কোন পথে বাঁচবে টাকা? ফাইল চিত্র।
২০২০ সালের বাজেটে বদলে গিয়েছিল কর কাঠামো। বদলে গিয়েছিল আয়করের স্ল্যাবও। বিভিন্ন ক্ষেত্রে করদাতাদের ছাড়ও দেওয়া হয়েছিল। অথচ ২০২৩-এর বাজেট পেশের সময় আয়করে সরলীকরণ করতে আয়কর দেওয়ার নতুন কর কাঠামো চালু করেছে সরকার। যদিও এই কর কাঠামো বাধ্যতামূলক নয়। তবে যাঁরা এই নতুন কাঠামো মানছেন তাঁরা বাড়িভাড়া বাবদ ভাতা, ছুটি এবং ভ্রমণ বাবদ ভাতা, ৮০সি, ৮০ডি— এগুলি দাবি করতে পারতেন না। যার ফলে বহু আয়করদাতাই নতুন কর কাঠামো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।
কিন্তু ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের বাজেট পেশের পর নতুন কর কাঠামো অধিকাংশের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই বছরের বাজেটে পাঁচটি মূল পরিবর্তন আনা হয়েছে যা করদাতাদের এই কর কাঠামোকে গ্রহণ করতে উৎসাহ দিচ্ছে।
কর অব্যাহতির সীমা বৃদ্ধি: নতুন কর কাঠামোয় ৮৭এ ধারা অনুযায়ী ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত কর অব্যাহতি পাবেন অর্থাৎ কোনও ব্যক্তি ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জনের ক্ষেত্রে অব্যাহতি পেতে পারেন। এর আগে ৮৭এ ধারা অনুযায়ী এই সীমা ছিল ১২৫০০ টাকা অর্থাৎ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জনের ক্ষেত্রে অব্যাহতি পেতে পারতেন । অর্থাৎ, আগের তুলনায় বছরে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়তি উপার্জনের ক্ষেত্রে অব্যহতি পাবেন আয়করদাতারা।
কর ছাড়ের সীমা বৃদ্ধি: নতুন কাঠামো অনুযায়ী ৩ লক্ষ টাকা আয় পর্যন্ত সম্পূর্ণ কর ছাড় পাওয়া যাবে। এর জন্য কোনও নথি প্রদানের বা রিটার্ন ফাইলের প্রয়োজন নেই। এর আগে এই সীমা ছিল আড়াই লক্ষ টাকা।
বেতন থেকে উপার্জন: পুরনো কাঠামো অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা উপার্জনের ক্ষেত্রে কর দিতে হলেও বর্তমানে মাসিক ৫৮৩৩৩ টাকা উপার্জনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কর ছাড় পাওয়া যাবে।
নতুন কাঠামোই বিবেচ্য: ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ থেকে সকল করদাতার কাছে নতুন আয়কর কাঠামোই মূল কাঠামো হিসেবে বিবেচিত হবে। যদি কোনও ব্যক্তি পুরনো কাঠামোর আওতায় থেকেই কর প্রদান করতে চান, তা হলে তাঁকে ১০ই ফর্ম পূরণ করে আবেদন জানাতে হবে।
ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে ছাড়: নতুন কাঠামো অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে ৮০সিসিডি(১ বি) ধারায় নিজস্ব লগ্নি থাকলে তিনি কোনও ছাড় পাবেন না। তবে ৮০সিসিডি(২) ধারায় ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে সংস্থা কর্তৃক লগ্নির উপরে ছাড় পাওয়া যাবে।
মনে রাখতে হবে, পুরনো কাঠামো অনুযায়ী বেশ কয়েকটি কর ছাড় আয়করদাতাদের কাছে বিশেষ ভাবে জনপ্রিয় ছিল। যার মধ্যে ছিল বাড়িভাড়া বাবদ ভাতা, ছুটি ও ভ্রমণ বাবদ ভাতা, ৮০সি, ৮০ডি সহ ৭০টিরও বেশি বিভাগ। যার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির করযোগ্য আয় কমাতে এবং কম কর প্রদানে সক্ষম হতেন। এগুলির মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় ছিল ৮০সি ধারা। যেখানে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতেন আয়করদাতারা।
কোনও রোজগেরে ব্যক্তি পুরনো কাঠামোয় থাকবেন না নতুন কাঠামোয় আসার সিদ্ধান্ত নেবেন তা নির্ণয় করার জন্য কর ছাড়ের বিভিন্ন বিষয়গুলি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এই বিষয়ে সাহায্য করার জন্য আয়কর বিভাগের তরফে ইনকাম ট্যাক্স ক্যালকুলেটরও আনা হয়েছে। কিন্তু এক জন করদাতা কী ভাবে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন?
এর উত্তর দিতে, আমরা ৬০ বছরের কম বয়সি এক জন বেতনভোগী ব্যক্তির বিভিন্ন আয়ের স্তরের জন্য একটি ব্রেক-ইভেন পয়েন্ট গণনা করেছি। কোন কর কাঠামো নির্বাচন করা সঠিক হবে তা নির্ধারণ করতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্রেক-ইভেন পয়েন্ট হল সেই পরিমাণ যেখানে দু’টি কর ব্যবস্থার মধ্যে করদাতাকে কোনও কর দিতে হবে না।
পুরনো কর কাঠামোয় কোনও ব্যক্তির মোট যোগ্য ছাড় সেই ব্যক্তির আয়ের স্তরের ব্রেক-ইভেন সীমার থেকে বেশি হলে, পুরনো নিয়মেই থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
যে বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হবে:
• কর ছাড় (ডিডাকশন) বাবদ কোনও ব্যক্তি দেড় লক্ষ টাকা বা তার কম বিনিয়োগ করে থাকলে, তাঁর জন্য নতুন কাঠামোই সুবিধাজনক।
• কর ছাড় (ডিডাকশন) বাবদ কোনও ব্যক্তি ৩.৭৫ লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগ করে থাকলে, তাঁর ক্ষেত্রেও নতুন কাঠামো সুবিধাজনক।
• কর ছাড় (ডিডাকশন) বাবদ কোনও ব্যক্তির বিনিয়োগের পরিমাণ দেড় লক্ষ টাকা থেকে ৩.৭৫ লক্ষ টাকা হলে, সেই ব্যক্তিকে তাঁর আয়ের পরিমাণ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
• নতুন ও পুরনো— দুই কাঠামোর ক্ষেত্রেই ৫০,০০০ টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন পাবেন করদাতরা।
• ৮০ সি সি এইচ (২) ধারায় ‘অগ্নিবীর কর্পাস ফান্ড’-এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছার পাওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy