Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Royal Bengal Tiger

কমছে অরণ্য

ভারতে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। তবু পরিকল্পিত ভাবে জমি ব্যবহার করা গেলে বনের আয়তন বাড়ানো যেতে পারে।

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ০৪:৩৫
Share: Save:

বিধানকান্তি দাসের প্রবন্ধ (বাঘ থাকবে, মানুষ নয়, ১০-৬) প্রসঙ্গে কিছু কথা উত্থাপন করা খুবই আবশ্যক। গত এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রকাশ করেছেন ২০২২ সালের বাঘশুমারির হিসাব। যা বলছে, বিগত চার বছরে ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের বাঘের সংখ্যা। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের তুলনায় দেশের বাঘের সংখ্যা ২,২২৬ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৯৬৭। ভারতে ‘প্রোজেক্ট টাইগার’ শুরু হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। মাত্র ন’টি টাইগার রিজ়ার্ভ ফরেস্ট নিয়ে শুরু হয় এই প্রকল্প। ৫০ বছরে ১৯টি রাজ্য মিলিয়ে এখন টাইগার রিজ়ার্ভের সংখ্যা মোট ৫৩। উনিশ শতকের শেষে ভারতে ৪০ হাজারের মতো বাঘ ছিল। কিন্তু শিকার ও নির্বিচারে বাঘ মারার ফলে তা দ্রুত কমে। ২০০৬ সালে দেশে মাত্র ১৪১১টি বাঘ ছিল। গত ১৬ বছরে বাঘের সংখ্যা ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রশ্ন উঠবে, এত বাঘের জন্য বন কোথায়? প্রোজেক্ট টাইগার যখন শুরু হয়েছিল, তখন তার অধীনে যত বনভূমি ছিল, এখন তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট রয়েছে। বাঘ নির্জনে থাকতে পছন্দ করে। অন্য বাঘকে তারা নিজের অঞ্চলে সহ্য করতে পারে না।

ভারতে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। তবু পরিকল্পিত ভাবে জমি ব্যবহার করা গেলে বনের আয়তন বাড়ানো যেতে পারে। শহর ও শহরের জমি যদি সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়, তা হলে সেখানে আরও বেশি জনসংখ্যা ভাল ভাবে বসবাস করতে পারবে। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রোজেক্ট টাইগারের জন্য এলাকা বাড়ানো। আর একটি বড় সমস্যা হচ্ছে চোরাশিকার, যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এ জন্য বন বিভাগের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি, আশেপাশে বসবাসকারী মানুষের স্বার্থকে যুক্ত করা প্রয়োজন। স্থানীয় মানুষ বাঘ সংরক্ষণে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী হতে পারে যদি তারা পর্যটনের আয়ে যোগ দেয়। মানুষের জন্য শিল্প ও কৃষি যতটা প্রয়োজনীয়, প্রকৃতির এই ভারসাম্য চক্রেরও ততটাই প্রয়োজন। ভারতকে বিশ্বের ‘জিন ব্যাঙ্ক’ বলা হয়, কারণ ভারতে যে জীববৈচিত্র রয়েছে, তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। সেই বৈচিত্রকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নিরাপদে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু আমাদেরই।

অভিজিৎ রায়, জামশেদপুর

টাকা ও সুখ

অমিতাভ গুপ্তের ‘দুঃখ কিসে যায়?’ (১১-৬) শীর্ষক প্রবন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই, সুখ ও দুঃখের সঙ্গে টাকার সম্পর্ক নিয়ে বহু গুণী মানুষ নানা কথা বলেছেন, গবেষণাপত্রও লিখেছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় শাস্ত্রে ও দার্শনিক মতবাদে এই বিষয়টি নিয়ে বহু চর্চা হয়েছে। আমার ধারণা, এগুলোর কোনওটাই পুরোপুরি সঠিক নয়। আংশিক ভাবে সত্য হতে পারে। আসলে দুঃখ, সুখ হল মনের ব্যাপার। আমরা মুখে যা-ই বলি, দুঃখ সকলেই এড়াতে চাই, আর সুখ চাই। টাকা জীবনে প্রয়োজন। তবে ঠিক কত টাকা আমাদের প্রয়োজন এটা আমরা নিজেরাই জানি না। তাই সুখের সঙ্গে টাকার সম্পর্ক স্থাপন করা যায় না। অনেকে বলে যে, যত টাকা তত সুখ। আবার অনেকে বলে, আকাঙ্ক্ষাকে সীমার মধ্যে রাখলে সুখী হওয়া যায়। কিছু উদাহরণ দিই। কোনও ছাত্র শুধু পাশ করলেই সুখী হয়, আবার কেউ প্রথম না হলে সুখী হয় না। কারও চাই দামি সুট, কেউ কেউ সামান্য ট্রাউজ়ার্স-পাঞ্জাবিতেই খুশি। এ সব ক্ষেত্রে কোনও ‘থিয়োরি’ কাজ করে না। এর পিছনে যা যা আছে তা হল, অতীতের কিছু অভিজ্ঞতা, পারিবারিক পরিবেশ ও মানসিক গড়ন।

অশোক বসু, বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

শোকের কিনারা

অমিতাভ গুপ্ত ড্যানিয়েল গিলবার্টের স্টাম্বলিং অন হ্যাপিনেস-এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এক জায়গায় বলেছেন, সন্তানের মৃত্যু ঘটলে নিজের বেঁচে থাকা, আনন্দহীন হয়ে যাবে, কথাটা ভুল। এটা কতটা সত্য, আমি নিজে ভুক্তভোগী হয়ে স্বীকার করতে চাই। আমার ছোট পুত্র ২০১৬-তে মেডিক্যাল জয়েন্ট-এ ২৩৮ র‌্যাঙ্ক করে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়। হস্টেলে থাকাকালীন যে কোনও কারণেই হোক, অ্যাকিউট ডিপ্রেশন-এ আক্রান্ত হয়ে এক বছর পড়াশোনা বন্ধ করে। পরের বছর ফার্স্ট ইয়ার পাশ করে। কিন্তু আবার ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসা চলছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য, ২৭ মার্চ, ২০১৯ সালে ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে। আমি ও আমার স্ত্রী ভেবেছিলাম, ওকে ছেড়ে বেঁচে থাকার চেয়ে আত্মহত্যা অনেক ভাল। প্রসঙ্গত, আমাদের আরও এক সন্তান আছে। আজ চার বছর হয়ে গেল আমরা বেঁচে আছি। আমার স্ত্রী এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নয়, কিন্তু আমি সব করছি। বেড়াতে যাই, সিনেমা দেখি, নাটকে অভিনয় করি। ওকে পড়া ছাড়িয়ে দিলে হয়তো বা বেঁচে থাকতে পারত— এই অপরাধবোধ আর বিদ্ধ করে না আমায়। আমরা কেমন বলুন? ড্যানিয়েল গিলবার্ট ঠিক লিখেছেন।

সুধেন্দু বিকাশ মাজী, শ্রীপল্লি, পূর্ব বর্ধমান

ধর্মান্তরণ

‘মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা, এবং’ (১৬-৬) প্রবন্ধটিতে সীমন্তিনী গুপ্ত সঠিক প্রশ্ন তুলেছেন— ত্রিশ হাজারের পরিবর্তে যদি তিন জন মহিলা ইসলামিক স্টেটের জঙ্গি হয়ে যায়, সেটা কি যথেষ্ট উদ্বেগজনক নয়? দ্য কেরালা স্টোরি ছবিটির পরিচালক সুদীপ্ত সেন ২০২১ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর হিসাব— মধ্যপ্রদেশে ৯১,২৯৯ জন, মহারাষ্ট্রে ১,০৯,৫৮৫ জন হারিয়ে গিয়েছেন— সচেতন ভাবে এড়িয়ে গেলেন। যে সব রাজ্য থেকে মহিলারা ‘মিসিং’ হচ্ছেন, সবাই কি জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিচ্ছেন? উল্লেখ্য, ২০১২ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি কেরল বিধানসভায় বলেন, ২০০৬-২০১২ সময়কালে সে রাজ্যে ২,৬৮৭ জন মহিলা ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, অর্থাৎ গড়ে বছরে ৪৫০ জন। এবং এঁদের কাউকেই জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়নি। যেমন, অনেক হিন্দু স্বেচ্ছায় মুসলমান হচ্ছেন, তেমনই অন্য ধর্ম থেকে হিন্দুও হচ্ছেন। সংবিধান তা সমর্থন করেছে।

বীরেন্দ্রনাথ মাইতি, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

চারার জীবন

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে (৫ জুন) চার দিকে গাছ বসানো হল। কিন্তু তার পর খোঁজ কি রাখা হয়, ক‌’টা গাছ বাঁচল? সমীক্ষা বলছে, যে পরিমাণ চারা বিক্রি হয় তার ৫০% আদতে রোপণ হয় আর তার ২০% গাছ বাঁচে। তাই মাটির ও পরিবেশের চরিত্র বুঝে গাছ বসানো দরকার। জোর দেওয়া দরকার গাছ বাঁচানোয়। গাছে কেউ পেরেক পুঁততে গেলেই আটকানো চাই। গাছ কাটতে দেখলেই বন দফতরে খোঁজ নিতে হবে, সেই গাছ কাটার অনুমতি আছে কি নেই। বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আগামী পাঁচ মাস মোটামুটি বৃষ্টির জল পাওয়া যাবে। ফলের গাছ বসানো দরকার, কারণ পাখিদের খাবার দিন দিন কমছে।

পার্থপ্রতিম মিত্র, বর্ধমান

মিষ্টিখোর পুলিশ

পুলিশ ভেরিফিকেশন-এর নামে ‘মিষ্টি খাওয়ার’ নাম করে দিনেদুপুরে ঘুষ চাওয়ার রীতি বন্ধ হোক। চাকরিপ্রার্থীরা দোকানে বসিয়ে মিষ্টি খাওয়াতে পারে, কিংবা মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে যাবে। টাকা দিতে হবে কেন? মিষ্টিপাগল হলে নিজের বেতনে নিজেই মিষ্টি কিনে খান না মশাই। না হলে রাজ্য সরকারকে অনুরোধ জানাব, ‘পুলিশের মিষ্টি ভাতা’ প্রকল্প চালু করতে। টাকা না দিলে ভেরিফিকেশন দেরিতে হয়, বাড়ে হয়রানি, চাকরিতে যোগ দিতে দেরি হয়। হকের চাকরি পেয়েও টাকা দিতে হবে কেন?

তনয় প্রামাণিক

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE