কোনও কারখানা বা শিল্প সংস্থার শ্রমিক সংগঠনের মাথায় মন্ত্রীদের বসা নিয়ে রাজ্যের মতামত চাইল কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। বহিরাগত কারও সংগঠনের পদাধিকারী হওয়া উচিত কিনা, জানতে চাওয়া হয়েছে তা-ও। যার কারণ গত ১১ অক্টোবর মাদ্রাজ হাইকোর্টের দেওয়া রায়। যেখানে কর্মী সংগঠনের কোনও পদে মন্ত্রী বা বহিরাগতদের বসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এর পরই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির মত জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে তারা। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, আলোচনা চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর ছাড়পত্র পেলে তা দিল্লিকে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর একটি ব্যাঙ্কের কর্মী সংগঠনের মামলায় রায় দিতে গিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্ট জানিয়েছিল, মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য কারখানা বা সংস্থার নথিভুক্ত ইউনিয়নের পদাধিকারী হতে পারবেন না।
এ বিষয়ে তৃণমূল সরকারের প্রাক্তন শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর দাবি, ওই দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার দিনই সব শ্রমিক সংগঠনের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “ওই দফতরের দায়িত্ব নিয়েও ইউনিয়নের মাথায় বসে থাকা অনৈতিক।” শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকও বিভিন্ন সংস্থার সংগঠনের শীর্ষ পদে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু সেখানে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র বাস, ট্যাক্সি, অটো-সহ অনেক কর্মী সংগঠনের সভাপতি। তাঁর মতে, “আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে কর্মীরা নেতৃত্ব ঠিক করেন। তবে আইন যা বলবে, তা-ই হবে।”
বিধানসভার চিফ হুইপ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রায় ৪০০ শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন। তাঁর দাবি, “আমি মন্ত্রী নই। ফলে এতে আইনি বাধা নেই।” তবে সংগঠনের মাথায় মন্ত্রীর থাকা উচিত নয় বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর যুক্তি, “মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত কার্যকর করবেন। আন্দোলনে শরিক হবেন কী করে?” আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, “আদালত যদি বলে বহিরাগত থাকতে পারবেন না, তা বিবেচনা করে দেখব।”
বাম আমলেও বহু মন্ত্রী বিভিন্ন ইউনিয়নের পদাধিকারী ছিলেন। যেমন, মহম্মদ আমিন, মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়, অনাদি সাহু প্রমুখ। অনাদিবাবু বলেন, “ইউনিয়ন করতে করতেই মন্ত্রী হই। রাজা-প্রজা একই লোক কিনা ভাবার সময় ছিল না।”
মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায় কার্যকর করতে হলে কেন্দ্রকে এই সংক্রান্ত আইন সংশোধন করতে হবে। সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী মনে করেন, সব সংগঠনই এর বিপক্ষে মত দেবে। কিন্তু আইএনটিইউসি-র সহ সভাপতি গণেশ সরকারের অভিমত, “কারখানার সংগঠনে বহিরাগত থাকা উচিত নয়।” ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সম্পাদক শঙ্কর দাসও জানান, কেন্দ্র রায়ের অনুরূপ আইন করলে, তা মানতে বাধা নেই। সে ক্ষেত্রে ইউনিটের কর্মীরাই নেতৃত্ব দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy