Advertisement
E-Paper

বিশুদ্ধতা, সততা, পবিত্রতা! অনির্বাণ দীপশিখা জ্বলুক

সকলেই জানি সঠিক রাস্তা কোনটা। কিন্তু প্রায় কেউই সেই রাস্তাটা নিই না। কারণ, সে পথ খুব কঠিন, বন্ধুর। যাঁরা সে রাস্তায় হাঁটতে পারেন, তাঁদের চরিত্রে তিনটি বস্তু থাকে— সততা, বিশুদ্ধতা, পবিত্রতা।

Pressure of the unprecedented social movement & the RG Kar Verdict by Sealdah Court Judge Anirban Das

(বাঁ দিকে) আরজি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায় এবং শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

অনিন্দ্য জানা

অনিন্দ্য জানা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৬
Share
Save

শোকের ঝড় বহিল! কোথায় বহিল? আসলে কোথায় বহিল না! কিন্তু কেন বহিল? বহিল, কারণ, আরজি করের ঘটনায় দোষীর ফাঁসির শাস্তি হইল না!

আনন্দবাজার অনলাইনে যখন ‘ব্রেকিং’ ধরানোর হুড়োহুড়ি, ঝুম হয়ে ভাবছিলাম, কী অসহনীয় চাপ ছিল তাঁর উপর! নির্যাতিতার বাবা-মায়ের চাপ। তাঁর পরিচিতদের চাপ। বিচারপ্রত্যাশী জনতার চাপ। সংবাদমাধ্যমের একাংশের চাপ। রাজনৈতিক দলের চাপ। সর্বোপরি, রাজ্যের তিন-তিন বারের মুখ্যমন্ত্রীর চাপ। যিনি স্বয়ং অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমে মিছিল করেছিলেন।

সেই তুঙ্গ চাহিদার ঢেউ এবং সমবেত জনগর্জনের মুখে একলা দাঁড়িয়ে রইলেন এক বিচারক। শুধু দাঁড়ালেনই না, বিবেচনা, যুক্তি, আইনের অধীত অভিজ্ঞতা এবং প্রজ্ঞা ব্যবহার করে ‘মুন্ডু চাই’ দাবিকে যত্নভরে পাশে সরিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ (বাক্যান্তরে আমৃত্যু কারাবাস। তবে কিনা গোলাপকে যে নামেই ডাকো…) দিলেন। কাকে দিলেন? না, তিনি নিজেই যাকে ধর্ষণ এবং খুনের দায়ে ৪৮ ঘণ্টা আগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। মনে রাখতে হবে, তার অব্যবহিত আগে এ রাজ্যের চারটি ধর্ষণ-খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্তদের ফাঁসির শাস্তি দিয়েছে বিভিন্ন নিম্ন আদালত। সে চাপও তাঁর উপর ছিল বইকি! কিন্তু কোনও কিছুই তাঁকে প্রভাবিত করতে পারল না। সাধে কি আরজি করের ঘটনায় শাস্তি ঘোষণার পরদিন তৃণমূলের এক সাংসদ (যিনি নিজেও ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন) ব্যক্তিগত আলোচনায় বলেছিলেন, ‘‘আমি এই ভদ্রলোকের সঙ্গে অন্তত এক বার আলাপ করতে চাই। ধক আছে বটে!’’

ঠিকই। ধক আছে। এক মাসেরও বেশি কেটে গিয়েছে। এখনও সেই ঝিমঝিমে চিন্তাটা ভিতর থেকে যাচ্ছে না। কী করে পারলেন! বিশেষত, যেখানে তাঁর ব্যক্তিগত আবেগও ক্রিয়া করে যেতে পারত। এ বড় সহজ কাজ নয়। কী লিখলাম? সহজ কাজ নয়? ভুল লিখলাম। এ আসলে অসম্ভব কঠিন কাজ। তিনি সহজে করে দিলেন। সহজে করে দিলেন? সহজে? এটাও কি ঠিক লিখলাম? কে জানে!

লিখতে লিখতেই গত কয়েক মাসের কথা মনে পড়ছিল। নজিরবিহীন! এ জিনিস সত্যিই আগে কখনও দেখেনি এই রাজ্য। এই দেশও কি দেখেছিল? দেখেনি। তিনিও কি দেখেছিলেন? নাহ্, দেখেননি। দেখবেনই বা কী করে? আগে কখনও ঘটেইনি তো!

অপার্থিব? অলৌকিক? মায়া? বিভ্রম? সত্যিই ঘটেছিল আমাদের চারপাশে? ফেব্রুয়ারির এই গেল-গেল শীত এবং আসি-আসি বসন্তে দাঁড়িয়ে তেমনই বিস্মিত লাগছে। নাগরিক আন্দোলনের যে কোলাহল, মেয়েদের রাত দখলের যে আন্দোলন এই কয়েক মাস আগেও সমাজের সামগ্রিক রিংটোন (না কি কলার টিউন?) বেঁধে দিয়েছিল, তা স্তিমিত হতে হতে মুছে গিয়ে প্রাচীনকালের ‘ট্রিং-ট্রিং’ হয়ে গিয়েছে। গত অক্টোবরে নবান্নের বৈঠক এবং অতঃপর ধর্মতলার আমরণ অনশনমঞ্চ গুটিয়ে যাওয়ার পরে একদিন ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় হতাশ গলায় আন্দোলনকারী দুই চিকিৎসক বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বড় রাজনীতিবিদ। আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা ওঁর বুদ্ধির কাছে হেরে গেলাম।’’

ধুরন্ধর রাজনীতিবিদ মমতা এবং তাঁর প্রশাসন (কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষ বা অরূপ চক্রবর্তীর মতো গুটিকয়েক ব্যতিক্রম ছাড়া দলের তখন কোনও নাম-নিশান ছিল না। আরজি করের নাগরিক আন্দোলনের ঝাঁজে তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতা-নেত্রী ঘরে সেঁধিয়ে গিয়েছিলেন। এক মহিলা নেত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমারও রাত দখলে যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু গেলে কে কী বলবে ভেবে সাহস পাইনি’’) শেষমেশ সামলে দিলেও এটা ঠিক যে, আরজি করের ঘটনা নিয়ে ঝান্ডাবিহীন বেনজির নাগরিক আন্দোলনের মুখে শাসকদল এবং প্রশাসনকে লগবগে লাগছিল। এমনও শুনেছি যে, কোনও একটি মধ্যস্থতা বৈঠক চলাকালীন পুলিশের এক বড়কর্তা জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার বিষয়ে রোগীদের অসুবিধা ইত্যাদির কথা বোঝাতে যাওয়ায় এক আন্দোলনকারী বিনয়ের সঙ্গে তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘স্যর, আমরা তো আপনার কথা শুনতে আসিনি। আপনি দয়া করে একটু চুপ করুন। বিনীত গোয়েল স্যরের কথা মনে আছে তো? এ বার তা হলে আপনার দিকেও একটু নজর দিই?’’ কথিত, সেই বাঘা অফিসার দ্রুত বৈঠককক্ষ ছেড়ে যান।

মাস তিনেক ধরে এমন অনেক অদ্ভুত, অভূতপূর্ব, অদৃষ্টপূর্ব এবং অশ্রুতপূর্ব এবং আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল এই শহর, এই রাজ্যের বুকে।

মিছিলশেষে ধর্মতলার মোড়ে সারা রাত বসেছিলেন মহিলারা! আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অনড় সংকল্পের মুখে হটে গিয়েছিল পুলিশি ব্যারিকেড! বৌবাজারের রাস্তায় অবস্থানের ভোর হয়েছিল জাতীয় সঙ্গীতের সুরে। শুনে প্রহরারত পুলিশকর্মীরা রাত জাগার আলস্য ঝেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন টান টান হয়ে। পাটুলি থেকে উল্টোডাঙা বা সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ পথে মানববন্ধন তৈরি হয়েছিল হাতে-হাতে, বেঁধে-বেঁধে! লক্ষ কণ্ঠে আওয়াজ উঠেছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস!’ বিচার চাই!

এই চিত্র ছিল সেই সমস্ত বিন্দুর, যেখানে যেখানে ছড়িয়ে আছে বাঙালি। সেই সমস্ত বিন্দু বিন্দু জুড়ে তৈরি হয়েছিল ক্ষোভ, ক্রোধ এবং অবিশ্বাসের সিন্ধু। সেই সাগরের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল। ভেঙেছিল পার। ভেঙে দিয়েছিল কূল।

স্বাস্থ্যভবনের সামনে টানা অবস্থান চলেছে। দিন নেই, রাত নেই। অফিসফেরতা বেশি রাতে সেখানে একাধিক দিন গিয়েছি। পেশাদার সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছে এমন সব ‘এলিট’ বন্ধুর, যারা কস্মিনকালেও রাজনীতির সংশ্রবে থাকেনি। ভোট-টোট দেওয়া নিয়েও খুব আঠা নেই। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতা থেকে গাড়ি চালিয়ে চলে এসেছে। কেন এসেছে? দ্বিধাহীন জবাব পেয়েছি, ‘‘বাচ্চাগুলো এখানে বসে আছে! ওদের পাশে থাকতে এলাম।’’ দেখা হয়েছে এমন পরিচিতদের সঙ্গেও, যাঁরা নিজেদের যৎসামান্য আয় ভেঙে অবস্থানকারীদের জন্য পানীয় জল আর খাবার বয়ে নিয়ে এসেছেন রাতের পর রাত।

এ সবই বিভ্রম এবং মায়া। অলৌকিক এবং অপার্থিব। কিন্তু এ সব সত্যিই ঘটেছিল আমাদের পরিপার্শ্বে।

সমাজ ক্রুদ্ধ ছিল। ক্ষুব্ধ ছিল। অবিশ্বাসী ছিল। সেই ক্ষোভ, ক্রোধ এবং অবিশ্বাস অমূলক ছিল না। বারুদের স্তূপ তৈরি ছিল। আরজি কর হাসপাতালের ন্যক্কারজনক ঘটনা তাতে দেশলাই কাঠি ছুঁইয়েছিল মাত্র। বিস্ফোরণ ঘটার অপেক্ষা ছিল। ঘটেছিল। কিন্তু যা প্রশাসন এবং শাসকদলের কাছে প্রত্যাশিত ছিল না— সেই বিস্ফোরণের অভিঘাতে রাজ্য জুড়ে ভূমিকম্প! সমাজের রিখটার স্কেলে এমনই তার কম্পন ছিল যে, মিশে গিয়েছিল ঘর-বাহির। টলমল করতে শুরু করেছিল বড় বড় সৌধ। শহর, মফস্‌সলের কোনও না কোনও প্রান্তে প্রতি দিন বেরোচ্ছিল মহিলাদের মিছিল। ইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা মিছিল করছিলেন সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে। নিজেদের অর্থে ব্যানার ছাপাচ্ছিলেন। পোস্টার লিখছিলেন। প্রতিবাদের ধ্বজা তুলে ধরে রবি ঠাকুরের গান গাইছিলেন সমস্বরে। ময়দানের চিরশত্রু মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের একাংশ জোটবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তৃতীয় প্রধান মহমেডানের সমর্থকেরা। ডুরান্ড কাপের ডার্বি বাতিলের প্রতিবাদে হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়েছিলেন সল্টলেক স্টেডিয়ামের চারপাশ দখল করে। প্রতিটি ম্যাচে ফুটবলারেরা ‘বিচার চাই’ লেখা ব্যানার বা জার্সি তুলে ধরছিলেন। ডুরান্ডের গ্যালারিতে আছড়ে পড়েছিল প্রতিবাদী টিফোর স্রোত। মিছিলকে মানুষ খুঁজতে হচ্ছিল না। উল্টে মানুষই খুঁজে নিচ্ছিলেন মিছিল।

এমন হওয়া আশ্চর্যেরও ছিল না বোধহয়। যে সমাজে একটু একটু করে বিচক্ষণতা মরে, সেখানে এমন ইমপাল্‌সই বাঁচে! সেখানে কাজ করতে থাকে শুধু নিখাদ আবেগ আর তীব্র তাড়না। তার সঙ্গে অহরহ মিশতে থাকে সামূহিক অবিশ্বাস।

আরজি কর হাসপাতালের হতভাগ্য মেয়েটির জন্য বিচারের দাবির সঙ্গে সহ-নাগরিকেরা নিজের নিজের বিচারের দাবিও জুড়ে দিয়েছিলেন। কেউ বিচার চাইছিলেন তাঁর এলাকায় তোলাবাজির। কেউ বিচার চাইছিলেন তাঁর উপর সিন্ডিকেটের জুলুমের। কেউ বিচার চাইছিলেন বার বার বলেও বাড়ির কাছের ভাঙাচোরা রাস্তাটি মেরামত না-হওয়ার। কেউ আরও আরও জটিল কিছুর।

তারই সমান্তরালে আদালতে বিচার চলছিল আরজি করের ঘটনায় ধৃত একমাত্র অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। সে বিচার ‘ইন ক্যামেরা’। অর্থাৎ, রুদ্ধদ্বার। অর্থাৎ, সওয়াল-জবাব প্রকাশ্যে শোনা যাবে না।

রুদ্ধদ্বার হোক বা মুক্তদ্বার, বিচারে সঞ্জয় যে দোষী সাব্যস্ত হবেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না। তদন্তকারীদের ভাষায় ঘটনাটা, ‘ওপেন অ্যান্ড শাট কেস’। সে তিনি যতই ফাঁকফোকরে ‘আমি নির্দোষ। আমায় ফাঁসানো হচ্ছে’ বলুন না কেন! এবং সন্দেহ ছিল না এ নিয়েও যে, তাঁর মৃত্যুদণ্ডই হবে। ১৮ জানুয়ারি শনিবার শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে। ২০ তারিখ, সোমবার শাস্তি ঘোষণা। মাঝখানের রবিবারটায় যাঁরাই প্রশ্ন করেছেন, সকলকে নির্দ্বিধায় বলেছিলাম, ফাঁসি হচ্ছেই।

সোমবার শাস্তি ঘোষণার আগে আনন্দবাজার অনলাইনের পেজ-টেজ রেডি! ‘ফাঁসি’ লিখে গ্রাফিকও তৈরি। সহকর্মী সারমিন বেগম অধুনাপ্রয়াত ফাঁসুড়ে নাটা মল্লিকের পুত্রের (পেশায় তিনিও ফাঁসুড়ে) সঙ্গে কথা বলে খবর করে দিয়েছে। সারা শহর, সারা সমাজ জল্পনা করছে, ফাঁসির শাস্তি কবে কার্যকর হবে। আর্কাইভ ঘেঁটে নামানো হয়েছে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের মামলার বিবরণী। কত দিন লেগেছিল তাঁর ফাঁসির আদেশ কার্যকর হতে? দিকে দিকে আলোচনা, ফাঁসির নির্দেশের বিরুদ্ধে সঞ্জয় তো নিশ্চয়ই এর পরে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করবেন। সেখানেও আদেশ বহাল থাকলে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন। সেখানেও ফাঁসি রদ না হলে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। তাতেও লাভ না হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষার আবেদন করবেন। ফলে দ্রুত ফাঁসি হবে না।

তার পরে তো ওই, শোকের ঝড় বহিল সভাতে!

আসলে শোক না, বিস্ময়। যে অতলান্ত বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে এখনও বেরোতে পারছি না। সে বিস্ময় ব্যক্তির পেশার প্রতি সততা, বিশুদ্ধতা এবং পবিত্রতা রক্ষা করা জনিত। ভাবতে বসলে বিস্ফারিত লাগছে। কৌতূহল এবং বিপুল প্রত্যাশার চড়া আর্কল্যাম্পের আলো পড়ছে। চোখ-টোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার মতো। সেই আলোকবৃত্তের একেবারে মধ্যিখানে তিনি। একটি মানুষের জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যবর্তী একফালি জমিতে দাঁড়িয়ে। সেই বৃত্তের মধ্যে তরঙ্গ উঠছে আবেগের। হিল্লোল উঠেছে দাবির। মৃত্যু চাই! ফাঁসি চাই। প্রাণের বদলে প্রাণই চাই!

কিছুর তোয়াক্কা না করে তিনি অটল রইলেন। অভাবনীয়! আশ্চর্য!

ভাবতে ভাবতে সম্পূর্ণ অন্য পরিসরে ‘সেন্ট অফ আ উওম্যান’ ছবিতে অন্ধ আল পাচিনোর বিখ্যাত ও বৈগ্রহিক বক্তৃতা মনে পড়ছিল। ‘‘আই অলওয়েজ় ন্যু হোয়াট দ্য রাইট পাথ ওয়াজ়। ইউদাউট এক্সেপশন, আই ন্যু। বাট আই নেভার টুক ইট! ইউ নো হোয়াই? ইট ওয়াজ় টু ড্যাম হার্ড!’’ মনে পড়ছিল, ‘‘অ্যান্ড দ্যাট, মাই ফ্রেন্ড, ইজ় কল্‌ড ইন্টিগ্রিটি!’’

ইন্টিগ্রিটি! সততা, বিশুদ্ধতা, পবিত্রতা।

আমরা সকলেই জানি সঠিক রাস্তা কোনটা। নির্ভুল জানি। কিন্তু প্রায় কেউই সেই রাস্তা নিই না। কারণ, সে পথ খুব কঠিন, অত্যন্ত বন্ধুর। যাঁরা সে রাস্তায় হাঁটতে পারেন, তাঁদের চরিত্রে ওই তিনটি বস্তু থাকে— সততা, বিশুদ্ধতা, পবিত্রতা। জীবনের মতো পেশার সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও সঠিক পথ বেছে নেওয়ার জন্য নীতিবোধ, যৌক্তিকতা আর চারিত্রিক দৃঢ়তা প্রয়োজন। প্রয়োজন এমন এক দৃষ্টান্তের। এক দীপশিখার।

ভাগ্যিস সেই আলোকশিখা কোথাও না কোথাও জ্বলতে থাকে। অনির্বাণ!

RG Kar Case Verdict Sealdah Court

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}