প্রতীকী ছবি।
“প্রথম গন্তব্য জার্মানি। অর্থাৎ মাছি গোঁফের দেশ। যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিশ্ব কাঁপাইয়াছিলেন।” ছোট ছোট, কাটা-কাটা সাধুগদ্যবাক্যে এ ভাবেই লেখা এ বই, একুশ শতকের ইউরোপ ভ্রমণকথা। কেন একে যত না ভ্রমণকাহিনি তারও বেশি রম্যগদ্য বলা চলে, উদ্ধৃত অংশটিই বুঝি বা প্রমাণ। জার্মানি নেদারল্যান্ডস ফ্রান্স সুইৎজ়ারল্যান্ড ইটালি এবং পরে ‘বিলেত’ দর্শন— স্রেফ ভ্রমণ নয়, এক জীবনরসিকের প্রাণরস আহরণ যেন। খানিক ডায়েরি, খানিক জার্নালের ঢঙে লেখা, কলমটি খাসা।
সাংবাদিকের চোখে দেখা, এক কালের বাঙালির প্রিয় ‘পশ্চিম’, হাওয়া বদলের ঠিকানা— হাজারিবাগ, ‘মিনি ইংল্যান্ড’ ম্যাকলাস্কিগঞ্জ, রাঁচী, ‘পালামু’। খবরকাগজে কাজের সূত্রে নিত্যদিনের সংবাদ সংগ্রহ ছাপিয়ে থাকে দেখা ও জানার যে চোখ ও মন, তারাই লিখিয়ে নিয়েছিল একগুচ্ছ লেখা, দু’মলাটে যাদের গেঁথেছে এই বই। ছোটবেলার নস্ট্যালজিয়া আর সমকালের বাস্তব, দুই-ই মিশেছে এক বিন্দুতে— সাংবাদিক-লেখকের সত্যের এষণা। ব্রিটিশের তৈরি মানসিক হাসপাতালের অতীত-বর্তমান এখানে মিশে যায় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির শহর-কথায়, স্বাদু গদ্যে।
গদ্যসংগ্রহ
দেবদাস আচার্য
২৭৫.০০
অবভাস
“মণীন্দ্র গুপ্ত আমাকে লেখার জন্য তাতিয়েছিলেন।” একাধিক সাক্ষাৎকারের একটিতে দেবদাস আচার্যের স্বীকারোক্তি, পাশাপাশি পড়ে ফেলতে হবে এ বইয়ে তাঁর ‘জীবন এক মুগ্ধ উড়ান’, ‘বারান্দার পৃথিবী’ বা ‘জলছবি’র মতো গদ্য। কেবল কবিমনের প্রকাশিত রূপ নয় তাঁর গদ্য, সময়ের তথ্যচিত্রও। তাঁকে ঘিরে যে সমাজ, যে জীবনপ্রবাহ বয়ে গেছে, তা-ই লেখকের আত্মজীবন-নির্ভর গদ্যের বিষয়। পড়ন্ত বেলায় তাঁর দেখা ফেলে-আসা যুগের অন্তর্গত ধারাচিত্রটি ফুটে উঠেছে তাঁর গদ্যে।
“গান্ধীবাদ বলতে যদি অনড়, অপরিবর্তনীয় কয়েকটি নীতিবাক্য বোঝায়, তবে... আর যিনিই গান্ধীবাদী হোন না কেন, গান্ধীজি নিজে কখনোই সেরকম গান্ধীবাদী ছিলেন না।” ১৯৬০ সালে প্রকাশিত বইটিতে লিখেছিলেন জগন্নাথ চক্রবর্তী। পুনঃপ্রকাশিত বইটি এক অর্থে কোনও জটিলতাহীন এক গান্ধীজীবনী— তার গায়ে এই সময়ের গান্ধীচর্চার ছাপ স্বভাবতই নেই। কিন্তু কিঞ্চিৎ কৌতূহল, খানিক শ্রদ্ধামিশ্রিত এই গান্ধীদর্শন পাঠকের কাছে গান্ধীর মূল কথাগুলি পৌঁছে দিতে পারে।
মাটিমাখা মহাপ্রাণ
শুভঙ্কর দাস
৩০০.০০
লিপি প্রকাশন
ঐতিহাসিক উপন্যাস, এই সংরূপটি বাংলা সাহিত্যে ডালপালা মেলেছে বহু কাল। লেখক তাঁর উপন্যাসে এই সংরূপকেই বেছে নিয়েছেন, এঁকেছেন মেদিনীপুরের গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানার জীবন সংগ্রামকে। ছাব্বিশটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত উপন্যাসে বিস্মৃতির অতল গহ্বর খুঁড়ে কুমারচন্দ্রের জীবন, নির্লোভ চরিত্র, এগারো দিনের অনশন প্রভৃতি ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক, পাঠকের মন ভরাবে। শুধু ইতিহাসের সত্যতাই নয়, সাহিত্যের প্রসাদগুণ যাতে নষ্ট না হয় সে দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে।
বাঙালি জীবনে কৃত্তিবাসী রামায়ণের গুরুত্ব বাড়িয়ে বলার উপায় নেই। তার প্রথম মুদ্রিত সংস্করণটি প্রকাশিত হয় শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে, ঊনবিংশ শতকের একেবারে আদিলগ্নে। পয়ার ছন্দে লেখা সেই কাব্য অতি স্বাদু চলিত গদ্যে পুনর্লিখন করেছেন প্রবীর সেন। “রাম তোমার মহিমার কোনো অন্ত নেই। আমার মতো কোটি ব্রহ্মাও তার সীমা খুঁজে পাবে না। তোমাকে স্মরণ করলে চিন্তা পুণ্য হয়, পাপ থেকে পাপী মুক্ত হয়।” অতি চেনা কাব্যকে গদ্যের ভাষায় ধারণ করার কঠিন কাজটি সাবলীল ভাবে করে আগামী দিনের পাঠকের ধন্যবাদার্হ হলেন লেখক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy