Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
আলোচনা

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে

দেবজ্যোতি পুরকায়স্থর ভাস্কর্য ‘ঈশানী’। মা দুর্গার প্রতিমূর্তি মহিষাসুরের মাথার উপরে। ছিমছাম মূর্তিটি। ব্রোঞ্জের কাজ। এই শিল্পীর অন্য কাজ ‘দ্য ড্রিমি ফ্লাইট’। ফাইবার গ্লাসে করা।

অভিব্যক্তি: অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত ‘এক্সপ্রেশন’ শীর্ষক প্রদর্শনীর একটি ছবি

অভিব্যক্তি: অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত ‘এক্সপ্রেশন’ শীর্ষক প্রদর্শনীর একটি ছবি

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমি অফ আর্ট অ্যান্ড কালচার-এ অনুষ্ঠিত হল ৩৩ জন চিত্রকর, ভাস্কর এবং আলোকচিত্রীর দলীয় প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘এক্সপ্রেশন’। এর অর্থ প্রকাশ বা অভিব্যক্তি। এই প্রদর্শনীর প্রকাশ যৌথ বিষয়বস্তুভিত্তিক নয়। বিভিন্ন শিল্পী তাঁদের ইচ্ছেমতো বা প্রয়োজনমতো কোনও কোনও কল্পনাভিত্তিক বিষয়ে নিজেদের প্রকাশ করেছেন।

বিশ্বজোড়া অনেক বড় ঘটনার প্রতিবাদও রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। চন্দন মিশ্রের দুটি ছবির বিষয়ই মননঋদ্ধ মনে হয়েছে। একজন শিক্ষিত মানুষের প্রতিকৃতি। মানুষটির মুখচোখে চিন্তা এবং দুর্দশার ছায়া। আজকের জীবনে চিন্তার কারণ প্রভূত। কাজেই গালে হাত দিয়ে চিন্তান্বিত এই মানুষটি বেশ অভিব্যক্তিপূর্ণ। এই শিল্পীর অন্য একটি কাজ, যেখানে ছবির চরিত্রটি ঘাসে শায়িত। যেন প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চাইছে এবং মানুষটি অন্য কানটি বৃহত্তর পৃথিবীর গোলমাল থেকে বন্ধ করে রেখেছে। একটু যেন হতাশার ছোঁয়া আছে।

দেবজ্যোতি পুরকায়স্থর ভাস্কর্য ‘ঈশানী’। মা দুর্গার প্রতিমূর্তি মহিষাসুরের মাথার উপরে। ছিমছাম মূর্তিটি। ব্রোঞ্জের কাজ। এই শিল্পীর অন্য কাজ ‘দ্য ড্রিমি ফ্লাইট’। ফাইবার গ্লাসে করা। মা সন্তানকে পিঠে নিয়ে উড়ে চলেছেন অন্য কোথাও, যেখানে তাকে রক্ষা করা সহজ হবে। বা অন্য কোনও পৃথিবীর কাছাকাছি যেতে চাইছেন, যেখানে সে সুরক্ষিত থাকবে। তাৎপর্যপূর্ণ কাজ। পবিত্র সাহার শিরোনামহীন কাজগুলো শান্ত সমাহিত এবং আবহ সৃষ্টি করে। অ্যাক্রিলিকের কাজ। সাবির হকের ছবির শিরোনাম ‘প্রেম’। পুরোপুরি কল্পনাভিত্তিক। তাঁর তিনটি ছবিই কল্পনার জগৎকে কেন্দ্র করে। খুব উপভোগ্য। নীরজ মণ্ডলের বেশ কয়েকটি ছবির মধ্যে জলরঙে করা বিমূর্ত কাজগুলির উপস্থাপনায় ভিতরের বিভ্রান্তি দৃশ্যমান।

ভাস্কর মিলন সেনগুপ্তের কাজ ‘শিল্পী’ ও ‘ক্যাপ্টেন’। দুটোতেই অনুভূতির প্রকাশ অনবদ্য। ব্রোঞ্জের কাজ। আলোকচিত্রী প্রতীক্ষান ঘোষের ‘লাইফ ইন মোশন’-এ প্রাত্যহিক জীবনের ব্যস্ততার মধ্যে একটি ভিখিরির হাড়-জিরজিরে পশ্চাৎভাগ উল্টে পড়ে আছে। ছবিটি ‘ইন মোশন’ দেখানো হয়েছে। সমীর কুণ্ডুর মিশ্র মাধ্যমের শিল্পকর্মগুলো বিভিন্ন আলোকচিত্র-র পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে।

এ ছাড়া সুব্রত পাল, শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস সিংহ, অর্পিতা দাশগুপ্ত, দেবযানী দে, অরূপ নস্কর, বিপ্লব কুণ্ডু, রণিতা দেব, দেবব্রত মণ্ডল, বিশ্বজিৎ প্রসাদ, রাজীব দেয়াশি, রমেশ দাস, রাজরাপ্পা রায়, বিকাশ আচার্য, তমাল মণ্ডল, ঐন্দ্রিলা ঘোষ, সুচিন্ত অধিকারী, চিন্ময় মুখোপাধ্যায়, সৈকত পাত্র, জয়াশিস রায়, বাদল পাল ও অনিন্দিতা বিশ্বাস রায় নিজের নিজের আঙ্গিকে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য স্থাপিত করেছেন।

শমিতা বসু

কুড়ি পেরিয়েও মেঘমিতা

পলি গুহ

সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল মেঘমিতা কালচারাল ইনস্টিটিউট (কলাঙ্গন)-এর ২০ তম বাৎসরিক অনুষ্ঠান। শুরুতেই মেঘমিতা কত্থক নৃত্য পরিবেশন করলেন। তাঁর পদবিন্যাস ও ভাবভঙ্গি এতই সুন্দর ছিল যে, দর্শকরা প্রশংসা করলেন। এছাড়া সংস্থার শিক্ষার্থীরা এ দিন বিভিন্ন নৃত্য-আঙ্গিকে সকলেরই মন জয় করেন। শাস্ত্রীয় নৃত্য, কত্থক, রবীন্দ্রনৃত্য, সৃজনশীল নৃত্য এবং ওয়েস্টার্ন, বলিউড ডান্স তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তবলায় সহযোগিতা করলেন জটিলেশ্বর ভৌমিক, সেতারে চন্দ্রচূড় মুখোপাধ্যায়, সঙ্গীতে সিদ্ধেশ্বর ভৌমিক।

ধ্রুপদী নৃত্যের ‘গুরুবন্দনা’য়

জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল মালশ্রী আয়োজিত ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্য উৎসব ‘প্রেরণা’। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুগ্ধ করে মঞ্জিমা সরকার ও মধুমিতা দত্তের ওড়িশি নৃত্যের আঙ্গিকে পরিবেশিত যুগল নৃত্য ‘সরস্বতী বন্দনা’। নৃত্য পরিকল্পনায় ছিলেন অর্পিতা ভেঙ্কটেশ। ‘দুর্গাস্তুতি’ নৃত্যে সুময়ী মুখোপাধ্যায়ের নৃত্য প্রশংসনীয়।

মুগ্ধ করে গুরু অলকা কানুনগোর ছাত্রীদের পরিবেশিত ওড়িশি নৃত্য। অলকার শিঞ্জন নৃত্যালয়ের পৌলমী চক্রবর্তী ও শুভ্রা মাইতি পরিবেশিত ‘কামোদী পল্লবী’ প্রশংসার দাবি রাখে। অন্যান্য ছাত্রী সৃজনী, অস্মিতা, উর্জষী, স্বরলিপি, অর্জমাদের সঙ্গে পৌলমী ও শুভ্রা পরিবেশিত ‘দশমহাবিদ্যা’র নৃত্যশৈলী দেখে মুগ্ধ হতে হয়। পরিচালনায় ছিলেন অলকা কানুনগো।

কঙ্কনা সিংহ ও ইভানা সরকারের মণিপুরী নৃত্যের আঙ্গিকে ‘পন্থা জগোই’ প্রশংসার দাবি রাখে। মণিপুরী নৃত্যের লীলায়িত ভঙ্গি ও পদক্ষেপে পরিবেশিত হয় রাধার চরিত্রে ইভানার লাস্যনৃত্য, এবং কৃষ্ণর ভূমিকায় কঙ্কনার দৃপ্ত পদক্ষেপে পরিপূর্ণ হয় ‘তাণ্ডব’। পরিচালনায় গুরু বিপিন সিংহ। এ দিন অভিষিক্তা মুখোপাধ্যায় ও সৃজনী ঘোষালের কত্থক নৃত্যের উপস্থাপনা দর্শকরা খুবই উপভোগ করলেন। অসীমবন্ধু ভট্টাচার্যের ছাত্রীদ্বয়ের এই নিবেদন ‘গুরুবন্দনা’ প্রশংসনীয়। পূজা চট্টোপাধ্যায়, অনসূয়া শূর ও পূজা পোদ্দার পরিবেশন করলেন ভরতনাট্যম। তাল, লয়, সাবলীল নৃত্যভঙ্গিমা ও অভিনয় সবাইকে মুগ্ধ করে। পরিচালনায় ছিলেন রাহুলদেব মণ্ডল। এ দিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংস্থার পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয় জগন্নাথ বসুকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE