Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

জমজমাট, ঝলমলে একটা শহরকে নিমেষে ভুতুড়ে বানিয়ে দিল করোনা

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

নির্জন হেন্ডারসনের রাস্তা।

নির্জন হেন্ডারসনের রাস্তা।

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ১৭:৪৮
Share: Save:

বেশ অনেক দিন হয়ে গেল লকডাউন চলছে। আমি লাস ভেগাস কিছুটা দূরে হেন্ডারসন নামে একটি শহরে থাকছি। নেভাদা রাজ্যের অন্যতম শহর লাস ভেগাস থেকে মাত্র ১০ মাইল দূরে এই শহর।

নিউইয়র্কের মতো মৃত্যুমিছিল এখানে নেই। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যাটা প্রতি দিন বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। মানুষ খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছেন। মাঝে সব খাবার দাবার ফুরিয়ে গিয়েছিল। আনতে গিয়ে দেখলাম ওয়ালমার্টের মতো গ্রোসারি শপে সবাই যাচ্ছে কিন্তু মাস্ক ছাড়া এবং ভয়ডরহীন ভাবে। বড় বড় গ্রোসারি সুপার সেন্টার গুলো খোলা ঠিকই কিন্তু অধিকাংশ জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না। ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই বিষয়টিকে ধর্তব্যের মধ্যে আনছে না। অবশ্য কোথাও অন্য ছবিও ফুটে উঠছে। সেটাই আশার কথা।

এখানে স্থানীয় একটি ইন্ডিয়ান গ্রোসারি শপ আছে। আয়তনে বেশ বড়ো। সেখানে দেখলাম, প্রায় প্রতিটি সেল্ফেই জিনিসপত্রে ভর্তি। মন বেশ ভালো হয়ে গেল। প্রত্যেকে ওখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে। মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরেছে।

ফিরে আসার সময় লক্ষ্য করলাম লাস ভেগাসের যে স্ট্রিপটি চূড়ান্ত ব্যস্ত এবং ভীষণ জনপ্রিয় ট্যুরিস্টদের কাছে, সেটি নির্জন। পুলিশ মোতায়েন, রাস্তায় ব্যারিকেড। অধিকাংশ ক্যাসিনো, হোটেল বন্ধ। আলো নেভানো।

সেই বন্ধ ক্যাসিনো হোটেলগুলো দেখে আমার সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘জলসাঘর’ ছবির কথা মনে পড়ে গেল। প্রায় অন্ধকার স্ট্রিপে ভূতের মতো দাঁড়িয়ে সব ইমারত। আলো ঝলমলে, জমজমাট, জনবহুল একটা জায়গাকে করোনা নিমেষে ভুতুড়ে বানিয়ে দিল।
এই ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত প্রচুর লোকের চাকরি এবং ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে।

স্কুল বন্ধ। সব ক্লাস অনলাইনে হচ্ছে। সব অফিসে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। চিনা রেস্তরাঁগুলো দেখলাম মাছি তাড়াচ্ছে। কোনও লোক নেই। ফ্রি ওয়ে মানে শহরের বড় রাস্তাগুলি এক সময় সারা ক্ষণ গাড়ির যাতায়াত লেগেই থাকত। এখন সেখানে হাতে গোনা কিছু গাড়ির আনাগোনা। ওয়ালর্মাটের মতো বড় বড় সুপারমার্কেটগুলি আগে সারা দিন রাত খোলা থাকত। কিন্তু করোনার দাপটে নির্দিষ্ট সময়ের পর সে গুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।এখন বিমানের সংখ্যাও কমে গেছে। আমার অ্যাপার্টমেন্টের জানলা দিয়ে দেখতে পেলাম, অনেক হামিং বার্ড গাছে তাদের ডানা ঝাপটাচ্ছে। আকাশটা যেন আরও একটু বেশি নীল লাগছে।

দুশ্চিন্তা হচ্ছে বাড়ির জন্য। কলকাতায় আমার মা, বাবা, শ্বশুর এবং শাশুড়ি আছেন। তাঁদের বয়স হয়েছে। দেশে প্রতি দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেখে বেশ ভয় লাগছে। ঈশ্বরকে ডাকছি পরিস্থিতি আবার আগের মতো স্বাভাবিক করে দাও।

অনিন্দিতা ভট্টাচার্য
হেন্ডারসন, নেভাদা, আমেরিকা

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown COVID 19 USA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy