—নিজস্ব চিত্র।
‘‘ব্রহ্মানন্দ ভারততত্ত্ববিদ্্দের নামের একটি তালিকা দিয়ে গেছেন। ‘বৈদিক-সংস্কৃত সাহিত্য’ উপসমিতির ফাইলে দেখো।’’ শঙ্খ ঘোষের উদ্দেশে লেখা এ-বাক্যটি সত্যজিৎ চৌধুরীর। তখন ১৯৬৫, ভারতকোষ-এর প্রথম খণ্ড বেরিয়েছে সবে, প্রকল্পের মূল পরিচালক নির্মলকুমার বসু কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য সহ-সম্পাদক প্রদ্যুম্ন ভট্টাচার্যকে আরও কাউকে কাউকে জড়ো করতে বলেছিলেন। ‘‘প্রদ্যুম্ন তখন তৈরি করে তুলেছিল বড়োমাপের একটা ব্যক্তিগত জাবদা খাতা, তাতে এক-এক জন লিখে রাখত অন্যজনের উদ্দেশে কোনো নির্দেশ বা জ্ঞাতব্য।... এইভাবে পরামর্শের এক সচল অভিজ্ঞান হিসেবে রয়ে গেছে ব্যক্তিগত যে খাতাখানা, তার পাতা উলটে গেলে সেসব মুহূর্তের কিছু ছবি আজ ভেসে ওঠে।’’— শঙ্খ ঘোষের ‘সত্যজিতের নৈহাটি: একটি প্রয়াণলেখ’ রচনাটি প্রয়াত মানুষটির সূত্রে তুলে আনে বাঙালির জ্ঞানচর্চার অলিখিত এক ইতিহাস। অন্য রচনাদির মধ্যে অরিন্দম চক্রবর্তীর ‘চরণ-চিন্তন’, প্রণব বর্ধনের ‘উন্নয়ন, বিত্তচ্যুতি ও অসংগঠিত শ্রমিক’, মৈত্রীশ ঘটকের ‘অচ্ছে দিন দূর অস্ত’। উন্নয়ন ও আধুনিকতা নিয়ে দীপেশ চক্রবর্তী: ‘‘ব্যক্তিমানুষের জন্য যে অধিকারের কথা ভাবি, যে উন্নয়নের কথা ভাবি, একই সঙ্গে এই দুটোকে ভাবতে আমাদেরকে শিখতে হবে।’’ তপোব্রত ঘোষ লিখেছেন ‘রবীন্দ্রনাথ: পৌরুষের নতুন ধারণা’ নিয়ে— ‘‘আমার যেটা বক্তব্য সেটা রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলে গিয়েছেন... এক চিঠিতে: ‘একটা কথা মনে রেখো আমরা সকলেই এক হিসাবে অর্দ্ধনারীশ্বর।’’ আরও বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ রচনাদিতে ঋদ্ধ শারদীয়টি।
‘‘তিনিই এই শতাব্দীতে জীবিত একমাত্র মানুষ যিনি পেশাদারি মঞ্চে, গ্রুপ থিয়েটারে... লেখা, অভিনয় এবং পরিচালনার কাজ করেছেন। এবং তা এখনও করে চলেছেন।’’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে লিখেছেন ব্রাত্য বসু। তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় (২৭-০৬-২০১৮) সৌমিত্র বিস্তারিত ভাবে বলে গিয়েছেন তাঁর নাট্যজীবনের কথা। এর আগেও বহু সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সৌমিত্র, কিন্তু এত বিশদে বা অনুপুঙ্খে কখনও বলেননি নিজের থিয়েটার-করা নিয়ে, ব্রাত্যর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনটি সে দিক থেকে বিরল বললে অত্যুক্তি হবে না।
নাট্যপত্রটিতে তাঁকে নিয়ে এই ক্রোড়পত্রে লিখেছেন মেঘনাদ ভট্টাচার্য: ‘‘দুঃখী ও হেরে যাওয়া মানুষের প্রতি তাঁর মমত্ব ও দায়বদ্ধতা বারে বারে ফুটে বেরিয়েছে তাঁর থিয়েটারের কাজের মধ্যে।’’ মেঘনাদ-প্রদত্ত সাম্প্রতিক ‘বিষ্ণু বসু স্মারক বক্তৃতা’ও প্রকাশ পেয়েছে নাট্যপত্রটিতে, আছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘নীতিকা বসু স্মারক বক্তৃতা’: ‘‘আমি যখন নাটক দেখা শুরু করি তখন শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্ত এঁদের পড়ন্ত বেলার সময়। তবু এঁদের নাটক যখনই হয়েছে আমি ছুটে গেছি।... আমি মনে করি যে— বাংলা থিয়েটার আধুনিকতার মাত্রা ছুঁতে পেরেছিল এই দুজন মানুষের সাহায্যে।’’ চন্দন সেন ও শেখর সমাদ্দারের নাটক। সঙ্গে প্রবন্ধাদিতে উৎপল দত্তকে নিয়ে ব্রাত্যর লেখার পাশাপাশি বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শব্দের চিত্রকল্প নির্মাণ বিষয়ক অতিশয়োক্তি’। এ ছাড়াও নাট্যপত্রটিতে পিটার ব্রুকের রচনার অনুবাদ। নাট্যসমালোচনা ও পুস্তক পর্যালোচনা।
শুরুতেই ‘গান্ধীভাবনা’। জানানো হয়েছে, ‘‘২০১৯ সালে গান্ধীর সার্ধশতবর্ষ পূর্তি হবে। আমরা সেকথা স্মরণ করে এই ক্রোড়পত্রটি প্রকাশ করলাম।’’ প্রথম রচনাটিতেই অমিয় দেব লিখেছেন, ‘‘উদ্দেশ্য ও উপায়ের যে-বৈষম্য আমরা চতুর্দিকে দেখি তা গান্ধীতে নেই। গান্ধী বলবেন না, উপায় যাই হোক না কেন উদ্দেশ্য ঠিক থাকলেই হল। উল্টে গান্ধী বলবেন, উদ্দেশ্য ঠিক হলেই হবে না, উপায়কেও ঠিক হতে হবে। অহিংস আন্দোলনে কোনো অবকাশই নেই হিংসার, ক্ষণিক আত্মবিস্মৃতি বা উত্তেজনাপ্রসূত হলেও, নেই।’’ সৌরীন ভট্টাচার্যের লেখা ‘গান্ধী মনের সন্ধানে’, আর গাঁধীজির জাতীয়তাবাদ নিয়ে লিখেছেন শিবাজীপ্রতিম বসু। ‘‘আমার লেখার মধ্যে যে মূর্তি প্রকাশ পায়, তাহা তো আমার সমগ্র রূপ নয়। তুমি আমার নিকটে থাকিলে, একসঙ্গে ভ্রমণ করিলে, প্রতিদিনের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করিলে আমাকে আরও ভালোভাবে চিনিতে পারিবে।’’ গাঁধীজি জানিয়েছিলেন নির্মলকুমার বসুকে— অভ্র ঘোষের লেখা। রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্রে গাঁধী-প্রসঙ্গ, গাঁধীজির সঙ্গে প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের বিনিময়, বা সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’-এ গাঁধীজির প্রাসঙ্গিকতা... বিবিধ রচনার সমাহার। শতবর্ষ উপলক্ষে কবি মণীন্দ্র রায় আর শিল্পী দেবব্রত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে রচনা। শঙ্খ ঘোষ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা, দেবেশ রায়ের গল্প ‘তিস্তা দেশ’, অনিল ঘোষের গল্প ‘ডানায় রৌদ্রের গন্ধ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy