রাজ্যের ভূমিকা
মনোজ ঘোষের চিঠিতে (‘কেবল ঘৃণা’, ৩-৫) যে গুরুত্বপূর্ণ অথচ সংবাদমাধ্যমে উপেক্ষিত বিষয়টি উঠে এসেছে তা হল— নবসাক্ষর থেকে শুরু করে অল্পশিক্ষিত, অল্পবিত্ত, মধ্য ও উচ্চশিক্ষাপ্রাপ্ত মধ্যবিত্ত পর্যন্ত আমজনতার নিরুদ্বেগ ও নিরাপদ স্বল্পসঞ্চয়ের ভরসাস্থল ডাকঘর।
বামফ্রন্ট সরকারের ভূতপূর্ব অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র ডাকঘরের স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পের ব্যাপ্তিসাধনে রাজ্য সরকারের তৎপরতার অভাবের কথা তুলেছেন, আর সেই সঙ্গে একদা যে স্বল্পসঞ্চয়ের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ ভারতে সর্বাগ্রগণ্য ছিল সেই সঞ্চয়ের পরিমাণ অতি সংকুচিত হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের নিশ্চেষ্টতাকে দায়ী করেছেন। মনোজবাবুর যুক্তি, ডাকঘরে জমা করা আমানতের সুদ নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। ধাপে ধাপে সুদ কমছে। মাসিক আয় প্রকল্পে আমানতের মেয়াদপূর্তিতে প্রদেয় আসলের ১০ শতাংশ বোনাস কমে ৫ শতাংশ হয়েছে। সম্ভবত অচিরে তাও উঠে যাবে। এই জন্যই আমানতকারীরা অনেকেই ডাকঘর থেকে টাকা তুলে নিয়ে ব্যাঙ্কে বা অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখছেন। ফলে, ডাকঘরে স্বল্পসঞ্চয়ের আমানত শনৈঃ শনৈঃ হ্রাসপ্রাপ্ত হচ্ছে। তিনি তাই প্রশ্ন তুলেছেন, এতে রাজ্য সরকারের কী ভূমিকা থাকতে পারে?
থাকে মনোজবাবু, রাজ্য সরকারেরও এ বাবদ ভূমিকা থাকে। এবং সে ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগে স্বল্পসঞ্চয় অধিকার প্রবর্তিত হয়েছিল। এই অধিকারের কাজ ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠানে, বিশেষত ডাকঘরে স্বল্পসঞ্চয়ে জনসাধারণকে উৎসাহ দেওয়া।
১৯৮৩-র মার্চ মাসে আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র ‘রুপোর হরিণ’ নামক একটি নাটক প্রচার করে। তখন একাধিক বেসরকারি অবৈধ অর্থলগ্নি সংস্থার প্রলোভনে পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ যথাসর্বস্ব হারিয়েছেন। সরকারি সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে সে বিপর্যয় ঘটত না। নাট্য কাহিনির এই ইঙ্গিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পূর্বোক্ত স্বল্পসঞ্চয় অধিকারের মনোযোগ আকর্ষণ করে। রাজ্য সরকার আকাশবাণীর মাধ্যমে নাট্যকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। স্বল্প সঞ্চয় অধিকারের পরামর্শে সহজে অভিনয়যোগ্য মঞ্চনাটক হিসেবে ‘রুপোর হরিণ’ পুনর্লিখিত হয় এবং বই আকারে ছাপা হয় বিনামূল্যে বিতরণের জন্য।
কেন্দ্রীয় সরকারের কোষে টাকা রাখার সুপারিশে অর্থব্যয় করছে রাজ্য সরকার। কেন? ডাকঘরে সঞ্চয়ের দুই তৃতীয়াংশ রাজ্য সরকারের ঋণ হিসাবে প্রাপ্য। সঞ্চয় বাড়লে ঋণের পরিমাণও বাড়বে। এখানে একটা কথা উঠবে, সুদের হার কমলে আমানতও কমবে। বই ছাপিয়ে প্রচার করে ডাকঘর থেকে সঞ্চয়কারীদের টাকা তুলে নেওয়া ঠেকানো যাবে? তুলে নিয়ে বেশি সুদে বিনিয়োগ করবে ব্যাঙ্কে বা মনোজবাবু যাকে বলেছেন অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। সুদের হারে অধুনা ব্যাঙ্ক ডাকঘর বরাবর। বিকল্প অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় সুদ-দাতাদেরই ভয়। সর্বস্ব খোয়ানোর চেয়ে কিছু কম আমদানি ঢের ভাল।
এই চেতনা গড়ে তুলতে ব্যাপক প্রচার অবশ্য জরুরি। এই কাজটা কিছু দিন আগে পর্যন্ত যাঁরা যথাসাধ্য করেছিলেন তাঁরা হলেন স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পের এজেন্ট। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এক তুঘলকি ফরমানে তাঁদের কমিশনের হার অর্ধেক হয়ে গেল। যে জনপ্রতিনিধিরা স্বপক্ষ বিরোধী নির্বিশেষে হাত তুলে নিজেদের বেতন-ভাতা নিজেরাই বাড়িয়ে নেন, তাঁদের কেউ সামান্য রোজগেরে এই এজেন্টদের বঞ্চনার প্রতিবাদে কোনও আন্দোলনের প্রস্তাব করেছেন বলে শুনিনি। সুদের হার, এজেন্টের কমিশন, কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করে করুক, কিন্তু লোকহিতের জন্য রাজ্য সরকার একটা প্রতিবাদী গণআন্দোলন তো করতে পারে।
বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়। তেওয়ারিপাড়া লেন, হুগলি
উষ্ণিক
আগামী ১৩ মে শুক্রবার অ্যাকাডেমিতে উষ্ণিক-এর নতুন নাটক ‘ওরা তিন জন’ মঞ্চায়নের কথা ছিল। (কলকাতার কড়চাতেও ৯-৫) তার উল্লেখ ছিল। কিন্তু আমাদের দলের কর্ণধার, নির্দেশক ও অভিনেত্রী ঈশিতা মুখোপাধ্যায় একটি আকস্মিক দুর্ঘটনায় গৃহবন্দি হওয়ার জন্য ওই দিনের অনুষ্ঠান আমরা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি।
শুভজিৎ বক্সি। সচিব, উষ্ণিক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy