এই শরণার্থী শিশুর মুখই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে।রয়টার্সের ফাইল ছবি।
আমেরিকা ভাবিয়া-চিন্তিয়া বেশ কিছু শিশুকে তাহাদের পিতামাতার নিকট হইতে দূরে সরাইয়া দিল, পরিকল্পিত ভাবে তাহাদের স্নেহশূন্য একটি পরিবেশে রাখিল। যে স্থানে কোনও শিশুর অন্য শিশুকে আদর করা নিষেধ, কেহ কাঁদিলে সান্ত্বনা প্রদান নিষেধ, জন্মদিন পালনের প্রশ্নই উঠে না। এখন অবশ্য স্থির হইয়াছে, সীমান্তে বিচ্ছিন্ন করিয়া দেওয়া এই শিশুদের পিতামাতার নিকট ফিরাইয়া দেওয়া হইবে, সে কাজ শুরুও হইয়াছে। কিন্তু যে দিনরাত্রিগুলি প্রবল অনিশ্চয়তা ভয় বিহ্বলতায় কাটাইল শিশুরা, তাহার ক্ষতিপূরণ কে দিবে? পাঁচ বা সাত বৎসরের শিশু যখন অকস্মাৎ (এবং তাহার বোধের অগম্য কারণে) তাহার পরম আশ্রয় হইতে ছিন্ন হইয়া আসিয়া পড়িল প্রবল অনাদরে, তখন তাহার মানসিক অবস্থা কী হইল, সেই বেদনার প্রভাব তাহার জীবনে কত দূর বিস্তৃত হইবে, তাহাকে সারা জীবনের জন্য মানসিক পঙ্গুতায় আক্রান্ত করিবে কি না, কে বলিবে? ইংল্যান্ডে আবার দেখা যাইল, শিশুদের গুপ্তচরবৃত্তিতে লাগানো হইয়াছে, গুন্ডাদল, সন্ত্রাসবাদী ও মাদকচক্রের খবর পাইতে। বহু তরুণ-তরুণী ইদানীং উগ্রপন্থী হইয়া যাইতেছে, মাদকাসক্ত হইয়া পড়িতেছে। সেই খবরগুলির উৎস হিসাবে নাকি সর্বাধিক নিপুণ কাজ করিতে পারে শিশুরাই, তাই পুলিশ ও গোয়েন্দাগণ তাহাদের চর হিসাবে নিযুক্ত করিতেছে। সাধারণত এই কাজে একটি শিশুকে ব্যবহার করা হয় এক মাস হইতে চার মাস, এখন সেই সময় বাড়াইবার চেষ্টা শুরু হইয়াছে। পণ্ডিতেরা প্রশ্ন তুলিয়াছেন, এই ধরনের কাজ দীর্ঘ সময় ধরিয়া করিলে শিশুর উপর কী পরিমাণ মানসিক ও শারীরিক চাপ পড়ে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা ইংল্যান্ডের নিরাপত্তা-ব্যবস্থার রহিয়াছে কি?
নাইজিরিয়ায় শিশুদের ডাইনি সন্দেহে অত্যাচার করা হইতেছে। পিতামাতা মারা যাইলে যে শিশুসন্তানগুলির অশুভ প্রভাবেই তাহা হইয়াছে, তাহাদের আশ্রয়দাত্রী পিতামহীর এডস রোগ যে শিশুগুলির কারণেই হইয়াছে, ইহা লইয়া অনেকেরই সন্দেহ থাকে না, তাহার পর স্থানীয় ওঝারা পয়সা লইয়া যখন শিশুদের চিহ্নিত করিয়া দেয়, তখন তো অবিশ্বাসের প্রশ্নই উঠে না। তিন পাঁচ দশ বৎসরের শিশুদের বাঁধিয়া সকাল হইতে বিকাল অবধি তপ্ত লোহার শিক দিয়া পিটাইয়া ক্রমাগত জিজ্ঞাসা করা হয়, তাহারা ইচ্ছাকৃত ভাবে, ক্ষতিকর জাদুর মাধ্যমে, পিতামাতাকে মারিয়া ফেলিয়াছে কি না, বা গ্রামে মহামারি ছড়াইতেছে কি না, বা গবাদি পশুর মৃত্যু ঘটাইতেছে কি না। ২০১০-এর ইউনিসেফ-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বিকলাঙ্গ বা মৃগীরোগী শিশুদের বিশেষ করিয়া লক্ষ্য হিসাবে বাছিয়া লওয়া হয়। তাহার যখন ‘খুঁত’ রহিয়াছে, তাহার শয়তান হইবার সম্ভাবনা অধিক। প্রকাণ্ড পৈশাচিক প্রহারের চোটে সকল শিশুই এক সময় সকল অপরাধ ‘স্বীকার’ করিয়া লয়। তখন তাহার শাস্তি নির্ধারিত হয়। কখনও পিতা সন্তানদের বিষ দিয়া হত্যা করেন, কখনও মাতা চাবুক দিয়া সন্তানকে প্রহার করিতে থাকেন। এই সকল অভিভাবকের বিরুদ্ধে মামলা যদি বা রুজু হয়, সাক্ষীর অভাব ঘটে, প্রমাণ চাপিয়া দেওয়া হয়। ছয় মাস পূর্বে এক ‘ডাইনি-শিকারি ওঝা’র ‘টর্চার ক্যাম্প’ হইতে চল্লিশ জন শিশুকে উদ্ধার করা হইয়াছে। এই শিশুরা বড় হইয়া হিংস্র অবমানবিক অত্যাচারী হইলে, সেই দায় কাহার?
গতকাল ওহায়োর গভর্নর এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড রদ করিলেন। অপরাধী তাহার স্ত্রীকে এবং স্ত্রীর ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে হত্যা করিয়াছিল। সম্প্রতি জানা গিয়াছে, এই লোকটির শৈশবে তাহাকে এবং তাহার ভ্রাতাদের নিয়মিত সারা রাত্রি শয্যার সহিত বাঁধিয়া রাখা হইত, প্রতি িদন প্রচণ্ড প্রহার করা হইত, অনাহারে রাখা হইত, সিঁড়ি হইতে ফেলিয়া দেওয়া হইত, ছ্যাঁকা দেওয়া হইত। উকিলরা যদিও তর্ক করিয়াছেন, এক জনের অতীত কখনও তাহার বর্তমানের অমানবিক কর্মের সাফাই হিসাবে গৃহীত হইতে পারে না, কিন্তু গভর্নর নিশ্চয় ভাবিয়াছেন, পরবর্তী কালে তাহাকে অমানুষ তৈয়ারি করিবার পিছনে পূর্ববর্তী অমানুষদের দায় রহিয়াছে, তাই মৃত্যুদণ্ড দিলে তাহা হইবে চরম অন্যায়। যে সমাজ শিশুর শৈশবকে অসহনীয় যন্ত্রণায় পূর্ণ করে, সেই সমাজ যখন শিশুটির প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় অস্বাভাবিক আচরণের শাস্তি হিসাবে পুনরায় নির্মম হইয়া টুঁটি টিপিয়া ধরে, সেই সমাজ দ্বিগুণ অপরাধী বনিয়া যায়। কিন্তু ওহায়োর গভর্নরকে দেখিয়া ট্রাম্প শিখিবেন কি?
প্রথমত, অনিচ্ছুক লোককে ধাঁ করে জড়িয়ে ধরা মহা অন্যায়। লোকটি বিপরীত লিঙ্গের হলে তো কথাই নেই, ধুন্ধুমার। সমলিঙ্গের হলেও, তার ব্যক্তিগত পরিসরে হুড়ুম প্রবেশ অভদ্রতা। সিনেমায় জাদুঝাপ্পি চমৎকার, কারণ তা কমেডি, অতিনাটকওলা। অবশ্য ‘হোক আলিঙ্গন’ (যে আন্দোলন থেকে রাহুল টুকলেন) চলার সময় নাকি বহু লোক যাকে-তাকে প্রাণপণ জাপটে নিয়েছেন। পরে নিজের মনে চোখ টিপেছেন কি না, প্রমাণ নেই। ওটা পরের বার যোগ করা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy