'আটকে পড়েছি, বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান'। ছবি -রয়টার্স।
চিঠি-১: ভেলোরে আটকে পড়েছি, বাড়িতে ফেরাতে পারবেন?
ভেলোরে ডাক্তার দেখাতে এসে আমরা লকডাউনে আটকে গিয়েছি। যে হোটেলে আছি, সেখানে আরও অনেক ‘জোন’ আছে। সেখানেও আছেন অনেকেই। তাঁরাও কেউ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। সকলেই এসেছি পশ্চিমবঙ্গ থেকে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমরা সকলেই যাতে বাড়ি ফিরতে পারি, তার জন্য আমাদের একটু সাহায্য করলে উপকৃত হই।
অর্ণব সিকদার, ইমেল: arnabsikdar2002@gmail.com
চিঠি-২: চেন্নাইয়ে আটকে পড়েছি, টাকা প্রায় শেষ, ফিরতে চাই ঘরে
বাবার অপারেশনের জন্য চেন্নাই এসেছিলাম। লকডাউনের জন্য বাড়ি ফিরতে পারছি না। ১৮ এপ্রিলের টিকিট কাটা রয়েছে। টাকা-পয়সা শেষ হতে বসেছে। খুব কষ্টে রয়েছি। দয়া করে বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করে দিন।
প্রতীক বিশ্বাস, ইমেল: pratik.vodafone@gmail.com, মোবাইল: ৭৯০৮৬২২৯৭১
চিঠি-৩: চেন্নাইয়ে টাকা প্রায় শেষ, ঘরভাড়া মেটাব কী ভাবে?
চেন্নাইয়ে কাজ করি। একটা ঘরে চার জন থাকি। এখানে আরও তিনটি ঘরে থাকেন বাঙালিরা। যেখানে থাকি, সেখানকার ঠিকানা- ৩৫, এমজিআর নগর, ফার্স্ট স্ট্রিট, পাম্মাল, চেন্নাই- ৬০০০৭৫। আমাদের এখানে প্রথম ১৪৪ ধারা জারি করা হয় গত ২৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তার পর কেন্দ্রীয় সরকার গত ২৫ মার্চ থেকে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করে। তখন থেকেই আমরা আটকে পড়েছি। যদি আগামী ১৪ এপ্রিল শেষ হয় লকডাউনের মেয়াদ শেষ হয় ভাল। তা হলে আমরা বাড়ি ফিরে যেতে পারব। আর যদি লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ে, তা হলে আমরা খুবই অসুবিধায় পড়ে যাব। কারণ, আমাদের হাতে যা টাকা আছে, তাতে বড়জোর ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টেনেটুনে চালানো সম্ভব হবে। তবে সে ক্ষেত্রে ঘরভাড়া মেটাতে পারব না। সাহায্যের অনুরোধ জানাচ্ছি।
ফিরোজ আহমেদ, মোবাইল: ৮৬০৮৫৩৬৮১০, আমার গ্ৰামের বাড়ির ঠিকানা- গ্রাম: পালুন্ডি, পোস্ট অফিস: নানুর, জেলা: বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ, পিনকোড- ৭৩১২৪০।
চিঠি-৪: লকডাউন উঠুক সাময়িক ভাবে
ভেলোরের সিএমসিতে স্ত্রীর অস্ত্রোপচারের জন্য এসেছিলাম গত ৬ মার্চ। রিটার্ন টিকিট কাটা ছিল ২৪ মার্চের। কিন্তু আচমকা লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় আটকে পড়েছি। খুব অসুবিধার মধ্যে পড়ে গিয়েছি। সাড়ে পাঁচ বছরের মেয়েকে ফেলে এসেছি আমার মেদিনীপুরের গ্রামের বাড়িতে। ফোন করলে বাবা বার বার জানতে চাইছেন, কবে ফিরব? আমার রোজগার বলতে মুদির দোকান। তা-ও অনেক দিন ধরে বন্ধ। এই অবস্থায় কী করব, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমার অনুরোধ, লকডাউন কিছু দিনের জন্য তুলে দেওয়া হোক। আমার মতো অনেকেই দূরে আটকে রয়েছেন। আমরা সকলেই ঘরে ফেরার অপেক্ষায়।
বিশ্বজিত করন, মিতালি করন, গ্রাম: চিরুলিয়া, পোস্ট অফিস: মহেশপুর, থানা- এগরা, পূর্ব মেদিনীপুর
চিঠি-৫: রুবি থেকে ঠাকুরপুকুর ফিরলাম হেঁটে
ইএম বাইপাসের রুবি হাসপাতাল থেকে ঠাকুরপুকুর ফিরলাম হেঁটে। এই লকডাউনের সময় রুবিতে যেতে হয়েছিল বাধ্য হয়ে। যাওয়ার সময় সৌভাগ্যক্রমে পেয়ে গিয়েছিলাম সি-৮ বাস। কিন্তু দুপুরে ফেরার সময় দেখি, গোটা রাস্তা ফাঁকা। জনমানবহীন। কোনও যানবাহন নেই। শুধু পুলিশের গাড়ি আর দু’-একটা মোটরসাইকেল। সারি সারি দোকান বন্ধ। শুধু একটা ওষুধের দোকান খোলা। বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিলাম অনেক ক্ষণ। না পেয়ে হাঁটা শুরু করি। মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি, বাঘাযতীন, রানিকুঠি, হরিদেবপুর, কবরডাঙ্গা হয়ে ঠাকুরপুকুর। গোটা রাস্তায় এক বোতল জলও পাইনি, সব দোকানপাট বন্ধ বলে। একেই যে লকডাউন বলে, আগে জানতাম না!
সত্যিই, এই লকডাউন চাইনি। ‘করোনা’ই জোর করে এটা চাপিয়েছে আমাদের উপর। এই কলকাতা শহর, বাংলা, ভারত আমরা চাই না। এমন দেশ বড্ড অচেনা, বড্ড কর্কশ। এই শহর আমার নয়। চাই চেনা পরিবেশ। পুরনো কলকাতাকে কবে ফিরে পাব?
দেবাশীষ দত্ত, ঠাকুরপুকুর, কলকাতা
চিঠি-৬: ভেলোরে আটক, বাড়ি ফিরতে সাহায্য করুন
ভেলোরে চিকিৎসার জন্য এসে পরিবারের চার জন লকডাউনের জন্য আটকে পড়েছি। রয়েছি ভেলোরের সিএমসি-তে হোটেল ‘নাগা লজ’-এ। গত ৩ মার্চ থেকে এই হোটেলে রয়েছি। আমাদের বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
গণেশ চন্দ্র বারিক, গ্রাম- ভাইতগড়, পোস্ট অফিস- কানাইদিঘি, থানা- মারিশদা, সাবডিভিশন কাঁথি-৩, পূর্ব মেদিনীপুর, মোবাইল: ৯৯৩২৫৫২৫৪৬
চিঠি-৭: ভেলোরে আটক, যে ভাবেই হোক বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিন
আমার শাশুড়ি ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন ২০১৭ সাল থেকে। চিকিৎসার জন্য এখন ভর্তি রয়েছেন ভেলোরের সিএমসি-তে (বন্দনা রায়, সিএমসি আইডি- ১৯৫৭৬৬এইচ)। গত ১৬ জানুয়ারি আমরা এসেছিলাম সিএমসি-তে, শাশুড়ির বিএমটি করানোর জন্য। তার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শাশুড়িকে ভর্তি করানো হয় সিএমসি-তে। ওঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে গত ১৭ মার্চ।
এখন আমরা ওঁকে নিয়ে উঠেছি সিএমসি-র কাছে একটি লজে। ইতিমধ্যেই চিকিৎসা ও যাতায়াতে আমাদের ৮/৯ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। আমাদের টাকাও প্রায় ফুরিয়ে এল। কী ভাবে বাড়িতে ফিরব, জানি না। কী ভাবে বেঁচে থাকব, তা-ও জানি না। আমাদের কেউ কোনও ভাবে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করলে খুব উপকৃত হই।
পলাশ প্রামাণিক, গ্রাম- বাইলানি, পোস্ট অফিস- ধরমবেড়িয়া, থানা- হাসনাবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা, পিন-৭৪৩৪৩৫, মোবাইল- ৮৫৮৪০৩৩১১৭, ইমেল- palash.pramanik@zeiss.com
চিঠি-৮: বাংলাদেশে ফেরার জন্য কিছু বিমান চালু করুন
আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছিলাম ভেলোরের সিএমসি-তে। প্রতিস্থাপিত কিডনি চেকআপ করাতে। চেকআপ শেষ হওয়ার পর এখন দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি। টাকাপয়সাও প্রায় শেষ। টাকা আনানোর জন্য সব এজেন্সি বন্ধ থাকায় দেশ থেকে টাকা আনাতেও পারছি না। এখানে প্রায় ৪০০/৫০০ জন বাংলাদেশি আটকে আছেন। দয়া করে আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করুন। ৩/৪ দিনের জন্য হলেও লকডাউন তুলে নিয়ে আবার লকডাউন চালু করুন। অথবা, লকডাউন থাকলেও বিমান পরিষেবা চালু রাখুন সীমিত ভাবে। যেন আমরা আটকে পরা সকলেই ঘরে ফিরতে পারি।
মহম্মদ জাবেদ আলি, বাংলাদেশ, ফোন নম্বর- ৭৮৬৭৮৫৩৯৭৪, ইমেল- zalibd355@gmail.com
চিঠি-৯: পুরুলিয়ায় স্ত্রী, মেয়ে একলা রয়েছেন, আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান
আমি বিহারের রাজগিরে আটকে রয়েছি। আমার স্ত্রী ও কন্যা একলা রয়েছে বাড়িতে। ১৪ এপ্রিলের পর আমার বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করুন, দয়া করে।
বিদ্যুৎ মাহাতো, আদ্রা, পুরুলিয়া, মোবাইল- ৯৫৪৬৯১৭৭০০
চিঠি-১০: বাড়িওয়ালার সঙ্গে চুক্তি শেষ, আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে দিন
আমি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ম্যানেজার। আমার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে। এখন কর্নাটকের সিরসিতে একটি জায়গায় কর্মরত। গত ২৮ মার্চ আমার বাড়ি ফেরার কথা ছিল অন্য একটি সংস্থায় কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু লকডাউনে আটকে গিয়েছি। যে বাড়িতে থাকতাম, তার মালিকের সঙ্গে আমার চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। অনেক অনুরোধ করে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আমার থাকার মেয়াদ বাড়িয়েছি। এর পরেও যদি লকডাউনের মেয়াদ বাড়ে, তা হলে জানি না কোথায় গিয়ে উঠব? বাড়িতে বাবা, মা খুবই চিন্তায় আছেন। আমার ফেরার ব্যবস্থা করে দিলে খুব উপকৃত হব।
সাত্যকি কুন্ডু, মোবাইল- ৯৪৭৪৬০৮০৭১, ইমেল- satyaki.kundu52@gmail.com
চিঠি-১১: বাবা-মাকে বাংলাদেশ থেকে ফিরতে সাহায্য করুন
বাবা ও মা বাংলাদেশ গিয়েছিলেন টুরিস্ট ভিসা নিয়ে। ওঁরা দু’জনই ষাটোর্ধ। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ভারতে ফিরতে পারছেন না। ওঁদের টাকাপয়সা শেষ। ওষুধও দরকার। ওঁদের ভিসার মেয়াদও প্রায় শেষ। মেয়ে হিসাবে ওঁদের এই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য আপনাদের সাহায্য প্রার্থনা করছি।
চন্দ্রানী দাস, মানকুন্ডু, মোবাইল- ৯৪৩৩৪৪০৮৪৫
চিঠি-১২: হোটেলের খরচ টানতে পারছি না, ফেরান জামশেদপুরে
চেন্নাইয়ে এসেছিলাম চিকিৎসার জন্য। লকডাউনে আটকে গিয়েছি। সঙ্গে বাচ্চা রয়েছে। হোটলের খরচ আর টানতে পারছি না। জামশেদপুরে আমার বাড়িতে ফিরতে চাই। আমাদের সাহায্য করুন বাড়িতে ফিরতে।
পিয়ালি চক্রবর্তী, মোবাইল- ৯৮৩৬৭৩০৩৮৯, ইমেল- chpiyali@gmail.com
চিঠি-১৩: বাড়িতে ফেরান, কথা দিচ্ছি, ফিরে লকডাউনের নিয়মকানুনন মানব
গত ১৬ মার্চ মাকে নিয়ে আমার দিদাকে দেখতে এসে উত্তরবঙ্গে আটকে পড়েছি। দয়া করে আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুন। আমি গৃহশিক্ষক। বাড়ি ফিরে অনলাইন ক্লাস করিয়ে এই দুর্দিনে আমার পরিবারের পাশে অন্তত দাঁড়াতে পারব। কথা দিচ্ছি, বাড়িতেও লকডাউনের নিয়মকানুন মেনে চলব।
অভিজিৎ সেন, মোবাইল- ৯৮৩০০২৮৬৩৬, ইমেল- avijitsen539@gmail.com
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy