিপঙ্গুত্বের অনেক লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। কোভিড এবং আমপানের জোড়া ধাক্কায় তা আরও বেআব্রু। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ আকাশছোঁয়া। সরকার পিপিই কিট এবং ডাক্তারদের ফি বেঁধে দিল। কিন্তু অন্য খাতে মূল্য বাড়িয়ে খরচ মোটামুটি একই রাখল বেসরকারি হাসপাতাল। তার ওপর বেড নেই। বিভিন্ন রাজ্য, বিশেষ করে দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে রাজ্য সরকার বেসরকারি হাসপাতালের বেড অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। বড় হোটেল বা স্টেডিয়ামকে তৈরি রাখা হচ্ছে। এখানে এ রকম উদ্যোগ তুলনায় কম।
বেসরকারি স্কুলগুলোর সামনে ফি-বৃদ্ধি নিয়ে প্রায়ই অভিভাবকদের বিক্ষোভ চলছে। সরকার এখানেও অনুরোধের রাস্তায়। সরকার একটু কড়া হওয়ার ফলে কিছু বাস রাস্তায় নামলেও তারা সরাসরি যাত্রীদের কাছে বর্ধিত ভাড়া দেওয়ার আবেদন রাখছে। সরকারি ঘোষণা না হওয়া সত্ত্বেও বেশ কিছু রুটে ইতিমধ্যেই বেশি ভাড়া নেওয়া শুরু হয়েছে, নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে ।
শুভেন্দু দত্ত
কলকাতা-১০১
থুতনিতে কেন?
জনতা কার্ফুর পর প্রায় চার মাস অতিক্রান্ত। কিন্তু এখনও দূরত্ববিধি, স্যানিটাইজ়ার বা মাস্ক ব্যবহারে আমরা সড়গড় হয়ে উঠতে পারিনি। কেউ সেটি থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখছেন। কেউ ঠিক কথা বলার মুহূর্তে মাস্ক সরিয়ে কথা বলে আবার পরে নিচ্ছেন। যে দেশে যত্রতত্র থুতু-গুটখা-পানের পিক ফেলা হয়, দেব-দেবীর মূর্তি আটকেও দেওয়াল লাল করা আটকানো যায় না, সে দেশের জনতা রাতারাতি মাস্ক ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে— আশা করাই অন্যায়। ‘গরিব মানুষ আছি’ বলে সাফাই দেন গরিব। উচ্চবিত্ত লোকেরা ‘মাইন্ড ইয়োর ওন বিজ়নেস’ বলে নিজের নির্বোধ আচরণ চাপা দেন। অতিমারির সাধ্য কী, নাগরিক বোধের উন্মেষ ঘটায়?
সীমা দাস
চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
বাঁচার পথ
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছিলেন, ‘‘মন্বন্তরে মরিনি আমরা, মারী নিয়ে ঘর করি/ বাঁচিয়া গিয়াছি বিধির আশীষে অমৃতের টিকা পরি।’’ আমরা গুটিবসন্ত, কলেরা, প্লেগ ইত্যাদি মারণব্যাধি নিয়ে দীর্ঘ দিন ঘর করেছি। আজও যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির মতো মারণ অসুখ আমাদের নিত্যসঙ্গী। অন্য দিকে, করোনার প্রতিষেধক বা ওষুধ হাতে আসতে এক-দু’বছর লাগবে। তত দিন অতিমারিকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচতে হবে।
করোনা প্রতিরোধের জন্য যথাসম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন। মেলামেশা যত কম, করোনার সম্ভাবনাও ততই কম। মুখে হাত লাগানো বারণ। বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরতে হবে। সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্কই যথেষ্ট, সাধারণ চশমাই যথেষ্ট (অভাবে ফেসশিল্ড)। সাধারণ চলাফেরায় ও কাজে গ্লাভস বা পিপিই নিষ্প্রয়োজন। যেখানে হাত ধোয়া সম্ভব নয়, কেবল সেখানে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার দরকার।
সরকারি ভাবে দেশ জুড়ে করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বৃদ্ধি করা দরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা— পরীক্ষা, পরীক্ষা এবং আরও পরীক্ষা। পরীক্ষাপদ্ধতি সরল করা প্রয়োজন। আজকের দিনেও করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরি হাতেগোনা, জিনিস ও কর্মীর অভাব। তার ওপরে করোনা পরীক্ষার পদে পদে নিয়মের নানা বেড়ি— ফলে একটা পরীক্ষা করে তার রিপোর্ট পেতে অযথা বেশি সময় চলে যাচ্ছে। অথচ চার ঘণ্টার মধ্যেই রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব। দেশ জুড়ে সুলভে, সহজে এবং দ্রুত পরীক্ষার ব্যবস্থা করলে করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়— ঠিক যে কাজটা কেরল করে দেখিয়েছে।
করোনাভাইরাস আক্রান্তের চিকিৎসা বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতি নির্ধারণের জন্য নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় প্রয়োজন। কোনও এলাকায় একাধিক রোগীর সন্ধান মিললে জায়গাটিকে চিহ্নিত করে সেখানে প্রচুর পরীক্ষা করে আক্রান্তদের খোঁজ চালাতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এই লড়াইয়ের একেবারে সামনের সারির যোদ্ধা। তাঁদের চাই যথোপযুক্ত নিরাপত্তা-আবরণী, ওষুধপত্র, শুদ্ধিকরণ— এবং সর্বোপরি প্রশাসনিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা।
দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৮১
নিষ্ঠুর ব্যবহার
সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলি মুমূর্ষু রোগীদের ‘রেফার’ করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। রাজ্য সরকারের একাধিক নির্দেশ সত্ত্বেও রোগী ফেরানোর ঘটনায় কলকাতার শীর্ষ হাসপাতালগুলির নাম উঠে এসেছে। বেড থাকলেও ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। প্রাথমিক চিকিৎসা না করেই সর্বাগ্রে রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। রোগীর পরিবারের সঙ্গে নিষ্ঠুর ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে আবেদন, কোভিড ও নন-কোভিড রোগীদের পাশে দাঁড়ান। এটাই সুযোগ, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে জনমানসে নিজেদের স্থান করে নেওয়ার। স্বাস্থ্য দফতরকে অনুরোধ, এই ঘৃণ্য ‘রেফার সিস্টেম’-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করুন।
সায়ন মুখোপাধ্যায়
নারায়ণপুর, কাঁকিনাড়া
লঘুগুরু
‘অমিতাভের করোনা, অভিষেকেরও’ (১২-৭) পড়ে মর্মাহত হলাম। তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। কিন্তু খবরটি প্রথম পাতায় অত গুরুত্ব দিয়ে ছাপানোর দরকার ছিল কি? অমিতাভ বচ্চন দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, বিখ্যাত বিজ্ঞানী বা দায়িত্বশীল উচ্চপদাধিকারী নন। তিনি বলিউড সুপারস্টার। প্রথম পাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানের যোগ্য খবর এটা হতে পারে না।
অরুণ গুপ্ত
কলকাতা-৮৪
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy