জার্নি: অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত মহুয়া ভট্টাচার্যের প্রদর্শনীর ছবি
মহুয়া ভট্টাচার্য ‘দ্য জার্নি’ শিরোনামে একক প্রদর্শনী করলেন অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে। তাঁর ছবি স্বপ্নিল প্রকৃতি ও জীবজগৎ নিয়েই।
ব্যস্ত শহরজীবনে ফুটপাতের গাছটিতেও নতুন পাতা আসে। পাখিরা কুলায় ফেরে, হলুদ চাঁদ মায়া ছড়ায়, তা আমরা দেখি না। শিল্পীর ছবি এই বোধকে খানিকটা নাড়া দেয়। তাঁর সহজ সরল উপস্থাপনা আকর্ষণীয়। ছোট ছোট উজ্জ্বল বিন্দু দিয়ে জমাট বুনোটে পট বিভাজন করেছেন যা সামনের অবয়বের সঙ্গে এক ধরনের পরিপ্রেক্ষিত রচনা করেছে। ছবি মূলত দ্বিমাত্রিক, তবে কুশলী বর্ণপ্রয়োগ এবং টেক্সচারের জন্য বেশির ভাগ ছবিতে এক ধরনের অন্তর্মুখী স্রোতের চলাচল ছবিকে একটি অন্য মাত্রা দিয়েছে। ‘বার্ড রেস্টিং’ ও ‘ফরেস্ট ব্যালেরিনা’ উল্লেখযোগ্য। সবুজ বনানীর মধ্য দিয়ে হলুদ বুনোটের হরিণের দৌড়ে কোথাও কোথাও যেন সেলাইয়ের কারুকার্য, ভাল লাগে। গোলাপি প্রেক্ষাপটে কোবাল্ট ব্লু কালি স্বকীয় ভঙ্গিমায়। নীল হলুদ খয়েরি বিন্দুর সমারোহে আকাশের চিত্রকল্প, যেখানে মালার মতো উড়ন্ত পাখির সাবলীল গতি।
‘ফ্যান্টাসি’ একটু অন্য রকম ছবি। ফোর গ্রাউন্ড, ব্যাক গ্রাউন্ড পট-বিভাজনের মধ্যে স্টিললাইফ। ছবিতে স্পেস ফিলিং বা অবকাশ আছে দূরত্বের অনুভূতির জন্য। তা অনেক বেশি পিকটোরিয়াল হয়েছে। চিত্রপটে শূন্যে ডানা মেলা পাখি, ঝুলে থাকা চন্দ্রমা, নিঝুম রাত্রির আবহ—তবুও এখানে হলুদ কমলা রঙের প্রাবল্য খানিকটা কম হলে ভাল হত। নীচে শায়িত মুখ কিছুটা বেমানান। আর একটিতে কালো পশ্চাদপটে গাছ। সবুজ সাদা বিন্দুর আবর্তনে সমগ্র পট। গাছে কমলা পাখি দুটি মধুবনী পেন্টিং-এর মতো, যদিও মধুবনীর করণকৌশল এখানে অনুপস্থিত। চিত্রগুলিতে অলংকারিতা থাকলেও ছবির ভিতরে ঢোকার কোনও রাস্তা নেই। লোকায়ত শৈলী অনুসরণ করলেও আলপনার প্রাণ বা কাঁথার উষ্ণতা এখানে স্পষ্টতই পাওয়া যায় না। তবে অনস্বীকার্য যে, ছবিগুলিতে নিজস্বতা আছে।
শমিতা নাগ
নারীশক্তি
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে দক্ষিণ কলকাতা নৃত্যাঙ্গন আয়োজন করেছিল ঝিনুক মুখোপাধ্যায়ের ‘নবরূপিণী’। রাধা-কৃষ্ণের শৃঙ্গাররস সুন্দর ভাবে ফুটে ওঠে। ভাল লেগেছে কৃষ্ণের মুখে বিশ্বদর্শন—অদ্ভুত রস, রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের বীর রস, দ্রৌপদীর অভিনয়ে হাস্যরস, যুদ্ধক্ষেত্রে করুণ রস, মীরাবাঈয়ের শান্ত রস। সব শেষে দুর্গা ও অসুরের রুদ্র রস।
নৃত্য ও অভিনয়ে প্রশংসার দাবি রাখে ছাত্রীরা। ঝিনুক মুখোপাধ্যায় সিংহ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন রাধা, সীতা, দুর্গা, লছমীবাঈ নৃত্যে। কৃষ্ণের চরিত্রে দিশা মন জয় করে নেয়। পুতনার চরিত্রের কলমণ্ডলম গৌতমের অভিনয় অসাধারণ। সম্রাট দত্তের অসুর মনে রাখার মতো।
দ্রৌপদী ও গান্ধারীর চরিত্রে পিয়ালী, যশোদা ও মীরা চরিত্রে শয়েমিতা। আবহ সঙ্গীতে ছিলেন পণ্ডিত শুভেন চট্টোপাধ্যায়।
পলি গুহ
অনুষ্ঠান
• মধুসূদন মঞ্চে আশাভরি আয়োজন করেছিল ‘আনন্দ সন্ধ্যা’। গান ও পাঠের অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বের গানে শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন তানিয়া দাস, মৌসুমী কর্মকার, নন্দিনী ভট্টাচার্য প্রমুখ। কবিতা শোনালেন সুপ্রকাশ মুখোপাধ্যায়।
• রবীন্দ্রসদনে ক্যামেলিয়ার অনুষ্ঠানে শুরুতেই সংবর্ধনা দেওয়া হয় অন্তরা চৌধুরীকে। পরে তিনি নিজের গান ও সলিল চৌধুরীর সুরারোপিত কয়েকটি গান শুনিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে গান শোনালেন পরিমল ভট্টাচার্য, সুস্মিতা দত্ত, সুচিন সিংহ, মৌসুমী কর্মকার প্রমুখ। শেষে আবৃত্তি শোনালেন সুজিত দত্ত, তাপস নাগ প্রমুখ।
• ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ মঞ্চে ‘সুর ও সাধনা’ আয়োজিত অনুষ্ঠানের শিল্পীরা ছিলেন ইন্দ্রাণী সেন, স্বপন বসু, শ্রাবণী সেন, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, প্রবুদ্ধ রাহা, অলোক রায়চৌধুরী, কিংশুক রায় প্রমুখ। সব শেষে ছিল সুস্মেলী দত্তের শ্রুতিনাটক ‘হনন’। পরিচালনায় সোমা ঘোষ।
• দেবারতি সোমের পরিচালনায় শিশির মঞ্চে বৈতালিক উপস্থাপিত করল রবীন্দ্রগান ও কবিতা অবলম্বনে ‘যখন বৃষ্টি নামল’। দেবারতি ছাড়াও অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ইন্দ্রাণী সাহা, মোনালিসা দে প্রমুখ। বেশ কয়েক জন নবীনের গান শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। আবৃত্তিতে ছিলেন প্রণতি ঠাকুর, শোভনসুন্দর বসু।
• শরৎ স্মৃতি সদনে শৌনক মিউজিক্যাল ট্রুপ-এর নিবেদনে ছিল গান ও পাঠের অনুষ্ঠান। এ দিনের অনুষ্ঠানের অন্য শিল্পীরা ছিলেন স্বপন সেন, রূপরেখা চট্টোপাধ্যায়, অজয় ঘোষ প্রমুখ। কবিতা পাঠে ছিলেন তাপস নাগ, সুজিত দত্ত প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy