অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘নোবেলে ফের সেরা বাঙালিই’ (১৫-১০) শীর্ষক সংবাদটির প্রেক্ষিতে এই চিঠি। বাঙালির বাঙালিত্ব যে শুধুই পিতৃপরিচয় দ্বারা প্রভাবিত, এই সংবাদটিতে তারই প্রতিফলন ঘটল। তবে পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এটাই অবধারিত। ভারতীয়-আমেরিকান পরিচয়ে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনীতিতে নোবেল প্রাপ্তি সকল ভারতবাসীর গর্বের বিষয়। কিন্তু বাঙালি তাঁর পিতৃপরিচয়ে তাঁকে ‘বাঙালি’ হিসেবে ভূষিত করে অধিক গর্ব বোধের কারণ খুঁজে পেল, শুধু ভারতীয় হিসেবে নয়। কিন্তু খেয়াল রাখা দরকার, অভিজিৎবাবুর মা মরাঠি। তাই মাতৃপরিচয়ে তিনি ‘মরাঠি’, সেই কথাও সমান ভাবে সত্যি। বাঙালি চিরকাল নিজেকে প্রগতিশীল মনে করে। তার চেতনা প্রাদেশিকতার সঙ্কীর্ণতায় সীমাবদ্ধ নয় বলেই সে মনে করে। তাই, বাঙালি-মরাঠির ঊর্ধ্বে গিয়ে, একমাত্র ভারতবাসীর জয় হিসেবে এই আনন্দময় সংবাদের উদ্যাপন হওয়া দরকার।
অশেষ দাস
কলকাতা-১১০
ঠকে গেলাম
আমরা ১৩ জনের একটি দল ইউরোপের ১০টি দেশ দেখতে কলকাতার একটি ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হই। টুর শুরু হল ১৭ সেপ্টেম্বর। সঙ্গে গেলেন টুর ম্যানেজার। চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে আমাদের বলা হয়েছিল, এমিরেটস-এর বিমানে লন্ডন যাব এবং রোম থেকে ফিরব, কিন্তু যাওয়া-আসা হল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে। অর্থাৎ প্রথম শর্ত লঙ্ঘন। এর পরে নানা ছলে কী ভাবে আরও অনেক শর্ত লঙ্ঘিত হল, জানাতে চাই।
১) প্রথম দিনের প্রোগ্রাম থেকে লন্ডনের বিখ্যাত টেমস রিভার ক্রুজ় বাদ দেওয়া হল এই অজুহাতে: “আজকের গ্রুপ স্লটের টিকিট পাওয়া যায়নি।” যদিও টুর প্যাকেজ অন্তত দু’মাস আগে স্থির হয়েছিল। অর্থাৎ সর্বৈব মিথ্যা! কিন্তু ভ্রমণ সংস্থার প্রচুর টাকা বাঁচানো গেল।
২) দ্বিতীয় দিনে প্রবেশমূল্য-সহ শেক্সপিয়রের বাড়ি এবং মিউজ়িয়ামে ঢোকানোই হল না, কারণ এটা নাকি টুর ম্যানেজারের ভ্রমণসূচিতে নেই। কিন্তু আমাদেরকে দেওয়া ভ্রমণসংস্থার ছাপানো এবং সই-যুক্ত সূচিতে ছিল। অর্থাৎ আবার মিথ্যাচার। এখানেও প্রচুর পাউন্ড বাঁচানো গেল। প্রতিবাদে কোনও ফল হয়নি।
৩) বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ঢোকার আগে হাইওয়েতে বাসের ড্রাইভার এবং টুর ম্যানেজার একযোগে বলতে লাগলেন, লন্ডন, প্যারিস, ব্রাসেলসে নাকি বিরাট জ্যাম, ওই সব জায়গায় রায়ট লেগেছে। আমাদের সমবেত প্রতিবাদে বাস ব্রাসেলসে ঢুকতে বাধ্য হল, দেখা গেল, কোত্থাও জ্যাম বা রায়টের চিহ্নই নেই।
৪) অস্ট্রিয়ার ওয়াটেন্সে স্বরভস্কি ক্রিস্টাল ওয়ার্ল্ড মিউজ়িয়ামে প্রবেশমূল্য-সহ ঢোকানোর কথা, ম্যানেজার বললেন, ভ্রমণসূচিতে নেই।
৫) ফ্লোরেন্সে আমাদের বাধ্য করা হল ৪+৪ কিলোমিটার হাঁটতে। এতে অনেকটা সময় নষ্ট ও যথেষ্ট পরিশ্রম হল। কিন্তু ফেরার পথে দেখলাম মিকেলাঞ্জেলো স্কোয়ারের পাশ দিয়েই বাস এগিয়ে গেল, সেখানে বহু টুরিস্ট বাস দাঁড়িয়েও ছিল।
৬) পিসায় ম্যানেজার এত তাড়াহুড়ো করলেন, আমরা ক’জন পিসার গলিতে হারিয়ে গেলাম এবং অনেক কষ্টে সবাইকে ফিরে পেলাম কিন্তু আমাদের লাঞ্চ মিস হল। অন্য অপারেটররা বিশেষ বিশেষ রঙের পতাকা উঁচিয়ে যাচ্ছিলেন। পতাকাবিহীন আমাদের ম্যানেজারকে দেখে মনে হচ্ছিল, এ লাইনে তিনি বড়ই অপটু।
৭) ভেনিসে গিয়েছিলাম রবিবারে, ম্যানেজার বললেন, “মুরানো গ্লাস ফ্যাক্টরি আজ বন্ধ।” কিন্তু গুগ্লে দেখলাম প্রতি দিনই খোলা থাকে বিকেল পর্যন্ত।
৮) রোমে প্রবেশমূল্য-সহ কলোসিয়ামে ঢোকানোর কথা। ম্যানেজার বললেন, ভ্রমণসূচিতে নেই। আমাদের স্বপ্নের ভ্রমণের অনেক কিছুই অধরা থেকে গেল। এ জীবনে আর তা পূরণ হওয়া সম্ভব?
৯) ফিরে আসার আগের দিন রাতে, রোমে আধো-অন্ধকার রাস্তায় রাত ৮:৩০ নাগাদ, বাসের বসনিয়ান ড্রাইভার টিপস দাবি করলেন (১০ দিন ঘোরানোর জন্য) মোট ২৪০ ইউরো। আমরা ম্যানেজার এবং ড্রাইভারকে আমাদের ভ্রমণসূচি দেখালাম, তাতে পরিষ্কার লেখা আছে, আমরা যে টাকা দিয়েছি, ৫% জিএসটি এবং টিপস তার অন্তর্গত। কিন্তু কে কার কথা শোনে। আমরা ড্রাইভার এবং ম্যানেজারকে বললাম, বাস যদি না যায়, আর যদি এই রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে বা রোম পুলিশের নজরে আসে যে আমরা উন্মুক্ত রাস্তায় কর্মাদি করতে বাধ্য হচ্ছি, তবে তোমাদের কপালে অনেক দুঃখ আছে। এই সময় টুর ম্যানেজার পকেট থেকে ১০০ ইউরো বার করে বললেন, আমি এটা দিচ্ছি, বাকিটা আপনারা দিন। আমরা সকলে বললাম, আমরা অপারগ। কিছু ক্ষণ পরে ড্রাইভার বললেন, তোমরা ভারতীয়রা টিপস দিতে চাও না। আমি তোমাদের আমার তরফে দয়া করে বাকি ইউরো উপহার দিলাম। নাও, তোমাদের পৌঁছে দিচ্ছি। রাত দশটায় হোটেলে পৌঁছলাম। পরের দিন সকালে অন্য ড্রাইভার এসে বললেন, আজকের ড্রাইভার আমি। আমার ৩০ ইউরো টিপস আগেই মিটিয়ে দিতে হবে। আমাদের মধ্যে দু’জনের কাছে ভাগ্যক্রমে কুড়িয়েবাড়িয়ে ওই ইউরো জোগাড় হল।
সঞ্জীব সরকার
কলকাতা-৯
ঠিক পথ
সঠিক পথটি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল দেখিয়ে দিয়েছেন। ৮৯টি কৃত্রিম পুকুর তৈরি করে তাতে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন করিয়েছেন। সারা পৃথিবী জুড়ে যখন ডাক পড়েছে পরিবেশ দূষণ রোখার, তখন দিল্লি সরকারের এই পদক্ষেপ সত্যি অনুসরণীয়। আমাদের গঙ্গা-যমুনাকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।
কৌশিক মজুমদার
কলকাতা-৮২
প্লাস্টিক বাদ
পুজোয় গিয়েছিলাম ওড়িশার গঞ্জাম জেলার বহরমপুর থেকে দারিংবাড়ি। আদিবাসী অধ্যুষিত কন্ধমাল জেলার প্রায় সর্বত্র দেখি প্লাস্টিক উধাও। এ ছাড়া গজপতি, গঞ্জাম কোনও জেলাতেই নেই পলিথিন, থার্মোকল। নেই পলিথিনের ক্যারিব্যাগ বা চা-কফি খাওয়ার প্লেট-কাপ। আছে গাছের পাতা দিয়ে তৈরি প্রাকৃতিক থালা-বাটি-ঠোঙা। গাছের পাতা ও কাঠি দিয়ে তৈরি জলখাবার খাওয়ার বাটি, থালা। চায়ের জন্য ছোট কাচের গ্লাস। পলিথিনের গার্ডারের বদলে রিলের সুতো দিয়ে মোড়া হচ্ছে খাবারের প্যাকেট।
সঞ্জীব রাহা
পাড়িয়া মার্কেট, নদিয়া
নিষ্ঠুর খেলা
‘ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর, মুখ ফাটল বালিকার’ (১৫-১০) পড়ে বহু দিন আগের একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল। বিকেলের দিকে ফিরছিলাম শিয়ালদহ থেকে খড়দহ। বসেছিলাম জানালার ধার থেকে তিন নম্বর সিটে। ছুটন্ত ট্রেনে আগরপাড়া ও সোদপুরের মাঝে হঠাৎই বাঁ চোখের ঠিক ওপরে তীক্ষ্ণ আঘাত। মাথা ঘুরে গেল। সঙ্গে তীব্র জ্বালা। চোখে অন্ধকার। পায়ের কাছে ঠন করে একটা আওয়াজ। রিফ্লেক্স অ্যাকশনে হাত উঠে গেল ক্ষতস্থানে। দেখি হাতে রক্ত। যা তত ক্ষণে মুখে গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আশপাশের লোকজন পায়ের কাছে থেকে আঘাতকারী পাথরটিকে তুলে ফেলেছে। সেটা ছিল রেললাইনের ধারেরই পাথর। গন্তব্যে নেমে সোজা ডাক্তারের কাছে। দু’টি স্টিচ হয়। বাঁ চোখটি খুব ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। আসলে চলন্ত ট্রেনে এই পাথর ছোড়া, লাইনের ধারে বসবাসকারী ছেলেদের বহু দিনের একটি বিপজ্জনক খেলা বা মজা। এটা মোটেই প্রতিবেদনে উল্লিখিত দুষ্কৃতীদের কাজ নয়। এই কুখেলার রঙ্গের খেসারত মাঝেমধ্যে মেল/ এক্সপ্রেস যাত্রীদেরও দিতে হয়।
গৌতম মুখোপাধ্যায়
খড়দহ, উত্তর ২৪ পরগনা
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy