প্রতীকী ছবি।
রূপ ও স্বরূপ
এখন ‘রূপান্তরকামী’ শব্দটা বেশ দেখা ও শোনা যাচ্ছে। কিন্তু ‘কামী’ শব্দটার একটা মানে অভিলাষী। সেমতো হলে, ‘রূপান্তরকামী’ শব্দটার মানে দাঁড়ায়— ‘রূপান্তর কামনা করে যে’। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শব্দটা বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে তাঁদের ক্ষেত্রে, যাঁরা ইতিমধ্যে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছেন। তাই শব্দটা হওয়া উচিত ‘রূপান্তরিত’।
আবার, ‘রূপ’-এর প্রায় পুরোটাই চোখের নিরিখে হয়, তাই সেটা বাইরের ব্যাপার। কিন্তু যে অর্থে এই মানুষগুলির ক্ষেত্রে ‘রূপান্তর’ শব্দটা ব্যবহার করা হচ্ছে, তা হল— পরিবর্তন করে ভেতর ও বাইরের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য আনা। তাই এ ক্ষেত্রে ‘রূপ’ নয়, বরঞ্চ ‘স্বরূপ’ (প্রচলিত অর্থে ভেতর ও বাইরেটা মিলিয়ে) শব্দটাই বেশি কাছাকাছি বলে মনে হয়।
‘রূপান্তরকামী’ না বলে ‘নারী/পুরুষসঙ্গত’ বা ‘লিঙ্গসাম্যিক’ বা ‘লিঙ্গান্তরিত’ মানুষ বলাটাই সঙ্গত। বড়জোর ‘রূপান্তরিত’ বলা চলে।
কল্লোল সরকার
বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগনা
‘নাড়া’য় আগুন
‘‘নাড়া’য় আগুন রাজ্যেও, ক্ষতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ’’ (৮-১২) শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে এই পত্র। লেখা হয়েছে, ‘‘আবাদ শেষে ‘নাড়া’ পুড়িয়ে জমি সাফ করার অভ্যাস চাষিদের ছিলই।’’ না, ছিল না। খুব ছোট ছোট নাড়া জমিতেই হেজে-মজে যেত আর বড় নাড়া ‘গোড়া-হেবড়ে’ কেটে নিয়ে বাড়িতে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হত। টাল দিয়েও রাখা হত অসময়ে পোড়ানোর জন্যে। খড়ের বেশির ভাগ অংশটাই ব্যবহৃত হত মূলত গরুর খাদ্য হিসাবে, ঘর ছাওয়ার জন্যে এবং বাড়িতে জ্বালানি হিসাবে।
এখন খড়ের চাল বিরল। বলদ বা দামড়া প্রায় দেখাই যায় না; কেবল গাই, দামড়ি বা নই বাছুরই পুষতে দেখা যায়, তাও আগের তুলনায় অনেক কম বাড়িতে। বলা হয়, ‘গাইগরুর মুখে দুদ’, মানে গাইকে যত খাওয়াবে তত বেশি দুধ মিলবে। বেশি দুধ পাওয়া আরও অনেকখানি নির্ভর করে কাঁচা জিনিস খাওয়ানোর উপর। তাই খড়ের তুলনায় ঘাস, লতা-পাতা (সঙ্গে খোল-ভুসি-জল ইত্যাদি) প্রভৃতিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। এখন গ্রামেও প্রায় ঘরে-ঘরে সরকার গ্যাস সংযোগ দেওয়ার ফলে, খড় দূরের কথা, কাঠেরই দিকে ফিরে তাকায় না কেউ তেমন আর! অথচ কৃষি-আধিকারিকরা এখনও জোর দিয়ে চলেছেন খড়কে গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহারেরই কাজে! ‘স্ট্র-ব্যালার’ বলে যে যন্ত্রটির উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে, ক’জন চাষি তা চোখে দেখেছেন! তা ছাড়া, সে যন্ত্রও ‘‘জমিতে ধানের যে গোড়া এবং মাটির উপর ইঞ্চি দশেকের অংশ থেকে যায়, সেগুলি কেটে’’ যে ‘‘শক্ত বলের আকৃতিতে পরিণত’’ করে, তারও কার্যকারিতা হিসাবে দেখানো হয়েছে ‘গবাদি পশুর খাবার’ হিসাবেই। কৃষি-আধিকারিকগণ অবগত আছেন কি না জানি না, গবাদি পশু ধানগাছের একেবারে গোড়ার দিক খেতে আদৌ পছন্দ করে না। আর ‘‘খড় কুচিয়ে বা পচিয়ে সার হিসেবে জমিতে মেশানো’’র যে নিদান দিয়েছেন তাঁরা, তার সম্ভবপরতার দিকটি এক বারও খেয়াল করে দেখেছেন কি?
বস্তুত, ধোঁয়ামুক্ত পরিবেশের নিমিত্ত ক্রমবর্ধমান গ্যাসের ব্যবহার, নির্মল বায়ুর জন্যে সঙ্গত কারণেই ‘গাছ লাগাও, গাছ বাঁচাও’-এর এই দিনে এবং আগামীতে, চাষের খড় ও গাছপালার বিপুল জ্বালানি নিয়ে গ্রাম যে কী করবে তার কোনও দিশা যেমন গ্রামবাসীর কাছে নেই, তেমনই চর্চাকারীদের থেকেও এখনও তেমন সুরাহা মেলেনি।
আর অন্য দিকে, গাছপালা আর সারা বছরের শস্যচক্রে শহরকে কত পরিমাণ অক্সিজেন জোগাচ্ছে গ্রাম, তার হিসাব কোনও দিন হল না, কারণ সেটা চোখে দেখা যায় না। আর বাধ্যত জমিতে এখন খড় পোড়াতে হচ্ছে বলে (জেনে রাখুন, পুরো মাঠ জুড়ে নাড়া পোড়ানো যায় না, খড় জড়ো করে দু’এক জায়গায়, বা খুব বড় জমি হলে একাধিক জায়গায় জ্বালানো হয়) শহর গেল-গেল এবং রে-রে করে উঠছে! এ দিকে হাতে টাকা হলেই যে শহরে এখন গাড়ি কেনা থেকে বাড়িতে বাতানুকূল যন্ত্র বসানোর হিড়িক (অফিস-কাছারি তো বাতানুকূল হয়েই চলেছে), তার নিয়ন্ত্রণের কোনও লক্ষণই নেই!
চাষিদের কাঠগড়ায় তোলার আগে তাঁদের অসহায়তাকে বুঝুন, কৃষিবিদ বা পরিবেশবিদগণ ও সরকার বাস্তবসম্মত পথ দেখাক এবং তা যাতে চাষির নাগালের মধ্যে হয় তার ব্যবস্থা করা হোক।
অরবিন্দ পুরকাইত
গোকর্ণী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
ফাঁক থাকছে
যন্ত্র ব্যবহারের আগে চাষিদের অভ্যাস ছিল— কাস্তে দিয়ে প্রায় গোড়া থেকে ধানগাছ কেটে সবসুদ্ধ বান্ডিল বেঁধে ট্র্যাক্টরে করে কেউ নিয়ে যেতেন বাড়ি, কেউ ধান ঝাড়াইয়ের জায়গায়। আগের সেই ব্যবস্থায় ধান কাটার পর নাড়া বাদে খড় কমই পড়ে থাকত মাঠে। সামান্য যা কিছু থাকত, তা চাষ দিলে মাটিতে মিশে যেত। কিন্তু এখন ‘কম্বাইন হার্ভেস্টার’-এ ধান কাটলে, মাঠ জুড়ে পড়ে থাকে অবশিষ্ট কাটা খড় এবং নাড়া। এক একর জমিতে ধান কাটার পর প্রায় ২০-২২ কুইন্টাল খড় পাওয়া যায়।
সুপ্রিম কোর্ট, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ২০১৫ সালেই নাড়া পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, জরিমানা ধার্য করেছে দু’হাজার, পাঁচ হাজার ও পনেরো হাজার (একর প্রতি জমি মোতাবেক)। তাতেও কি আটকানো গিয়েছে নাড়া পোড়ানো? আসলে প্রচুর পরিমাণ কৃষিবর্জ্য (সারা ভারতে ২০১৬-তে ৫১৬ মিলিয়ন টন) পরিবহণ ও বণ্টনে রয়ে গিয়েছে বিরাট ফাঁক। যা একা চাষির পক্ষে সামাল দেওয়া (গরুকে খাইয়েও) সম্ভব নয়। যথেষ্ট ভর্তুকি আর সুস্থ ম্যানেজমেন্টই দোষারোপের পালা ও আগুন জ্বালানো বন্ধ করতে পারে।
অতীশ ঘোষ
মাখলা, হুগলি
ঋণ মকুব
রাহুল গাঁধী চাষিদের ঋণ মকুবের দাবি তুলেছেন। মনে রাখতে হবে, ঋণ মকুব চাষিদের মূল দাবি নয়। মকুব হওয়ার কথা ভেবে কোনও চাষি ঋণ নেন না। চাষিরা চান, সার, বীজ, কীটনাশক, তেল— এগুলির দাম কমানো হোক। সরকার ফসলের ন্যায্য দামের ব্যবস্থা করুক। এর আগে কংগ্রেস শাসনেও চাষিদের এই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাহুল বরং চাষিদের যথার্থ দাবিগুলি সরকারের কাছে তুলে ধরুন।
সমরেন্দ্র প্রতিহার
কলকাতা–৪
স্বাধীনতা?
২৯ ডিসেম্বর থেকে নাকি ভারতীয় টেলিভিশনের জগতে বিরাট পরিবর্তন আসতে চলেছে। প্রচার করা হচ্ছে, দর্শক পাবেন নিজের পছন্দসই চ্যানেল নির্বাচনের স্বাধীনতা। তা হলে প্রতি মাসে
শুধু কেবল সংযোগ চালু রাখার জন্য ১৩০ টাকা (জিএসটি বাদে)
গুনতে হবে কেন? এর ফলে আমরা ১০০টি এস ডি চ্যানেল উপভোগ করার সুযোগ পাব ঠিকই, কিন্তু তা হলে যে চ্যানেলগুলিকে ‘ফ্রি’ আখ্যা দেওয়া হল, সেগুলি সত্যিই কি ফ্রি থাকল? হতেও তো পারে, পূর্বনির্ধারিত ওই ১০০টি এস ডি চ্যানেল কোনও দর্শকের পছন্দের তালিকায় নেই?
জয়িতা কাপুড়িয়া
পানিহাটি
উদার আনন্দ
এখন বহু হিন্দু ছেলেমেয়ে বাড়িতে ক্রিসমাস ট্রি সাজাচ্ছে, তাদের বাবা-মা বালিশের পাশে সান্তা ক্লজ়ের উপহার রেখে দিচ্ছে, এগুলোকে অনেকে আদিখ্যেতা বলছেন। কিন্তু একাধিক ধর্মের উৎসবে সোৎসাহে শামিল হতে পারা তো একটা উদার আনন্দিত মনের পরিচয়। এ রকমই চলুক।
শান্তা সরকার
কলকাতা-৩৩
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy