এখানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব কিছুই বন্ধ।
আমার জন্ম রামদেবপুরের রাজনগর, দাসপুরে (পশ্চিম মেদিনীপুর)। পড়াশোনার সূত্রে বর্তমানে আমি একজন প্রবাসী। আয়ারল্যান্ডের কর্কে থাকি। টিন্ডাল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটে (ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক) পিএইচডি কর্মরত।
নোভেল করোনাভাইরাসের কারণে অতিমারি পরিস্থিতির শিকার আয়ারল্যান্ডও। গত ১২ মার্চ থেকে এখানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব কিছুই বন্ধ। আমরা নিজেরাও গৃহবন্দি। ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে। তবে কিছু আপৎকালীন পরিষেবা যেমন, ওষুধের দোকান, গ্রোসারি শপ, আর সুপারমার্কেট খোলা রয়েছে। বাকি সমস্ত রেস্তরাঁ, পাব, বার বন্ধ।
আয়ারল্যান্ডে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ইউরোপের মধ্যে সর্বনিম্ন। ১০ লক্ষ মানুষপিছু মাত্র ৫০টি শয্যা। মোট আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ২৩৭। ভেন্টিলেটরের সংখ্যাও সীমিত। মাত্র ১২২৯টি। স্থানীয় খবরে পড়লাম, নতুন করে ৯০০টি ভেন্টিলেটর অর্ডার দেওয়া হয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারী পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য।
আমি ও আমার কিছু বন্ধু যারা পিএইচডি করছি, স্টাইপেন্ড থাকায় সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যাঁরা স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ছেন। তাঁরা নিজেদের টাকায় পড়তে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেককেই হয়তো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
পরিমিত জোগান রয়েছে, তাই দৈনন্দিন জিনিসপত্রের সঙ্কট নেই। আমার বাড়ি থেকে ৫০০-৮০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে ফুড স্টোর এবং সুপারমার্কেট। তাও বেরোতে ভয় হচ্ছে। কিন্তু বাধ্য হয়ে, দু’সপ্তাহ পরে গিয়ে চাল আর ডাল কিনে নিয়ে এলাম। ডাল,ভাত আর আলুসেদ্ধ খেয়েই দিন চলছে। ভিনাইল গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারও চড়া দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। ৫০০ মিলিলিটারের দাম ২০ ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৬০০ টাকা)। দোকানে মাস্ক পাওয়া যায়নি।
এখানের আবহাওয়া অদ্ভুত রকমের। হঠাৎ বৃষ্টি, হঠাৎ রোদ, তো পর ক্ষণেই বরফ পড়া শুরু হয়। একে তো খুব ঠান্ডা (তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করে) তায় সারা বছর বৃষ্টি লেগেই থাকে। তাই গ্রীষ্মের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি। এত কিছুর মধ্যেও ভাল খবর এই যে, আমরা সবাই এখনও পর্যন্ত সুস্থ আছি। তবে সময় কাটছে না। প্রতি দিন বাড়িতে হোয়াটস্যাপে ভিডিয়ো কলে মা,বাবা, ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছি। সবাইকে চিন্তা করতে বারণ করেছি।
আমার মনে হয় আয়ারল্যান্ডেরও অবস্থা খুব ভাল না। মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৭৩ (৪ এপ্রিল, ২০২০ স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত), মৃত ১২০ এবং সুস্থ ২৫ জন। ৪৮ লক্ষ জনসংখ্যার দেশের প্রেক্ষিতে সংখ্যাটা মনের মধ্যে ভয় জাগিয়ে তোলার পক্ষে যথেষ্ট।
সকলের কাছে আন্তরিক অনুরোধ, দয়া করে ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন। নিজে বাঁচুন, সবাইকে বাঁচতে সাহায্য করুন।
অরিন্দম সামন্ত
কর্ক (আয়ারল্যান্ড)
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy