Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: অবহেলায় কবির বাড়ি

গত ক’দিন আগে ঠাকুরনগর ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন কবির বাড়ির চত্বরেই তাঁর শেষকৃত্যের স্থানটি দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল।

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কবি বিনয় মজুমদার। শুধুমাত্র কবিতাকে ভালবেসে কাটিয়ে গিয়েছেন সারাটা জীবন। উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের নিজবাড়িতেই কবির প্রয়াণ ঘটে ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর। চরম বেদনার কথা এই যে, কমবেশি ৪ বিঘা জমির উপর কবির বাসভবনটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ ভগ্নপ্রায়। আগাছায় ছেয়ে আছে চারিদিক। ১৭ সেপ্টেম্বর, আজ ‘ফিরে এসো চাকা’খ্যাত কবির জন্মদিন। গত ক’দিন আগে ঠাকুরনগর ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন কবির বাড়ির চত্বরেই তাঁর শেষকৃত্যের স্থানটি দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। খোলা আকাশের নীচে তাঁর বসতবাড়ির মতোই অনাদর-অবহেলা সেখানেও। সাংসদ তহবিলের অর্থে সীমানা পাঁচিলের কাজ হলেও একান্তই জরুরি কবির বসতবাড়ি সংস্কার ও তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণ।

পাঁচুগোপাল হাজরা

অশোকনগর, উত্তর ২৪ পরগনা

অনালোচিত

রবীন্দ্রসদনে ইংরেজি ভাষায় প্রদত্ত অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের মূল বক্তৃতা (On being a Bengalee) শোনার সুযোগ আমার হয়েছিল। এই বক্তৃতার বাংলা অনুবাদ দু’পর্যায়ে ‘বাঙালির স্বরূপ’ (৬-৯) আর ‘সমবায়ের ঐতিহ্য’ (৭-৯) প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ। বিভিন্ন সংস্কৃতির সম্মিলনে হাজার বছর ধরে যুগের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নানান রকম গ্রহণ আর বর্জনের মধ্য দিয়ে হিন্দু-মুসলমানের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে বাঙালির এই বহুমাত্রিক সংস্কৃতির ঐতিহ্য। কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা বাদ দিলে হাজার বছর ধরে চলে আসা বাংলা ভাষাভিত্তিক এই জনগোষ্ঠীর শাসক আর সাধারণ জনগণ উভয়েরই সামগ্রিক ভাবে ধর্মীয় উদারতার ওপরে তৈরি হয়েছে এর ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত। অধ্যাপক সেন আশা রাখেন, এই জনগোষ্ঠীর সেই সুদৃঢ় ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতার অন্তর্লীন শক্তি ভবিষ্যতের যে কোনও রকম ধর্মভিত্তিক সামাজিক বিভাজন এবং বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে তার ভূমিকা পালন করবে। এই বাঙালি জনগোষ্ঠীর মিশ্র সংস্কৃতির ঐতিহ্য আর ধর্মীয় সহনশীলতা অনেকের মতো তাঁর কাছেও একটি অনুপ্রেরণা।

অনেক প্রামাণ্য উদ্ধৃতি সহযোগে সেই বিবর্তনের ইতিহাস সামনে বসে শোনা নিঃসন্দেহে এক সুন্দর অভিজ্ঞতা। কিন্তু এই উপস্থাপনায় যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আলোচিত হয়নি স্বাধীনতা পরবর্তী গত সত্তর বছরে ঘটে চলা দুই বাংলার বাঙালিদের সামাজিক আর মানসিকতার পরিবর্তনের বিবর্তনের কাহিনি। শুধুমাত্র এই সময়ের দুই বাংলার বাঙালিদের জাতীয় আর সামাজিক জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘটনাগুলির উল্লেখ করা হয়েছে ভবিষ্যতের আগাম সতর্কতা হিসেবে।

স্বাধীনতা পূর্ববর্তী অখণ্ড বাংলার বাঙালিদের সাংস্কৃতিক স্বরূপ আজকের বিভক্ত বাংলার বাঙালিদের সাংস্কৃতিক পরিচিতি থেকে যে অনেকটাই অন্য রকম, এই বক্তৃতায় সেই সংক্রান্ত কোনও বিস্তারিত আলোচনার অভাব অনুভব করলাম। দুই বাংলার রাজনৈতিক বিভাজন যে দুই বাংলার বাঙালিদের হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা এই বক্তৃতায় আলোচিত সাংস্কৃতিক স্বরূপেও পরিবর্তন এনেছে এটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। ধর্মান্ধতার কাছে অনেক বারই পরাজিত হয়েছে বাঙালির ধর্মনিরপেক্ষ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এটা সহজেই চোখে পড়ে সে জন্য নানা ভাবে আলোচিত। চোখে পড়ে না অথচ বাঙালির ঐক্যবদ্ধ জাতিসত্তার অস্তিত্বের ক্ষেত্রে যেটা আরও বেশি চিন্তার কারণ, তা হল একই সঙ্গে বসবাসকারী হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মের বিষয়ে একটা পারস্পরিক মানসিক অনীহা আর শীতল উদাসীনতা। এক সময়ের হিন্দু মুসলিম সামাজিক ঐক্যের মানসিক চিন্তাধারার মূলস্রোত আজ দু’টি ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত। স্বাধীনতা পরবর্তী এই সত্তর বছরের ইতিহাসে ভারতবাংলার (পশ্চিম বাংলা) সামাজিক জীবনে ক্রমবর্ধমান হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের এই পারস্পরিক ধর্ম উদাসীনতা বাঙালির ঐক্যবদ্ধ ঐতিহাসিক জাতিসত্তার সামনে একটি সত্যিকারের বিপদ।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালির জাতিসত্তার পরিচিতিতে এর সঙ্গে ঘটেছে একটি অপরিবর্তনীয় পরিবর্তন। ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের স্বাধীনতা পরবর্তী কালের প্রজন্ম সামগ্রিক ভাবে স্বেচ্ছায় বিলীন হয়ে চলেছে ভারতের নতুন ভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রাদেশিক সংস্কৃতির সংমিশ্রণের মূলধারার ঐক্যের স্রোতে। আজ তারা প্রথমে ভারতীয়, তার পরে বাঙালি। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে রোজকার দেওয়া-নেওয়ায় আজ ক্রমাগত বদলে চলেছে তার জাতিসত্তা আর সংস্কৃতির স্বরূপ, বর্তমানের বাংলাদেশের বাঙালিদের সাংস্কৃতিক স্বরূপ থেকে যেটা অনেকটাই আলাদা। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের বাঙালি প্রজন্ম ক্রমবর্ধমান ভাবে তাদের অস্তিত্বের ভিত্তি খুঁজছে ভারতের জাতীয়তাবাদের মূলস্রোতের মধ্যে। হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা বাঙালির ভাষাভিত্তিক অখণ্ড জাতিসত্তার বক্তৃতায় আলোচিত পরিচিতির চরিত্রে এসেছে মৌলিক পরিবর্তন।

আস্তে আস্তে বাঙালির জাতিসত্তার বৈশিষ্ট্য আশ্রয় লাভ করছে ইতিহাসের পাতায়, দৈনন্দিন জীবনে হারিয়ে ফেলছে তার প্রাসঙ্গিকতা।

যে কোনও জাতির সাংস্কৃতিক স্বরূপের চরিত্র আলোচনা সামাজিক নৃতত্ত্বের বিষয়, যা সদাপরিবর্তনশীল। বাঙালি হওয়াটা এখন ঠিক কী বোঝাচ্ছে এবং সেটা এত দিনের বোঝা থেকে কতটা আলাদা, সেই সংক্রান্ত আলোচনার অভাব অনুভব করলাম। হিন্দু ধর্মের ধর্মান্ধতার প্রভাবে তাদের একাংশ প্রভাবিত। এটা বাস্তব হলেও সেটা আংশিক এবং বর্তমান বাঙালি সংস্কৃতির একমাত্র পরিচিতি নয়।

আশীষ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা-২৫

টাকার দাম

‘প্রেসিডেন্সি এবং’ (৪-৯) চিঠিতে সুশীল ঘোষ লিখেছেন ‘‘কফি বোর্ডের আমলে এক কাপ গরম কফির দাম ছিল মাত্র চার আনা (পঁচিশ পয়সা)।’’ এই ‘মাত্র’ কথাটি সুদূর অতীতের দ্রব্যমূল্যের স্মৃতিচারণার ক্ষেত্রে প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। এতে নস্টালজিয়ার প্রকাশ আছে; কিন্তু মনে রাখতে হবে চার আনার তখন অনেক দাম। ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখলাম ১৯৫৩-৫৪ সালে সোনা ছিল আশি টাকা ভরি। সেই ’৫৩-তেই ট্রাম-ভাড়ার ‘মাত্র’ এক পয়সা বৃদ্ধিতে সে কী অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। ১৯৬৬ সালে বাড়ি থেকে স্কুলের টিফিন বাবদ পেতাম সেই চার আনা। সেই জন্য ‘পয়সাঅলা’ শ্লেষও জুটত সহপাঠীদের কাছ থেকে! ওই ছেষট্টিতেই মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি ছবির নাম ছিল ‘দশ লাখ’! আইফর ইভন্সের লেখা ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস বইটি কুড়ি টাকায় কিনেছি শুনে আমার বিভাগীয় প্রধান বলেছিলেন— ‘‘মাই গড! আমি কিনেছিলাম পাঁচ টাকায়।’’ আমাদের দু’জনের ছাত্রজীবনের সময়-ব্যবধান ছিল কুড়ি বছর। এক দিন তিন পয়সার পালা ছিল। এখন পঞ্চাশ পয়সাও প্রায় অচল। কফি হাউসের সেই দিনগুলো যেমন নেই, টাকার দামও আর নেই।

চন্দন আশিস লাহা

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

সচেতনতা জরুরি

‘গণপিটুনির নালিশ’ সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বলি, এখনও সবাই জানেন না গণপিটুনি রোধে আইন হয়েছে। সব জেলার প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। স্থানীয় ভিত্তিতে প্রচার করতে হবে। এ রকম ঘটনা ঘটলে স্থানীয় থানায় জানাতে হবে। মোড়ে মোড়ে লিখতে হবে কোন নম্বরে পাবলিক জানাবে। সচেতনতা ব্যতীত কোনও ভাবেই গণপিটুনি বন্ধ সম্ভব নয়।

রীতা পাল

কলকাতা-২৪

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

ভ্রম সংশোধন

‘রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের তোড়জোড়ের মধ্যেই দিল্লি থেকে কলকাতায় এলেন সিবিআইয়ের দুই কর্তা’ ছবিতে (পৃ ৫, ১৫-৯) এক জনের নাম ভুলবশত পার্থ মুখোপাধ্যায় লেখা হয়েছে। ওঁর নাম মুরলী রম্ভা। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

অন্য বিষয়গুলি:

House Binoy Majumdar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy