লকডাউন চলাকালীন রাজ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করল রাজ্য সরকার। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। প্রশ্ন হল, কোন মাস্ক? N-95 বা N-99 মাস্কের দাম বেশি। আর এক ধরনের মাস্ক আছে, যা রাস্তায় ঢেলে বিক্রি হচ্ছে। ধুলোয় ভরা মাস্ক সস্তায় কিনছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার বলছেন মাস্ক পরার অস্বস্তির কথা। শ্বাস নিতে সমস্যা হয় বলে তাঁরা মাস্কটা নাকের নীচে টেনে নামিয়ে রাখছেন। কেউ কেউ নাক ঢেকে রাখছেন বটে, কিন্তু মাস্কের নাক-ঢেকে-থাকা অংশে দুটো ছিদ্র বানিয়ে নিচ্ছেন। এতে নাকি শ্বাস নেওয়ার সমস্যা থাকে না। বাজারে সে দিন দেখলাম আর এক কাণ্ড! গন্ধলেবু কিনতে আসা এক খদ্দের মাস্কের নাক-ঢাকা অংশ হাতের আঙুল দিয়ে সরালেন, তার পর লেবুর গন্ধ শুঁকলেন। বিড়ি টানার সময় মাস্ক থুতনি পর্যন্ত টেনে নামিয়ে নিচ্ছেন কেউ কেউ। সব দেখেশুনে মনে হয়, এ রাজ্যে শুধু মাস্ক পরা নয়, মাস্ক ব্যবহারের ট্রেনিংও বাধ্যতামূলক হওয়া দরকার।
শিবাশিস দত্ত
কলকাতা-৮৪
দস্তানা কোথায়
আমাদের অহরহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী জোগাড় করতে স্থানীয় মুদিখানাগুলিতে যেতে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, দোকানদার যখন খোলা সামগ্রী দিচ্ছেন, যেমন বাদাম, শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা, কাজু, কিশমিশ— তখন সরাসরি হাত ব্যবহার করছেন, দস্তানা বা গ্লাভস ছাড়া। অনেক বার তাঁদের সতর্ক করার পরেও তাঁরা শুনছেন না।
অর্চনা দত্ত
কলকাতা-৩১
ল-ক্লার্ক
লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের আদালতগুলির এবং ভূমিরাজস্ব দফতরের কাজকর্ম বন্ধ। এর ফলে রাজ্যের বেশ কয়েক হাজার ল-ক্লার্কদের উপার্জন বন্ধ। ল-ক্লার্করা মাননীয় আইনজীবীদের সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করেন, বিচারব্যবস্থাকে মসৃণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ল-ক্লার্কদের কোনও স্থায়ী উপার্জন নেই, তাঁরা দৈনিক উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। রাজ্য সরকার এই দুর্দিনে ল-ক্লার্কদের সহায়তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করলে খুব ভাল হয়।
সমীর মুখোপাধ্যায়
সম্পাদক, হাওড়া জেলা কমিটি, পশ্চিমবঙ্গ ল-ক্লার্কস অ্যাসোসিয়েশন
আকাশবাণী
আমাদের দেশ সহ গোটা বিশ্বে করোনার জন্য যখন অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তখন আকাশবাণীর মতো অত্যন্ত কার্যকরী ও শক্তিশালী মাধ্যমকে ঠিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। ২৫ মার্চ থেকে কলকাতা কেন্দ্রকে যেন দিল্লির উপনিবেশে পরিণত করা হয়েছে। বাংলাকে প্রায় বর্জন করা হয়েছে।
প্রথম ক’দিন শুধুমাত্র ‘বিবিধ ভারতী’ কেন্দ্রের অনুষ্ঠান হল, মাঝে মাঝে ইংরেজি ও হিন্দি সংবাদ এবং কিছু সমীক্ষামূলক আলোচনা। পরে কিছু কিছু আঞ্চলিক ভাষার অনুষ্ঠান চালু হয়েছে। প্রসঙ্গত জানাই, মোদী সরকারের আগমনের কিছু দিনের মধ্যেই দিল্লি থেকে আঞ্চলিক ভাষার সংবাদ প্রচারের যে রীতি ছিল তা এক কথায় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আকাশবাণী কলকাতা খুব সাফল্যের সঙ্গে অতীতে কাজ করেছে। সে ভারত-চিন যুদ্ধ হোক, বা পাক-ভারত যুদ্ধ। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে তো ইতিহাস রচনা করেছিল। কাজেই হঠাৎই লকডাউন বা যোগাযোগ-বিচ্ছিন্নতার যুক্তি এখানে খাটে না। এটা কি সুষ্ঠু প্রশাসনিক পরিকল্পনার অভাব, না এই সুযোগে আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতি কে রুদ্ধ করার প্রচেষ্টা?
তাপস কর
কলকাতা -১৩৬।
বিড়ি শ্রমিক
লকডাউন যদি ১৪ দিনের বেশি গড়ায় সে কথা বিবেচনা করে ৭ এপ্রিল সরকারি তরফে পান, ফুল বিড়ি শ্রমিকদের ছাড় দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, পারস্পরিক দূরত্বের বিধি মেনেই এঁদের কাজ করতে হবে। এ তো সোনার পাথরবাটি। এ বাংলায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২৩ লাখ বিড়ি শ্রমিক। ছোট মালিকের অধীনে যে শ্রমিক বাড়িতে বাড়িতে, অথবা দাওয়ায় বসে একা বা দু’তিন জন মিলে বিড়ি বাঁধেন, তাঁদের উপর এই বিধিনিষেধ খানিকটা চললেও চলতে পারে। বাস্তবে বিড়িশিল্প বলতে তো বোঝায় জঙ্গিপুর মহকুমা। যেখানে বিড়ি শ্রমিক সাত লক্ষের বেশি। তা ছাড়া মালদহ, দিনাজপুর, বীরভূম সহ আরও কয়েকটি জেলার বেশ কয়েকটি অঞ্চল বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত। এবং সেই শ্রমিকরা সাধারণত বাস করেন স্যাঁতসেঁতে বস্তি এলাকায়। শিক্ষা, সচেতনতার আলো যেখানে সহজে ঢুকতে পারে না। এঁদের ঘর আছে, বাড়ি নেই। তাঁদের কাছে এই বিধিনিষেধ স্রেফ কথার কথা, অর্থহীন।
এঁদের বাড়িতে একসঙ্গে পাঁচ জন বিড়ি শ্রমিক কাজ করলে, বাধ্যতামূলক দুরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে কি? আবার, বিড়ি তো শুধু বাড়িতে বসে বাঁধলে হবে না। বাজারজাত হওয়া চাই। এক জন মুনশির এক, দুই বা তিনটি গ্রামেও বিড়ি শ্রমিক থাকেন। তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাতা তামাক দেওয়া ও বিড়ি সংগ্রহ করা দূরত্ব বজায় রেখে সম্ভব কি? বিড়ি বাজারজাত করার আগে তন্দুর, প্যাকিং, গাঁট— কোনও কাজই কি দূরত্ব বজায় রেখে সম্ভব?
আসলে ‘ছাড়’ দেওয়ার কারণে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দিনাজপুর, বীরভূম প্রভৃতি জেলাগুলিতে কার্যত লকডাউন উঠে যাবে। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের যে সকল পরিযায়ী শ্রমিক পায়ে হেঁটে বা অন্য উপায়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই পরীক্ষাহীন ভাবে এই মহল্লাগুলোতেই আছেন। ক্রমশ আরও শ্রমিক ঢুকছেন এবং ঢুকবেন।
ফলে মাস্ক বা স্যানিটাইজ়ার বা নিরাপদ দূরত্বহীন এলাকাগুলিতে (যেখানে হাত ধোওয়ার সাবানটুকুও বিলাসিতা) সংক্রমণের সম্ভাবনা কি দ্বিগুণ তিন গুণ বেড়ে যাবে না?
এমনিতেই তামাক, কেন্দুপাতার সংস্পর্শে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই শ্বাসকষ্টে ভোগেন। বিশেষত বিড়ি শ্রমিকদের তো সারা বছর সর্দিকাশি লেগেই থাকে। করোনাভাইরাসের এঁরাই তো উপযুক্ত শিকার। বিড়ি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মধ্যে পড়ে না। এই তাড়াহুড়ো গোটা বাংলা তথা দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে না তো?
কাদের স্বার্থেই বা এই তাড়াহুড়ো? দু’মাস, আড়াই মাস বিড়ি মালিকরা সরকারি আইন মেনে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরির অন্তত কিছু অংশ বা এককালীন অনুদান হিসেবে দিতে পারতেন না? রাজ্য সরকার তো এঁদের অন্তত কিছু ক্ষুণ্ণিবৃত্তির দায়িত্ব নিতে পারত! দায় এড়াতে গিয়ে সমূহ বিপদকে ডেকে আনা হচ্ছে না তো?
আনিসুল আম্বিয়া
সম্পাদক, এআইইউটিইউসি
মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটি
বাজারে ভিড়
হলদিয়া টাউনশিপ (পূর্ব মেদিনীপুর) এলাকায় মোহনা মার্কেটে (মাখনবাবুর বাজার) প্রতি দিন ভিড় করে বাজার করে সবাই। নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে তো চলেই না, অনেকে মাস্কও পরে না। পুলিশ কিছু বলে না।
বাজারের অনেক গলি থাকায় সবাই এ দিক ও দিক দিয়ে বাজারে ঢুকে পড়ছে এবং বেরোচ্ছে। বাজারে যদি ঢোকার এবং বেরোনোর জন্য দুটি গেট করা যায়, তা হলে খুব ভাল হয়। নির্দিষ্ট কিছু জন বাজার করে বেরিয়ে গেলে আবার কিছু জনকে ঢোকানো হবে। এই সিস্টেম চালু করলে সবার ভাল হয়। বাজার করার নামে সবাই প্রতি দিন বেরোচ্ছে। এই ভিড় দেখে বাজারে যেতে অনেকে ভয় পাচ্ছে।
পবিত্র দাস
হলদিয়া টাউনশিপ
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
ভ্রম সংশোধন
কিছু সংস্করণে ‘বাতিল হতে চলেছে হজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে (রাজ্য, পৃষ্ঠা ৩, ১৯-৪) প্রতিবেদকের নাম মেহবুব কাদের চৌধুরীর বদলে মেহবুব কাদের সিদ্দিকি লেখা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy