প্রতীকী ছবি।
আমাদের মাথা ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, সে আমরা খেয়াল করি, অথবা না-ই করি। কোন হেলথ ড্রিঙ্ক খেলে আমার বাচ্চাটি অন্যদের চেয়ে লম্বা, শক্তিশালী আর বুদ্ধিমান হবে, কোন সাবানটি মাখলে ত্বক থাকবে শিশুর মতো কোমল অথবা কিশোরী সন্তানের মাকেও কলেজপড়ুয়া বলে মনে হবে, কোন বডি স্প্রে মহিলাদের কাছে অপ্রতিরোধ্য, কোন গাড়িতে সামাজিক মর্যাদা কতখানি, আর কোন ব্র্যান্ডের পোশাক ছেলেদের পূর্ণ পুরুষ করে তুলতে পারে— এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমরা সবাই জানি। উত্তরগুলো জানিয়েছে বিজ্ঞাপন। কী ভাবে তৈরি হয় বিজ্ঞাপন? কী ভাবে কোনও পণ্যকে সম্ভাব্য ক্রেতার মাথায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গেঁথে দেওয়া যায়? বাংলা ভাষায় এই বিষয়ে তেমন কোনও বই ছিল না, যা পড়ে বিজ্ঞাপন তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া, আর সেই দুনিয়ার অন্দরমহল সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। আলোচ্য বইটি সেই অভাব পূর্ণ করে। লেখক রংগন চক্রবর্তী বহু বছর বিজ্ঞাপনে উঁচু পদে চাকরি করেছেন, ফলে পাঠককে তিনি ‘রিংসাইড ভিউ’ দিতে পেরেছেন। তবে, শুধু বিজ্ঞাপনের ব্র্যান্ডিং, পজ়িশনিং বা তা নির্মাণের গল্প নয়, রংগন তাঁর আলোচনায় নিয়ে এসেছেন বৃহত্তর সামাজিক পরিসরকেও। প্রশ্ন করেছেন, বিজ্ঞাপনকে কি সামাজিক পরিবর্তনের দর্পণ হিসাবেও দেখা যায় না— যেখানে দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানুষের আকাঙ্ক্ষা, জীবনযাত্রা ইত্যাদিও পাল্টে যেতে থাকে? না কি, বিজ্ঞাপনও পাল্টে দিতে পারে সমাজের মনকে? যে সাবানের পরিচিতি তৈরি হয়েছে কর্মী মানুষের ব্যবহারের সামগ্রী বলে, আর্থিক উন্নতি ঘটলে মানুষ যে সেই সাবানটি আর ব্যবহার করতে চায় না, বরং নতুন কিছু খোঁজে, তা কি বিজ্ঞাপন তাকে তেমন ভাবে চালিত করে বলেই? সব প্রশ্নের উত্তর যে এই বইয়ের পাতায় পাওয়া যাবে তা নয়। কিন্তু প্রশ্নগুলোকে নতুন করে জাগিয়ে তোলার কাজটাও তো গুরুত্বপূর্ণ।
বিষয় বিজ্ঞাপন
রংগন চক্রবর্তী
৩৯৯.০০
দে’জ পাবলিশিং
“আমার মতে সবকিছুই রাজনীতি, উষ্ণায়ন থেকে শরণার্থী, যুদ্ধ থেকে দুর্ভিক্ষ; জলের জন্য হাহাকার থেকে মূলধারা-স্বীকৃত সৌন্দর্যের মানদণ্ড; পরিবারের মধ্যে ক্ষমতার বিন্যাস থেকে শুরু করে সমসাময়িক পৃথিবীতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষমতার বাঁটোয়ারা।” বইয়ের শেষে সঙ্কলিত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন হিসাম বুস্তানি। আরবি ভাষায় ছোটগল্প লেখেন তিনি; উপন্যাস লেখেন না— “একটা টেক্সটের মধ্য দিয়ে শৈল্পিক-সাহিত্যিক আকাঙ্ক্ষা মেটাবার জন্য এটাকে খুব ভাল মাধ্যম বলে আমি মনে করি না।” তাঁর গল্পে উঠে আসে আরব-দুিনয়ার প্রতি মুহূর্তে বিপন্নতার খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা জীবনের কথা, কিন্তু তারই মধ্যে জীবনের জন্য তীব্র, অদম্য আকাঙ্ক্ষাও স্পষ্ট বার বার। এই সঙ্কলনের গল্পগুলি বহু ক্ষেত্রেই আখ্যানধর্মী নয়— হয়তো একটি মুহূর্তের বর্ণনা দেয় বড়জোর, কাহিনি এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে পৌঁছয় না। কিন্তু সেই মুহূর্তের গায়ে ধরা থাকে সময়ের বিপন্নতার দাগ। আবার, পর পর কয়েকটি গল্প এক সঙ্গে পড়ে ফেললে মনে হয়, তা বুঝি একই গল্প, শুধু পাল্টে যায় দেখার দিকটি। অমর মিত্র, যশোধরা রায়চৌধুরী, গৌতম চক্রবর্তী, নয়ন বসু ও মঞ্জিস রায়ের অনুবাদ চমৎকার।
জর্ডনের গল্পকার হিসাম বুস্তানির ছোটগল্প
সম্পা: অমর মিত্র
১৯৯.০০
সৃষ্টিসুখ
“নিমাই ঘোষের মতো পরিচালকের চলে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছিল বাংলা ছবিরই। দেশভাগের চুয়াত্তর বছরে নিমাই ঘোষের ছিন্নমূল ভীষণভাবে মনে করিয়ে দেয় আমাদের অন্ধকার অতীতকে।” সুব্রত রায়ের এই মন্তব্য-সহ নিমাই ঘোষের ছিন্নমূল ছবিটির আলোচনা খেয়াল করিয়ে দেয় যে, এই বছর আমাদের স্বাধীনতারই শুধু পঁচাত্তর বছর নয়, দেশভাগেরও পঁচাত্তর বছর। সময়ের নিরিখে বাংলা ও আন্তর্জাতিক ছবির মধ্যে থেকে সেরা ত্রিশটি ছবি বেছে নিয়েছেন লেখক, সেগুলির ভিতর দিয়ে ইতিহাসের নির্মাণ ঘটেছে কী ভাবে, তা-ই তাঁর লেখার প্রতিপাদ্য। সত্যজিৎ ঋত্বিক মৃণালকে ছুঁয়ে তিনি পৌঁছেছেন বার্গম্যান কুরোসাওয়া অরসন ওয়েলস গোদার তারকোভস্কি প্রমুখে। আছেন বিমল রায় বা তপন সিংহও। বারীন সাহা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে জানাচ্ছেন: “তেরো নদীর পারে যখন তিনি তৈরি করেন তখন সত্যজিৎ তৈরি করছেন অপুর সংসার, মৃণাল সেন তৈরি করছেন বাইশে শ্রাবণ আর ঋত্বিক ঘটক ব্যস্ত রয়েছেন মেঘে ঢাকা তারা-র কাজে। বাংলা অন্যধারার সিনেমার স্বর্ণযুগের সূচনা হচ্ছে।” একটি গুরুতর অভিযোগ অবশ্য থেকে যায়— স্বাদু গদ্যের এই অনতিদীর্ঘ রচনাদির সঙ্কলনটিতে মুদ্রণপ্রমাদ পীড়াদায়ক।
সময়ের নির্মাণে সেরা তিরিশ
সুব্রত রায়
১৬৫.০০
এবং অধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy