বাদুড়ের সঙ্গে একটা গা-ছমছমে ব্যাপার জড়িয়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে করোনা সংক্রমণের খবর এসে বাদুড় নিধন যজ্ঞ এখন তুঙ্গে। বাদুড়ের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণিত হলেও, করোনাভাইরাস বাদুড় বা প্যাঙ্গোলিন বা অন্য কোনও পশুপাখি থেকে সংক্রমিত হয়েছে— সে বিষয়ে এখনও কোনও নিশ্চিত প্রমাণ নেই। কিন্তু গুজবের জেরে শুরু হয়েছে বাদুড় মারা। এই হত্যা বন্ধ করার জন্য এশিয়ার ৬টি দেশের প্রায় ৬৪ জন বাদুড় বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও পরিবেশ আন্দোলনকারী এক সঙ্গে আবেদন করেছেন। গুজবে কান দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা উচিত নয়। বাদুড় শিকার, বাদুড়ের কোটরে বিষ মাখিয়ে রাখা, বাদুড়ের বাসা পুড়িয়ে দেওয়া, বাদুড়ের খাবারে বিষ মাখিয়ে রাখা ইত্যাদি চলছে। জীববৈচিত্র নষ্ট করলে, আমরা বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাব।
পর্না মাহাত, ঝাড়গ্রাম
হারভেস্টর
সরকারি নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই, মাস্ক পরে, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে কৃষি-শ্রমিকরা খেতখামারে কাজ করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের কৃষি বিভাগের সুপারিশে যাঁরা কাস্টমার হায়ারিং সেন্টার (সিএইচসি) চালানোর অনুমতি পেলেন, তাঁরা হারভেস্টর মেশিন নিয়ে নিজ এলাকার বাইরে যেতে পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রী কম লোকজন নিয়ে ধান কাটা-তোলা করতে বলেছেন, সে ক্ষেত্রে হারভেস্টর মেশিনের বিকল্প নেই। কিন্তু করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় কিছু মানুষ অন্য এলাকার বা অন্য জেলার হারভেস্টর মেশিন ব্যবহারে বাধা দিচ্ছেন। কৃষিক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, পঞ্চায়েত, ব্লক এই বাধাদানে মান্যতা দিচ্ছে। বহু অর্থ ঋণ নিয়ে সিএইচসি-র মাধ্যমে যাঁরা কৃষি যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছেন তাঁরা তো অথৈ জলে পড়লেন।
সাম্য বাঁক, শালুকগোড়, হুগলি
ফি মকুব
লকডাউন চলায় অনেক অভিভাবকের কোনও আয় নেই, বেসরকারি বিদ্যালয়ের ফি দেওয়ার মতো সামর্থ্য এই মুহূর্তে নেই। তাই বেসরকারি স্কুলগুলোর কাছে অনুরোধ, লকডাউন চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের ফি মকুব করা হোক।
জগন্নাথ দত্ত, সিউড়ি
বিচার চাই
আমি পোলবা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে চাকুরিরত। লকডাউন পর্বের শুরু থেকেই অনেক বিদ্রুপ অপমান সহ্য করে, ট্রেনে করে আমার কর্মস্থলে যাচ্ছিলাম। প্রতি দিনই আরপিএফ-এর লোকেরা বলতেন, এই সার্ভিস শুধুমাত্র রেল কর্মচারীদের জন্যই নির্দিষ্ট, অন্যেরা এখানে ব্রাত্য। আমি অনেক ভাবেই বোঝাবার চেষ্টা করতাম যে রেল ও ভাবে কারও কুক্ষিগত হতে পারে না। তাঁদের উত্তর, এটা ওপরের অর্ডার। এই নিয়মের অন্যথা হলে নাকি তাঁদের চাকরি চলে যাবে।
অন্যান্য যাত্রীরাও তখন আমার দিকে তির্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন। যেন আমি অপরাধ করে ফেলেছি। ২৫-৪ তারিখে ব্যান্ডেল স্টেশনে বিকেলে এক রকম বলপূর্বক আমাকে নামিয়েই দেওয়া হল। তার পর বহু কষ্টে অনেক রাতে বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসি।
এর সুবিচার চাই। প্রতিকার চাই। নিদেন পক্ষে একটা আলাদা কোচও তো দেওয়া যেতে পারে শুধু রাজ্য কর্মচারীদের জন্য।
অমিত চক্রবর্তী, কোন্নগর, নবগ্রাম
খরচ বাড়বে
এক বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে শুনলাম, প্রাক-লকডাউন পরিস্থিতিতে যে রোগীর চিকিৎসার জন্য তাঁরা যত টাকার প্যাকেজে রাজি হয়েছিলেন, এখন সেই প্যাকেজ বাড়াতে তাঁরা বাধ্য। কেন? বেসরকারি হাসপাতালে এখন থেকে যে কোনও ধরনের সার্জারি করতে গেলে, রোগী ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁর কোভিড-১৯ টেস্ট করতেই হবে, চিকিৎসা শুরু করার জন্যে। এই টেস্ট করতে সময় লাগছে আনুমানিক দুই থেকে তিন দিন এবং তত দিন রোগীকে হাসপাতালের কোনও বিশেষ বেডে রাখা হবে। অর্থাৎ কোভিড টেস্টের টাকা ছাড়াও এই বাড়তি দু’তিন দিনের বিশেষ বেড ভাড়ার টাকাও, চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগীকে গুনতে হবে। এ ছাড়াও, রোগীর চিকিৎসায় থাকা প্রত্যেক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর আলাদা আলাদা পিপিই ব্যবহারের খরচও বহন করতে হবে রোগীকেই। প্রসঙ্গত, এই পিপিই ও দস্তানার খরচ কোনও বিমা সংস্থাই বহন করবে না। দিনের বিভিন্ন সময় বেড বা কেবিন স্যানিটাইজ় করার খরচ, সেটাও নাকি যোগ হবে রোগীদের বিলেই। সব মিলিয়ে, করোনা পরিস্থিতির পূর্বে বেসরকারি হাসপাতালে যে চিকিৎসার খরচ ছিল এক লাখ টাকা, আজ সেটির জন্যই খরচ পড়বে প্রায় দেড় লাখ।
সঞ্জীব পাল, দমদম
শিক্ষকের বেতন
কিছু শিক্ষকের অভিযোগের সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু বেসরকারি বিদ্যালয় তাঁদের শিক্ষকদের পূর্ণ বেতন দেননি গত মাসে। লকডাউনে আর্থিক ক্ষতি সকলেরই হয়েছে। বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের টিউশনও বন্ধের দিকে। স্কুলগুলো এমনিতেই তাঁদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখেছে বছরের পর বছর। লকডাউনে শিক্ষকদের বেতন না কাটার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এও জানানো হয়েছে, কোনও স্কুল কোনও শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলে, সেই স্কুলের অনুমোদন কেটে নেওয়া হবে। এই কড়া বিজ্ঞপ্তির পরও কিছু বেসরকারি স্কুল শিক্ষকদের বেতনের কিয়দংশ কেটেছে। শিলিগুড়ির একটি নামী স্কুল মার্চ মাসের বেতনের পঞ্চাশ শতাংশ কেটে নিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তা কোনও ভাবেই কাটা যেতে পারে না, কারণ লকডাউনের আগেই মার্চের বেতন সংগ্রহ হয়ে গিয়েছে। বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হোক, অন্য দিকে নিম্ন বেতন পরিকাঠামো ঘুচিয়ে নিয়ম অনুযায়ী বেতন দেওয়া শুরু হোক। নইলে আন্দোলন হবে।
বিনয় লাহা, প্রেসিডেন্ট, ন্যাশনাল নন গভর্নমেন্ট টিচার্স অর্গানাইজ়েশন, পশ্চিমবঙ্গ
লুকোচুরি কেন
পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছে। এমসিআই/ ডব্লিউবিএমসি আমাদের দেশে/ রাজ্যে এমবিবিএস বা সমতুল্য চিকিৎসকদের ডেথ সার্টিফিকেট লেখার অধিকার দিয়েছে। চিকিৎসকদের মাথার উপরে এক্সপার্ট কমিটি (কেবলমাত্র করোনা সংক্রান্ত) বসিয়ে শুধু চিকিৎসকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেওয়া হল না, মেডিক্যাল কাউন্সিলকে অবমাননা করা হল, মেডিক্যাল এথিকসকে পদদলিত করা হল। এই ধরনের চিন্তা একেবারে অবৈজ্ঞানিক, এর ফলে রাজ্য ভয়ানক পরিণতির দিকে যেতে পারে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বড় অংশের স্বাস্থ্যকর্মীরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
করোনা মোকাবিলায় এক্সপার্ট কমিটির কাজ রোগ নিয়ন্ত্রণের বিজ্ঞান সরকারকে বোঝানো, সরকারি নিয়ম নীতির প্রয়োগ করা নয়।
পৃথিবীর প্রায় ২১০টি দেশে কমবেশি করোনা ছড়িয়েছে, আমাদের দেশ এবং পশ্চিমবঙ্গও ব্যতিক্রম নয়। কেউ কিন্তু বলছে না তৃণমূল সরকারের জন্য করোনা হয়েছে। তবে কেন এত লুকোচুরি?
অবিলম্বে ডাক্তার সংগঠনগুলোর সঙ্গে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর বিশদ আলোচনা ও কিছু দৃঢ় পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।
স্বপন বিশ্বাস, কোষাধ্যক্ষ, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy