ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ২৮ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের ডলার তহবিল বেড়েছে ৫০৪ কোটি ডলার। শতাংশ এবং ২.৩ শতাংশ। সুদ না-কমা সত্ত্বেও এই ধরনের উৎপাদন বৃদ্ধি অর্থবহ।
সবাই যেমন আশা করেছিলেন, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সুদে এ বার হাত দেননি রঘুরাম রাজন। সুদ কমলেও কমতে পারে, এমন ক্ষীণ আশা যাঁদের মনে ছিল, তাঁরা সামান্য আশাহত হলেও এর প্রভাব কিন্তু দু’দিনের বেশি থাকেনি। সুদ না-কমলেও এটা কিন্তু স্পষ্ট হয়েছে যে, সুদ আর বাড়ছে না। সুদ বাড়া-কমার থেকে শেয়ার বাজারের কাছে এখন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন। মনমতো সরকার গঠিত হবে এই আশায় ভর করে তেজী ভাব ধরে রেখেছে বাজার। অর্থনীতির দিক থেকেও ছোটখাটো ভাল খবর আসছে, যা বাজারকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করছে।
বাজার এতটা ওঠার পরে বিক্রির চাপ আসা স্বাভাবিক। এসেছেও কিছুটা। ফলে সপ্তাহের শেষ দু’দিনে খানিকটা নেমেছে বাজার। তা সত্ত্বেও মূল দুই সূচক সেনসেক্স ও নিফটি এখনও আছে ভাল উচ্চতায়। বেশ ভাল জায়গায় উঠে এসেছে মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ সূচকও। এর ফলে স্বস্তি জাগানো জায়গায় ফিরে এসেছে বেশির ভাগ ইক্যুইটি নির্ভর প্রকল্পের ন্যাভ। নির্বাচনের ফল বেরোলে কী হবে, সেই অনিশ্চয়তার দিকে তাকিয়ে বসে না-থেকে এই চড়া বাজার থেকে লাভ তুলে নিচ্ছেন অনেকেই। সুদ কমার আগে লাভের টাকা লগ্নি করছেন সুরক্ষিত স্থির আয়যুক্ত প্রকল্পে এবং করমুক্ত বন্ডে। সোনার দাম কমলে গৃহস্থ যেমন ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে সোনা কিনে রাখেন, তেমনই ডলারের দাম কমায় একই রাস্তায় হাঁটছে ফলে বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল বেড়ে পৌঁছেছে ৩০,৩৬৭ কোটি ডলারে। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র আর্থিক ত্রাণ কমানো সত্ত্বেও ভারতে ডলারের মূল্যপতনের মূল কারণ হল, বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নিপ্রবাহ বৃদ্ধি। এর প্রভাবে বাড়ছে শেয়ারের দাম ও মিউচুয়াল প্রকল্পের ন্যাভ, এবং অন্য দিকে কমছে ডলার এবং সোনার দাম।
শিল্পের দিক থেকে ছোট করে সুখবর আছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ৮টি মূল পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে গড়ে ৪.৫ শতাংশ হারে, যা গত ৫ মাসের মধ্যে সবথেকে বেশি। আগের বছর একই সময়ে বৃদ্ধির হার ছিল ১.৩ শতাংশ এবং ২০১৪-র জানুয়ারি মাসে ১.৬ শতাংশ। সবথেকে বেশি বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন (১০.৪ শতাংশ)। ইস্পাত এবং সিমেন্ট উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে ৪.৫ মার্চ মাসে করমুক্ত বন্ডের নতুন ইস্যু বন্ধ হওয়ার পরে খোলা বাজারে এখন শুরু হয়েছে এই সব বন্ডের লেনদেন। মুম্বই এবং জাতীয় শেয়ার বাজারের ঋণপত্র বিভাগে (ডেট মার্কেট) এখন বন্ডের ছড়াছড়ি।
শেয়ারের মতোই এগুলি কেনাবেচা করা যায় ব্রোকারের মাধ্যমে। নতুন ইস্যু বন্ধ হওয়ায় বাজার থেকে এই বন্ড কিনতে গেলে এখন কিছুটা প্রিমিয়াম দিতে হচ্ছে। এই প্রিমিয়ামের মধ্যে অবশ্য আংশিক সুদও ধরা আছে। উঁচু হারে করদাতারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।
গত শুক্রবার শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে সিপিএসই ইটিএফ। সম্প্রতি নতুন ইস্যুর মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হয়েছিল এই সেন্ট্রাল পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজেস ইটিএফ এবং সাফল্যের সঙ্গে সংগৃহীত হয়েছিল কমবেশি ৪,৪০০ কোটি টাকা। খুচরো লগ্নিকারীদের দেওয়া হয়েছিল ৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট। বাজারে প্রথম দিনেই ভাল সাফল্য পেয়েছে ১০টি প্রথম সারির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা-সমৃদ্ধ এই ফান্ড। এই ইউনিটের অ্যালটমেন্টের দাম যেখানে ছিল ১৭.৪৫ টাকা, সেখানে প্রথম দিনের লেনদেনের শেষে বাজার দর দাঁড়িয়েছে ১৯.৪০ টাকায়। অর্থাৎ প্রথম দিনেই দাম বেড়েছে ১১ শতাংশেরও বেশি। যাঁরা ১ বছর এই ইউনিট ধরে রাখবেন, তাঁরা পাবেন ৬.৬৬ শতাংশ (প্রতি ১৫টিতে ১টি করে) বোনাস শেয়ার। ফান্ডের এই সাফল্যে সরকারও উৎসাহিত। আগামী দিনে এই ভাবে ইটিএফ-এর মাধ্যমে আরও বিলগ্নিকরণ সম্ভব কি না, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy