ইউটাহ সুনসান। —নিজস্ব চিত্র।
দিনটা ১৫ মার্চ। পাহাড়-পর্বত ঘেরা ছোট্ট শহর মার্কিন মুলুকের ইউটাহ। শহরতলিতে পা রাখলে মনেই হবে না যে, এই সময়টায় বিশ্বের অপর প্রান্ত এক আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে।
জনবহুল পথ স্বাভাবিক, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গাড়ি, স্বাভাবিক বাস, ট্র্যাক্স (Trax—ট্রাম আর ট্রেন-এর সংমিশ্রণ)। আমরা বর্তমানে থাকি শহরতলি থেকে দূরে। পাহাড়ের কিছুটা উপরে, একটা উপত্যকা অঞ্চলে। নাম ‘সল্টলেক সিটি’। এখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১। অল্পবয়সী ছাত্র হোম আইসোলেশনে।
সপ্তাহ ঘুরতেই ছবিটাও বদলাতে শুরু করেছে। বদলটা আস্তে নয় বরং দ্রুতই। ‘ইউটাহ’-র সরকারি ওয়েবসাইটে আর ‘worldometer’-এর কাঁটা ঘুরতে আরম্ভ করেছে। যে ছাত্রটির পজিটিভ রিপোর্ট ছিল, সে ইতিমধ্যে ল্যাবে গিয়ে সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে। তবে সচেতনতার মাত্রা বাড়েনি, উপসর্গ আসতে এই রোগের যে কিছুটা সময় লাগে, তা এখন সকলেরই জানা। তাই সেই ঘটনার পরেও সব কিছু সচল ছিল।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় দলকে নিয়ে ব্যস্ত বাঙুর, সেই ফাঁকে ‘হাওয়া খেতে’ বেরিয়ে পড়লেন করোনা রোগী
আমরা বাঙালিরা একটু ভয় পাই বলেই আর বিদেশের মাটিতে নিজেকে সুস্থ রাখার প্রয়োজনীয়তা থেকেই মাস্ক আর সার্জিক্যাল গ্লাভস-কে নিজের সঙ্গী করেছিলাম। স্যানিটাইজার তো ছিলই প্রথম দিন থেকে। তত দিনে ইউনিভার্সিটির আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। আর গোটা শহরে সাত দিনে সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে।
এ সবের মধ্যেই চিন্তার পারদ বাড়ে কলকাতায় ফেলে আসা পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়দের জন্য, যাঁদের সকাল শুরু হয় খবরের কাগজ, ঠাকুরের ফুল-মিষ্টি আনা আর গরম চায়ের আড্ডা দিয়ে। কত দিন তাঁদের আটকাতে পারবো? অসহায় লাগে বড্ড।
তবে আশার কথা একটাই—এ রাজ্যে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমতে আরম্ভ করেছে। সরকার থেকে ‘স্টে অ্যাট হোম’ অর্ডার এসেছে, পাবলিক যানবাহন কমিয়েছে। বাস, বিল্ডিং সব প্রতিদিন স্যানিটাইজ করা হয়।
আরও পড়ুন: দেড় বছরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বর্ধিত ডিএ বন্ধ রাখল কেন্দ্র
রাজ্যের অর্ডারে বন্ধ হয়েছে চিলড্রেন্স পার্ক, স্কুল, কলেজ-ইউনিভার্সিটিও। সংক্রমণের ভয় কমলেও অন্য ভয় তাড়া করছে— কর্মসংস্থান ঝাঁপ ফেলছে, পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। ভাবতেই পারছি না একটা রোগ গোটা বিশ্বের ত্রাস হয়ে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেবে। মনে হচ্ছে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করাই কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটাকে গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছি। এগিয়ে চলছি মনের জোরে।
একতা মিত্র, ইউটাহ, সল্টলেক সিটি
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy